মৃত্যু

মরণের ছবি মনে আনি।
ভেবে দেখি শেষদিন ঠেকেচে শেষের শীর্ণক্ষণে।
আছে বলে যত কিছু
রয়েচে দেশেকালে,
যত বস্তু, যত জীব, যত ইচ্ছা, যত চেষ্টা,
যত আশা নৈরাশ্যের ঘাত প্রতিঘাত
দেশে দেশে, ঘরে ঘরে, চিত্তে চিত্তে;
যত গ্রহ নক্ষত্রের
দূর হতে দূরতর ঘূর্ণমান স্তরে স্তরে
অগণিত অজ্ঞাত শক্তির
আলোড়ন আবর্ত্তন
মহাকাল সমুদ্রের কূলহীন বক্ষতলে,
সমস্তই আমার এ চৈতন্যের
শেষ সূক্ষ্ম আকম্পিত রেখার এধারে।
এক পা তখনো আছে সে প্রান্তসীমায়,
অন্য পা আমার
বাড়িয়েচি রেখার ওধারে,
সেখানে অপেক্ষা করে অলক্ষিত ভবিষ্যৎ
লয়ে দিন রজনীর অন্তহীন অক্ষমালা
আলো অন্ধকারে গাঁথা।

অসীমের অসংখ্য যা কিছু
সত্তায় সত্তায় গাঁথা
প্রসারিত অতীতে ও অনাগতে।
নিবিড় সে সমস্তের মাঝে
অকস্মাৎ আমি নেই।
উদ্ধত এ নাস্তিত্ব যে পাবে স্থান
এমন কি অণুমাত্র ছিদ্র আছে কোনোখানে;
সে ছিদ্র কি এতদিনে
ডুবাত না নিখিল তরণী
মৃত্যু যদি হোতো
যদি হোতো মহাসমগ্রের
রূঢ় প্রতিবাদ॥

২৬ ভাদ্র, ১৩৩৯