পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/কার্থাজ ও শিশিলি

কার্থাজ ও শিশিলি।

 কারর্থাজের উৎপত্তি ও বৃদ্ধিবিবরণ ইহার পূর্ব্বে লিখিত হইয়াছে। এইক্ষণে যে সময়ের বিবরণ লেখা যাইতেছে তৎসময়েই তাবৎ শিশিলি উপদ্বীপ জয়করণার্থ কার্থাজের একান্ত মনোযোগ হইল এবং ঐ উপদ্বীপের প্রধান নগর শিরাক্যুসেরও তদভিপ্রায় থাকাতে ঐ উভয়ের মধ্যে অহিনকুলতারূপ শত্রুতা ঘটিল। অপর বহুকাল ব্যাপিয়া জয় পরাজয় হওনানন্তর উভয় বিবাদী সর্ব্বগ্রাসি রােমকর্ত্তৃক গিলিত হইল। অতএব এতৎ কালীন বিবরণের মধ্যে কেবল কার্থাজ ও শিশিলির যুদ্ধ বৃত্তান্ত থাকাতে ঐ উভয় রাজ্যের বিবরণ একত্র লিখিলে কিছু হানি নাই।

 সিরক্যুস নগর কোরিন্থ নগরের এক কলোনি খ্রীষ্টীয়ান শকের ৭৩৫ বৎসর পূর্ব্বে স্থাপিত হয়। তৎপরে অড়াই শতবৎসরপর্য্যন্ত সাধারণ প্রভুরূপে রাজশাসন হইল এবং নগর ক্রমে পরাক্রান্ত ও সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪৮৪ বৎসর পূর্ব্বে নগরের মধ্যে একটা উপপ্লব হয় এবং যাহারা পরাভূত হইল তাহারা নিকটবর্তি গিলেনি নগরের অধ্যক্ষ গিলাের সাহায্য প্রার্থনা করিল। তিনি অতিপরাক্রান্ত সৈন্য দল লইয়া সিরক্যুস নগরে উপস্থিত হইয়া তাড়িত ব্যক্তিরদিগকে পুনঃ স্থাপিত করিয়া নগরের রাজশাসন স্বহস্তেই রাখিলেন। কিন্তু তিনি নিতান্তই বড় লােক ছিলেন এবং যদ্যপি কেবল সাত বৎসরমাত্র রাজ্য করিলেন তথাপি সিরক্যুসের মহি মার সংস্থাপক তাঁহাকেই কহা যাইতে পারে যেহেতুক তিনি কেবল অন্যান্য স্থানহইতে প্রজা আনাইয়া নগর বর্দ্ধিত করেন এমত নহে কিন্তু পরহিতৈষিতার দ্বারা সকলেরি প্রিয়তম হইলেন এবং তাঁহার রাজনীতি জ্ঞান প্রযুক্ত শিশিলির অন্যান্য নগরাপেক্ষা সিরাক্যুসই শ্রেষ্ঠ হইল। পূর্ব্বাধ্যায়ে লেখা গিয়াছে যে জর্কশিস্ যে সময়ে গ্রীকীয়েরদিগকে পৃথিবীহইতে উচ্ছিন্ন করিতে মানস করিয়াছিলেন তৎসময়েই তিনি শিশিলি ও ইটালিনিবাসি গ্রীকীয়েরদিগকে জয় করিতে কার্থাজের মন্ত্রিরদিগকে প্রবৃত্তি জন্মাইলেন। পরে কার্থাজীয়ের জর্কশিসের অভিপ্রায় ও আপনারদের অভিপ্রায় একই বুঝিয়া তাহাতে প্রবর্ত্ত হইলেন এবং দুই হাজার যুদ্ধ জাহাজ বহর প্রস্তুত করিয়া তিন সহস্র বাহনীয় জাহাজের দ্বারা হিমিল্কোর অধীনে তিন লক্ষ যোদ্ধা প্রেরণ করিলেন। অপর ঐ সেনাপতি শিশিলিতে উত্তীর্ণ হইয়া হৈমিরা নগর বেষ্টন করেন। শিরাক্যুসের নূতন রাজা গিলো ঐ নগর বেষ্টনের সম্বাদ শ্রবণমাত্রই পঞ্চাশ হাজার পদাতিক ও পাঁচ হাজার অশ্বারূঢ় লইয়া অতিবেগে নগর উদ্ধারার্থ গমন করেন। পথিমধ্যে সেলিনস নগরহইতে কার্থাজীয়েরদের শিবিরে গমনশীল এক দূতকে ধরিয়া তাহার পত্র দৃষ্টি করণপূর্ব্বক অবগত হইলেন যে কোন এক নির্দিষ্ট দিবসে ঐ নগরহইতে কএক সহকারি অশ্বারূঢ় হিমিল্কোর নিকটে প্রেরিত হইবে। অতএব ঐ নির্দিষ্ট দিবসে গিলাে আপনার এক দল অশ্বারূঢ় প্রস্তুত করিয়া কার্থাজের ছাউনিতে প্রেরণ করেন এবং বিপক্ষেরা তাহাতে কিছু ছল জ্ঞান না করিয়া তাহারদিগকে মিত্র বােধে গ্রহণ করিলেন। পরে সিরাক্যুসের ঐ সৈন্যেরা তৎক্ষণাৎ হিমিল্কোর প্রতি ধাবমান হইয়া তাঁহাকে বিনষ্ট করিয়া তাবৎ জাহাজ দগ্ধ করিল। এই শঙ্কা সময়ে গিলো আপনি স্বীয় তাবৎ সৈন্য লইয়া কার্থাজীয়েরদের উপরে পড়িলেন প্রথমতঃ অতিসাহসে তাঁহারা তাঁহাকে নিবারণ করেন কিন্তু পরে তাঁহারদের সেনাপতির মৃত্যু শ্রবণে ও পশ্চাদবলোকনে আপনার জাহাজ জাজ্বল্যমান দৃষ্টে হতাশ হইয়া পলায়ন করিলেন। অনন্তর শিরাক্যুসীরেরা বিপক্ষেরদের সমূল সংঘাত করিলেন কথিত হইয়াছিল যে তাঁহারদের দেড় লক্ষ সৈন্য হত হয় অবশিষ্টেরা যে স্থানে আহারীয় দ্রব্যাদি অপ্রাপ্য এমতস্থানে আশ্রয় লইয়া পরিশেষে শত্রুর হস্তে আপনারদিগকে অর্পণ করিতে হইল। ঐ যুদ্ধের দ্বারা কার্থাজীয়েরা কিঞ্চিৎ কালপর্য্যন্ত ভরসা হীন থাকিলেন এবং যে দিবসে থর্ম্মোপিলে যুদ্ধ হইয়াছিল সেই দিবসেই এই যুদ্ধ হয়। এই সর্ব্বনাশের সম্বাদ কার্থাজে পঁহুছিলে নগরস্থেরা একে বারে ভগ্নাশ হইলেন এবং গিলোর নিকটে উকীল প্রেরণ করিয়া যে কোন নিয়মে হয় শান্তি প্রার্থনা করিলেন। গিলো যুদ্ধেতে যেমন অদম্য তেমনি জয়হওন সময়ে পরিমিতাকা ঙ্ক্ষী অতএব কার্থাজীয়েরদের কেবল চল্লিশ লক্ষ টাকা দণ্ড করিয়া তাহারদিগকে এই আজ্ঞা করিলেন যে উত্তর কালে শনিগ্রহের নিকটে আপনারদের বালক আর বলি দান না করেন।

 অপর কার্থাজীয়েরা এতদ্রূপে পরাস্ত হইয়া প্রায় সত্তর বৎসরপর্য্যন্ত শিশিলিয়েরদের প্রতি উদ্যোগে ক্ষান্ত থাকিলেন। এতৎসময়ে শিরাক্যুস নগরে এই সকল ব্যাপার ঘটে। গিলো পূর্ব্বোক্ত জয় করণানন্তর রাজারূপে বিখ্যাত হইলেন এবং তাঁহার মরণোত্তর তাঁহার দুই ভ্রাতা ক্রমে সিংহাসন প্রাপ্ত হন তন্মধ্যে কনিষ্ঠ নিষ্ঠুর রাজা হওয়াতে খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪৬৬ বৎসর পূর্ব্বে নগরহইতে তাড়িত হন। তদনন্তর ঐ উপদ্বীপে যত গ্রীকীয় নগর ছিল সকলের মধ্যে সাধারণ প্রভুত্বের নিয়ম স্থাপন হইল তদ্দ্বারা যদ্যপি নগরে রাজশাসনের অধিক শক্তি জন্মিল তথাপি সকলেরি আপনা আপনি বড় হইতে ইচ্ছা হইল। এবং সর্ব্ব উপদ্বীপের প্রভূত্ব প্রাপণার্থ নগরে২ যুদ্ধ হইতে লাগিল। পরে অনেক যুদ্ধানন্তর শিরক্যুস আগ্রিগেণ্টম নগর অধিকার করিয়া তাবৎ শিশিলির একাধিপত্য প্রাপ্ত হইয়া তৎক্ষণাৎ অন্যায়াচরণ আরম্ভ করিতে লাগিলেন। পরে লিওণ্টিনেরা শিরক্যুসের অত্যাচারের ভারে অবাধ্য হইয়া আথেন্‌সীয়েরদিগকে আহ্বান করাতে সেই স্থানে অথেন্‌সীয়েরা অতি প্রসিদ্ধ যুদ্ধযাত্রা করেন। ঐ যুদ্ধে তাঁহারা একান্ত পরাজিত হওয়াতে গ্রীক দেশে তাঁহারদের পরাক্রম লুপ্ত হয়। শিরাক্যুস নগরের সর্ব্বাপেক্ষা অতিপ্রাদুর্ভাবের কাল খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪১৩ শালে হয়। তদনন্তর ঐ উপদ্বীপের অন্তঃপাতি দুই ক্ষুদ্র নগরে বিবাদ হইয়া এক পক্ষ কার্থাজীয়েরদের সাহায্য প্রার্থনা করিলেন। তাহাতে কার্থাজীয়েরদের এক সভায় শিশিলি উপদ্বীপে যুদ্ধার্থ গন্তব্য কি না এতদ্বিষয়ক বিবেচনা হইতে লাগিল। এক পক্ষে ঐ অতিসমৃদ্ধ দেশ জয়করণবিষয়ে বহুকালাবধি যে অতিস্পৃহা ছিল তাহাতে গমনেচ্ছা হইল। পক্ষান্তরে শিরাক্যুসের মহাপরাক্রম দেখিয়া এবং সম্প্রতি আথেন্‌সের বলবৎ সৈন্য বিনাশ করণেতে ঐ পরক্রিমের অতিবৃদ্ধি দেখিয়া তথায় যুদ্ধ যাত্রাকরণ অপরামৃশ্য বোধ হইল।

 তথাপি ঐ দেশ জয়করণের লালসা প্রবল হইল এবং গিলোর দ্বারা যে হিমিল্কো হত হইয়াছিলেন তাঁহার পৌত্ত্র হানিবাল যুদ্ধ জাহাজের বহর ও সৈন্যসমভিব্যাহারে শিশিলিতে প্রেরিত হইলেন। তিনি লিলিবেয়ম স্থানে উত্তীর্ণ হইয়া হিমিরা ও সেলিনস এই নগর দ্বয় বেষ্টন ও অধিকার করিয়া অনেক নির্দয়াচরণ করত আফ্রিকাতে প্রত্যাগত হইলেন। পরে কার্থাজীয়েরা এইরূপ সাফল্যে উল্লসিত হইয়া তাহার তিন বৎসর পরে তদপেক্ষা বৃহৎ বহর ও সৈন্য হিমিল্কোর অধীনে প্রেরণ করিলেন তাঁহার সঙ্গে যুদ্ধকরণার্থে শিশিলিনিবাসিরা আপনারদের তাবৎ সৈন্য সংগ্রহ করিলেন। হিমিল্কো উপদ্বীপে উত্তীর্ণ হইয়া ঐ উপদ্বীপের মধ্যে দ্বিতীয় নগর রূপে গণ্য অথচ সম্পত্তি ও লোক সংখ্যায় ও অট্টালিকাদির সৌন্দর্য্যে অতি বিখ্যাত আগ্রিগেণ্টম নগর বেষ্টন করিলেন। আট মাস ব্যাপিয়া ঐ নগর বেষ্টন করা যায় এবং নগরস্থ লোকেরা আহারাভাবে যৎপরোনাস্তি ক্লেশ পাইয়া পরিশেষে এক রাত্রি যােগে আপনারদের ঐ জন্ম স্থান ত্যাগ করিল তাহাতে তাহারদের খেদের বিষয় এই যে বৃদ্ধ ও জীর্ণ ব্যক্তিরদিগকে সেই স্থানে ফেলিয়া যাইতে হইল। তৎপর দিবসে হিমিল্কো ঐ নগরে প্রবেশ করিয়া যত দুঃখিরা তাহারদের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পলায়ন করিতে না পারিল তহািরদের সকলকেই সংহার করিয়া রাগােন্মত্ত স্বসৈন্যেরদিগকে নগরের মধ্যে যথেচ্ছ লুঠ করিতে অনুমতি দিলেন। ঐ নগরের এতদ্রূপে নিপাত হওয়াতে শিশিলি উপদ্বীপ একেবারে কম্পমান হইল যেহেতুক কার্থাজের সৈন্যের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে তাহারদের সৈন্য সংগ্রহকরণের শক্তি ছিল না এবং ডায়ােনিসিয়স তাঁহারদের সঙ্গে এক সন্ধিপত্র করিলেন তাহাতে তাঁহারা যত স্থান আয়ত্ত করি য়াছিলেন সে সকল তাহারদেরি রহিল। ঐ ডায়ােনিসিয়স সম্প্রতি সিরাক্যুস নগরের সাধারণ প্রভুত্বের নিয়ম উল্লঙ্ঘন করিয়া বেআইনি মতে নগরের অধিপতি হইলেন। হিমিল্কো জয় পুরঃসরই আফ্রিকা দ্বীপে প্রত্যাগমন করিয়া দেখেন যে শিশিলি উপদ্বীপ জয়করাতে যে উপকার হইল মারকের দ্বারা তাঁহার জন্ম ভূমিতে তদপেক্ষা অধিক অপকার হইয়াছে।

 ডায়ােনিসিয়স্ এইক্ষণে সিরাক্যুসের একাধিপত্য প্রাপ্ত হইয়া তাবৎ উপদ্বীপ অধিকার করণাকাঙ্ক্ষী হইলেন তিনি কার্থাজীয়েরদের সঙ্গে যে সন্ধি করিয়াছিলেন তাহার এইমাত্র অভিপ্রায় যে তাহারদের সমূলোৎপাটন করণের উদ্যোগের সময় প্রাপ্ত হন। তার গ্রীক ও ইটালি দেশহইতে যুদ্ধ সরঞ্জাম নির্মাণার্থ কারিকরেরদিগকে আহ্বান করিলেন এবং তাহাতে সিরাক্যুস নগর এক মহা কারখানার ন্যায় দৃষ্ট হইল। দিবারাত্রি কেবল কারিকর লোকেরদের কর্ম্মবিষয়ক ধুমধাম শব্দ শুনা গেল এবং ঐ কারিকরেরদের নিকটে ডায়ােনিসিয়স স্বয়ং রুজু থাকিয়া তাহারদিগকে পুরস্কার করিয়া কর্ম্মে উৎসাহ জন্মাইলেন। এই সকল যুদ্ধায়োজন প্রস্তুত হইলে তিনি সিরাক্যুসের লোকেরদিগকে একত্র করিয়া কহিলেন যে কার্থাজীয়েরা চিরকালাবধিই গ্রীকীয়েরদের শত্রু ইত্যাদি কথাতে তাঁহারদিগকে উষ্মান্বিত করিয়া তাবৎ কার্থাজীয়েরদিগকে হত করিতে প্রবােধ দিলেন। তাহাতে সিরাক্যুস নগরে যে২ কার্থাজীয় লোকেরা সন্ধির উপর নির্ভর রাখিয়া বাস করিতেছিল তাহারদের ঘরে নগস্থেরা গিয়া সকলকেই হত করিলেন। উপদ্বীপের অন্যান্য নগরেও তদনুসারে কার্য্য হইল এবং ঐ উপদ্বীপের মধ্যে যে কার্থাজীয়েরা দৈবায়ত্ত বাস করিতেছিল তাহারদের বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ব্বক সংহারের দ্বারা নূতন যুদ্ধ প্রকাশ পাইল। অপর ডায়োনিসিয়স কার্থাজ নগরে উকীল প্রেরণ করিয়া এই দাওয়া করিলেন যে শিশিলির তাবৎ নগর কার্থাজীয়েরদের প্রভুত্বহইতে মুক্ত হয় কিন্তু তাহার উত্তর অ পেক্ষা না করিয়া ঐ উপদ্বীপে মটিয়ানামক কার্থাজীয়েরদের যে বৃহৎভাণ্ডার ছিল তাহা বেষ্টন করিয়া হস্তগত করিলেন এবং নগরস্থেরদিগকে হত করিলেন। তৎপর বৎসরে কার্থাজীয়েরা বহুসংখ্যক অর্থাৎ তিন লক্ষ সৈন্য প্রস্তুত করিয়া হিমিল্কোর অধীনে শিশিলি উপদ্বীপে প্রেরণ করিলেন এবং তিনি কেবল মটিয়া স্থান পুনঃ অধিকার করিলেন এমত নহে কিন্তু উপদ্বীপের অন্যান্য স্থান আয়ত্তকরণপূর্ব্বক সিরাক্যুস নগর বেষ্টন করিলেন। কৃতকার্য্যহওনবিষয়ে তিনি এমত নিশ্চয় করিলেন যে ত্রিশ দিবস ব্যাপিয়া চতুর্দিকস্থ ক্ষেত্রসকল লুঠ করেন এবং সিরাক্যুসের শহরতলিরভূষণস্বরূপ যে সকল সুশোভন অট্টালিকাদি ছিল তাহা বিনষ্ট করে। কিন্তু তাঁহার অপেক্ষিত জয় অত্যল্পকালের মধ্যেই দূর হইয়া বিভ্রাট ও হতাশ ঘটিল অর্থাৎ চিরকালীন কার্থাজের জ্বালা যে মারক তাহা তাঁহার ছাউনিতে উপস্থিত হইল। গ্রীষ্মকালের উত্তাপেতে ঐ রোগের প্রাদুর্ভাব হইল শবের সমাধি ক্রিয়া হইতে পারিল না এবং রোগের স্পর্শাক্রামকতা ভয়ে কেহই রুগ্ন ব্যক্তিরদের কিছু উপকার করিল না হিমিল্কোর সৈন্যেরদের এতদ্রূপ দুরবস্থা ঘটিয়াছে দেখিয়া ডায়ােনিসিয়স তাঁহারদের উপরে পড়িলেন ও তাবৎ সিরাক্যুসনিবাসিরা তাঁহারদের আত্মশাঘি শত্রুর বিনাশ দর্শনার্থ বাহিরে আগত হইলেন। হিমিল্কো সিরাক্যুসীয়েরদের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে অপারক হইয়া স্বদেশে প্রত্যাগমন করিতে অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। তাহাতে কেবল কার্থাজীয়েরদিগকে সঙ্গে লইয়া যাইতে অনুমতিহইল অতএব তাঁহার সঙ্গে আফ্রিকার অন্যান্য দেশীয় যে সহযে৷দ্ধারা ছিলেন তাঁহারদিগকে সিরক্যুসীয়েরদের মুখে ফেলিয়া দিয়া রাত্রি যোগে হিমিল্কো পলায়ন করিলেন এবং সিরাক্যুসীয়েরা ঐ সৈন্যেরদিগকে তৎক্ষণাৎ হত করিলেন। হিমিল্কো কার্থাজ নগরে পঁহুছিলে তাঁহাকর্ত্তৃক স্বীয় দেশের যে অপমান হইয়াছে তাহা সহিষ্ণুতা করিতে না পারিয়া স্বগৃহে আপনি বন্ধ হইয়া আত্মঘাতী হইলেন।

 কিন্তু ইহাও কার্থাজীয়েরদের চূড়ান্ত দুঃখ নহে। আফ্রিকাতে যে নানাদেশীয়েরদিগকে তাঁহারা দমন করিয়াছিলেন তাহারা বহুকালাবধি তাঁহারদের জোয়ালের ভারে ব্যাকুল ছিল এবং সম্প্রতি শিশিলি দেশে কার্থার্জীয়েরা যে তাঁহারদের বন্ধুবান্ধবেরদিগকে দুরবস্থায় ফেলিয়া আইলেন ইহাতে ঐ সকল ব্যক্তি একেবারে ক্ষিপ্ত প্রায় হইল এবং অন্যূন দুই লক্ষ লােক কার্থাজ নগর সমভূমি করিতে নিশ্চয় করিয়া নগরের প্রতি ধাবমান হইল। কার্থাজীয়েরদের সৌভাগ্যক্রমে এই বৃহৎ দলের সঙ্গে কোন সেনাপতি না থাকাতে ও তাহারদের মধ্যে অতিদূর্ভিক্ষ হওয়াতে ক্রমে তাহারা ছিন্ন ভিন্ন হইয়া গেল। কার্থার্জীয়েরা এই ভয়হইতে উদ্ধার পাইয়া পুনর্ব্বার শিশিলির প্রতি মনোযােগ করত মহাদল সৈন্যের সমভিব্যাহারে মাগোকে সেই স্থানে প্রেরণ করিলেন কিন্তু তিনি পরাস্ত হইয়া হত হইলেন। তাহার পরে যে ব্যক্তি সেনাপতি হন তিনি শান্তির প্রার্থনা করিয়া এই নিয়ম স্বীকার করি লেন যে এই যুদ্ধে আপনারদের যে খরচ হইয়াছে তাহা আমি দেই ও নগর সকল তোমারদিগকে দিয়া উপদ্বীপ হইতে প্রস্থান করি। কিন্তু যখন ঐ সন্ধিপত্রে তাঁহার সহী করিতে হইল তখন তিনি টালমটাল করিয়া কহিলেন যে আমি কি প্রকারে আজ্ঞাব্যতিরেকে নগর ছাড়িয়া দিতে পারি প্রতিদিন ঐ অজ্ঞার অপেক্ষা করিতেছি। কিন্তু ইহাতে যে কিঞ্চিৎ বিশ্রাম পাইলেন সেই অবকাশে সন্ধিপত্রের নিয়ম প্রতিপালনার্থ চেষ্টা না পাইয়া কেবল যুদ্ধযোজন করিতে তৎপর হইলেন। পরে কার্থাজহইতে যুব মাগোর অধীনে ভূরি২ নুতন সৈন্য উপদ্বীপে প্রেরিত হয় তিনি সেই স্থানে পঁহুছিলে তাবৎ বিষয়ের রূপান্তর করিলেন এবং এক মহাযুদ্ধেতে সিরাক্যুসীয়েরদিগকে পরাজিত করিয়া কার্থাজীয়েরদের পক্ষে মঙ্গলবহ এমত এক সন্ধি পত্র তাঁহারদিগকে সহী করাইলেন। তদ্বারা কার্থাজীয়েরা যাহা জয় করিয়াছিলেন তাহা তাঁহারদের হস্তেই থাকিল।

 অপর খ্রীষ্টীয়ান শকের ৩৬৮ বৎসর পূর্ব্বে প্রথম ডায়োনিসিয়স বিষের দ্বারা হত হইলে ঐ নামধারি তাঁহার পুত্র সিংহাসনারোহণ করিলেন। কিন্তু তিনি অতিনিষ্ঠুর প্রযুক্ত নগরহইতে তাড়িত হইলে কোন যােগে নগরে প্রত্যাগত হইয়া সিরাক্যুসীয়েরদিগকে প্রতিফল দিলেন। তাহাতে নগরস্থেরদের এক ভাগ লােক আপনারদের সাহায্যার্থ ইসিটাসকে আহ্বান করিলেন এবং এই বিপরীত দলাদলিতে নগর দলিত প্রায় হইল। ইতি মধ্যে কার্থাজীয়েরা যুদ্ধ জাহাজের এক মহাবহর লইয়া বন্দরের সম্মুখে উপস্থিত হইল এবং সিরাক্যুসীয়েরা আশীবিহীন হইয়া তাঁহারদের আদি নগর কোরিন্থকে এই অতিদুরবস্থাসময়ে সাহায্য করিতে প্রার্থনা করিলেন। তাহাতে কোরিন্থীয়েরা তাহারদের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা সাধু টিমোলিয়নকে সহস্র সৈন্যমাত্রসমেত প্রেরণ করেন। এই মুষ্টিমিত সৈন্য লইয়া তিনি সাহসপূর্ব্বক সিরাক্যুসের প্রতিকূলে যাত্রা করিলেন এবং অতি শীঘ্র ডায়ােনিসিয়সের এমত ক্লেশ জন্মাইলেন যে তিনি কৃতকার্য্যতার বিষয়ে হতাশ হইয়া টিমােলিয়নের হস্তে দুর্গ সমর্পণ করিলেন। পরে কোরিন্থ নগরে গমন করিয়া তথায় বালকেরদিগকে লেখা পড়া শিক্ষায় ব্যবসায়ে প্রবর্ত্ত হইলেন। যদ্যপি টিমােলিয়নের সৈন্য অত্যল্প তথাপি তাঁহার বুদ্ধি ও নৈপুণ্য অতিবৃহৎ অতএব কার্থাজীয় সৈন্যেরদিগকে স্বীয় চরের দ্বারা এমত উৎকণ্ঠিত করিলেন যে মাগো বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়ে ভীত হইয়া অথবা তাঁহার অভরসার উদ্যোগ ত্যাগকরণের ছল দর্শাইয়া যুদ্ধজাহাজসমেত কার্থাজে ফিরিয়া গেলেন। সেই স্থানে পঁহুছিবামাত্র স্বদেশের অহিতকারী বলিয়া নগরস্থেরা তাঁহাকে সমুদ্রে তটে ক্রুশে হত করিল। তাহার কিঞ্চিৎ পরে ইসিটাস টিমােলিয়নের বাধ্য হইলে সিরাক্যুসনগর পুনর্ব্বার স্বাধীন হইল। তথাচি কার্থাজীয়েরা পুনর্ব্বার ঐ উপদ্বীপের প্রতি আক্রমণ করে কিন্তু টিমােলিয়ন তাহারদিগকে সম্পূর্ণরূপে পরাভূত করেন এবং উপদ্বীপান্তঃপাতি তাঁহারদের প্রায় তাবৎ অধিকার ত্যাগ করিতে এক সন্ধিপত্র সহী করাইলেন। টিমোলিয়ন এতদ্রূপে ঐ উপদ্বীপ বিদেশীয় বিপক্ষহইতে মুক্ত করিলে উপদ্বীপের আন্তরিক মঙ্গলার্থ নানা কল্প করিতে লাগিলেন কিন্তু কোন কল্প পরিপক্ক না হইতে হইতেই খুীষ্টীয়ান শকের ৩৩৭ বৎসর পূর্ব্বে তাঁহার লােকান্তর হয়। পূর্ব্বকালীন তাবৎ সেনাপতির মধ্যে সৌশীল্য বিষয়ে তাঁহার যেমন সুখ্যাতি তদ্রূপ প্রায় অন্য কাহারো ছিল না। সেকন্দরশাহের যুদ্ধ যাত্রার পাঁচ বৎসর পূর্ব্বেই টিমােলিয়নের লোকান্তর প্রাপ্তি হয়। তৎপরে ঐ উপদ্বীপের ইতিহাসের মধ্যে যে কার্য্য গুরুতর তাহা গােপাল আগথাক্লিসের অদ্ভুত কীর্ত্তি। কিন্তু তাঁহার মহাকার্য্য এবং রােমাণকর্ত্তৃক শিশিলি ও কার্থাজ পরাজয়ের বিববণ আগামি কালীন ইতিহাসের মধ্যে লেখা যাইবে।

 আমারদের প্রথমকার কল্পের বৈপরীত্যে এতৎকালীন বিবরণের মধ্যে রোম নগরের উৎপত্তি বৃত্তান্ত লেখা গেল না। সেকন্দরশাহের মৃত্যু সময়ে রোম নগর চারি শত বৎসরব্যাপক ছিল। ঐ মহারাজ্যে পরিশেষে অন্যান্য তাবৎ রাজ্য লীন হয় অতএব তাহার উৎপত্তি ও উন্নতি ও সুপক্ক হওনের বিবরণ অবিচ্ছেদে প্রস্তাব করণে যে পর্য্যন্ত উপকার সম্ভাবনা তাহা পাঠক মহাশয়েরদের অনায়াসে বোধগম্য হইবে।

CARTHAGE AND SICILY.

 The rise and growth of Carthage were traced in the preceding epoch. In the period now under review, all its energies were directed to the entire conquest of Sicily; and as Syracuse, the principal city in that island, then rising to greatness, proposed the same object, a spirit of rancorous hostility arose between them. After a succession of victories and defeats, both the combatants were swallowed up by the overwhelming power of Rome. As the history of this era is therefore a detail of the Carthaginian and Sicilian wars, the history of both states may without impropriety proceed hand in hand with each other.

 Syracuse was founded by a Corinthian colony B.C. 735. During the first two hundred and fifty years of its existence, it enjoyed a republican form of government, and gradually rose in power and importance. In the year 484 B. C. a revolution in the city, induced the defeated party to apply to Gelo, the chief of Gelon, a neighbouring city. Arriving at Syracuse with a powerful army, he reinstated those who had been expelled, but retained the sovereign power in his own hands. He was truly a great man, and though his reign lasted but seven years, he may be called the founder of the Syracusan greatness, for he not only greatly enlarged the city by inviting settlers from abroad, but won all hearts by his benevolence, and through his political abilities gave an entire preponderance to this city among the other towns of Sicily. When Xerxes, as we have mentioned in a preceding chapter, aimed at the total extirpation of the Grecian name, he urged the Carthaginians to the conquest of the Greeks who were settled in Sicily and Italy. The Carthaginians entering into his views, which completely coincided with their own, fitted out a fleet of two thousand vessels, and embarked on three thousand transports an army of three hundred thousand men, with which Himilco, their general, landing in Sicily, laid siege to Himera. Gelo, the new king of Syracuse, hearing of the siege, flew to the relief of the town with fifty thousand foot and five thousand horse. Having intercepted a courier proceeding from Selinus to the Carthaginian camp, he learned from his despatches that on a particular day a body of auxiliary horse would be sent from that town to Himilco. Gelo on the appointed day, drew out an equal number of his own cavalry and sent them to the camp of the enemy, who, suspecting no stratagem, received them as friends. The Syracusan troops instantly rushed on Himilco, whom they slew, and set fire to his ships. At this critical juncture, Gelo attacked the main body of the Carthaginians with his whole force. They made a noble resistance till the news of the general's death and the sight of their fleet behind them in a blaze, so completely dispirited them, that they took to flight. The Syracusans made a dreadful slaughter of their enemies, of whom it is said that a hundred and fifty thousand fell; the remnant retired to a place where provisions were not to be procured and were constrained at length to surrender at discretion. This battle, which annihilated for a time the hopes of the Carthaginians, was fought on the very day of the celebrated action at Thermopylæ. When intelligence of this signal defeat reached Carthage, the people gave themselves up to despair, and sending a deputation to Gelo, sued for peace on any terms. Gelo, as moderate in victory as he was undaunted in war, only imposed on them a fine of 2000 talents, or about forty lacs of Rupees, adding as a condition that they should henceforth cease to sacrifice their children to Saturn.

 This great reverse restrained the Carthaginians from any farther attempts against Sicily for nearly seventy years. During this period, the following series of events occurred in Syracuse. Gelo after his victory was saluted king, and transmitted the crown successively to his two brothers, the youngest of whom proving a tyrant, was expelled B. C. 466. The republican form of government was now restored in all the Greek cities of the island, which infused vigour, but at the same time enkindled ambition. The cities fought with each other for the sovereignty of the island, and after a long series of wars, Syracuse, by the conquest of Agrigentum, became the undisputed mistress of Sicily, and began to act the tyrant. A revolt of the Leotines against the tyranny of Syracuse, brought on the celebrated expedition of the Athenians, which ended in their entire defeat, and the downfal of their power in Greece. Syracuse reached the summit of its glory about 413 B. C. Disputes then arose between two of the inferior cities of the island, one of which sent to implore the aid of Carthage. The question of another descent on the island was debated in the assembly of the people; on the one hand the long cherished anxiety to possess this rich country recommended the expedition; on the other hand the great power of Syracuse, augmented by the recent annihilation of the powerful forces of Athens, seemed to forbid it.

 The lust of conquest however prevailed, and Hannibal, the grandson of Himilco, who had been cut off by Gelo, was sent with a large fleet and army to Sicily. Landing at Lilybœum, he besieged and took Himera and Selinus, and after practising many cruelties, returned to Africa. Elated with this success, the Carthaginians about three years after, fitted out an expedition on a larger scale, under the command of Himilco. The Sicilians collected all their strength to meet the enemy, who on landing, laid siege to Agrigentum, the second city in the island, celebrated for its wealth, population, and the richness of its architecture. After a siege of eight months, in which the citizens suffered the extremity of want, they abandoned their native city during the night, leaving behind them, to their infinite regret, the aged and the wounded. Himilco entered Agrigentum the next day, and putting to the sword all the wretched beings who had been unable to escape with their friends, gave it up to the rapine of his infuriated soldiers. The fall of this noble city shook the whole island of Sicily; no force could be assembled able to cope with the Carthaginians, and Dionysius, who had recently subverted the democratic government of Syracuse and become its tyrant, concluded a treaty with them, by which they were left in possession of all their conquests. Himilco returned in triumph to Africa, but found that the ravages of the plague in his native land had more than counterbalanced the advantage of his victories abroad.

 Dionysius, now absolute master of Syracuse, and aspiring to the dominion of the whole island, had made peace with the Carthaginians only to gain time for striking a decisive blow at their power. He invited artisans from all parts of Greece and Italy, to fabricate implements of war, and Syracuse resembled a great workshop, resounding day and night with the din of artificers, whom Dionysius animated by his presence, and encouraged by liberal rewards. When all his preparations were complete, he assembled the people, and enflaming their minds against the Carthaginians, as the eternal foes of the Greeks, urged a general massacre of them. The citizens flew to the houses of those who were residing at Syracuse upon the faith of treaties, and put them to the sword. The other cities of the island followed their example, and this new war against Carthage was proclaimed by the perfidious massacre of all the Carthaginians who happened to be dwelling on the island. Dionysius then sent envoys to Carthage to demand that the freedom of all the Sicilian cities should be restored; but not deigning to wait for a reply, he besieged and took Motya, their greatest magazine, and put all the inhabitants to death. Carthage the next year raised an immense army of three hundred thousand men and sent it to Sicily under Himilco, who not only recovered Motya, but captured all the other cities of the island, and laid siege to Syracuse. So certain was he of final success, that he spent thirty days in ravaging the adjacent lands, and in destroying the tasteful monuments with which the suburbs of Syracuse were adorned. But his anticipated triumph was in a very short period changed for disaster and despair. The plague, the scourge of the Carthaginians, broke out in his camp; the heat of the summer added fury to its ravages; the dead lay unburied, and the fear of contagion deprived the sick of all assistance. While the army of Himilco was suffering from this dreadful calamity, Dionysius fell upon it, and all Syracuse poured forth to witness the destruction of its haughty foe. Himilco unable to meet the Syracusans, solicited permission to retire. He was allowed to depart, but only with his native Carthaginians. He accordingly stole away during the night, abandoning his African auxiliaries to the fury of the Syracusans, by whom they were barbarously murdered. Himilco returned to Carthage, and unable to sustain the disgrace he had brought on his country, shut himself up in his house and fell by his own hand.

 The calamities of the Carthaginians, however, did not stop here. The African nations whom they had subjugated, had long borne their yoke with impatience; the desertion of their friends in Sicily now inflamed them to madness, and a large body of not fewer than 200,000 marched to Carthage, determined to raze it to the ground. Happily for the Carthaginians this body was without a leader; famine also appeared among them, and they gradually melted away. Recovered from this terror, the Carthaginians again directed their attention to Sicily, and sent Mago thither with a large army, but he was defeated and slain; his successor solicited peace on condition of evacuating the island, and defraying the expenses of the war. When the treaty came to be signed, however, he pretended that without orders from home, which he daily expected, he could not deliver up the cities. The respite thus gained was passed, not in considering the terms of peace, but in preparing the means of war; large succours were sent from Carthage with all haste to the island under the command of the younger Mago, who on his arrival completely changed the face of affairs, defeated the Syracusans in a pitched battle, and obliged them to conclude a peace honourable to the Carthaginians, in as much as it left them in quiet possession of all their conquests.

 Dionysius the elder perished by poison, B. C. 368, and was succeeded by his son of the same name, an incorrigible tyrant, who was expelled the island for his cruelties, but contrived to return and wreak his vengeance on the Syracusans. A part of the citizens upon this called Icetas to their aid, and the city was torn with these adverse factions. Meanwhile the Carthaginians appeared off the port with a mighty fleet, and the Syracusans reduced to despair, petitioned Corinth, their mother country, for aid in this hour of extremity. Corinth sent its most virtuous citizen Timoleon to their aid with only a thousand troops. With this small body he boldly marched towards Syracuse, and speedily reduced Dionysius to such straits, that despairing of success, he delivered up the citadel, and retired to Corinth where he commenced schoolmaster. Timoleon, made up in skill and talent for the deficiency of his military means, and by his emissaries sowed mistrust to such an extent among the Carthaginians, that Mago, dreading treachery, or making it a pretext for abandoning an enterprise which now appeared desperate, retired with his fleet to Carthage, where he had no sooner arrived than he was crucified as a traitor on the sea shore. lcetas soon after submitted to Timoleon, and Syracuse regained her freedom. The Carthaginians however made a fresh descent on the island, but were completely defeated by the Corinthian general and obliged to conclude peace on condition of resigning the greater part of their conquests. Timoleon having now liberated the island from foreign foes, proposed many plans for its internal improvement, but died before many of them were matured, B. C. 337, leaving behind him the fairest reputation of any general of antiquity. His death happened five years before the era of Alexander the Great; the next events of importance in the history of the island were the exploits, almost miraculous, of the shepherd Agathocles; but his enterprise and the final subjugation of both Sicily and Carthage by Rome belong to the following epoch.

 Contrary to our original design, we omit in this epoch all mention of the rise of Rome, which at the period of Alexander's death, had existed for more than four hundred years. The reader will readily perceive the advantage of having the rise, growth, and maturity of this empire, which finally absorbed all others, brought under review without interruption.