পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/জলপ্লাবনাবধি ত্রোজানের যুদ্ধপর্য্যন্ত
৩ অধ্যায়।
খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ২৩৪৪ সন অবধি ১১৮৪পর্য্যন্ত।
প্রথম কাল। জলপ্লাবনাবধি ত্রোজানের যুদ্ধপর্য্যন্ত।
আরারাট পর্ব্বতের উপরি জাহাজ থেকে গেল। কোন২ ভুগোলবেত্তা নিরূপণ করেন ষে এ স্থান আরমানীদে শের অন্তঃপাতি কিন্ত অপরের অনুমান যে ভারতবর্ষের উত্তর পশ্চিম কোণস্থদেশ অর্থাৎ বাকত্রিয়ার কোন এক স্থানে এ আরারাট ছিল। পূর্ব্বানুমানাপেক্ষা এই অনুমানের সৎসম্ভাবনা। তাহার এক কারণ এই যে আরমানী দেশাপেক্ষা ইউরোপ আসিয়া আফ্রিকা মহাদ্বীপের ঐ বাক্ত্রিয়া মধ্যস্থানে। অপর কারণ এই যে মনুষ্য বংশ প্রথমেই পুর্বাদিগহইতে বাবেলনের মাঠে আগত হয় এমত ধর্ম্মগ্রন্থে লিখিত আছে। কিন্ত আরমানী দেশ বাবেলনের উত্তর ভাগস্থিত।
অপর জাহাজ অবস্থিত হইলে ঈশ্বরের আজ্ঞাক্রমে নোক সপরিবারে তাহাহইতে বাহির হইলেন এব তন্মধ্যে আশ্রিত সজীব জন্তু সকল মুক্ত হইল তদনন্তর পূর্ব্ববৎ পুথিবীর উর্ব্বরাত্ব হইতে লাগিল এব জলপ্লাবনেতে ভূমি অত্যন্ত তেজালহওয়াতে বৃক্ষাদি সকল অপূর্ব্বরূপ জন্মিতে লাগিল এব ভূমণ্ডুল অতিশয় জঙ্গলে আবৃত ও ভয়ঙ্কর পশুতে পরিপূর্ণ হইল অথচ দুর্ব্বল মনুষ্য সম্প্রদায়েরা কেবল এক স্থানেই ছিল। ক্রমে তাহারদের সংখ্যা এমত বৃদ্ধি হইল যে তাহারা কুশলে একস্থানাবস্থিত হইতে না পারিয়া তাহারদের এক দল অনুমান পাঁচ হাজার লোক নূতন বসতির স্থান অন্বেষণ করণার্থ তাহারদের পৈতৃক বসতি অর্থাৎ নোখের অবস্থিত স্থল ত্যাগ করিল এবং পশ্চিমাভিমুখে মন্দ২
রূপে গমন করত অবশেষে শিনআর অর্থাৎ বাবেলনের মাঠে পঁহুছিল। এ মহাপুরুষ নোখ যে তাহারদের সঙ্গে২ গমন করিলেন এমত বোধ হয় না কিন্তু জাহজ যে স্থানে থাকিল তাহার নিকটে তিনি বসতি করিলেন এবং তাঁহার সন্তানেরা ভারতবর্ষ ও চীন্ ও তচ্চতুর্দ্দিগস্থ প্রদেশে ব্যাপ্ত হইল এমত অনুমান হয়। অপর বাবেলনে যাহারা গমন করিয়াছিল তাহারা মাঠে পঁহুছিয়া তথায় অবস্থিতি করিতে নিশ্চয় করিল এবং গ্রন্থ নোপযুক্ত অনেক মশালা প্রভৃতি প্রাপ্ত হইয়া এক নগর প্রস্তুত করিয়া এবং চূড়াতে স্বর্গর্য্য়ন্ত সপর্শে এমত এক গুম্বেজ গ্রন্থন করিতে স্থির করিল কিন্ত অতিশীঘ্র তাহারদের গর্ব্ব খর্ব্ব হইল যেহেতুক তাহারদের একজাতীয় যে ভাষা ছিল ঈশ্বরের আজ্ঞাক্রমে তাহার বৈপরীত্য হইল এব মজুরেরা আপনারদের ভাষা পরস্পর বুঝিতে না পারাতে সুতরাং তাহারদের তৎকর্ম্ম ত্যাগ করিতে হইল। অপর তাঁহারা ছিন্নভিন্ন হইয়া উত্তরকালে পশ্চিমদেশে যে সকল রাজ্য উৎপন্ন হয় তাহার মূল স্থাপন করেন।
কিন্তু বোধ হয় যে তাঁহারদের একাংশ বাবেলনে থাকিলেন এবং মহোৎসাহী নিমরোদনামক এক ব্যক্তি তাঁহারদের কর্ত্তা হইলেন। অনুমান হয় যে তিনিই প্রথমে ঐ সীনারের মাঠে তাঁহারদিগকে আনয়ন করিয়া থাকিবেন। তদ্বিষয় ধর্ম্ম গ্রন্থে লেখে যে তিনি ঈশ্বরের সম্মুখে এক মহামৃগয়ু ছিলেন তাহার অর্থ এই হইতে পারে যে তিনি আপনার অনুগত লোক লইয়া চতুর্দ্দিগস্থ আরণ্য পশুসকলের প্রতি আক্রমণ করিলেন যেহেতুক বন্যপশুরদিগকে উচ্ছিন্ন না করিলে তৎসময়ে মনুষ্য বর্গের বসতি স্থানের বিস্তারিত হইতে পারিত না। তদনন্তর নিমরোদ বাবেলনে আপনার রাজ্যের মুল স্থাপন করেন পরে অন্যান্য নগরও বসান। তাঁহার রাজ্যের আরম্ভ খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্ব ২২১৩ বৎসর। তিনি ১৪৮বৎসর পর্য্যন্ত রাজ্য করিয়া খৃীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ২০৬৫ সালে পরলােকগত হন।
অনুমান হয় যে নিমরােদের রাজ্য কালে বাবেলন হইতে আসর নামে এক ব্যক্তি বিদেশ গমনাকাঙ্ক্ষি লোকের এক দল সমভিব্যহারে তিগরিস নদীর উজানে গমন করিয়া আসরিয়ার রাজ্য ও তাঁহার রাজধানী নিনিবের সংস্থাপন করেন।
নিমরোদের পর বিলষ রাজ্যাভিষিক্ত হইলেন কিন্তু উভয়ের মধ্যে যে কিঞ্চিৎ কুটুম্বতা ছিল এমত বােধ হয় না। ঐ অতিপ্রাচীনকালে পুত্র পৌত্রাদিমে রাজদণ্ড প্রাপণের নিয়ম নির্ব্বন্ধ হওনের পূর্ব্বে যে ব্যক্তি অন্যাপেক্ষা প্রবল বা যােগ্য তিনিই রাজদণ্ড প্রাপ্ত হইবেন। বােধহয় যে ঐ বিলষ শান্তিস্বভাব এবং জ্ঞানান্বেষণে রত তিনি ষাইট বৎসর পর্য্যন্ত রাজ্য করেন এবং কৃষি বিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার পৌষ্টিকতা করণে কাল যা পন করেন কথিত আছে যে তিনি তদ্বিদ্যার আদি প্রকাশক। বাবেলন নগরে জ্যোতির্বিৎ সম্প্রদায়ের তদনন্তর শত২ বর্ষপর্য্যন্ত অনুপমরূপে বিখ্যাত ছিলেন। নিমরােদ যে সময়ে লােকান্তরগত হন প্রায় তৎসমকালেই আসরের মৃত্যু হয়। তৎপরে অতিসাহসিক মহানুভব নিনস তাঁহার রাজ্যপ্রাপ্ত হইয়া প্রথমেই পৃথিবীর মধ্যে যুন্ধারম্ভ করেন। তিনি স্বীয় রাজ্যের বৃদ্ধিবিষয়ে অতিচেষ্টক হইয়া নিমরােদের রাজ্যের প্রতি আক্রমণ পূর্ব্বক তাহা হস্তগত করেন। তদনন্তর বাবেলনের পূর্ব্ব দিগে যে সকল ক্ষুদ্র২ রাজ্য ছিল তাহার প্রতি স্বীয় পরাক্রম দর্শাইলেন। এতদ্রূপে আসরিয়ার সাম্রাজ্য উৎপন্ন হইল অন্যান্য দেশ জয়করাতে যে প্রথম সাম্রাজ্য স্থাপন হয় সে এই আসরিয়ার রাজ্য। অপর এই সকল প্রাপ্ত দেশে তৃপ্ত না হইয়া নিনস বাক্ত্রিয়ার প্রতি আক্রমণ করিলেন ঐ বাক্ত্রিয়াতে জলপ্লাবনের পর মনুষ্য বর্গের আদি বসতি হয় এই অনুমান আমরা পূর্ব্বে লিখিয়াছি। নিনস বারম্বার অকৃতকার্য্য হইয়া অবশেষে তাঁহার এক জন সেনাপতির স্ত্রী সমিরামার সহায়তাতে ঐ দেশ জয় করেন। তদনন্তর ঐ স্ত্রীকে তিনি বিবাহ করেন। তাঁহার মরণোত্তর সে স্ত্রী সিংহাসনোপবিষ্টা হইয়া স্বীয় রাজধানী বাবেলনে সংস্থাপন করত অতিসুদৃশ্য অট্টালিকাতে তাহা সুশোভিত ও দর্লঙ্ঘ্য প্রাচীরে দৃঢ় করিলেন। তাঁহার স্বামী দিগ্বিজয়করণের যে উদ্যোগ করিয়াছিলেন তদনুরূপ উদ্যোগকরত সিন্ধু নদীর পশ্চিম তীরে শত্রু মাত্র না দেখিয়া অতিমহাসৈন্য সংগ্রহকরণপূর্ব্বক হিন্দুরদের প্রতি আক্রমণার্থ ঐ নদী পার হইলেন এমত কথিত আছে। ইতিহাস বেত্তারা তাঁহার সৈন্যের সংখ্যা যদ্রূপ লিখিয়াছেন তাহা বিশ্বাস যোগ্য হয় না তথাপি তাহাতে এই উপলব্ধি হয় যে তৎকালপর্য্যন্ত যে সকল যুদ্ধযাত্রা হইয়াছিল তন্মধ্যে ইহা সর্ব্বাপেক্ষা গুরু। কিন্তু সমীরামা ও তাঁহার সঙ্গি সৈন্য গণ পরাজিত হইল। কেহ লেখেন যে তিনি ঐ যুদ্ধেই মারা পড়েন অন্যে লেখেন বিপদগ্রস্ত হইয়া তিনি স্বীয় রাজ্যের মধ্যে প্রত্যাগতা হইলে সিংহাসনভ্রষ্ট হইলেন। হিন্দুশাস্ত্রে দেবতা ও অসুরেরদের যে যুদ্ধবিবরণ লিখিত আছে তাহাই এই যুদ্ধ এমত অনুমান অসম্ভব নয়। আমরা পূর্ব্বে লিখিয়াছি যে মনুষ্যবর্গের এক শ্রেণি বাক্ত্রিয়াতে অবস্থিতি করিয়া ক্রমেই তাবৎ পূর্ব্ব দেশব্যাপক হইল অপর শ্রেণি বাবেলনে গমন করে। এতদ্রূপে মনুষ্যবর্গের দুই প্রধান শ্রেণি সিন্ধুনদীর দ্বারা পরস্পর বিভক্ত হইল। এই অনুভব যদি সত্য হয় তবে উপরি লিখিত যুদ্ধ মনুষ্যেরদের আদি সম্প্রদায়দ্বয়ের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ। অতএব হিন্দুরদের পক্ষে যাহারা যুদ্ধ করিল তাহারদিগকে হিন্দুরা যে দেবতা কহেন ইহা অকারণ নহে যেহেতুক তাঁহারা জয়ী হইলেন এবং বিপক্ষেরদিগকে তাঁহারা যে অসুর বলিয়া বর্ণনা করেন ইহাও অসম্ভব নয় কারণ এ যুদ্ধে অনেক রক্তপাত অবশ্য হইয়া থাকিবে।
সমিরামার মৃত্যু অথবা তাঁহার সিংহাসনভ্রষ্ট হওনানন্তর নিনিয়াস নামক তাঁহার পুত্ত্র সিংহাসনারোহণ করিলেন। তদনন্তর পৌর্ব্বাপর্য্যক্রমে অতিদীর্ঘশ্রেণী রাজগণ সিংহাসনাভিষিক্ত হইলেন কিন্তু তাঁহারদের রাজ্য কালের বিবরণ অনিশ্চিত। ঐ বংশের শেষ রাজা সারাদানাফল অত্যন্ত ঔদরিক তিনি বিপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে আপনাকে অক্ষম দেখিয়া এক মহা চিতা প্রস্তুত করণোত্তর তাহাতে আপনি ও আপনার পরিজন ও ধন লইয়া প্রবেশ করিয়া পুড়িয়া মরিলেন। কিন্তু আসুরীয় রাজ্য বিলুপ্তহওন এই পুরাবৃত্তের দ্বিতীয় কালের অন্তঃ পাতী।
এইক্ষণে মনুষ্যভাষার বিপর্য্যয় কালসম্পর্কীয়বিবরণ পুনর্ব্বার লিখি। তৎপ্রযুক্ত সর্ব্বসাধারণ লোকের, ইতস্তুতো গমন হয় কিন্তু বিশেষরূপে বাবেলনের পশ্চিম দিগস্থ প্রদেশে। মেজরাইম এক দলের প্রভু হইয়া মিসর দেশে যাত্রা করেন অনুমান হয় যে বাবেলনে নিমরােদের স্বীয় রাজ্য স্থাপনের পঞ্চদশ বৎসরপরে সেই স্থানে পঁহুছেন। মিসর দেশ জলপ্রায় দেখিয়া তিনি তথায় বসতি করিলেন এবং দেশের প্রথম রাজা হইলেন এমত কথিত আছে। কালক্রমে ওসৈরিস নামে বিখ্যাত হইয়া তিনি দেবতার ন্যায় পূজ্য হইলেন। সাত পুত্র রাখিয়া তিনি পরলােক গত হন কথিত আছে যে ঐ রাজ্যের সপ্ত অংশে ঐ সাত ভ্রাতা রাজ্য করেন। তন্মধ্যে, পাথ্রসিম অর্থাৎ থিঅথ সর্ব্বাপেক্ষা বিখ্যাত উক্ত আছে তিনি পিতার মুন্সী ছিলেন। তিনি বিদ্যা ও জ্ঞানের অনুশীলনে অত্যন্ত রত এবং কেহ২ এমত কহে যে মিসর দেশে ব্যবহৃত অক্ষর স্রষ্টা তিনিই। এবং ব্যবস্থা স্থাপন ও তদ্দেশীয় ভাষার পারিপাট্য ও মিসর দেশে আগত ব্যক্তিরদের মধ্যে ধর্ম্মবিষয়ে যে প্রথম আচরণ হইতে লাগিল তাহার সুনিয়ম করেন। জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়েও বিশেষ মনােযােগী হন। বাস্তবিক তাঁহার বৃদ্ধি ও পরহিতৈষিতার এমত বাহুল্য ছিল যে উত্তর কালে পরােপকারক তাবদ্বিদা যে তিনিই সৃষ্টি করেন এমত ক্রমাগত কথিত হইয়া আসিতে লাগিল ইহাতে তাঁহার নামের বিষয়ে ধাঁধা লাগিয়াছে এবং কোন ইতিহাসবেত্তা অনুমান করিয়াছেন যে ঐ নামযুক্ত নানাকালে নানা ব্যক্তি ছিলেন। গ্রীকেরদের মধ্যে হর্ম্মি সনামে বিখ্যাত আধুনিকেরদের মধ্যে হর্ম্মিগত্রিসমি জিষ্টসনামে তাঁহার অত্যন্ত ব্যাপ্ত অথচ নিগূঢ় খ্যাতি হইয়াছে।
এতৎসময়ে বাবেলনহইতে নিসত ব্যক্তিরদের দ্বারা অন্যান্য জাতিউৎপন্ন হইল বিশেষতঃ কেহ কনআন দেশে কেহ আরব দেশে কেহ পারসী দেশে কেহ বা আসিয়াতে গিয়া বসতি করেন কিন্তু বাবেলনের পূর্ব্ব দিগ্গামি ব্যক্তিরদের বিষয়ে কোন বিবরণ আমারদের নাই।
অক্ষরের উৎপত্তিবিষয়ক অনুমানের শেষ নাই। হিন্দুরা কহেন যে সিন্ধুনদীর পূর্ব্বে চীনীয় অক্ষরব্যতিরেকে তাবদক্ষরের মুল যে দেবনাগর অক্ষর তাহা দেবদত্ত। অতএব ঐ অক্ষরের অতি নিগূঢ়োউৎপত্তিবিষয়ে আমারদের স্পষ্ট করিয়া লিখনের সাধ্য কি। অতএব অনুসন্ধানের ফলের সৎসম্ভাবনার স্থান অর্থাৎ সিন্ধুনদীর পশ্চিমদিগ অবলোকন করিয়া এই নির্দ্ধারণ হয় যে নিমরোদের পরমায়ুর পর বিলষ বাবেলনে জ্যোতিঃশাস্ত্রের গণনা প্রথমারম্ভ করেন ঐ গণনা ক্রমে২ লিখিত হয় এবং তাহার অনেক শত বৎসর পরে সিকন্দর শাহ জয়ী হইয়া ঐ নগরে প্রবেশ করিলে তাঁহাকে ঐ লিখিত গণনা দর্শান যায়। অতএব অতিপ্রাচীনকালীন অক্ষরের এই প্রথম ব্যবহার দৃষ্টে অনুমান হয় যে অ ক্ষরের প্রথম সৃষ্টি বাবেলন নগরে হয় কিন্তু কেহ২ অন্য মত বুঝেন। অপর আরব পারসী এবি, ও ফিনিসিয়া লোকেরদের মধ্যে যে অক্ষরের ব্যবহার হয় সেই অক্ষর ঐকই অনুমান হয়। ঐ অক্ষর হয় এব্রি নতুবা তৎসদৃশ কোন অক্ষর হইয়া থাকিবে লিখনেরও রীতি দক্ষিণহইতে বামপর্য্যন্ত ছিল। ফিনিসিয়াহইতে ঐ অক্ষর গ্রীক দেশে প্রচলিত হইয়া কিঞ্চিন্মতান্তর হয় তথাহইতে ইটালির দেশে প্রবিষ্ট হইয়া তদ্দেশেও কিঞ্চিদ্বিপর্য্যয় হয়। পরে ইটালি দেশহইতে রোমাণেরদের দিগ্বিজয়ের অনুগামি হইয়া ইউরোপে ব্যাপ্ত হয়। এইক্ষণে বাবেলন নগর এমত বিলুপ্ত হইয়াছে যে সে নগর কোথায় ছিল এতদ্বিষয়েও ইদানীং বিরোধ হইতেছে অথচ সেই নগরে যে বর্ণমালার প্রথম সৃজন হয় তন্মূলক অক্ষরে এইক্ষণে ইউরোপীয়েরদের আজ্ঞা লিখিত হইয়া তাবৎ পৃথিবীতে প্রেরিত হইতেছে এমত অনুমান হয়। কিন্তু ইহা মন্ত ব্যয়ে মিসর দেশে এবং অন্যান্য কএক প্রদেশে যে লিপির ব্যবহার ছিল তাহা হৈবোগ্লিফিক অর্থাৎ প্রতিমূর্ত্তি রূপ অক্ষর। কিন্তু এই অক্ষর কিরূপে উৎপন্ন বা কি রূপে প্রচলিত হয় ইহাই অনুসন্ধান করা আমারদের অসাধ্য।
অপর মনুষ্য বর্গের প্রথমঅবস্থায় কি২ ধর্ম্ম প্রকার ছিল ইহার প্রাপ্ত বিবরণসকল অনিশ্চিত। মনুষ্যেরা নির্দ্দোষিত্ব হইতে পাপে পতিত হইলে পর বােধ হয় যে বলিদানের সৃষ্টি হয়। ঐ বলিদানকরণের অধিকার প্রথমতঃ প্রত্যেক বংশের অগ্রগণ্য ব্যক্তির তৎপরে পরে প্রত্যেক জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির পরিশেষে অন্য কোন মানু ব্যক্তির হস্তে তাহা অর্পিত হইয়া ঐ যাজন ক্রিয়া তাঁহার বংশে পুরুষানুক্রমে প্রচলিত হইল। এতদ্রূপে যাজক জাতির উৎপত্তি হয় ইহা সর্ব্বকালে ও সর্ব্বজাতির মধ্যে দৃষ্ট হইতেছে। জলপ্লাবনের পর কিয়ৎ কালপরপর্য্যন্ত সত্য ও জীবৎ এক পরমেশ্বরের আরাধনা চলিত ছিল কিন্তু প্রবাদেতে প্রাপ্ত এই ধর্ম্মজ্ঞান কাল প্রাবল্যে ক্রমে হ্রাস হইল এবং ঈশ্বরের আরাধনাতে মনুষ্যবর্গ স্বীয়২ কল্পনা মিশ্রিত করাতে ক্রমেই অতিঘোরতর দেবপূজায় লিপ্ত হইল। প্রতিমা পূজা ভারতবর্ষের মধ্যে কোন সময়ে প্রথম ব্যবহার হয় ইহা আমরা নিশ্চয় কহিতে পারি নাই। অনুমান হয় যে ভারতবর্ষের মহামুনিগণ যে দর্শন শাস্ত্র রচনা করেন তাহার অনেক কাল পরে যেহেতুক দেবতারদের বিশেষ যে নাম এইক্ষণে লোকেরদের মধ্যে সর্ব্বত্র ব্যবহৃত ঐ সকল নাম হিন্দুরদের মধ্যে মহা বীর ও মহামুনিরদের কালে ব্যবহার ছিল না। কিন্তু পৃথিবীর পশ্চিম ভাগে ধর্ম্মের অপকর্ষতার বিশেষ চিহ্ন দৃষ্ট হয়। যে বাবেলনীয়েরা প্রথম জ্যোতির্জ্ঞ ছিলেন অনুমান হয় যে তাঁহারাই প্রথম দেবপূজক হন। বোধ হয় যে গ্রহাদিচারের গণনা করত পরমেশ্বরের শক্তি তাহাতে আরোপ করিয়া ঐশ্বরী সেবা তাঁ হারদিগকে করিতে লাগিলেন এতদ্রূপে চন্দ্রসূর্য্য নক্ষত্রাদির পূজার ব্যবহার হইল। ইহার পর বীর ও বুদ্ধিমান পুরুষ ও ভূপতিরদিগকে দেবজ্ঞান করিয়া পূজার প্রচার হয়। মনুষ্যকে ঈশ্বর জ্ঞান করণের যে প্রথম কার্য্য ইতিহাসের মধ্যে প্রাপ্ত হওয়া যায় তাহা কালদীয় জ্যোতিঃ শাস্ত্রের স্রষ্টা বিলষের বিষয়ে। তাঁহার সম্ভ্রমার্থ এক স্তম্ভ গ্রথিত হয় এবং লােকেরা তাঁহাকে বেল দেবতা কহিয়া আরাধনা করিতে লাগিল। তৎপর পঞ্চভূত ও উচ্চপর্ব্বত ও বৃহন্নদীর পূজার সৃষ্টি হইল পরিশেষে মনুষ্যের নানা অপরাধ ধর্ম্মজ্ঞান হইতে লাগিল। এতদ্রূপে সত্য পরমেশ্বরের তত্তব এবং ঈশ্বরকে পরমার্থরূপে সেবা করা আবশ্যক এই জ্ঞান লুপ্ত হইলে লােকেরা ক্রমশঃ অযুক্ত ধর্ম্মে পতিত হইয়া অবশেষে এই জ্ঞান হইল যে অপকৃষ্ট এমত কোন বস্তু নাই যে তাহা পূজা ও সেব্য নয়। অপর মনুষ্য প্রথম ঈশ্বরীয় সম্ভ্রমপ্রাপ্ত হওনের কিঞ্চিৎকাল পরে ঈশ্বর অনুগ্রহ করিয়া বাবেল দেশ নিবাসি অবরাহামকে আহ্বান করিয়া কহিলেন যে তোমারও তোমার বংশের স্থানে ঈশ্বরবিষয়ক সত্য জ্ঞান অর্পিত করি। কেহ২ কহেন যে অবরাহাম কালদিয়েরদের ধর্ম্মবিষয়ক নূতন কল্পনার প্রতিকূলাচারী হইয়া দেশ বহিষ্কৃত হন। পরে ঈশ্বর তাঁহাকে কনআন দেশে গমন করিতে আজ্ঞা করিয়া তদ্দেশ তাঁহার সন্তানেরদিগকে দান করিতে অঙ্গীকার করিলেন। তিনি আরো প্রতিজ্ঞা করিলেন যে কাল সম্পূর্ণ হইলে তোমার সন্তানেরদের মধ্যে আপনাকে বলিদান করণের দ্বারা পাপে পতিত মনুষ্য জাতিকে উদ্ধার করণার্থ মসীহা অর্থাৎ ঈশ্বর অবতীর্ণ হইবেন। অবরাহামের য়িস খাক পুত্র জন্মিল এবং য়আকুবের বার সন্তান হইতে য়িহুদীয়েরদের বার গো
ষ্ঠী জন্মে। অনন্তর দুর্ভিক্ষসময়ে য়আকুব সপরিবারে মিসরদেশে গমন করেন এবং তাঁহার যে য়ুসফ পুত্র তদ্দেশের প্রধান মন্ত্রির পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন তিনি তাঁহারদিগকে গোসেন প্রদেশে স্থাপন করেন। তদনন্তর চতুর্দ্দিকস্থ দেশীয়েরা আরাে দেবপূজাতে অত্যন্তাসক্ত হইলে সত্য ঈশ্বরের জ্ঞান প্রায় কেবল য়িশ্রাএলের বংশে রহিল।
কালক্রমে বাবেলনহইতে গমনশীল ব্যক্তিরা আসিয়ার পশ্চিম সীমাবর্ত্তি তীর পর্য্যন্ত গিয়া যেমন তেমন ডোঙ্গা অবলম্বনে সম্মুখবর্ত্তি গ্রীশ দেশ অধিকার করিল অনুমান হয় অন্যেরা ঘূরিয়া থ্রেস দেশ দিয়া স্থলপথে ঐ স্থানে পঁহুছে। তাহারা তদ্দেশ মহারণ্যময় দেখিয়া ক্রমে২ বন কাটিতে লাগিল। গ্রীশের দক্ষিণাংশের আদি বসতিকারকেরদের নাম পিলাসগি উত্তরাংশবর্ত্তিরদের নাম হেলেনিস অনুমান হয় যে অবরাহামের সমকালে ইনাখস পিলাসগিরদের প্রথমবসতি স্থান আরগস নগর নিরূপণ করেন এই প্রযুক্ত গ্রীকেরদের মধ্যে ঐ আরগস নিবাসিরা আপনারদিগকে সর্ব্বাপেক্ষা অগ্রগণ্য করিয়া মানিত। পরিশেষে হেলেনিয়েরা পিলাসগীরদের উপর আক্রমণ করিয়া তাহারদিগকে দুরীকরণ পূর্ব্বক আপন নাম ঐ তাবদ্দেশে দিলেন।
বোধ হয় যে এই হেলেনীয় জাতি দেশের মধ্যে মূলীভূত হইয়া তদ্দ্বারা চারিশাখা জন্মিল বিশেষতঃ ডোরিক ও ইয়োনিক ও এয়োলিয়ন ও আটিক এবং তদ্দেশে উত্তরকালে রাজব্যবহারের অনেক পরিবর্ত্তন হইলেও ঐ চারি বংশের বিশেষ লক্ষণ সকল বিলুপ্ত হইল না। কিন্তু যে অতিসভ্য আগত ব্যক্তিরদের বিষয়ে এই ক্ষণে আমরা বর্ণনা করি তাহারা ঐ হেলেনীয় বংশের পরাক্রম বিনাশ করে।
এইক্ষণে মিসরদেশবিষয়ক পুনঃ প্রস্তাব করিয়া আমা রদের অবশ্যই ইহা স্বীকার করিতে হইবে যে তাহার প্রাচীন পুরাবৃত্ত সকল অতিঘোরাল। কিন্তু তদ্দেশে বিদ্যার প্রথম অত্যন্তানুশীলন এবং সভ্যতার আচার ব্যবহার সকল প্রথমই প্রচার হয় ইহার প্রচুর প্রমাণ আছে। যাহাতে মনুষ্যের আচার প্রভৃতির সৌষ্ঠব হয় তদ্বিষয়ে ঐ মিসর দেশ তৎকালীন পৃথিবীস্থ লোকেরদের পিতা ও শিক্ষকের ন্যায় ছিল। অন্যান্য দেশাপেক্ষা মিসরদেশে যে প্রথম সভ্যতাপ্রভৃতি হয় সে তদ্দেশের স্বাভাবিক গুণেতেই। আফ্রিকা দ্বীপে মিসরদেশ ভিন্ন আর কোন দেশে গমনাগমনোপযুক্ত দীর্ঘ নদী নাই। গঙ্গার সদৃশ নীলনামে ঐ নদীর তীর প্রতিবৎসরেই মগ্ন হয় এবং তৎপ্রযুক্ত পলিপড়াতে তত্রস্থ ভূমি সকল অতি তেজাল হয়। আফ্রিকা ও আসিয়ার মধ্যে ব্যবহার্য্য পথ কেবল ঐ মিসরদেশ ছিল তাহাতে অতিপ্রাচীনকালে ঐ মিসর দেশে মহাবাণিজ্য হয় এবং ঐ বাণিজ্য দেশের সমৃদ্ধতার এক বিশেষ কারণ। অপর তদ্দেশে দক্ষিণহইতে উত্তরদিগে বসতির শ্রেণী চলে। ভারতবর্ষে বাহ্মণ যেমন বিশেষ ও মান্য জাতি তেমন মিসরদেশে যাজকেরা ছিলেন এবং এমত বোধ হয় যে তাঁহারাই ঐ বসতি করান। মিসর দেশের যে অতিউর্ব্বর অংশ সে উত্তর ভাগ অর্থাৎ যে স্থানে নীল নদীর সমুদ্রের সঙ্গে সঙ্গম হয়।
অনুমান হয় যে ঐ দেশে মিজরাইমের প্রথম বসতির অবধি খৃীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ১৬০০ বৎসর পূর্ব্বপর্য্যন্ত পঞ্চবিংশতি রাজা রাজ্য করেন। ঐ ষষ্ঠদশ শকের সময়ে কোন২ ব্যক্তির অনুমানে এক মহা দল আরবীয়েরা উত্তর মিসরের অতিউর্ব্বর প্রদেশে আক্রমণ করিয়া নগর ও গ্রাম দগ্ধ এবং লোকেরদের বধ ও তাবদ্দেশে উচ্ছিন্ন করে। এই জয়শীল বংশ্যেরা মিসর দেশে উত্তর কোণে গোসেন প্রদেশে স্থাপিত য়িশরাএলের বংশ্যেরদিগকে অতিশয় তাড়না ও ক্লেশ দিল। অবশেষে ঈশ্বর অনুগ্রহ করিয়া ঐ দাস্য ভবন স্থানহইতে কনআন দেশে তাহারদিগকে পূর্ব্ব দত্ত অধিকারে লইয়া যাওনার্থ মোশহকে প্রাদুর্ভূত করিলেন। তাঁহার প্রদর্শকতাধীনে এবং ঈশ্বরের আনুকুল্যে য়িহুদীয়ের স্ত্রীবালক ব্যতিরেকে ছয়লক্ষ লোক মিসর দেশহইতে পলায়ন করিল কিন্তু মিসর দেশের মোহিত রাজা ফরওহ্ তাহারদের পশ্চাৎ ধাবমান হইলে তাঁহার তাবৎ সৈন্য সুফ সমুদ্রে মারা পড়িল পরন্তু ঈশ্বরের আনুকূল্যে য়িশ্রাএলের বংশেরা নিরুদ্বেগে উত্তীর্ণ হইল। অপর যাত্রা করত তাহারা সিনাই পর্ব্বতের তলপর্য্যন্ত পঁহুছিল ঐ স্থান ইউরোপ আসিয়া আফ্রিকার প্রায় মধ্যবর্ত্তি। সেই স্থানে বিদ্যুন্মেঘ গর্জ্জনাদি কালে ঈশ্বর উত্তর কালে হিব্রিরদের রাজনীতির বিষয় মোশহকে জানাইলেন এবং মনুষ্যজাতিকে দশআজ্ঞার ব্যবস্থা দিলেন। তদনন্তর য়িশ্রা এলীয়েরা ঈশ্বরের প্রতিকূলাচার করাতে তাহারদিগকে ঐ অরণ্যের মধ্যে চতুর্দ্দশ বর্ষপর্য্যন্ত ভ্রমণকরণের দণ্ডাজ্ঞা হইল। পরে মোশহের লোকান্তর হইলে যুদ্ধকর্ম্মে অতি নিপুণ য়িহোশুআ ঐ য়িহুদীয়েরদিগকে কনআনদেশে লইয়া যান এবং অনেক তুমুল যুদ্ধ করিয়া তাঁহারা ঐ দেশ অধিকার করেন।
ধর্ম্মপুস্তকে এই দেশ কনআন নামে বিখ্যাত তাহা প্রাচীন ফিনিসিয়ার এক অংশ এবং তৎকালে পৃথিবীর অতিসভ্যস্থানের মধ্যে গণ্য ছিল। অতিপ্রাচীনকালে হামের সন্তানেরা বাবেলনের মাঠহইতে আগত হইয়া তথায় বসতি করেন ঐ দেশ ভূমধ্যস্থ সমুদ্রের পূর্ব্বতট ব্যাপী এবং তাহার দক্ষিণ সীমায় মিসর দেশ। অপর মিসরদেশীয়েরদের যে সভ্যাচার ছিল তাহা শীঘ্র ফিনিসিয়াতে প্রবিষ্ট হইয়া সেখানে ঐ আচরণের অধিক ঔৎকর্ষ হইল। লিপি বিদ্যাবিষয়ে ঐ স্থানে লোকেরদের বিশেষ মনোযোগ ছিল। তাহার এক কারণ এই হইতে পারে যে ফিনিসিয়ীয়েরদের অতিবিশাল বাণিজ্য ব্যাপারে লিপির অত্যাবশ্যক ছিল। ফিনিসীয়ীয়েদের সমুদ্র তটে দীর্ঘ শ্রেণীরূপ বসতিহওয়াতে জলপথে বাণিজ্যেতে অতি রত হইলেন এবং তৎপ্রযুক্ত দূর২ দেশ অনুসন্ধানার্থে গমন করিয়া স্ব২ ধন ও জ্ঞানের অত্যন্ত বৃদ্ধি করিলেন এবং অতিসাহসিক কর্মমে প্রবৃত্তহওয়াতে তাঁহারদের মন অত্যুৎসাহি হইল। এই সকল কারণে ফিনিসীয়ীয়েরা দ্বীপাভ্যন্তরনিবাসি লোকাপেক্ষা প্রতাপশালী হইল এবং তাঁহারদের রাজধানী টয়র সমুদ্রের রাণীর নামে বিখ্যাত হইল।
যে আরবীয়েরা মিসর দেশে প্রবিষ্ট হইয়া তদ্দেশীয়েরদের সঙ্গে অন্যায়াচরণ করিতে লাগিল তাহারা থিব্স রাজধানীনিবাসি ঐ দেশের দক্ষিণাংশের রাজা কর্ত্তৃক দূরীকৃত হইলেন। তাহার কিয়দ্বৎসর পরে মিসর দেশে সর্ব্বাপেক্ষা মহামহিম রাজা সিসস্ত্রিস বিরাজমান হইলেন। তাঁহার বিষয়ে যাহা লিখিত তাহা সকল বিশ্বাসযোগ্য নহে কিন্তু তাঁহার রাজ্যকাল মিসরদেশের সর্ব্বাপেক্ষা ঐশ্বর্য্যশালী ইহাতে সন্দেহ নাই। পৃথিবীর যে২ ভাগ তৎকালে লোকেরা অবগত ছিল তিনি জল ও স্থল পথে তাহার সীমান্তপর্য্যন্ত যুদ্ধ করেন। তিনি বৃহদট্টালিকা গ্রন্থন করিলেন এবং প্রজারদের মধ্যে সর্ব্ববিষয়ে এমত উৎসাহ জন্মাইলেন যে তাঁহার মরণোত্তরও ঐ উৎসাহ নিবৃত্ত হইল না।
সিসস্ত্রিসের পদস্থেরদের দ্বারা যে আরাবীয়েরা তাড়িত হন তাঁহারদের উপদ্রবে মিসর দেশের অনেক অতিপ্রসিন্ধ লোকেরা দেশবহির্ভূত হইয়া অনেক অনুচর লইয়া যে দেশে অল্প নিবাসি তথায় নূতন বসতির নিমিত্তে গ- মন করিলেন। এতদ্রূপে মিসর দেশে প্রচলিত সভ্য ব্যবহার অসভ্য দেশের মধ্যে প্রবিষ্ট হইল এবং ঐ সৌষ্ঠব রূপ বীজ অতি তেজালরূপে বন্ধিত হইয়া কএক শত বৎসরানন্তর মিসর দেশীয়েরদের সদাচার গুণপ্রভৃতিও তদ্দুষ্টে লঘু বোধ হইল।
এই পূর্ব্বায়তন ত্যাগি ব্যাক্তিদের মধ্যে সিক্রপ্স অগ্রগণ্য তিনি ও তাঁহার সহগামি ব্যক্তিরা গ্রীক দেশে গমন পূর্ব্বক আটিকা দেশে বসতি করেন এবং মিসর দেশে প্রচলিত যে বিদ্যাদি তাহা তদ্দেশীয় অসভ্যজাতীয়েরদিগকে উপদেশ করেন এবং হল প্রবাহাচার শিক্ষা করাণ ও ব্যবস্থা নিরূপণ করেন এবং উত্তরকালে আটিকা দেশের যে সমৃদ্ধতা সম্পন্ন হয় তাহার মুল স্থাপন করেন।
সিক্রপ্সের ত্রিষষ্টিবর্ষানন্তর কাডমস অন্য এক দল স্বীয়াতন ত্যাগি ব্যক্তি লইয়া আটিকার সন্নিহিত থিব্স স্থানে উপস্থিত হইলেন। যে সময়ে সিক্রপ্স মিসর দেশ পরি ত্যাগ করেন তৎসময়ে কাডমসের পিতাও তদ্দেশ ছাড়িয়া ফিনিসিয়াতে বসতি করেন তৎপ্রযুক্ত কাডমস মিসর ও ফিনিসিয়া এই উভয় দেশীয় প্রচলিত বিদ্যাপ্রাপ্ত হইলেন। পরে বেওসিয়ায় আগত হইয়া তদ্দেশীয় অসভ্য প্রজাগণকে দমন করিয়া থিবস নগর বসান কালক্রমে সে নগর ঐ প্রদেশের অন্য২ নগরাপেক্ষা সমৃদ্ধ হইল। তিনি ফিনিসিয়া দেশের বর্ণমালা গ্রীক দেশে প্রথম চলিত করেন অনন্তর ঐ বর্ণমালহইতে ক্রমে২ গ্রীক অক্ষর সৃষ্টি হয় এবং পরিশেষে তাহার বামাবর্ত্তরূপে লিখনের ব্যববার হইল। গ্রীক কবি ও ইতিহাসবেত্তা ও বিদ্বদ্বর্গের যে অমরণীয় গ্রন্থ পশ্চাজ্জাত লোকেরদের বিদ্যার সৌষ্ঠব হইলেও অদ্যপি আমরা সর্ব্বাপেক্ষা অত্যুৎকৃষ্ট আদর্শের ন্যায় জ্ঞান করি ঐ২ গ্রন্থ তদক্ষরে লিখিত।
ইহার সমকালে ডানাস মিসর দেশহইতে আগত হই য়া আরগসে বসতি করিয়া তদ্দেশের রাজনীতির পারিপাট্য করেন। অপর বােধ হয় যে ঐ সময়ে বা তাহার কিঞ্চিদনন্তর গ্রীকের অন্যান্য রাজ্যে রাজশাসনের নিয়ম নির্ব্বন্ধ হয়। এতদ্রূপে সিমর দেশহইতে তাড়িত মহানুভব ঐ পুরুষেরদের দ্বারা গ্রীক দেশ ক্রমে অসভ্যাবস্থা হইতে উদ্ধার পাইল এবং সিক্রপ সের পর দুইশত বৎসরের মধ্যে ভাবি মহত্ত্বের বীজ তাহারদের উর্ব্বরা ভুমি তে রােপণ হয়। এই সৌষ্ঠবের উদয়কালে আমফিক্টিয়ন অর্থাৎ সর্ব্বসাধারণ দেশের সভা স্থাপিত হয়। ঐ সভা আমফিক্টিয়ননামক এক ব্যক্তি থর্ম্মোপিলেতে নিযুক্ত করিলেন এবং গ্রীকের প্রত্যেক প্রদেশহইতে এই সভাতে লোক সমাগত হওয়াতে গ্রীক দেশীয়েরদের সাধারণ স্বভাব শক্তিমান হইল এবং সাধারণ উপকারক বিষয়ে তাবৎ গ্রীকেরদের একেবারে নির্ব্বন্ধ হইল।
কোন২ ইতিহাসবেত্তা অনুমান করেন যে মিসর দেশীয় পূর্ব্বায়তনত্যাগি এই সকল ব্যাক্তির সমকালে গ্রীকের দের দেবপূজার নিয়ম সৃষ্টি হয় এবং তাহারদের বহ্মার তুল্য জুপিটর অর্থাৎ সকল দেবতার আদিপুরুষ তৎকালে আবির্ভূত হন। আরো অনুমান করেন যে তিনি ক্রিট উপদ্বীপের রাজা ছিলেন এবং তৎকালিক বােধে তিনি অত্যাশ্চর্য গুণশালী। পরে গ্রীক দেশে আগত হইয়া তদ্দেশীয় অসভ্য প্রজাগণ প্রথমতঃ তাঁহাকে বীর পুরুষের ন্যায় আশ্চর্য্য জ্ঞান করিয়া অনন্তর দেবতা বােধে তাঁহাকে আরাধনা করিতে লাগিল। ইহার সত্যাসত্যতা কহিতে আমরা অর্সমর্থ কিন্তু গ্রীকেরদের দেবগণ যে পূর্ব্বে মনুষ্য ছিলেন এবং স্বীয় পরাক্রম বুদ্ধি সাহস ও হিতৈষিতাপ্রযুক্ত লােকেরদের মধ্যে অতি মান্য হইয়া কালক্রমে তাঁহারদের বিবরণ সকল অতি ঘােরাল হইলে এবং কবিগণ উৎপন্ন হইলে তাঁহারা দেবতার শ্রেণীর মধ্যে গণ্য হইলেন ইহার সন্দেহ নাই। পরে ধর্ম্মের অতিগূঢ় বিষয় এক বিশেষ জাতীয় যাজকের হস্তে সমর্পিত হইল, এবং তাহারদিগকে বিশেষ ক্ষমতা ও নিষ্কর ভূমি প্রদত্ত হইল। ধর্ম্মগ্রন্থে লেখেন যে মিসর দেশে যাজকেরদের ভূমি কররহিত ছিল ঐ ব্যবহার ভারতবর্ষেও চলিত আছে এবং যদ্যপি কোন কাল দিয় ইতিহাস আমারদের নিকটে পঁহুছিত তবে তদ্দেশে যে তদ্রূপ ব্যবহার ছিল অনুমান হয় তাহাতে স্পষ্ট বোধ হইত। লিখন পঠনের জ্ঞান প্রায় পুরোহিতেরদেরই ছিল এইপ্রযুক্ত তাঁহারা রাজ্যের মধ্যে অত্যন্ত মান্য হইয়া যে কোন গপ্প সৃজন করাতে তাঁহারদের স্বার্থ ছিল ঐ গপ্প দেবপ্রকাশিত বলিয়া অজ্ঞান শূদ্রেরদের প্রতি প্রকাশ করিতে ক্ষম হইতেন। এবং তদ্দেশীয় পূজা ক্রিয়াসকল গ্রহাদিচারসম্পর্কীয় ছিল অতএব জ্যোতিঃশাস্ত্রে জ্ঞান কেবল ঐ পুরোহিতেরদের থাকাতে তাঁহারদের পরাক্রম লোকের উপর অতিদৃঢ় হইল। অপর ভারতবর্ষ ও মিসর ও গ্রীক ও কালদিয়ের ধর্ম্ম যে ব্রাহ্মণেরদের দ্বারা প্রচার হয় ইহার প্রচুর প্রমাণ আছে। ঐ যাজকেরদের নিত্য এই অভিপ্রায় ছিল যে ধর্ম্মবিষয় সকল গোপনে থাকে এবং ঐ গোপনীয় বিষয় লোকেরদিগকে ব্যাখ্যাকরণের অধিকার তাঁহারদেরি হয় এবং তৎপ্রযুক্ত লোকেরদের মধ্যে তাঁহারদের প্রাধান্য থাকে। অতএব পুরোহিত ভিন্ন সামান্য লোকেরদের মধ্যে অযুক্ত ধর্ম্ম ও অজ্ঞানতা এবং যাজকেরদের অসীম ক্ষমতার কারণ এই লিখিত হইল।
মিসর দেশহইতে গ্রীক দেশে আগত লোকেরদের সংস্থাপন হওনান্তর ঐ দেশ ক্রমে২ অসভ্যতা হইতে মুক্ত হয় কিন্তু তৎকালাবধি ত্রোজানের যুদ্ধপর্য্যন্ত যে সকল ঘটনা তাহা অত্যন্ত অস্পষ্ট। তথাপি তৎকালীন বিবরণের মধ্যে এক যুদ্ধ যাত্রা অতিদেদীপ্যমান আছে অ র্থাৎ আরগোনটেরদের যুদ্ধযাত্রা। থেসালিনিবাসি লোকেরা অতিপ্রাচীনকালাবধি জাহাজসম্পর্কীয় ব্যাপারে রত ছিল এবং সমুদ্রীয় সঙ্কট যাত্রাতেও তাহারদের অভ্যাস ছিল। পরিশেষে রাজবংশ্য যাশননামক এক ব্যক্তি (কি কারণে তাহা ইতিহাসে স্পষ্ট লিখিত নাই) পূর্ব্বে দৃষ্ট জাহাজসকল অপেক্ষা বৃহৎ এক জাহাজ প্রস্তুত করিয়া তৎকালীন মহোৎসাহি ব্যক্তিরদিগকে লইয়া ইউকসিন সমুদ্রে যাত্রা করিলেন তথায় অনেক দ্বৈধ কর্ম্মে প্রবৃত্ত হইয়া তিনি ও তাঁহার সমভিব্যাহারি লোকেরা কলখিস রাজার কন্যা মিদিয়াকে বলপূর্ব্বক হরণ করিয়া আনিলেন। প্রত্যাগমনসময়ে তাঁহারা অপরিচিত নানা দেশে গমন করিয়া নানা শঙ্কাজনক ও অদ্ভুত ব্যাপারে প্রবৃত্ত হইলেন। তৎকালদৃষ্টে এই যুদ্ধযাত্রা অতি সাহসিক বোধ হইল এবং কবিগণও তাহার অনেক প্রশংসা করিয়া তাহা অলীকের দ্বারা এমত আ বৃত করিলেন যে তন্মধ্যের সত্য কি মিথ্যা বা কি ইহা ভেদ করিতে অথবা সেই যাত্রার প্রকৃত ভাব বুঝতে এই ক্ষণে আমারদের ভরসা নাই। যাশন ও তাঁহার মিত্রগণকে কবিগণ দেবকুটুম্বের ন্যায় বর্ণনা করিয়া গ্রীকেরদের বীর পুরুষের মধ্যে গণনা করিলেন। যদ্যপি আমেরিকার প্রথম দৃষ্টির বিবরণ লেখনের ভার গ্রীক দেশীয় কাব্যবক্তারদের প্রতি অর্পিত হইত তবে অনুমান করি যে কলম্বস ও তাঁহার সহচর ব্যক্তিরদিগকেও দেবরূপে আরোপ করিতেন।
আরগোনটেরদের যাত্রানন্তর বেওসিয়ার প্রধান নগর থিবসের উপর গ্রীকের অন্যান্য রাজ্যস্থ লোকেরদের বিশেষ দৃষ্টিপাত হইল এমত অনুমান হয়। অন্য সপ্তদেশ অথবা নগরস্থেরা একবাক্য হইয়া তাহারদের উপর যুদ্ধ করে। ইহার কারণ স্পষ্ট লিখিত নাই এবং এই যুদ্ধ যাত্রার কোন ফল দর্শিল না কিন্তু এক সাধারণ কর্ম্ম সম্পাদনের নিমিত্ত যে এত নগরস্থেরদের ঐক্য হয় ইহাই তাহারদের সভ্যতার বৃদ্ধির এক বিশেষ প্রমাণ।
অপর এই অন্ধকারাবৃত সময়ে ক্রিট উপদ্বীপ ও গ্রীকেরদের ব্যবস্থাপক শাস্ত্রের স্রষ্টা ঐ উপদ্বীপের মিনা নামক মহানুভব রাজার বিষয়ে আমারদের বিশেষ মনন যোগ করা কর্ত্তব্য। গ্রীকের মহাদ্বীপহইতে ক্রিট কিঞ্চিদন্তরিত এবং মিসর দেশও ফিনসিয়ার সন্নিকৃষ্ট ঐ দেশদ্বয়ে যে প্রথম সভ্যতাচার হয় ইহা পূর্ব্বে লিখিত হইয়াছে এবং ঐ উভয় দেশহইতে ক্রিটের যে অত্যন্তোপকার হইয়াছিল ইহা সম্ভব। কিন্তু মিনসের সময়ের পূর্ব্বে পুরাবৃত্তের মধ্যে ঐ দেশের সম্ভ্রম রূপে বিশেষ কিছু বর্ণন নাই। ঐ রাজা হয় উত্তরাধিকারিরূপে কিম্বা জয়ের দ্বারা তদ্দেশের মুকুট প্রাপ্ত হইয়া স্বীয় প্রজাগণের সৌষ্ঠব এবং গ্রীকের মঙ্গল করিতে পরম চেষ্টিত হইলেন। তৎকালে গ্রীক দেশের চতুঃপার্শ্বস্থ সমুদ্রে সর্ব্বদা বোম্বেটিয়ার উৎ পাত হইত তিনি অতিভয়ানক এক যুদ্ধ জাহাজের বহর প্রস্তুত করিয়া বোম্বেটিয়ারদিগকে উচ্ছিন্ন করিলেন। তাঁহার প্রজাগণ অর্দ্ধ সভ্যতাবস্থায় ব্যবস্থা ও বিদ্যাহীন তারূপে কাল যাপন করিত তিনি তাহারদের মধ্যে বিদ্যাদির অনুরাগ জন্মাইলেন এবং, এমত ব্যবস্থা সংহিতার সৃষ্টি করিলেন যে হিন্দুরদের মধ্যে মনুসংহিতা যেমন মান্য তেমনি উত্তরকালে গ্রীকেরদের কর্ত্তৃক তাঁহার সংহিতা মান্যা হইল। অপর ঐ উপদ্বীপে তিনি যে সকল রাজনীতি বিধান করিলেন তাহা তাঁহার সংস্থাপিত সদ্ব্যবহারের চিরস্থায়িত্বকরণের অতি উপযুক্ত এবং গ্রীক দেশ ও মিনসের ব্যবস্থাপ্রভৃতির প্রতি গ্রীকেরা আশ্চর্য্য সমাদরপূর্ব্বক নিত্য অবলোকন করিতেন। তৎপরে কবিগণ তাঁহার আয়ুর বিবরণ সুশোভিত করিয়া জুপিটর দেবতা তাঁহার পিতা বলিয়া আরোপ করত যমালয়ের বিচারকর্ত্তৃত্বপদে তাঁহাকে নিযুক্ত করিলেন।
মিনসের মরণোত্তর গ্রীক দেশের বীরত্বপ্রধানক কালের উদয় হয়। তৎসময়ে যে অল্প ব্যবস্থা ছিল তাহাও বলহীন এবং দেশের রাজ নিয়মসকল অপক্ব অতএব বীর পুরুষেরদের বীরত্বপ্রকাশের উপায় ছিল। ইহাতে গ্রীক দেশীয় কুলীনেরদের মধ্যে মহৎ অথচ শঙ্কাজনক কর্ম্মের উৎসাহ জন্মিল এবং তৎকর্ম্মে তাঁহারা কখন২ প্রজা বর্গের মঙ্গলার্থ কখন বা নিজ কীর্ত্তি প্রকাশের নিমিত্ত প্রবৃত্ত হইতেন। কবিগণ ঐ সকল মহাকর্ম্মের বর্ণনা করিয়া তাঁহারদের বীর্য্যরূপ অগ্নি সতেজ করিলেন। বীরপুরুষেরদের মধ্যে হরকুলিস সর্ব্বাপেক্ষা বিরাজ মান তাঁহার ক্রিয়া যদ্যপি আমারদের বিশ্বাসযােগ্য হইত তথাপি তাহার বর্ণনা সমুদ্র এই ক্ষুদ্র গ্রন্থেধারণ হয় না। তাহার পর বীর্য্যবত্বে থিসিয়স গণিত তিনি ক্রিট দেশ দিয়া গমন করত মিনসের ব্যবস্থা অধ্যয়ন করিয়া স্বীয় আটিকা রাজ্যে চালিত করিলেন এবং উত্তরকালে তাহা ঐ দেশের মহিমার এক বিশেষ কারণ হইল। তাঁহার যুদ্ধব্যাপার বিষয়ে কবিগণের অনেক বর্ণন আছে কিন্তু পরহিতৈষি রাজার ন্যায় তিনি বিশেষ স্মরণীয়। তৎপরে শারীরিক ও মানসিক আশ্চর্য্য ক্ষমতাপন্ন অন্যান্য বীরপুরুষের উদয় হয় সেই ক্ষমতার দ্বারা তাঁহারা গ্রীকেরদের কখন২ মঙ্গল কখন বা অমঙ্গল জন্মাইতেন। এই বীরপুরুষের দ্বারা প্রজাগণের উচ্চতর লােকেরদের মধ্যেও মহানুভব কর্ম্মের উত্তেজনা হইতে লাগিল। দেশীয় লােকেরদের স্বাভাবিক গুণ সকল দেদীপ্যমান হইল এবং যেমন সভ্যতার বৃন্ধি হইল তেমনি নানা প্রদেশীয় নিত্য বিরােধেরও দ্রূস হইতে লাগিল। সাধারণ ধর্ম্ম ও সাধারণ কাব্য ও সাধারণ সমাজহওয়াতে তাঁহারদের সাধারণ মঙ্গলের বিষয়ে এক বাক্যতা হইল এবং যে কোন মহাকর্ম্মে তাবৎ গ্রীক জাতীয়েরা সমান উদ্যোগ করিতে পারে এ মত কর্ম্মের নিমিত্ত তাঁহারা প্রস্তুত হইলেন তৎকর্ম্ম ত্রোজানের যুদ্ধেতে উপস্থিত হয় তৎপ্রস্তাবকরণার্থে পুরাবৃত্তের দ্বিতীয় কালপর্য্যন্ত আমরা আগত হইলাম।
CHAP. III.
B. C. 2344―1184
EPOCH FIRST:―FROM THE FLOOD TO THE TROJAN WAR.
THE ark rested on Mount Ararat, which some geographers place in Armenia. It is however conjectured with more probability to have been in some part of Bactria, the region at the northwest corner of India; partly because Bactria is more centrally situated as it regards the great continent which comeprises Europe, Asia, and Africa, and partly because Scripture declares that the first journey of the family of man was from the east to the plains of Baby lon. Armenia, however, lies to the north of that region.
When the ark found a resting place, Noah and his family, by the Divine command, came forth from it, and the animante creatures it had sheltered were liberated. The earth resumed its fertility; vegetation shot forth with unusual vigour, the soil having been greatly enriched by the flood, and the surface of the globe was soon covered with a dense jungle, and filled with ferocious beasts, while the feeble band of human beings was confined to one spot. Their number gradually increased, till it became too great for them to reside together with comfort. A portion of them amounting, as is conjectured, to about 5000 persons, left the paternal abode of Noah in quest of new ha bitations. Journeying westward by slow marches, they at length reached the plain of Shinar or Babylon. The great patriarch does not appear to have accompanied them; in all probability he continue to reside near the spot where the ark had rested, and his descendants are supposed to have overspread India, China, and the surrounding nations. The colonists who had proceeded to Babylon, having reached the plain, agreed to take up their abode there, and finding an abundance of building materials, determined to erect a city, and a tower which should reach to heaven. But their pride was soon checked; for by divine interposition, their speech which was before uniform, was confounded. The labourers unable any longer to comprehend one another, were compelled to abandon the enterprize, and to disperse themselves abroad, thereby laying the foundation of the future kingdoms and empires of the west.
A number appear, however, to have remained at Babylon, and Nimrod, a man of great enterprize, probably the person who had originally conducted the colonists to Shinar, took the command of them. He was, says the Scriptures, “a mighty hunter before the Lord;” which may signify, that he led his followers against the wild beasts of the surrounding forests, for the bounds of human habitation could only be extended by extirpating the animals which occupied the woods. He afterwards founded his infant empire at Babylon, and subsequently erected other cities. The commencement of his reign is dated 2213 years before Christ; he reigned a hundred and forty-eight years, and died, as is supposed, B. C. 2065.
It was probably during the reign of Nimrod, that Ashur led a band of emigrants from Babel, and ascending the Tigris, laid the foundation of the empire of Assyria, and of its metropolis Nineveh.
Nimrod was succeeded in his government by Belus, who does not appear to have been nearly related to him. In that early age, before hereditary succession was established, the command was given to the most powerful, or the most worthy. Belus appears to have been a pacific prince, much given to study. He reigned sixty years, and passed his time in improving tillage and cultivating the science of astronomy, of which he is said to have been the in- ventor. The college of Chaldean astronomers resident in Babylon, continued for many centuries unrivalled in reputation. The death of Ashur happened about the same time as that of Nimrod. He was succeeded by Ninus, a bold, ambitious man, who began the first wars on record. Bent on enlarging his empire, he turned his arms against the kingdom of Nimrod, and subjugated it. The little states east of Babylon next felt the weight of his power, and thus arose the kingdom of Assyria, the first which grew from conquest. Not sated with these acquisitions, he made an attempt on Bactria, which we have supposed to be the original seat of man after the flood. After repeated reverses, he at length subdued that region, by the aid of Semiramis, the wife of one of his generals, whom he afterwards espoused himself. She succeeded to the throne on his death, and removed the seat of empire to Babylon, which she adorned with magnificent buildings, and fortified with strong walls. Pursuing the scheme of conquest originated by her husband, and having no enemy west of the Indus, she is said to have collected a mighty army, and to have marched across that river to attack the Hindoos. The number of her troops as given by historians exceeds all belief; yet it may serve to shew that this was perhaps the greatest military expedition which had then been undertaken. Semiramis and her host were however overcome; some maintain that she perished in the expedition; others, that returning among her people in disgrace, she was deposed. It is not perhaps an improbable conjecture that the wars between the gods and the Asoors described in the Hindoo books, have reference to this expedition. We have already supposed that while one part of the family of man remained in Bactria, and by degrees spread over the east, the other proceeded to Babylon. Thus the two main branches of population would be divided from each other by the Indus, and this expedition would constitute the first shock of arms between the two primæval races. It will not appear unreasonable, on this supposition, that the Hindoos should have represented those who warred on their sides as gods, for they were victorious; and those who fought against them as mighty giants, for the conflict must have been bloody.
After the death or dethronement of Semiramis, her son Ninyas ascended the throne; he was succeeded by a long line of kings, the record of whose reigns is very uncertain. The last of the race, Sardanapalus, a great voluptuary, finding himself unable to cope with his enemies, made a grand funeral pile, in which he consumed himself, his family, and his treasures. The extinction of the Assyrian empire belongs to the second period of History.
We now return to the period of the confusion of tongues, which occasioned a general migration, chief- ly to the countries west of Babylon. Mizraim taking the command of one band, travelled to Egypt, where he arrived, as is supposed, fifteen years after Nimrod had established his kingdom in Babylon. In Egypt he found a well-watered country, and taking up his abode there, is reputed to have been its first monarch. In process of time he came to be worshipped as a god under the name of Osiris. He left seven sons, who are said to have governed seven sections of the kingdom. Among these the most celebrated was Pathrusim or Thyoth, reputed to have been his father's secretary. He applied himself diligently to the cultivation of arts and sciences, and to him is ascribed the invention of the characters used in Egypt. He instituted laws, improved the language, gave form to the religious usages which began to grow up among the Egyptian colonists, and also applied diligently to the study of astronomy. In short, he was a man of such universal genius and benevolence, that the invention of every useful art was ascribed to his skill; a circumstance which has thrown a mystery around his name, and led some historians to conjecture that there were several persons of that name in different ages. By the Greeks he was termed Hermes; among the moderns, he has acquired a far extended but mystical renown, under the name of Hermes Trismegistus.
Other nations were formed about this time out of the Babylonian emigrants. Some settled in the land of Canaan, some in Arabia, some in Persia, and others in Asia Minor; but of the emigrations to the east of Babylon we have no account.
Respecting the origin of letters, there have been conjectures without end. The Hindoos describe the Deva Nagri, the parent of every alphabet east of the Indus, (the Chinese excepted) as the gift of the gods; it is not therefore for us to explain the mysterious origin of this character. Turning to a more promising field, we find that to the west of the Indus Belus originated astronomical calculations at Babylon in the age succeeding that of Nimrod. Those observations were duly recorded, and were shewn many centuries after to Alexander the Great, when he entered the city as a conqueror. Though some have formed a different opinion, we naturally conclude from this early notice of the use of letters, that they were invented in Babylon. It is also conjectured that the same character was in use among the Arabians, Persians, Hebrews, and Phenicians. These letters were either the Hebrew or some character resembling that alphabet, and like it written from right to left. From Phenicia the character passed into Greece, and received some modification; from Greece into Italy, where it underwent fresh alterations; and from Italy it spread with the Roman conquests over Europe. Thus, by a conjecture not improbable, we trace the characters which now convey the mandates of Europe throughout the globe, to the alphabet originally invented in the city of Babylon, the very site of which is now a matter of dispute. We ought however to remark that the characters used in Egypt and in several other countries, were hieroglyphic; but to trace the origin or diffusion of this character, is beyond the means which we enjoy.
Of the forms of religion which prevailed in the infancy of the world, we have but indistinct records. Soon after the fall of man from a state of innocence, sacrifices appear to have been instituted, which were at first offered by the head of the family, afterwards by the chief of each tribe, and eventually by some person of distinguished honour, in whose family the priesthood became hereditary. This appears to have been the origin of the sacerdotal caste, which is traced through all ages and all nations. For some time after the flood, the worship of one living and true God prevailed: but this religious knowledge derived from tradition becoming gradually more and more faint, men began to introduce their own fancies into divine worship, and were gradually led into gross idolatry. At what period the worship of images began to be practised in India we cannot discover; it was probably long after the systems of philosophy framed by the sages of the east, since the idolatrous names now universal, were unknown either in the heroic or the philosophical age of India. In the west however, the period of religious declension is more distinctly marked. The Babylonians, who were the first astronomers, appear also to have been the first idolaters. From calculating the motions of the heavenly bodies, they were possibly led to attribute a divine power to them and then to offer them divine homage. Hence the worship of the sun, moon, and stars. To this succeeded in all probability the worship of heroes, sages, and kings; the first instance on record of the deification of a man being that of Belus the father of Chaldean astronomy. A pillar was erected to his honour, and the people began to worship him as the god Bel. Then followed the worship of the elements, of high mountains, and great rivers; and finally the deification of various vices. Thus men having lost the knowledge of the true God, and the obligation of a spiritual worship, were led step by step into superstition, till nothing was considered too mean to be an object of religious adoration.
Within a short period of the time when a mortal was first invested with the honours of deity, it pleased God to call Abraham, then resident in Babylonia, that with him and his posterity he might deposit the true knowledge of himself. Abraham, according to some, withstanding the Chaldean innovations of religion, was expelled the country. God then directed him to move into the land of Canaan, and engaged to bestow it upon his descendants. He also promised that from his posterity should be born, in the fulness of time, the Messias, or God incarnate, to redeem the lapsed family of man by the sacrifice of himself. To Abraham was born Isaac; to Isaac, Jacob; and from the twelve sons of Jacob, arose the twelve tribes of the Jews. Jacob passed into Egypt with his family in a season of famine, and was placed by his son Joseph, who had risen to the rank of prime minister of Egypt, in the land of Goshen. The surrounding nations became more gross in their idolatries, and the knowledge of the true God was confined more and more strictly to the family of Israel.
A portion of the emigrants from Babylon found their way at length to the sea which bounds Asia on the west, and embarking in rude barks took possession of the opposite country of Greece. Some are also supposed to have reached it by a circuitous journey overland, through Thrace. They found the country a vast wilderness, which they gradually reclaimed. The original settlers in the southern part of Greece were called Pelasgi, and those in the north, Hellenes. The first seat of the Pelasgi was fixed at Argos Inachus, about the time of Abraham; hence Agros claimed priority among the Greeks. At length the Hellenes rose upon the Pelasgi, and driving them from their settlements, gave their own name to the whole country.
This Hellenic tribe appears to have taken deep root in the country, and to have branched out into four stems, called, the Doric, the Ionic, the Æolian, and the Attic, which retained their distinctive character through all the subsequent changes of government. The authority of the Hellenes was however gradually extinguished by the more civilized emigrants, of whom we shall shortly speak.
Returning now to Egypt, we are obliged to confess that its early history is very obscure; but we have abundant proof that it was the first country in which learning was eminently cultivated, and the arts and civilization flourished. In all that embellishes life, it became the parent and instructor of the infant world. The early civilization of Egypt was promoted by its natural advantages. It is the only country in Africa which possesses a long navigable river. This stream, the Nile, annually overflowing its banks, like the Ganges, leaves a deposit which abundantly enriches the soil. Egypt moreover was the only point of communication between Africa and Asia, and at a very remote period, engaged extensively in commerce, to which much of its grandeur must be attributed. The progress of population in Egypt was from south to north; and the priesthood, who like the brahmins were a distinct and honourable caste, appear to have guided these emigrations. The most fertile portion of Egypt is the northern, through which the Nile enters the sea.
Twenty-five kings are supposed to have governed it from the first settlement of Mizraim, to the year B. C. 1600. About that time, a host of Bedouin Arabs, as some suppose, burst upon the fertile provinces of Northern Egypt, burnt its towns and hamlets, massacred its inhabitants, and spread desolation over the land. From this race of conquerors, the children of Israel, who had been settled in the land of Goshen, the northeast corner of Egypt, experienced a bitter persecution. At length it pleased God to raise up Moses, to lead them from the land of bondage to their destined possessions in Canaan. Under his guidance, and under the protection of the Almighty, the Israelites, six hundred thousand in number, besides women and children, fled from Egypt, and were persued by its infatuated monarch Pharaoh, whose army perished miserably in the Red Sea, while the Israelitish tribes passed over through a miraculous interposition. In the course of their journey they arrived at the foot of Mount Sinai, almost the central spot between Europe, Asia, and Africa; and there it pleased God, amidst the concussion of the elements, to reveal his will to Moses as it regarded the future constitution of the Hebrews, and to give his law of the Ten Commandments to mankind. As a punishment for their subsequent rebellion, the Israelites were condemned to wander forty years in the wilderness; and Moses having died, Joshua, an experienced warrior, conducted them to the land of Canaan, of which, after many severe engagements, they took possession.
This country, called in Scripture Canaan, was a portion of the ancient Phenicia, at that time one of the most civilized parts of the world. It was very early peopled by emigrants from the plains of Babylon, of the descendants of Ham. It stretched along the eastern shore of the Mediterranean, having Egypt for its southern boundary. The improvements made in Egypt were rapidly introduced into Phenicia, and possibly carried to higher perfection. Here the art of writing was cultivated with peculiar assiduity, which may partly have arisen from the necessity of written documents in the very extensive commerce which the Phenicians carried on; for enjoying a long line of coast, they engaged largely in maritime traffic, which led them to explore distant regions, and brought them a great accession both of wealth and knowledge, while their minds were inured to bold enterprise. It was owing to these circumstances that the Phénicians attained a degree of importance, to which the inland nations were strangers; and that their chief city, Tyre, acquired the title of Queen of the Ocean.
The Arabs who had entered Egypt and oppressed its inhabitants, were soon after expelled by the king of the southern part of the kingdom, whose seat was at Thebes. Within a few years, there arose in Egypt the mightiest monarch that had ever filled its throne, Sesostris. All that is recorded of him it is not possible to credit; but there can be little doubt that his reign was the proudest period of Egyptian history. He carried his arms by land and sea to the remotest borders of the then known world. He raised the most stupendous monuments, and gave an impulse to the national character, which continube long after his death.
The oppressions of the Arab conquerors who were expelled by the immediate predecessors of Sesostris, drove from Egypt some of its most eminent citizens, who departing with numerous followers sought new abodes in countries but imperfectly settled. Thus the civilization prevalent in that country was diffused over regions then barbarous; and the seeds of improvement springing up with amazing vigour, in a few centuries cast even the arts and acquirements of Egypt into the shade.
Among these emigrants Cecrops appears to have been the earliest. He and his followers passed over into Greece; and settling in Attica, introduced among its wild tribes the knowledge of the Egyptians, taught them the use of the plough, instituted laws, and laid the foundation of that grandeur which Attica subsequently attained.
About sixty-three years after Cecrops, Cadmus arrived at Thebes, the neighbour of Attica, with another band of emigrants. His father quitted Egypt at the same time with Cecrops, but settled in Phenicia, by which means Cadmus acquired, in addition to the knowledge prevalent in Egypt, that which was cultivated in Phenicia. Coming into Bœotia, he subdued its rude inhaditants and founded the city of Thebes, which gradually became the most flourishing city in the province. He introduced the Phenician alphabet into Greece. This alphabet was gradually moulded into a Grecian form, and in time came to be written from left to right, and with it were recorded those immortal productions of the Greek poets, historians, and philosophers, which, notwithstanding the improvements of succeeding ages, still continue the purest models of composition.
About this time also, Danaus coming from Egypt settled in Argos, which he brought under a regular form of government. It appears highly probable that at the same period, or shortly after, the other states of Greece began to acquire a regular administration; and thus the once barbarous region of Greece, under the guidance of the highly gifted chiefs who were driven from Egypt, gradually emerged from its rude condition, and in the space of about two hundred years after Cecrops, received into its fertile soil the seeds of its future greatness. In this dawn of improvement, the council of the Amphictyons, or national synod, was formed. This assembly was established by the individual whose name it bears, at Thermopylæ, and receiving deputies from all the states of Greece, imparted vigour to the national character, and served to bind the Grecians in one common interest.
Some writers conjecture that the Grecian mythology originated, and that Jupiter, the Brumha of the Greeks, the father of their gods, flourished about the time of these Egyptain emigrations; that he was King of Crete, possessed, for the age in which he lived, of astonishing acquirements; that he travelled into Greece, whose half civilized peasantry first admired him as a hero, and then worshipped him as a god. This may be truth or fable; but there cannot remain a doubt, that the Greek pantheon was composed of men, who for their power, wisdom, valour, or benevolence, acquired universal regard, and as their history became obscure through the lapse of time, and poets rose, were elevated to the rank of gods. The mysteries of religion were confided to a separate caste of priests, who were invested with peculiar privileges and endowed with rent-free lands. Scripture records that in Egypt the brahmins' lands were not subject to assessment; the same rule prevailed in India; and had any Chaldean records come down to us, we should probably have discovered the existence of a similar practice there. The almost exclusive knowledge of letters possessed by the priesthood, gave them an immense ascendancy in the state, and enabled them to impose upon the unlettered laity as divine, any legend which it might suit their interest to invent. As the performance of religious rites was moreover made to depend on the movement of the heavenly bodies, the priests, who alone understood astronomy, acquired from this circumstance a new tie upon the people. There is ample testimony that the religious systems of India, Egypt, Greece, and Chaldea, were invented by the hierarchy, whose constant aim it was to make religion a mystery, that they might preserve their authority over the people by explaining it. This will account for the superstition and ignorance of the laity, and the despotic sway exercised by the priesthood.
After the establishment of the Egyptain colonies in Greece, the country gradually emerged from barbarism. Of the events which occurred between that period and the Trojan war, the history is very uncertain. There is however one expedition which occupies a prominent place in the annals of this age; the Argonautic expedition. The inhabitants of Thessaly had early applied themselves to naval affairs, and were familiar with maritime adventures. At length Jason, a member of the royal family, impelled by some motive which history has not distinctly recorded, fitted out a vessel of greater tonnage than any which had been seen before, and embarking on board of her with the most adventurous spirits of the age, sailed to the Euxine sea. After a variety of adventures, he and his companions brought away by force Medea, the daughter of the king of Colchis. On their return, they visited various countries then but imperfectly known, and engaged in many perilous and romantic enterprises. This expedition, the boldest of that age, was celebrated by the poets, and so embellished with fiction that to separate truth from falsehood, or even to discover the true character of the enterprise, is now beyond hope. Jason and his friends were represented as the relatives of the gods, and enrolled among the heroes of Greece; just as we may suppose Columbus, and his venturesome companions would have been, had it fallen to the lot of Grecian poets to describe the discovery of America.
Soon after the Argonautic expedition, Thebes the chief city of Bœotia, appears to have attracted the notice of the other countries of Greece. From some cause, not clearly explained, seven other states or cities leagued together and made war upon it. No important result followed the expedition, but the union of so many states in one common object bespeaks an advance in civilization.
The island of Crete, and its illustrious sovereign Minos, the father of Greek legislation, claim our peculiar attention in this dark period. Crete lies at some distance from the continent of Greece, in the neighbourhood of Egypt and Phenicia, in which civilization, as we have remarked, made the earliest advance. From both these countries Crete probably derived benefit, but it was not till the age of Minos that it attained a distinguished place in history. That monarch, obtaining the crown either by conquest or succession, set himself vigorously to improve his subjects, and to diffuse blessings through Greece. The Grecian seas were then infested with pirates;—he fitted out a formidable fleet and extinguished them. His people were living in a state of semi-barbarism, without laws or arts;—he introduced a love for the arts, and formed a code of laws, which was regarded by the Greeks of after ages in the same light as that in which the Hindoos regard the institutions of Munoo. The form of administration which he established in the island, was admirably calculated to perpetuate these improvements; and on Crete, and the institutions of Minos, were the eyes of the Greeks constantly turned with wonder and respect. The poets embellished the story of his life, assigning Jupiter as his father, and elevating him to the rank of one of the judges of Hell.
To Minos succeeded the heroic age of Greece. As the few laws which existed were without force, and the institutions of the country were immature, there was ample scope for the exertions of heroes; and a spirit for grand and perilous enterprises arose in the Grecian nobility, which they undertook sometimes for the good of the people, but oftener for the acquisition of fame. The bards Sung their glorious achievements, and thus fanned the flame of heroism. Of those heroes Hercules was the most conspicuous. To describe his labours, even if we could believe them, would exceed the limits of this brief view. Next in order stands Theseus, who passing into Crete, studied the institutions of Minos, and introduced them into his own kingdom of Attica, which contributed not a little to its subsequent grandeur. Of his martial deeds, the poets have many records, but it is as a beneficent king that he is to be remembered. Other heroes subsequently arose, with extraordinary powers of body and mind, which they employed in various ways for the weal or woe of the Greeks. From these heroes, the spirit of enterprise diffused itself among the higher orders of the people. The genius of the nation was roused. The perpetual discord of the various provinces gradually died away as civilization advanced; a national faith, national poetry, national councils, brought about a national unity of interests, and prepared the Greeks for some great undertaking in which all the Hellenistic races might unite. That object presented itself in the war of Troy, which brings us to the second period of our History.