পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/মাকিদোনিয়া ও গ্রীক দেশ

মাকিদোনিয়া ও গ্রীক দেশ।

 সেকন্দরশাহের মৃত্যুসময়ে আণ্টিপাটর মাকিদোনি য়ার অধ্যক্ষতা কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন এবং গ্রীকীয় নানা প্রদেশীয়েরা যে অবাধ্য হইতে উদ্যুক্ত ছিল সেই অবাধ্যতা দমনের ভার তাঁহার উপরই ছিল। যখন ঐ মহা ঘটনা অর্থাৎ সেকন্দরশাহের মৃত্যু রাষ্ট্র হইল তখন সামান্যতঃ তাবৎ গ্রীকীয়েরা বিশেষতঃ আথেন্‌সীয়েরা আনন্দ সাগরে মগ্ন হইয়া মাকিদোনিয়েরদের যোয়ালহইতে আপনারদিগকে মুক্ত করিতে স্থির করিল এবং দিমস্থেনিস্‌কে নগরের মধ্যে পুনশ্চ আসিতে আহ্বান করিল। তিনি তৎকালীন বক্তৃতাতে সর্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং মাকিদোনীয় রজিবংশ্যের অশেষ শত্রু। অপর গ্রীকীয় নানা প্রদেশের অধিকাংশ লােক অতিশীঘ্র সৈন্য সংগ্রহ করিয়া অতিসাহসিক কিন্তু বিবেচনাহীন লিয়স্থিনিসের অধীনে রাখিল। তিনি তৎক্ষণাৎ আণ্টিপাটরের অন্বেষণার্থ গমন করত তাঁহার তাবৎ সৈন্যকে পরাভূত করণে লামিয়া স্থানে আণ্টিপাটরের আশ্রয় লইতে হইল। সেই স্থানে তিনি বহুকাল অবরুদ্ধ থাকিলেন পরিশেষে হঠাৎ এক উদ্যোগের দ্বারা পলায়নের উপায় প্রাপ্ত হইলেন। কিন্তু তৎসমকালীন লিয়স্থিনিসের মৃত্যু হওয়াতে আক্রামকেরদের অশেষ ক্ষতি হইল। কিঞ্চিৎ অনন্তর লিয়োনাটস আণ্টিপাটরের সঙ্গে মিলিলেন কিন্তু তিনি পুনর্ব্বার গ্রীকীয়েরদের সৈন্যকর্ত্তৃক পরাজিত হইলেন। গ্রীকীয়েরদের এতদ্রূপ কৃতকার্য্য হওয়াতেই তাহারদের সর্ব্বনাশ যেহেতুক অনেকেই আপনারদের কীর্ত্তি প্রকাশ করণার্থ, সৈন্য ত্যাগ করিয়া স্ব২ গৃহে গমন করিল এবং যাহারা ছাউনিতে থাকিল তাহারাও সুশাসনের অভাবে বিশৃঙ্খল হইয়া গেল।

 কিঞ্চিৎ পরে অর্থাৎ খ্রীষ্টীয়ান শকের ৩২৩ বৎসর পূর্ব্বে আণ্টিপাটরের সাহায্যার্থ ক্রাটর্‌স আসিয়া হইতে এক দল সৈন্য আনয়ন করাতে ঐ সম্মিলিত সৈন্যেরদের সম্মুখে গ্রীকীয়েরদের নতমস্তক হইতে হইল এবং গ্রীকদেশের শৃঙ্খল পূর্ব্বাপেক্ষা অধিক দৃঢ় বন্ধ হইল। ঐ দেশের অন্যান্য নগরের সঙ্গে আণ্টিপাটর কিঞ্চিৎ কোমল ব্যবহার করিলেন কিন্তু আথেন্‌স নগরের যৎপরোনাস্তি অপমান করিয়া তন্নগরস্থ অতি সাধু ব্যক্তিরদিগকে দেশবহিষ্কৃত করিলেন এবং তাঁহারদের সাধারণ প্রভুত্বের নিয়ম উল্টাইয়া ঐ নগরে মাকিদোনিয়া গবর্ণমেণ্ট সংস্থাপন করিলেন। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে আণ্টিপাটর গ্রীক দেশের মধ্যে যেরূপ রাজশাসন নিরূপণ করিলেন তদ্দ্বারা আথেন্‌স ও গ্রীকীয় অন্যান্য প্রদেশীয়েরা এমত স্বচ্ছন্দে কাল যাপন করিল যে তাহারা সকলই অণ্টিপাটরকে গ্রীক দেশের পিতা ও হিতৈষী বলিয়া খ্যাত করিল। ইটোলিয়ানিবাসিরা প্রথমতঃ কিঞ্চিৎ ব্যাঘাত জন্মাইল কিন্তু পরিশেষে পরাভূত হইল। তদনন্তর আণ্টিপাটর আসিয়াতে যুদ্ধ যাত্রা করিলেন এবং প্রত্যাগমন সময়ে তাঁহার লােকান্তর গমন হওয়াতে সামাজ্যের প্রতিনিধির কর্ম্ম তৎকালে সেকন্দরশাহের সর্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন সেনাপতি পোল্যুস্পর্কনকে দিলেন এবং স্বীয় পুত্র কাসাণ্ডরকে কেবল সৈন্যাধ্যক্ষতা কর্ম্মে নিযুক্ত করিলেন।

 কাসাণ্ডর সুতরাং ভাবিলেন যে পুত্রত্বপ্রযুক্ত আণ্টিপাটরের এই প্রধান পদ প্রাপণ আমারই অধিকার অতএব তিনি এতদ্রূপ হেয় হওনবিষয়ে অত্যন্ত উষ্মান্বিত হইয়া পোল্যুস্পর্কনের সঙ্গে নানাপ্রকার শত্রুতাচরণ করিতে লাগিলেন। পােল্যুস্পর্কন গ্রীক দেশে আণ্টিপাটরের নিরূপিত রাজনিয়মসকল উল্টাইবার নিমিত্ত তাবৎ নগর একেবারে স্বাধীনহওনার্থ ঘোষণা করিলেন। আথেন্‌সীয়েরা এই রূপান্তর বিষয়ে অত্যন্ত উল্লসিত হইল যেহেতুক তদ্দ্বারা তাহারা স্ববশ হইল কিন্তু তাহারা স্বাধীনতার প্রকৃত ধর্ম্ম কখনই সম্পন্ন করিতে পারে নাই অতএব তাহারা স্বাধীন হইবামাত্র নগরের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা সাধু ব্যক্তি এবং পূর্ব্বকালীন অলঙ্কারস্বরূপ ফোস্যনকে হত করিল। এতদ্রূপে সোলনের সময়অবধি আথেন্‌সী য়েরা আপন২ অতিসাধু ও পরহিতৈষি লােকেরদের প্রতি অনবরত যে কৃতঘ্নতা ব্যবহার করিয়া আসিতেছিল তাহার শেষ কার্য্য এই। তৎপরে কাসাণ্ডর গ্রীক দেশে উপস্থিত হন এবং পােল্যুস্পর্কন তাঁহার সঙ্গে যুদ্ধার্থ সুসজ্জিত হইয়া আটিকা দেশে গমন করিলেন সেই স্থানে তাঁহার সৈন্যেরা গিয়া অতিশীঘ্র দেশ খাইয়া ফেলিল অতএব কাসাণ্ডরের গমনাগমনবিষয়ের চৌকিদেওনার্থ অল্প সৈন্যসমেত স্বীয়পুত্র আলেকজান্দরকে সেই স্থানে বাখিয়া স্বয়ং প্রস্থান করিয়া পেলােপেনিসসে উপস্থিত হইলে সেই দেশে প্রায় সকলই তাঁহার বাধ্য হইল কিন্তু মেগালোপলিসের লােকেরা তাঁহাকে পরাভূত করিল অতএব মাকিদোনিয়াতে তাঁহার প্রত্যাগমনের আবশ্যক হইল। ইহা দেখিয়া কাসাণ্ডর তাবৎ গ্রীক দেশ অধিকার করিলেন এবং আথেন সের নগরাধ্যক্ষ কর্ম্ম ডিমেত্রিয়স ফালিরিয়সকে অর্পণ করেন তিনি তৎকালীন গ্রীকীয়েরদের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা গুণান্বিত ছিলেন তাঁ হার প্রভুত্বে নগরস্থেরদের এমত মাঙ্গল্য বৃদ্ধি হইল যে তাহারা অতি অদ্ভুতরূপে অবিরত আপনারদের কৃতজ্ঞতা তাঁহাকে জ্ঞাপন করিল। তাহার কিঞ্চিৎ কাল পরে সেকন্দর শাহের বংশ্যেরা অনবরত খুন হইতে লাগিল। সেকন্দরের মাতা অতিঅহঙ্কৃতা অদমনীয়া ওলিম্পিয়া অতি নির্দয়তাপূর্ব্বক তাঁহার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা আরিডেয়স এবং আরিডেয়সের স্ত্রীকে খুন করিলেন। ওলিম্পিয়া স্বয়ং কিঞ্চিৎকালপরে পিডনা স্থানে বন্ধ হইয়া অশ্বমাংস ভক্ষণে কিছুকাল প্রাণধারণ করিয়া পরিশেষে কাসাণ্ডরের হস্তে আপনাকে সমর্পণ করিলেন কাসাণ্ডর তৎক্ষণাৎ তাঁহাকে হত করিলেন। তাহার কিঞ্চিৎ পরে কাসাণ্ডর সেকন্দরশাহের স্ত্রী রক্‌সানা ও তাঁহার অতিশিশু পুত্ত্রকেও হত করেন এবং তৎসমকালীন সেকন্দরের জারাজ পুত্র হরক্যুলিসকে বধ করণার্থ পোল্যুস্পর্কনকে প্রবোধ জন্মাইলেন। পরে কাসাণ্ডর আশা ও নৈরাশ্যেতে ক্ষণকাল দোলায়মান হইলে পর যে ইপসসের যুদ্ধেতে আণ্টিগোনস একে বারে বিনাশ হন তদ্দ্বারা কাসাণ্ডর প্রতিযোগি ব্যক্তি রহিত হইয়া গ্রীক দেশে দৃঢ়রূপেই সংস্থাপিত হইলেন।

 অপর মাকিদোনিয়াতে কাসাণ্ডর তিন বৎসর দৃঢ়রূপে সিংহাসনস্থ হওনের পরে লােকান্তর প্রাপ্ত হন এবং তাঁহার তিন পুত্ত্রকে রাজ্য প্রদান করিয়া যান্ তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ ফিলিপের অতিশীঘ্রই পরলােক হয়। অবশিষ্ট দুই পুত্ত্র পরসপর বিবাদ করিয়া আপনাআপনিই বিনাশ হইলেন। ইহা দেখিয়া যে আণ্টিগোনসের পুত্ত্র ডিমেত্রিয়স ইপসসের যুদ্ধানন্তর স্বীয় জাহাজের দ্বারা রক্ষা পাইয়াছিলেন তিনি সিংহাসন আরোহণ করিলেন। এতদ্রূপে আণ্টিপাটরের বংশ নিপাত হইল এবং আণ্টিগোনসের বংশ অর্থাৎ যাহারদের ইপ্‌সসের যুদ্ধে উত্তরকালের আশা ভগ্ন হইয়াছে বোধ হইল তাঁহারাই খ্রীষ্টীয়ান শকের ২৯৪ বৎসর পূর্ব্বে সেকন্দর শাহের পৈতৃক অধি কার প্রাপ্ত হইলেন। ডিমেত্রিয়স সাত বৎসরপর্য্যন্ত রাজ্য ভােগ করেন ঐ নানা রাজ্যের মধ্যে মাকিদোনিয়া ও থেসালি ও থ্রাকিয়ার অধিকাংশ কিন্তু ঐ মহারাজ দৃঢ়ীভূতকরণার্থ কিছুমাত্র উদ্যোগী না হইয়া কেবল তিনি বিদেশীয় যুদ্ধের উদ্যোগে রত ছিলেন। তাঁহার এমত উচ্চাভিলাষিতা প্রযুক্ত পরিশেষে আসিয়া রাজ্য জয়করণার্থ উদ্যুক্ত হইলেন কিন্তু তাঁহার শ্বশুর বাবেলনদেশীয় সিল্যুকসকর্ত্তৃক পরাজিত হন এবং তিনি ডিমেত্রিয়সের মৃত্যুপর্য্যন্ত তাঁহাকে বন্ধ রাখেন।

 মাকিদোনিয়ার সিংহাসন এতদ্রূপে শূন্য হইলে তৎপ্রাপণাকাঙ্ক্ষী দুই জন উপস্থিত হন বিশেষতঃ সেকন্দরশাহের সাম্রাজ্য বণ্টনসময়ে যে লিসিমাকসের অংশে থ্রাকিয়া প্রদেশ পড়িয়াছিল তিনি এবং ইপাইরসের অতি চঞ্চলস্বভাবক রাজা পিরস। পিরস সেকন্দরসাহের এক জন কুটুম্ব ছিলেন এবং সেকন্দরশাহের তুল্যসম্ভ্রান্ত হওনার্থ নিতান্ত উৎসুক কিন্তু আসিয়া রাজ্য জয়কারি সেকন্দরের যে মহানুভবতা গুণ এবং যে অজেয় স্থির প্রতিজ্ঞতা তাহা পিরসের কোথায়। পরে এই দুই জন সিংহাসনাভিলাষি ব্যক্তির সঙ্গে যুদ্ধ হওয়াতে লিসিমাকস জয়ী হইয়া সিংহাসন প্রাপ্তে চারি বৎসরপর্য্যন্ত রাজ্য করেন। পরে সিল্যুকসের প্রতি ঈর্ষা করিয়া তাঁহার সঙ্গে যুদ্ধ করিতে প্রবর্ত্ত হইলেন এবং খ্রীষ্টীয়ান শকের ২৮২ বৎসর পূর্ব্বে তিনি ঐ যুদ্ধে হত হন। তাহাতে জয়ি সিল্যুকস আসিয়ার অধিপতি হইয়াও আপনাকে মাকিদেনীয়ার রাজা বলিয়া ঘোষণা করিতে আজ্ঞা দিলেন কিন্তু এ রাজ্য দখল করণার্থ ইউরোপে উত্তীর্ণ হইলে সিলিমাকসের এক জন কুটুম্বকর্ত্তৃক তিনি হত হইলেন। ঐ কুটুম্ব হত রাজার সম্পত্তি ও সৈন্য লইয়া মাকিদোনিয়ার সিংহাসন আরােহণ করিলেন। কিন্তু গদি গরম না হইতে হইতেই গলেরা আক্রমণ করিয়া তাঁহার ধন প্রাণ হরণ করিল। পরে ঐ গলের অনিবার্য্য বেগে অতিসমৃদ্ধ ডেলফসের দেবালয়ের প্রতি ধাবমান হইল কিন্তু ঐ পর্ব্বতীয় স্থানের সঙ্কীর্ণতাপ্রযুক্ত তাহারা পরাভূত হইল অথচ যে দেবতার মন্দির তাহারা লুঠ করিতে উদ্যত ছিল সেই দেবতার দেব পরাক্রমই তাহারদিগকে পরাঙ্মুখ করান এমত প্রবাদ ইতর লোকেরদের মধ্যে রাষ্ট্র হইল।

 অপর মাকিদোনিয়ার সিংহাসন পুনর্ব্বার শূন্য হইলে ডিমেত্রিয়সের পুত্ত্র অথচ মহা আণ্টিগোনসের পৌত্ত্র আণ্টিগোনস গনাতস ঐ সিংহাসন অধিকার করিলেন কিন্তু তিনি সিংহাসনােপরি দৃঢ় না হইতে হইতেই পূর্ব্বোক্ত পিরস ইটালি দেশহইতে প্রত্যাগমন করিয়া তাহাকে সিংহাসনভ্রষ্ট করিয়া আপনাকে মাকিদোনিয়ার রাজারূপে বিখ্যাত করিলেন। কিঞ্চিৎ পরে পিরস পেলােপোনিসস দেশে গমনপূর্ব্বক যেমন আর্গস নগরে প্রবেশ করিতেছেন এমত সময়েই মস্তকোপরি ছাতহইতে একখানা টাইল নিক্ষিপ্তহওয়াতে তাঁহার লােকান্তর হয়। তাঁহার মরণোত্তর আণ্টিগোনস পুনর্ব্বার সিংহাসন অধিকার করিলেন এবং বহুকালাবধি অশান্ত ঐ দেশ পুনর্ব্বার শান্ত সুস্থির হইল। অশান্তি বলি কেন ষোলবৎসরের মধ্যে ঐ দেশে বার জন রাজ্য করেন। পরে মাকিদোনিয়া রাজ্য যেপর্য্যন্ত রোমানেরদের রাজ্যের সঙ্গে লিপ্ত না হয় সেইপর্য্যন্ত আণ্টিগোনসের বংশ্য তাহাতে রাজত্ব করেন।

 গ্রীক দেশের উত্তরাংশে এই সকল ব্যাপার হইতে২ আখেয়াদেশীয় সমাজ অতি পরাক্রান্ত হইতে লাগিল। গ্রীকীয় রাজ্য ক্ষীণ হওন সময়ে কোরিন্থের মহাখালের দক্ষিণে আখেয়ার অতি দরিদ্র ও পর্ব্বতীয় দেশে ক্ষুদ্র২ বার নগরস্থেরা পরস্পর নিরাপদে বাস করণার্থ আপনারদের মধ্যে এক সমাজ স্থাপনের উদ্যোগ করিলেন। কিন্তু তৎসময়ে সেকন্দরশাহের যুদ্ধযাত্রা ও মৃত্যু বিষয়ে গোলমাল উপস্থিত হইল তাহাতেই কিছুকাল ঐ সমাজ স্থগিত থাকে এবং খ্রীষ্টীয়ান শকের ৩০১ বৎসর পূর্ব্বে ইপ সসের যুদ্ধে তাহা একেবারে রহিত হয়। কিন্তু ২৮১ সালে তন্মধ্যে চারি নগর পূর্ব্ববৎ স্বাধীন হইয়া পুনর্ব্বার মেলবন্ধ হইল এবং পাঁচ বৎসরের মধ্যে আর২ নগরও তাঁহারদের সঙ্গে মিলিল। কালক্রমে শিকিয়ন ও কোরিন্থ ও আর্গস নগর ঐ সমাজভুক্ত হয় এবং ঐ মেলবন্ধ সমাজের বিষয়ে অন্যেরদের ভয় জন্মিতে লাগিল। এই আখেয়ার সমাজ আরাটস ও ফিলােপেমেন সাধু ব্যক্তির গুণের দ্বারা অতি বিরাজমান হইল। তাঁহারা গ্রীকীয়েরদিগকে ঐ কলিযুগস্বরূপ সময়ে সত্যযুগের গুণ স্মরণ করাইলেন। অপর খ্রীষ্টীয়ান শকের ২৮৪ বৎসর পূর্ব্বে গ্রীক দেশের উত্তর ভাগস্থিত ইটোলিয়া প্রদেশ মাকিদোনিয়ার রাজারদের অত্যাচারে ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া স্ববশ হওনার্থ তদনুরূপ একসমাজ করিলেন। আণ্টিগোনসের রাজ্যের অবসান সময়ে আখেয়ার সমাজের পরাক্রমের খর্ব্বকরণ তাঁহার অত্যাবশ্যক হইল এবং তন্নিমিত্ত তিনি ইটোলিয়ার সমাজকেও সপক্ষ করিতে স্বীকৃত হইলেন অথচ ঐ ইটোলিয়ার সমাজ তাঁহারই নিবারণার্থ সৃষ্ট হয়। অপর বহুকাল রজিকরণানন্তর তিনি অশীতি বর্ষ বয়স্ক হইয়া খ্রীষ্টীয়ান শকের ২৪৩ বৎসর পূর্ব্বে লোকান্তরগত হন।

 তদনন্তর তাঁহার পুত্ত্র দ্বিতীয় ডিমেত্রিয়স সিংহাসনাধিকারী হইয়া ইটোলিয়ারদের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া এবং আখেয়ার সমাজের পৌষ্টিকতা করিতে লাগিলেন। তাঁহার রাজ্য বার বৎসর থাকে তন্মধ্যে কোন শুশ্রষণীয় কার্য্য হয় না। তিনি খ্রীষ্টীয়ান শকের ২৩৩ বৎসর পূর্ব্বে লোকান্তরগত হন এবং স্বপুত্রকে সিংহাসন না দিয়া ভ্রাতৃপুত্র আণ্টিগোনস ডোসনকে রাজকর্ম্মে নিযুক্ত করিলেন। স্পার্টারদের কিঞ্চিৎ নষ্টোদ্ধারহওনে যে যুদ্ধ ঘটে সেই যুদ্ধেই ডোসন স্বীয় রাজ্য সময়ের অধিক কাল ব্যস্ত থাকিলেন। তাঁহারদের প্রকৃতরূপে প্রতিরােধকতাকরণার্থ তিনি আখেয়ার সমাজের সঙ্গে ঐক্য হইলেন। পরে এগার বৎসর রাজাকরণানন্তর তাঁহার লোকান্তর হইলে ষােল বৎসরবয়স্ক তাঁহার ফিলিপনামক পুত্র সিংহাসনের অধিকারী হইলেন। স্বভাবত যুবরাজের অনেক সদ্‌গুণ ছিল কিন্তু কালের কুটিলতাযুক্তই তিনি নিষ্ঠুর রাজা হইলেন। তাঁহার রাজত্বের প্রথম পাঁচ বৎসর ব্যাপিয়া আখেয়া ও ইটালিয়ার সমাজের পরস্পর যে যুদ্ধ উপস্থিত হয় তাহতেই লিপ্ত ছিলেন। ঐ বিবাদহইতে মুক্তি পাইলে রোমানেরদের সঙ্গে যুদ্ধকরণার্থ হানিবাল তাঁহাকে আহ্বান করিলেন এবং ফিলিপ স্বচ্ছন্দেই ঐ কার্থাজীয় সেনাপতির অভিপ্রেত বিষয়ের প্রতি পােষক হইলেন। তাঁহার অভিপ্রায় যে রােমানেরদের পরাক্রমের সমূলোৎপাটন হয়। রােমানেরদের নিয়ত এই নিয়ম ছিল যে এক কালে দুই যুদ্ধ তাঁহারদের উপরে না পড়ে অতএব হানিবালের সঙ্গে তাঁহারদের যতকাল যুদ্ধ ছিল তত কাল গ্রীক দেশে ফিলিপের শত্রুগণকে উত্তেজনা মাত্র করিলেন এবং এতন্নিমিত্ত গ্রীকীয় নানা রাজ্যের সঙ্গে সন্ধি করিলেন। পরে খ্রীষ্টীয়ান শকের ২০৪ বৎসর পূর্ব্বে রােমানেরা মাকিদোনিয়ার রাজা ও গ্রীকীয় নানা প্রদেশীয়েরদিগকে লইয়া মধ্যস্থ অবলম্বনে এক সাধারণ সন্ধি করেন। কিন্তু এই পূর্ব্বদেশীয় ব্যাপারে একবার লিপ্ত হওয়াতে উত্তরকালে তদ্দেশে অপনারদের পরাক্রম সংস্থাপন নিমিত্ত আকাঙ্‌ক্ষী হইলেন এবং তদ্দেশীয় লোকেরদিগকে আপনারদের বাধ্য রাখার যে সুযােগ দৃষ্ট হইল তাহা রোমানেরা ছাড়িতে পারিলেন না। এতদ্রূপ তাহারা কর্ম্মে হস্তক্ষেপ করণেতে গ্রীকদেশে পরস্পর যে সকল রাজকীয় সম্বন্ধ ছিল প্রথমতঃ তাহারি বিঘ্ন হইয়া পরিশেষে উচ্ছিন্ন হয় এবং তদ্দ্বারা মাকিদোনিয়ার রাজার ফিলিপের সঙ্গে সুতরাং যুদ্ধ ঘটিল ঐ যুদ্ধ খ্রীষ্টীয়ান শকের ২০০ বৎসর পূর্ব্বে আরম্ভ হইয়া দুই বৎসরপর্য্যন্ত অতি শৈথিল্যরূপেই চলিল। রােমা নেরা দেখিলেন যে তদ্দেশে আমারদের অকপট সহ যােদ্ধা না থাকিলে কিছু হইতে পারে না। অতএব গ্রীকীয় নানা রাজারা ফিলিপের সঙ্গে যুদ্ধে প্রবর্ত্ত হন এই ভরসায় রোমানের। ওলিম্পিয়ার উৎসব সময়ে তাবৎ গ্রীক দেশ স্ববশ হয় এমত ঘোষণা করিলেন এবং ঐ মহােৎসব সময়ে দেশের চতুর্দ্দিগহইতে যে মহা জনতা সমাগত হইয়াছিল তাহারা ঐ ঘােষণা শুনিয়া ধন্যবাদ ধ্বনিতে একেবারে গগণ স্পর্শ করাইল। পরে এই নূতন সহযোদ্ধার সাহায্যে রোমানেরা অতিপ্রবল হইয়া খ্রীষ্টীয়ান শকের ১৯৭ বৎসর পূর্ব্বে ক্যুনোসিফালের যুদ্ধে ফিলিপকে একেবারে নতমস্তক করিলেন অতএব রােমানেরদের সঙ্গে ফিলিপের সন্ধি করিতে হইল। ঐ সন্ধির নিয়মের দ্বারা গ্রীকদেশে তাঁহার সপক্ষ যে সকল লোক ছিল তাহারা তাঁহার হাত ছাড়া হইল এবং তাঁহার সৈন্যের শ্রেষ্ঠাংশ ও তাঁহার তাবৎ যুদ্ধ জাহাজ কাড়িয়া লওয়া গেল এবং তাঁহার অর্থেরও অনেক অপচয় করা গেল। তৎপরে রোমানেরা গ্রীকদেশে অতিপরাক্রান্ত হয় এবং ঐ পরাক্রমের দ্বারা তাঁহার নানা রাজ্যের মধ্যে ঈর্ষাঈর্ষি জন্মাইয়া আখেয়ার তেজোহানি করিতে লাগিলেন যেহেতুক গ্রীক দেশে রোমানেরদের সম্পূর্ণ প্রভুত্ব হওনবিষয়ে কেবল আখেয়েরাই প্রতিবন্ধক। ইহাতে রােমানেরদের প্রতি সুতরাং আখেয়ারদের অত্যন্ত ঘৃণা জন্মিল এবং তাঁহারদের সঙ্গে যুদ্ধ করণার্থে আণ্টিয়োকস সুরিয়ার সিংহাসনে অতিদৃঢ় হইয়া ইটোলিয়ার লোকেরদের সঙ্গে যােগ করিলেন কিন্তু রোমানেরদের কর্ত্তৃক আণ্টিয়ােকস দেশবহিষ্কৃত হইলেন তাহ৷তে গ্রীকের নানা নগর একেবারে নতমস্তক হইল।

 পরে রোমানেরা যথাসাধ্য ফিলিপকে অপমানিত করণের উদ্যোগ করিলেন। তিনি তাহারদের নানা দৌরাত্ম্য সহিতে না পারিয়া প্রতিফল দেওনার্থ জ্বলিয়া উঠিলেন। স্বীয় পরাক্রম বর্দ্ধনার্থ ফিলিপ কি ভদ্র কি অভদ্র সর্ব্বপ্রকার উপায়ই অবলম্বন করাতে তাঁহার নিষ্ঠু রতাবিষয়ক সম্বাদ অতিশীঘ্র রোমানেরদের নিকটে পঁহুছিল তাঁহারাও তদ্রূপ সম্বাদ শুনিতে অনিচ্ছুক ছিলেন না। ফিলিপের পুত্র ডিমেত্রিয়স যখন রোম নগরে বন্ধক স্বরূপ ছিলেন তখন সেখানে বিদ্যাভ্যাস করিয়াছিলেন। যে গুণেতে মনুষ্যবর্গের মধ্যে প্রিয়পাত্রতা ও প্রজাহিতৈষিতা হয় সেই সকল গুণ তাঁহাতে সম্পূর্ণ ছিল। কিন্তু তাঁহার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা পর্শিয়স তাঁহার প্রতি অত্যন্ত দ্বেষ করিতেন তিনি পিতার নিকটে এই নালিশ করিলেন যে ডিমেত্রিয়স মহারাজকে সিংহাসনভ্রষ্ট করণার্থ রােমানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করিতেছে। পর্শিয়সের বিলক্ষণ বােধ ছিল যে এবম্বিধ অপরাধ পিতা কখনই ক্ষমা করিবেন না। পরিশেষে পর্শিয়সের ঈর্ষার এমত বৃদ্ধি হইল যে দুই পুত্রের বিবাদের বিচার ফিলিপের করিতে হইল অতএব ডিমেত্রিয়সের প্রতি যে সকল অভিযােগ হইয়াছিল তাহার সত্যাসত্যতা নির্ণয়ার্থ রোম নগরে দূত প্রেরণ করিলেন। পর্শিয়স ঐ দূতেরদিগকে ঘুস দিয়া স্বীয় ভ্রাতা ডিমেত্রিয়সের গ্লানিকর কৃত্রিম লিপি রোমনগর হইতে আনাইলেন এবং ঐ লিপি প্রমাণে ফিলিপ দোষী জ্ঞান করিয়া তাঁহাকে প্রাণ দণ্ড করিলেন। কিন্তু কিঞ্চিৎকাল পরে ঐ তাবৎ ষড়যন্ত্র যখন ব্যক্ত হইল এবং যখন ফিলিপের বোধ হইল যে সুশীল ও নির্দ্দোষি আমার পুত্রকে আমি স্বহস্তে হত করিলাম তখন তাঁহার দুঃখে দুঃখাধার একেবারে ধারপর্য্যন্ত পরিপূর্ণ হইল অতএব ঐ অভাগা পিতা বেয়াল্লিশ বৎসরপর্য্যন্ত অত্যন্ত দুরবস্থায় রাজ্য করণানন্তর খ্রীষ্টীয়ান শকের ১৭৯ বৎসর পূর্ব্বে শোকাগ্নিতে দগ্ধ হইয়া লোকান্তরগত হইলেন।

 অনন্তর তাঁহার পুত্র পর্শিয়স মাকিদোনিয়ার সিংহাসনারোহী হইলেন তিনিই শেষ রাজা। রোমানেরদের প্রতি তাঁহার পিতার যেমন ঘৃণা ছিল তাঁহারও তত্তুল্য এবং স্বীয় রাজমুকুট ও প্রাণ উভয় পণ করিয়া রোমানেরদের সঙ্গে যে চূড়ান্ত যুদ্ধ করিতে নিশ্চয় করিয়াছি লেন তদুপলক্ষে রাজত্বসময়ের প্রথম সাত বৎসরব্যাপিয়া তাঁহার রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধসাধন বস্তুসকল সংগ্রহ করিতে লাগিলেন। অতএব উভয়ের মধ্যে অতিশীঘ্র যুদ্ধ ঘটিল এবং যদ্যপি পর্শিয়স চারি বৎসরপর্য্যন্ত যুদ্ধ করিতে ক্ষম হইলেন তথাপি রোমান সেনাপতি পিড্‌না স্থানে খ্রীষ্টীয়ান শকের ১৬৮ বৎসর পূর্ব্বে তাঁহাকে সম্পূর্ণ পরাজয় করেন তৎ যুদ্ধের এই ফল হয় যে পর্সিয়স রােমান সেনাপতির হস্তে পতিত হইয়া রােম নগরে নীত হন ও নানা রাস্তাতে অতি অপমানিতরূপে দর্শিত হইয়া পরিশেষে কারাগারে বন্ধ হইয়া মরিলেন। তৎপরে মাকিদোনিয়া চারি সুবাতে বিভক্ত হইয়া রেমিনেরদিগকে কর দান করিতে প্রত্যেক সুবার প্রতি হুকুম হইল। গ্রীকদেশের মধ্যে কেবল আখেয়ারই প্রবল থাকিল কিন্তু রোমানেরদের অপেক্ষা তাহারা দুর্ব্বল। রােমানের এতৎ সময়ে প্রায় হঠাৎ পৃথিবীর মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষাই প্রবল হইয়া উঠিল। তাবৎ গ্রীক দেশ ব্যাপিয়া রোমানেরা আপনারদের উকীলস্বরূপ কর্ম্মকারক ব্যক্তি নিযুক্ত করিলেন এবং তাঁহারা প্রত্যেক প্রদেশের আন্তরিক ব্যাপারে নিয়ত হস্তক্ষেপ করাতে সকলেরি অত্যন্ত ভয় ও সর্ব্বনাশ হইল। পরিশেষে আখেয়ারদের প্রধান এক সহস্র ব্যক্তি ধৃত হইয়া রোম নগরে প্রেরিত হইলেন এবং স্বাধীনতার বিষয়ে ঐ আত্মশ্লাঘি নগরে তাঁহারা সতর বৎসরপর্য্যন্ত কএদ থাকেন। তাহার কিঞ্চিৎ পরে মাকিদোনিয়াতে বিদ্রোহ ব্যাপার উপস্থিত হয় কিন্তু রোমানেরা অতিশীঘ্রই তাহা নিবৃত্ত করেন। তাহার দুই বৎসর পরে কোরিন্থ নগর তাঁহারদেরকর্ত্তৃক লুঠিত হয়। এবং গ্রীক ও মাকিদোনিয়া দেশ রোমান সাম্রাজ্যের সুবার মধ্যে গণ্য হইল।

MACEDON AND GREECE.

 At the death of Alexander, Antipater held Macedon in the capacity of governor, with the charge of keeping down the spirit of revolt, which was then ready to burst forth in the Grecian republics. When the intelligence of that great event was known, the Greeks in general, and the Athenians in particular, intoxicated with joy, resolved to liberate themselves from the Macedonian yoke, and recalled Demosthenes, the greatest orator of that age, and the inflexible foe of the royal house of Macedon. An army was raised with speed by the majority of the states and placed under the command of the gallant but indiscreet Leosthenes who marched instantly in search of Antipater, and after entirely routing his forces, obliged him to take refuge in Lamia. Here he was for a long time besieged, but contrived at length to escape by a sudden sally; the besiegers however, suffered an irreparable loss in the death of Leosthenes. Antipater was subsequently joined by Leonnatus, but was again defeated by the combined forces of Greece. This success proved their ruin; as many quitted the army and returned home to blazon their triumph, while those who remained in the camp fell into great irregularities, through the entire relaxation of discipline.

 Soon after, B. C. 323, Craterus brought a reinforcement of troops from Asia to the aid of Antipater, the Greeks being obliged to bend before their united forces, the chains of Greece were rivetted more firmly than ever. While the other cities were treated with a degree of lenity, Athens was subjected to the deepest humiliation by Antipater; its best citizens were banished, the democracy subverted, and a Macedonian government introduced into the city; yet strange to relate, both Athens and the other states of Greece enjoyed so much tranquillity under the form of government introduced by Antipater, that he was styled the father and protector of of Greece. The Ætolians gave a little trouble for some time, but were eventually subdued. Antipater soon after undertook an expedition into Asia, and dying on his return, bequeathed the regency the empire to Polysperchon, the oldest of Alexander's generals then living; giving to his son Cassander only the command of a colonel in the army.

 Cassander naturally considering the supreme command as his birthright, was irritated at this rejection, and engaged in a series of hostilities with Polysperchon, who in order to subvert the order established by Antipater in Greece, declared all its cities free. The Athenians were overjoyed with this change, which put them in possession of a freedom they were however unable to use, and they lost no time in putting to death Phocion, the most virtuous of their citizens, the ornament of antiquity, and thus closed the long series of base ingratitude, with which the Athenians had invariably pursued every patriotic citizen from the days of Solon. Cassander now appeared in Greece; and Polysperchon, preparing to combat with him, marched into Attica, where his army speedily exhausted the country and he was obliged to leave his son Alexander with only a small army to watch the motions of Cassander. He then passed over into the Peloponnesus, where he met with general submission, but was defeated by the inhabitants of Megalopolis, and found himself under the necessity of returning to Macedonia. Upon this Cassander made himself master of Greece and committed the government of Athens to Demetrius Phalereus, then the ablest man in Greece. His government was eminently favourable to the welfare of the citizens, and called forth all the extravagance of their gratitude. Soon after came on the murder of Alexander the Great's family. His mother, the haughty and intractable Olympia, put to death Aridæus, his half brother, and his queen with peculiar barbarity. She herself was soon after besieged in Pydna, reduced to live upon horse flesh, and finally surrendered to Cassander, by whom she was put to death. Cassander soon after subjected Roxana the widow of Alexander, and his youthful son, to a similar death, and at the same time induced Polysperchon to put Hercules, the illegitimate son of Alexander, to the sword. After various fluctuations of hope and disappointment, Cassander was finally established in Greece without a rival by the battle of Ipsus which was so fatal to Antigonus.

 Cassander survived by only three years the establishment of his throne in Greece and Macedon, and left the kingdom to his three sons, of whom the eldest, Philip, soon followed him to the grave. The two remaining sons worked their own destruction by mutual quarrels; upon which Demetrius, the son of Antigonus, who after the battle of Ipsus had saved himself by means of his fleet, made his way to the throne. Thus ended the family of Antipater, while that of Antigonus, whose prospects seemed for ever blighted at Ipsus, succeeded to the paternal dominions of Alexander the Great, B. C. 294. Demetrius occupied the throne seven years, but instead of endeavouring to consolidate his large empire, which comprised Macedon, Thessaly, and the greatest part of Thrace, he was perpetually engaged in some foreign adventure. This ambition at length led him to attempt the conquest of Asia, but he was defeated by his own father-in-law, Seleucus of Babylon, who kept him a prisoner till the day of his death.

 Two competitors now appeared for the vacant throne of Macedon; Lysimachus, to whom in the share of Alexander's empire, Thrace had fallen, and Pyrrhus, the restless king of Epirus, who was related to Alexander, and burned to equal him in renown; but he wanted the calm grandeur of soul, the invincible perseverance, of the conqueror of Asia. The two rivals came to an engagement, in which Lysimachus was victorious; he accordingly ascended the throne and reigned for four years. Hatred of Seleucus at length led him into a war, in which he lost his life, B. C. 282. The victorious Seleucus, already the sovereign of Asia, caused himself to be proclaimed king of Macedonia; but shortly after he had crossed into Europe he was assassinated by a relative of Lysimachus, who availing himself of the treasures and the troops of his murdered victim, took possession of the Macedonian throne. He was however scarcely warm in his seat, when an irruption of the Gauls deprived him of his crown and his life. The Gauls advanced with impetuous fury to plunder the wealthy temple of Delphi, but the natural difficulties of that mountainous region occasioned their discomfiture; while the god, whose shrine they had proposed to violate, obtained among the vulgar the credit of having discomfited them by super-human means.

 The throne of Macedon being again vacant, Antigonus Gonatas, the son of Demetrius, and the grandson of the great Antigonus, took possession of it, but he had scarcely time to look around him when Pyrrhus, above-mentioned, returning from Italy, dethroned him, and was proclaimed king of Macedonia. Soon after Pyrrhus passed over into Peloponnesus, where he was slain by the dropping of a tile on his head, as he entered the city of Argus. On the death of Pyrrhus, Antigonus again seated himself in the throne of Macedon, which in the short space of sixteen years had been occupied by twelve kings, and restored to the country for a time the long lost blessings of peace and tranquillity. The family of Antigonus ruled over Macedon till it was absorbed in the Roman empire.

 While these events were in progress in the north of Greece, the Achæan league began to render itself important. Twelve small cities in the poor and mountainous region of Achaia, lying to the southward of the bay of Corinth, had upon the decline of the Grecian republics formed a league for mutual protection, which in the confusion consequent upon the expedition and death of Alexander the Great, had been suspended, and dissolved by the battle of Ipsus, B. C. 301. But in the year 281, four of them asserted their ancient freedom and renewed their federal union, which during the five subsequent years was joined by all the rest. In progress of time, Sicyon, Corinth, and Argos joined the league which now assumed a formidable attitude. This Achæan league was rendered illustrious by the virtues of Aratus and Philopoemen, who upheld it, and who in these last, degenerate days of Greece, revived the memory of its most brilliant æra. In the year B. C. 284, the states in Ætolia, lying in the north of Greece, driven to desperation by the oppression of the Macedonian sovereigns, formed a similar league for the preservation of their liberties. During the latter portion of the reign of Antigonus, his hands were fully occupied in counteracting the influence of the Achæan league, for which purpose he did not scruple even to court the Ætolian confederacy, which had been formed for the express purpose of resisting him. After a very long reign he died B. C. 243, at the advanced age of eighty.

 He was succeeded by his son Demetrius II. who waged war with the Ætolians, and gave his support to the Achaean league. His reign, which extended to twelve years, presents nothing of interest. He died B. C. 233, and passing over his own son, nominated his nephew Antigonus Doson to the throne. This prince was occupied during the major part his reign in wars which arose out of the partial regeneration of the Spartans; to oppose whom more efficaciously he leagued himself with the Achæan confederacy. After a reign of eleven years he was succeeded by his son Philip, a youth of sixteen, endowed by nature with many excellent qualities, but who from the adverse circumstances in which he was involved, became a despot. During the first five years of his reign, he was involved in the wars created by the dissensions of the Achæan and Ætolian leagues. Extricated from these disputes, he was invited by Hannibal to commence a war with the Romans. Philip readily entered into the views of the Carthaginian general, which extended to the entire annihilation of the Roman power. The Romans, who always endeavoured to avoid having two wars on their hands at one time, contented them selves, while combating Hannibal, with stirring up the enemies of Philip in Greece; for this purpose they entered into an alliance with several of its states. In the year B. C. 204, the Romans mediated a general peace between Macedon and the various powers of Greece; but having once become involved in the affairs of the East, they could not resist the temptation of extending their influence, with the view of finally establishing their power in that region. This interference of Rome, disturbed, and eventually subverted all the relations in Greece, and led naturally to a war with Philip of Macedon, which was kindled in the year B. C. 200, but languished during the first two years. The Romans felt the want of cordial allies in the country, and in the hope of enlisting the Greek states against Philip, proclaimed the freedom of Greece, at the Olympic games, an announcement which was welcomed with the deafening shouts of the vast multitude assembled on that grand occasion from all parts of the country. With the aid of these new allies, the Roman interest became predominant, and in the year B. C. 197, Philip was completely humbled at the battle of Cynoscephalæ. He was constrained to conclude a peace which stripped him of all his Grecian allies, deprived him of the flower of his army and the whole of his navy, and greatly curtailed his pecuniary resources. The Romans now acquired preeminent authority in Greece, which they employed in sowing jealousies among its states, and in repressing the energy of the Achæans, who were then the only obstacle to their obtaining a complete ascendancy. This necessarily created a hatred of the Romans, to combat whom, Antiochus now firmly seated on the throne of Syria, leagued himself with the Ætolians; but Antiochus was expelled, and the cities of Greece humbled.

 The Romans employed every possible art to humble Philip, who, unable to support their oppression, burned with impatience for revenge. As he used every means, legitimate or nefarious, to invigorate his power, complaints against his tyranny, were speedily poured into the not unwilling ears of the Romans. Demetrius, his son, had been educated at Rome when a hostage, and possessed all those qualities which were calculated to endear him to mankind, and to make him a blessing to his subjects. Perseus, his half-brother, who regarded him with rancorous jealousy, accused him of having plotted with the Romans to dethrone his father, a crime which he knew his father would never forgive. The animosity of Perseus rose to such a height that Philip was obliged to sit in judgment on his two sons, and sent to Rome to enquire into the truth of the allegations made against Demetrius. The messengers were bribed by Perseus to bring forged letters criminating his brother, who upon this testimony was adjudged guilty and sentenced by his own father to death. But when a short time after, the whole conspiracy was unfolded, and Philip discovered that his generous and innocent son had been murdered by his hands, the cup of human woe was filled to the brim, and the wretched father died of a broken heart, B. C. 179, after a reign of forty-two years, embittered by the deepest misfortunes.

 Perseus his son, the last monarch of Macedon, now ascended the throne. He inherited all his father's hatred of the Romans, and during the first seven years of his reign employed himself chiefly in collecting together the resources of his kingdom with the view to the final struggle in which he was determined to stake his crown and his life. The two powers soon came to an open rupture; yet Perseus was enabled for four years to protract the war. In the year B. C. 168, however, the Roman general gave him a complete overthrow at Pydna, in consequence of which, he fell into his hands and was carried in triumph through Rome, where he died in confinement. Macedon was now divided into four districts, each of which was ordered to furnish tribute to Rome. The Achæans were the only power left in Greece, but they were feeble in comparison with Rome, which had almost suddenly become the leading power in the world. Roman political residents were stationed all over Greece, and by their constant interference in the internal affairs of each state, brought dismay and desolation in their train. At length, a thousand of the most eminent citizens of Achæa were carried prisoners to Rome, where in that boasted metropolis of freedom they were detained in confinement for seventeen years. An insurrection soon after broke out in Macedon, which the Romans easily quelled; two years after, Corinth was sacked by them, and both Greece and Macedon became provinces of the Roman empire.