পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/মিসর দেশ
মিসর দেশ।
ত্রোজান যুদ্ধসময়ে তাবৎ মিসর দেশ মহা সিসস্ত্রিসের বংশ্য এক রাজার অধীনে ছিল। এই রাজ বংশ্যের শ্রেণি খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ১৫০০ অবধি ৯০০ সালপর্য্যন্ত অবিচ্ছেদে রাজ্য করেন। যে পিরামিড এবং অন্যান্য অদ্ভুত অট্টালিকা সকল ২৫০০ বৎসর হইল লুপ্ত হয় নাই এবং যদ্দ্বারা অদ্যাপি দেশপর্য্যটকেরদের তদ্দেশ দর্শনে অত্যন্ত বাঞ্ছা হয় সেই পিরামিড়প্রভৃতি মহা২ অট্টালিকা ঐ রাজবংশের রাজত্বসময়েই গ্রন্থন হয়। ঐ ৬০০ বৎসর মিসর দেশে সর্ব্বাপেক্ষা অতি প্রসিদ্ধ সময়। তৎকালে ঐ দেশের রাজনিয়ম সকল অত্যন্ত পরিপক্ব হয় জাতিগত প্রভেদের বিষয়ে অতি দৃঢ় নির্ব্বন্ধ ছিল এবং যাজকেরাও রাজশাসন ব্যাপারের সম্ভোগী ছিলেন এবং রাজাও ধর্ম্মাচরণরূপে শঙ্খলে নির্ব্বন্ধ এবং অন্যদেশীয়েরদিগকে ধর্ম্মবিষয়ক মন্ত্রের অনুসন্ধান করণের অত্যন্ত নিষেধ ছিল। ঐ ধর্ম্মজ্ঞান যে অতি সঙ্গোপনে থাকে এতন্নিমিত্ত তাহা হিরোগিফিক নামক এক বিশেষ অক্ষরে লিখিত ছিল যাজকব্যতিরেকে তাহা অন্য কাহারো পাঠকরণের শক্তি ছিল না। এই সকল বিষয় দৃষ্টে অনুভব হয় যে মিসর দেশের অবস্থা এবং হিন্দুরাজার অধীন ভারতবর্ষের অবস্থার সঙ্গে বিশেষরূপে ঐক্য ছিল।
খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্ব অনুমান ৯০০ সালে ইথিয়োপিয়া দেশহইতে সাবাকোনামক এক ব্যক্তি আসিয়া দেশ জয় করেন তাঁহার প্রত্যাগমনের পর সিথসনামক মিসরদেশীয় এক জন ব্রাহ্মণ সিংহাসনোপবিষ্ট হন। তাহার কিঞ্চিৎ পরে দেশ খণ্ড২ হয় এবং রাজ্যের বার অংশে স্বতন্ত্র২ বার জন অধ্যক্ষ হইলেন সুতরাং তাঁহারদের মধ্যে বিবাদ বাদিল এবং তাহারদের সামমেটিকসনামক এক রাজা দেশ বহির্ভূত হইলেন। ঐ তাড়িত রাজা খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে অনুমান ৬৫০ সালে ইয়োনিয়া ও কারিয়া অর্থাৎ গ্রীক এক দল সৈন্যকে বেতন দিয়া রাখিয়া এবং তাহারদের আনুকূল্যে তাবদ্দেশ জয় করিলেন। পরে মিসর দেশে তৈনাতি সৈন্যের ন্যায় তাহারদিগকে ভূমি বৃত্তি দিয়া রাখিলেন। অন্য জাতীয়েরদিগকে মিসর দেশে স্থান দান করা প্রথম এই দৃষ্ট হইতেছে এবং এই নূতন ব্যাপারের ফল অতি শীঘ্র রাজ্যাচারের মধ্যে দৃষ্ট হইল। বিশেষতঃ মিসরদেশীয় ক্ষত্রিয়েরা তাহাতে অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া অনেকে ইথিয়োপিয়াতে প্রস্থান করিল এবং বাহ্মণেরদের প্রভুত্বের কিঞ্চিৎ শৈথিল্য হইল। রাজাও জাহাজ প্রস্তুত করিতে উদ্যত হইলেন এবং আসিয়ার মধ্যে যে নূতন২ রাজ্য পত্তন হইল তাহারদের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে প্রবৃত্ত হইলেন সামমেটিকসের মরণোত্তর নিকোনামক তাঁহার পুত্ত্র সিংহাসনারূঢ় হইয়া জাহাজের ব্যাপার সম্পন্ন করত ফরাৎ নদীপর্যয়ন্ত জয় করিতে২ গমন করিলেন কিন্তু সরসিসিয়ম স্থানের যুদ্ধেতে পরাজিত হইয়া তাঁহার হঠিতে হইল। তিনি আরো ভূমধ্যস্থ সমুদ্র ও সুফ সমুদ্র এক খালের দ্বারা সংযোগ করিতে উদ্যোগ করিলেন কিন্তু তাহা সফল হইল না।
কথিত আছে যে তাঁহার আনুকূল্যে তাঁহাকর্ত্তৃক নূতন নির্ম্মিত জাহাজের দ্বারা আফ্রিকার দ্বীপ পরিভ্রমণ হয়। ইহার পূর্ব্বে যে কোন ব্যক্তি বা রাজা যে কোন কর্ম্মনির্ব্বাহ করিয়াছেন তদপেক্ষা ঐ ব্যাপার সাহসিক। আপ্রিয়িসনামক তাঁহার পৌত্ত্র আসিয়াতে দেশ জয় করণের মহাকল্প করিয়া সীদননামক সমুদ্রতীরস্থ নগর বেষ্টন করিলেন এবং তৎকালীন পৃথিবীর মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা জাহাজেরকর্ম্মে পরাক্রমশালি টায়রিয়েরদিগকেও পরাভূত করিলেন। তদনন্তর আফ্রিকা দেশান্তর্গত গ্রীকেরদের বসতি স্থান কাইরিণীনামক নগর আক্রমণার্থ যাত্রা করিলেন কিন্তু তাহাতে পরাজিত হইলেন। পরে আপ্রিয়িসের প্রজাগণ তাহাকে সিংহাসন ভ্রষ্ট ও তাঁহার প্রাণ বিনষ্ট করিল যেহেতুক প্রজারা গ্রীক দেশীয় বেতনভুক্ সৈন্যেরদের আনুকূল্যে ঐ রাজবংশ্য প্রায় শতবৎসরাবধি আপনারদের ইচ্ছাতে নিত্য যুদ্ধে প্রবৃত্ত ছিল তৎপ্রযুক্তই তাহারা অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া ঈদৃশ দ্রোহ কর্ম্ম করিল। আপ্রিয়িসের মৃত্যু হওয়াতে সামমেটিকসের রাজবংশও বিলপ্ত হইল।
তৎপরে আমাশিসনামক অতিক্ষুদ্রবংশ্য এক ব্যক্তি অতিবিজ্ঞ রাজকীয় পরাক্রম প্রাপ্ত হইলেন। ইনিই গোপনে উপরি উক্ত রাজবিদ্রোহি ব্যাপারের উত্তেজক ছিলেন। অপর যে অত্যন্ত বিচক্ষণ গ্রীকীয়েরা মিসর দেশে মূলবন্ধ হইয়াছিলেন তাঁহারদের সাহায্যে তিনি মিসর দেশের যৎপরো নাস্তি সৌষ্ঠবের বৃদ্ধি করিলেন কিন্তু ঐ প্রতিভা নির্ব্বাণকালীন দীপশিখার ন্যায় যেহেতুক পূর্ব্বদেশীয় মহারাজ চক্রবর্ত্তী কোরসের সঙ্গে তাঁহার বিরোধ হইয়াছিল এবং পারসীদেশীয়েরা অর্থাৎ কোরেসের সৈন্যেরা দিগ্বিজয়ের প্রাগল্যেতে মিসর দেশের রাজাকে দণ্ড করিতে নিশ্চয় করিলেন। কিন্তু কোরস ও আমাশিস উভয়েই প্রায় সমকালেই লোকান্তরগত হন। পরশু কোরসের পুত্র কাম্বাইশিস আমাশিসের পুত্র সামমেনিটসের সঙ্গে যুদ্ধ করণার্থ পারসীদেশীয় সৈন্যরদিগকে তথায় লইয়া যাওয়াতে পিলুসিয়ম স্থানে এক মহাযুদ্ধ হয় ঐযুদ্ধে পারসীরা জয়ী এবং মিসর দেশের পরাজিত রাজ্য একেবারে পারসী দেশের সাম্রাজ্যভুক্ত হইল। এই ব্যাপার খ্রীষ্টীয়ান শকের ৫২৫ বৎসর পূর্ব্বে হয়। এতদ্রূপে তৎকালীন পৃথিব্যন্তর্গত সর্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন ঐ রাজ্য বিনষ্ট হয়। ইহার পর ঐ দেশ পারসী দেশের এক প্রদেশের ন্যায় গণ্য থাকিল।
EGYPT
At the period of the Trojan war Egypt was united under one monarch, of the family of the great Sesostris. It was under this line of kings, whose reigns extend from the year 1500 to the year 200 before Christ, that the plains of Egypt were covered with the pyramids and those other stupendous monuments, which more than twenty-five centuries have not been able to efface, and which still render that country so highly interesting to the traveller. During this period of six hundred years, the most flourishing of the Egyptian History, the institutions of the country reached their maturity, the distinction of casts was maintained with vigour; the priests shared the authority of the state; the king was shackled with religious rites, and foreigners were carefully excluded from all insight into the mysteries of religion, which for greater security were recorded in the hieroglyphic character, intelligible to the priests alone. In all these respects we are led to the conclusion that a very extraordinary resemblance existed between the state and condition of Egypt, and that of India when under its Hindoo kings.
About the year B. C. 900 Sabaco, a foreigner from Ethiopia, subjugated the country. After his departure, Sethos, an Egyptian priest or brahmin, seated himself on the throne. The unity of the kingdom was shortly after broken, and twelve chiefs reigned in as many divisions of the kingdom. Quarrels, as might have been expected, broke out among them, and Psammeticus, one of their number was expelled. This exiled prince, about the year B. C. 650 took into his pay a body of Ionian and Carian or Greek mercenaries, and with their aid conquered the whole kingdom. He allotted them lands in Egypt, and retained them as his body guard. This was the first instance of the admission of foreigners into Egypt, and the influence of this innovation was soon felt upon the national institutions. The cast of Egyptian warriors, (the kshetriyus) were disgusted, and many of them retired to Ethiopia; the supremacy of the priesthood was shaken; the king aspired to the formation of a navy, and engaged in wars with the rising monarchies in Asia. Psammeticus was succeeded by Necho his son, who completed the navy, and carried his victorious arms as far as the Euphrates; but losing the battle of Circesium, was obliged to retire. He endeavoured to unite the Mediterranean with the Red Sea by means of a canal, but failed. Under his auspices the continent of Africa is said to have been circumnavigated by his newly formed navy, the boldest enterprise in which any monarch or people had to that period engaged. His grandson Apries formed plans of conquest in Asia, besieged the maritime city of Sidon, and even defeated the Tyrians, then the first naval power in the world. He afterwards undertook an expedition against the Grecian colony of Cyrene in Africa, but was defeated; and his people, wearied with the ambitious projects which his family had pursued for more than a hundred years, with the aid of Greek mercenaries, deprived him of his throne and life. With him fell the royal house of Psammeticus.
Amasis, a man of low origin, but of great ability, who had secretly fomented the late revolution, now took possession of the sovereign power. Under the influence of the enlightened Greeks, who had obtained so firm a footing in the country, he carried the prosperity of Egypt to the highest pitch; but this was only ‘the lightning before death.’ He had engaged in disputes with Cyrus, the conqueror of the East; and the Persians, flushed with success, determined to chastise the Egyptian monarch. Cyrus, and Amasis, however, both died about the same time, and Cambyses, the son of Cyrus, led the hosts of Persia against Psammenitus, the son of Amasis. In one battle fought at Pelusium, the Persians were victorious, and the conquered kingdom of Egypt was absorbed in the Persian empire, B. C. 525. Thus fell the most ancient monarchy then in the world. During the next epoch it continued to be a province of Persia.