পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/রোম (২)
রোম।
পূর্ব্বে যে সকল রাজোপপ্লবের বিষয় বর্ণনা করা গিয়াছে তাহা আসিয়াতে ঘটনসময়ে পশ্চিমদিগে এক রাজ্য সুপক্ক হইতেছিল ঐ রাজ্যে পৃথিবীর নানা সভ্য রাজ্য লীন হয় এবং পূর্ব্বকালীন সকল রাজ্য অপেক্ষা ঐ নূতন রাজ্যের অধিকার বৃহৎ ও চিরস্থায়ি হইল সেই রাজ্য রােম। ঐ রোম অতি পূর্ব্বকাল ও আধুনিক কালের এক প্রকার সন্ধিস্বরূপ কহা যাইতে পারে যেহেতুক রোম নগরের উদয় লৈকর্গসের সমকালীন এবং ইস্তাম বুল নগর তুরুকীয়েরদের কর্ত্তৃক অধিকৃত হওন সময়ে ১৪৫৪ বৎসরে তাহার অস্ত বিশেষতঃ ঐ রাজ্যের পশ্চিমাংশের অস্ত হয়।
এই মহারাজ চক্রবর্ত্তি নগর যখন পৃথিবীর অধিকাংশ মনুষ্যবর্গ আয়ত্ত করিয়া কৃতার্থ হয় তখন তাহার বিবরণ লিখিত হয় এই প্রযুক্ত ইতিহাসবেত্তারা তাহার উৎপত্তি বিষয় অতি স্তুতিবাদপূর্ব্বক বর্ণনা করিয়াছেন। ঐ নগর শৈশবাবস্থাতে দেবতারদের সহযোগবিষয়ক বর্ণনাতে সুশোভিত এবং কথিত হইল যে রোম নগরস্থাপক দুই জন রম্যুলস ও রিমস মার্সদেবতার সন্তান। কিন্তু এই সকল কথা এবং তত্তুল্য অন্য দেশের উৎপত্তি সময়ে দেবতারা প্রসন্ন ছিলেন ইত্যাদি কথা অস্মদাদির ভক্তি বোধ হয়। কেহ২ রোম নগরের প্রথমকার সাত জন রাজার বর্ণন কিছু প্রত্যয় না করিয়া তাবৎ বিবরণেই অশ্রদ্ধা করত তাঁহারদের রাজত্বের ইতিহাসসকল একেবারে হেয় করেন। কিন্তু তৎপরিবর্ত্তে তদপেক্ষা প্রামাণিক কোন বিবরণ পাইতে অক্ষম হওয়াতে সুতরাং রােমানেরদের ইতিহাসে যাহা লিখিত আছে তাহাই অস্মদাদির গ্রহণ করিতে হইল। ঐ ইতিহাসে লেখে যে খ্রীষ্টীয়ান শকের ৭৫২ বৎসর পূর্ব্বে ইটালির মধ্যবর্ত্তি স্থানে লাটিন্ দেশের মধ্যে তিবর নদীর তীরে সমুদুহইতে ছয় ক্রোশ অন্তরে রম্যুলসকর্ত্তৃক রোম নগর বসান যায়। প্রথমতঃ তাহার অতিসন্নিহিত আলবা লঙ্গা নগরহইতে আগত ব্যক্তি লইয়া তাহার বসতি হয়। ঐ নূতন নগর অতিশীঘ্র বর্দ্ধিত করণার্থ রম্যুলস ঋণগ্রস্ত ও লক্ষীছাড়া লোকেরদিগকে আশ্রয় দিলেন এবং অতিবিজ্ঞ ব্যবস্থা ও অতিকঠিন শাসনের দ্বারা ক্রমশঃ তাহারদিগকে ভদ্র ও বীর্য্যবন্ত করেন। রোম নগর জমিলে পর ধনি ও মান্য বসতি কারকেরদের মধ্যে রম্যুলস বাচ নি করিয়া পুরুষানুক্রমিক এক কুলীনত্ব পদ স্থির করিলেন এবং ঐ কুলীনেরদের মধ্যহইতে তিনি স্বীয় রাজসভ্যগণ বাচনি করিয়া লইলেন। কুলীনেরদের নাম পেত্রিসিয়ন ইতর লোকের নাম প্লিবিয়ন। শেষোক্ত প্লিবিয়ন অর্থাৎ সাধারণ নানা ব্যক্তিকে তিনি সম্প্রদায়ে বিভক্ত করিলেন। ভারি২ বিষয় তাবৎ ইতর লোকের অধিকাংশ ও রাজসভ্যেরদের দ্বারা নিষ্পত্তি হইত। রাজা কেবল সাধারণ লােকেরদের অভিপ্রায় জারী করিতেন এতাবন্মাত্র। মাজিস্ত্রেট নিযুক্ত করণ এবং শান্তি ও যুদ্ধ বিষয় নিশ্চয়করণ ও ব্যবস্থা মঞ্জুর করণবিষয়ক ক্ষমতা রম্যুলস ইতর লােকেরদিগকে দিলেন। পৌরােহিত্য কর্ম্ম রাজসভ্যেরদের হস্তেই অর্পিত হইল এবং ইতর ব্যক্তিদের সমাজে যে কোন কার্য্য শুভলক্ষণ সময়ে সমাধা না হইত তাহা মঞ্জুর হইত না ঐ লক্ষণের শুভাশুভ ফল নির্ণয় করণের ভার কেবল কুলীন যাজকেরদের উপরেই ছিল তৎপ্রযুক্তই তাঁহারা রাজ্যের মধ্যে অতি প্রবল হন। রম্যুলস যেমন তেমন এক প্রকার দেবতার আরাধনা ও স্থাপন করেন কিন্তু তাহার পরে যিনি রাজা হইলেন তিনি ঐ সকল নিয়মের পারিপাট্য করিলেন।
রােম নগরে স্ত্রীলোক অপেক্ষা পুরুষ অত্যধিক হওয়াতে রম্যুলস আপনার সহকারি ব্যক্তিদের নিমিত্ত নিকটবর্ত্তি সাবিন লােকেরদের স্থানে কোন মন্ত্রণার দ্বারা উপযুক্ত সংখ্যক স্ত্রী আনাইলেন তাহা না হইলে ঐ নবস্থাপিত নগর ক্রমে বিলুপ্ত হওনের সম্ভাবনা ছিল। ঐ স্ত্রী সকল তিনি ছলে বা সন্ধিক্রমে প্রাপ্ত হন ইহা নিশ্চয় করা এইক্ষণে দুঃসাধ্য। সাবিনেরদের সঙ্গে এতদ্রূপ সম্বন্ধ হওয়াতে লোক সংখ্যার এমত বৃদ্ধি হয় যে নগরস্থ লোক একেবারে দ্বিগুণ হইল। এতদ্রূপ প্রজাসমূহেতে নগর পুষ্ট হইলে রম্যুলস চতুর্দ্দিকস্থ ক্ষুদ্র২ রাজ্যে যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন। ঐ ক্ষুদ্র২ রাজ্য সামান্যতঃ এক বা দুই নগর এবং তচ্চতুর্দ্দিকস্থ যে ক্ষেত্রে ঐ রাজ্যের আহারীয় দ্রব্য উৎপন্ন হইত তাহা লইয়া হয়। রম্যুলস যখন যে প্রদেশে জয় করিতেন তখনি পরাজিত ব্যক্তিদের কতক২ লইয়া রোম নগরে স্থাপন করিতেন। ইত্যাদি প্রকারে রোম নগর উৎপন্ন হয় প্রথমতঃ তাহা কেবল দস্যু লোকেরদের আশ্রয় স্থান কিন্তু কালক্রমে প্রায় তাবৎ পৃথিবীর প্রভু হইল। রম্যুলসকে নিতান্তই এক জন মহাপুরুষের মধ্যে গণ্য করিতে হইবে যেহেতুক তিনি নানা প্রতিবন্ধকতাগ্রস্ত হইয়াও অতি নির্জন স্থানে এক নগর পত্তন করিলেন এবং সুব্যবস্থা ও শাসনের দ্বারা স্বীয় অতি শিশু রাজ্য এমত বিশেষ গুণোপেত করিলেন যে তাহাই ঐ রাজ্যের উত্তরকালীন মহত্ত্বের কারণ হইল। ইতিহাসবেত্তারা লেখেন যে ষাইট বৎসর বয়ঃক্রমে তিনি অত্যন্ত গর্ব্বী হইয়া একটা দাঙ্গাতে হত হন। কিন্তু ইহা হইতেও অধিক সম্ভবে যে রাজসভাস্থেরা অধিক পরাক্রম আকাঙ্ক্ষী হও য়াতে রাজার পরাক্রম বিষয়ে ঈর্ষী হইয়া একটা ঝটকার সুযােগে তাঁহাকে হত করেন এবং লোকেরদের মধ্যে এমত জল্পনা করেন যে তিনি ঐ ঝটকাতে দেবতারদেরকর্ত্তৃক গৃহীত হইলেন। অতএব রোমানেরা যাহারদিগকে পৃথিবীর মধ্যে সহিতে না পারিতেন তাহারদিগকে এইরূপে স্বর্গীয় দেবতা করিতেন এই ব্যবহার এইক্ষণে প্রথম দৃষ্ট হইল এবং পরেও মধ্যে২ এমত বিষয় দেখা গেল। রম্যুলস সাঁইত্রিশ বৎসর রাজ্য করিলেন। রােম নগর পত্তন হওনের কিঞ্চিৎ পর অস্ত্র ধারণের উপযুক্ত কেবল ৩,৩০০ লোক ছিল রম্যুলসের মৃত্যু সময়ে তাহারা বর্দ্ধিত হইয়া ৪৭,০০০ পর্য্যন্ত হইল।
রম্যুলস এতদ্রূপে হত হইলে রোমানের নূতন রাজা মনোনীত করণ বিষয়ে ঐক্য হইতে পারিলেন না অতএব রাজশাসন রাজসভ্যেরদের হস্তেই রহিল কিন্তু এক বৎসর গতে লোকসকল অস্থির শাসনে বিরক্ত হইয়া একজন রাজা নিযুক্ত বিষয়ে অত্যন্ত ব্যগ্র হইল কিন্তু নগরের মধ্যে যাহারা সাবিন বংশ্য তাঁহারা এক জন সাবিনকে এবং রোমানেরা রােমানকে রাজা করিতে ব্যগ্র ছিলেন। পরিশেষে এই স্থির হইল যে রোমানেরা এক জন সাবিন বংশ্যকেই রাজা স্থির করিবেন। তাহাতে ন্যুমাকে মনোনীত করেন তিনি অনালাপী কিন্তু ধর্ম্মাচারে রত নগরহইতে কিঞ্চিদন্তরে বাস করিতেন। রম্যুলসের রাজত্ব সময়ে কেবল যুদ্ধ ব্যাপীর হয় ন্যুমার রাজ্যকালে কেবল শান্তিই ছিল। তিনি রাজ্যের অত্যন্ত পারিপাট্য করিয়া নগরস্থ প্রত্যেক সম্প্রদায় লােকেরদিগকে পৃথকরূপে কর্ত্তব্য কার্য্য নিরূপণ করিয়া দিলেন। তিনি ব্যবস্থা স্থাপিত করিলেন এবং নগরের ধর্ম্মের রীতি নিবন্ধ করিলেন অতএব যদি রম্যুলসকে ঐহিক বিষয়ে ঐ নগরের সংস্থাপক জ্ঞান করা যায় তবে পারত্রিক বিষয়ে ন্যুমাকে নগরের সংস্থাপকের ন্যায় বােধ করিতে হয়। তাঁহার ধর্ম্ম ব্যবস্থা সকল ভ্রমাত্মক দেবপূজাদিমূলক হইলেও তদ্দ্বারা রোম নগরের অসভ্য নিবাসিরদের যে সভ্যতা জন্মিল ইহাতে সন্দেহ নাই। তাঁহার এই ধর্ম্মবিধি লোকেরদের মধ্যে অধিক মান্য হয় এতদর্থ তিনি কহিলেন যে আমি স্বর্গহইতে ইজিরিয়া নামে অপ্সরার প্রমুখাৎ এ সকল জ্ঞাত হইলাম। পরে তেতাল্লিশ বৎসর রাজ্য করিলে তাঁহার লোকান্তর হয় এবং রোমানেরা ও তচ্চতুর্দ্দিকস্থ ব্যক্তিসকল সাশ্রুনয়নে তাঁহার সমাধি ক্রিয়া সম্পন্ন করিলেন যেহেতুক তিনি সকলের মধ্যস্থ ও পিতাস্বরূপ ছিলেন।
রোম নগরের তৃতীয় রাজা টলস হষ্টিলিয়স লোককর্ত্তৃক মনোনীত হইয়া একত্রিশ বৎসর রাজ্য করেন। তিনি স্বভাবতঃ অত্যন্ত যুদ্ধশীল অতএব নিকটস্থ লোকেরদের মধ্যে পুনর্ব্বার রোম নগর অতিভয়ানক হইল। তাঁহার রাজত্বকালে যে ব্যাপার সর্ব্বাপেক্ষা ভারি সে আল্বা নগ রের বিনাশ করণ ঐ আল্বা রোমানেরদের আদি স্থান। সেই স্থানের লােকসকল উঠাইয়া রােম নগরে বসতি করিল তাহাতে রোমের লোক সংখ্যা ও যুদ্ধ উপায়ের অত্যন্ত বৃদ্ধি হইল এবং লাটিনবংশ্যের মধ্যে রােমানেরা প্রধান হইল তৎপরঅবধি আল্বা ও রোমীয় লোক একই হইল। কালক্রমে যখন তাবৎ পৃথিবী রােমীয়েরদের হস্তগত হইল তখন রোমীয় অনেক২ মহাকুলীন বংশ্যেরা এই টলস রাজার সময়ে রোম নগরে আগত আলবারদিগকে আপনারদের আদিপুরুষ জ্ঞান করিতেন। কথিত ছিল যে তাহার পর যিনি রাজা হইলেন তিনি টলসের ঘরে আগুন দিয়া তাঁহাকে হত করিয়া এমত প্রচার করিলেন যে দেবতারা কুপিত হইয়া রাজাকে বিনাশ করেন। পরে ন্যুমার পৌত্ত্র আঙ্কস্ মার্সিয়স সি৭হসিন প্রাপ্ত হইয়া তাঁহার পিতামহের ন্যায় অতি শান্তরূপে রাজকার্য্য চালাইতে নিশ্চয় করিলেন কিন্তু রোমানেরদের শত্রুগণ এমত যুদ্ধোৎসুক যে রাজাকে বহুকাল যুদ্ধে বিরত থাকিতে দিলেন না। তথাচ বোধ হয় যে রম্যুলসের যুদ্ধ বিষয়ক যেমন গুণ এবং ন্যুমার শান্তিবিষয়ক যেমন গুণ ঐ উভয় গুণই এই রাজার ছিল। তিনি বার২ রোমানের শত্রুরদিগকে পরাজয় করিলেন এবং তিবর নদীতে সেতু বন্ধন করিলেন এবং শহরের সীমা কিছু বাড়াইলেন। কিন্তু যে মুখ্য কার্য্যের দ্বারা তাঁহার রাজ্য প্রসিদ্ধ হইল তাহা রােম নগর ও সমুদ্রের মধ্যবর্ত্তি ক্ষেত্র জয়করণ এবং অষ্টিয়া বন্দর স্থাপন করণ। ইহাতে রােমানেরা জাহাজের ব্যবহারেতে প্রবর্ত্ত হইলেন কিন্তু বাণিজ্য কি বােম্বেটিয়াগিরীর নিমিত্ত তাহা ইতিহাসের মধ্যে ব্যক্ত নাই। অপর তেইশ বৎসর রাজ্যকরণানন্তর তিনি লোকান্তর গত হন। কেহ২ কহেন যে তাঁহার কালপ্রাপ্তিতেই মৃত্যু হয় অন্যে কহেন যে তিনি কোন প্রকারে হত হন। মরণকালে টারক্বিননামক যে এক জন বিদেশীয় ব্যক্তির তিনি বিশেষ পৌষ্টিকতা করিয়াছিলেন তাঁহার নিকটে স্বীয় দুই পুত্রকে সমর্পণ করিয়া যান।
ঐ টারক্বিন কোরিন্থ নগরস্থ এক ব্যক্তির পুত্ত্র। তৎসময়ে কোরিন্থ নগর গ্রীক দেশের এক বাণিজ্যের প্রধান আড্ডা এবং তাহা নব উৎপন্ন রোম অপেক্ষা সভ্যতাতে অতিজ্যেষ্ঠ। তাঁহার পিতা ইত্রুরিয়াতে আসিয়া বসতি করিলেন কিন্তু পুত্ত্র কোন বিষয় বৈরক্তিপ্রযুক্ত তথা হইতে স্বীয় মহাসম্পত্তি লইয়া রোম নগরে আসিয়া বাস করিলেন। ঐ ধন নগরস্থেরদের মধ্যে বিতরণপ্রযুক্ত এবং স্বীয় বীর্য্যপ্রযুক্ত নগরীয় লোকেরদিগকে সপক্ষ করিলেন। অপর আঙ্কস মার্সিয়সের মরণোত্তর সিংহাসন প্রাপ্ত্যর্থ লোকেরদের নিকটে অনেক বিনয় করতে প্রায় অনায়াসেই তাহা প্রাপ্ত হইলেন। তাহার অব্যবহিত পরেই নিকটবর্ত্তি রাজারা তাঁহার প্রতিকূলে অস্ত্রধারণ করিলেন কিন্তু তিনি সম্পূর্ণরূপেই তাহারদিগকে জয় করিলেন। তৎসমকালীন রােম রাজ্য অপেক্ষা দশ গুণ বৃহৎ অথচ কেবল তিবর নদীব্যবহিত ইত্রুরিয়ার নানা রাজ্য এক বাক্য হইয়া এক উদ্যেগেতেই রোমানেরদের পরাক্রম নিপাত করণের অভিপ্রায়ে অস্ত্রধারী হইল কিন্তু টারক্বিন তাহারদিগকেও জয় করিলেন। তদনন্তর শান্তি হওন অবকাশে তিনি শহর পরিষ্কার ও দুর্গের দ্বারা দৃঢ় ও সুশােভিত করণার্থ উদ্যোগ করিলেন। তিনি স্বভাবতঃ গ্রীকীয় অতএব অট্টালিকাদি নির্ম্মাণবিষয়ক ভাবক হওয়াতে তৎ কার্য্যের অত্যুপযুক্ত বোধ হয় যে তাঁহার তদ্বিষয়ক গুণের অদ্যাপি কিছু২ চিহ্ন আছে তদ্দৃষ্টে ইদানীন্তন লোকও অত্যাশ্চর্য্য বােধ করে। অপর চতুর্দ্দিকস্থ প্রদেশীয় লোকেরদের চাঞ্চল্যপ্রযুক্ত তাঁহার রণস্থলে পুনর্ব্বার উপস্থিত হইতে হইল তাহাতে পূর্ব্ববৎ কৃতকার্য্যও হইলেন। পরিশেষে সাঁইত্রিশ বৎসর রাজ্য করণানন্তর অশীতিবর্ষ বয়সে হত হইলেন এবং সরবিয়স টলিয়স নামক অতিনীচ বংশ্য অথচ অতিপারদর্শি এক ব্যক্তি রাজ্য প্রাপ্ত হইলেন।
সরবিয়স ইহার পূর্ব্বে নানা যুদ্ধে কৃতকার্য্য হওয়াপ্রযুক্ত এবং অত্যাশ্চর্য্য বক্তৃতা গুণপ্রযুক্ত সকল লােকেরই প্রিয়পাত্র হইলেন। রাজসভাস্থ ব্যক্তিরদের অনিচ্ছা থাকিলেও কেবল সাধারণ লােকেরদের অনুকুল্যে রাজপদে মনোনীত হইলেন। দুই প্রধান কার্য্যের দ্বারা তাঁহার রাজত্বসময় প্রকাশমান হইল বিশেষতঃ রাজ্যের মুলব্যবস্থা সংশোধন এবং রোমানেরদের সঙ্গে লাটিনের অন্তঃপাতি নানা জাতীয়েরদের ঐক্য করণ। দেশের রাজনিয়ম তিনি একেবারে উৎপাটন করিলেন। তাঁহার রাজত্বের পূর্ব্বে ভারি২ রাজকীয় ব্যাপার বিষয় ইতর লােকসমূহের দ্বারা নির্ণীত হইত তাঁহারা সম্প্রদায়ে২ আপনারদের সম্মতি অসম্মতি জ্ঞাপন করিতেন এবং নগরস্থ যিনি ধনী ও দরিদ্র উভয়ের তুল্য ক্ষমতা এবং প্রত্যেক ব্যক্তির বিভব বিবেচনা না করিয়া প্রত্যেক জনের তুল্যরূপেই রাজকর দিতে হইত। কিন্তু নগরস্থ লােকেরদিগকে সরবিয়স নূতন প্রকারে বিভক্ত করিলেন ও কর দেওনের অধিকাংশ ভার ধনি লােকেরদের উপরে দিলেন এবং রাজ্যের অধিক পরাক্রমও তাঁহারদিগকে দত্ত হইল। পুনশ্চ তিনি এমত বিধান করিলেন যে পাঁচ২ বৎসর অন্তরে নগরস্থ লোকেরদের সংখ্যা করা যাইবে এবং প্রত্যেক গৃহস্থের সম্পত্তিও নির্ণীত হইবে। তাহার অভিপ্রায় এই যে নগরস্থ প্রত্যেক জনের সম্পত্তিমূলক যে নূতন নিয়ম স্থাপন করিয়াছিলেন তাহার বিশৃঙ্খল না হইতে পারে। এবং ইহার পূর্ব্বে বাজার হস্তে যে পরাক্রম ছিল তাহার অধিকাংশ তিনি রাজসভ্যেরদিগকে অর্পণ করিলেন।
অপর লাটিন লােকেরদের সঙ্গে রোমানেরদের সংযোগ যে দৃঢ়ীভূত হয় এতদ্বিষয়ে নিতান্ত মনােযােগী হইলেন যেহেতুক ইহার পূর্ব্বে রােম নগরের শৈশবাব স্থায় যে নানা যুদ্ধের দ্বারা নগর নিপাত হওনের শঙ্কা ছিল সেই যুদ্ধ ঐ লাটিন লােকেরদের সঙ্গেই হয়। অতএব তিনি লাটিন লোকের এক সভা করত এই স্থির করিলেন যে উভয় জাতীয় এক সাধারণ উৎসবের দ্বারা দৃঢ় নির্ব্বন্ধ হইবে এবং ঐ উৎসব রোম নগরের এক ক্ষুদ্র পর্ব্বতের উপরে করা যাইবে। এতদ্রূপে রোম রাজ্যের অন্তরিক বিষয়সকল সুস্থির করিলে এবং বিদেশীয়েরদের সম্পর্কে শান্তি স্থাপন করিলে এমত বােধ হইতে পারিত যে নিদানে শান্তিরূপেই তাঁহার মৃত্যু হইতে পারিত কিন্তু চৌয়াল্লিশ বৎসর রাজ্যকরণানন্তর তাঁহার জামাতা অতিনির্দয়তারূপে তাঁহাকে হত করেন এবং তাঁহার কন্যা পিতার চূর্ণ শরীরের উপর দিয়া আপনার গাড়ি চালাইলেন। ঐ জামাতা প্রথম টারক্বিনের পৌত্ত্র এবং যেমন তাঁহার পিতামহের নামে নাম ছিল তেমন প্রায় স্বভাবও ছিল। ইতিহাসবেত্তারা তাঁহার প্রতি অনেক দোষ আরোপ করেন। কিন্তু ইহা মনে করিতে হইবে যে তাঁহার রাজত্বকালে রাজপ্রভুত্বের পরিবর্ত্তন হইয়া সাধারণ প্রভুত্বের নিয়ম সংস্থাপিত হয় অতএব যিনি রোমের শেষ রাজা ছিলেন তাঁহার প্রতি সর্ব্বপ্রকারে গ্লানি করা একপ্রকার রােমীয়েরদের ব্যবহারই হইল। যুদ্ধ বিষয়ে যে তিনি অতিবিজ্ঞ ছিলেন এবং নগরের সৌষ্ঠবের বিষয়ে সর্ব্বপ্রকারে তাঁহার পিতামহের কল্প সিদ্ধরকণার্থ উদ্যোগী ছিলেন ইহাতে কিছু সন্দেহ নাই কিন্তু যুদ্ধকার্য্য ও সরকারী অট্টালিকাদি নির্ম্মাণ টাকা অপেক্ষা করে এবং ঐ টাকা সংগ্রহকরণার্থ লোকেরদের উপরে কর বসাইতে হইল। ইহাতে সুতরাং তাহারা অত্যন্ত অসম্মত হইল এবং যে পুরুষানুক্রমিক কুলীনেরদিগকে রাজা দমন করিতে উদ্যোগী ছিলেন তাঁহারা সাধারণ লােকের উত্তেজনারূপে অগ্নিতে তৈল দিতে লাগিলেন। ইতিহাসবেত্তারা লেখেন যে রোমান লোকেরা এতদ্রূপ জ্বলনোদ্যত হইতে২ টারক্বিনের এক পুত্রের লাম্পট্য সফুলিঙ্গ তাহাতে লাগিয়া একেবারে তাবৎ রাজনিয়ম ভস্মসাৎ হইল। বিশেষতঃ রাজপুত্ত্র লুসিয়স টারক্বিন এক জন রোমান কুলীনের লুকৃসিয়া নাম্নী স্ত্রীতে আসক্ত হইয়া তাহাকে অসম্ভ্রান্তা করিলেন তাহাতে ঐ স্ত্রী কিরিচের দ্বারা স্বীয় বক্ষস্থলে আঘাত করিয়া প্রাণ ত্যাগ করিল। তৎসময়ে টারক্বিন রাজা দশক্রোশ অন্তরিত একনগর বেষ্টন কার্য্যে ব্যস্ত ছিলেন অতএব তাঁহার বিপক্ষগণের ইষ্ট সিদ্ধকরণার্থ অতি সুযােগ হইল। লুকৃসিয়া স্বীয় সম্ভ্রম চ্যুত হইলে প্রাণ ধারণ অনিষ্ট জ্ঞান করিয়া আত্মঘাতিনী যে হইলেন এই সম্বাদ বিলক্ষণরূপে নগরে রাষ্ট্র হইল এবং নগরস্থ লােকেরদের মধ্যে তদ্বিষয়ে এমত উদ্বেগ জন্মিল যে তাহারা ক্ষিপ্তপ্রায় হইল। পরে কুলীনেরা রাজসভাগত হইয়া ইতর লােকেরদের বিরাগের পােষকতা করত এককালে টারক্বিন ও তাঁহার তাবৎ বংশ্যেরদিগকে চির কালের নিমিত্তে দেশবহিস্কৃত করণের হুকুম দিয়া আজ্ঞা করিলেন যে তাহারদিগকে পুনর্ব্বার সংস্থাপিত করি তে যাঁহারা উদ্যোগী হইবেন তাঁহারা দেবতার কোপে পড়িবেন।
অপর রাজ্যের অবস্থার বিষয়ে বিবেচনার্থ লোকেরদের সভা হইলে সম্প্রতিকার রাজ উপপ্লবের মূল যে ব্রুটস তিনি এই প্রস্তাব করিলেন যে রাজার পদ ও নাম চিরকালের নিমিত্ত লোপ করা যাউক। এবং প্রতি বৎসরের কন্সল নামে দুই জন করিয়া প্রধান অধ্যক্ষ মনোনীত করা যাউক এবং রাজারদের তাবৎ পরাক্রম তাঁহারদের হস্তে অর্পিত হইয়া কেবল রাজার যে ঐশ্বর্য্য উপকরণাদি তাহা কন্সেলেরদের না থাকুক। এতদ্রূপে অতি অল্পকাল আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে রোমনগরে মূল ব্যবস্থার পরিবর্ত্তন হয়। ব্রুটস ও লুকৃসিয়ার স্বামী কলাটিনস প্রথম কনসল পদে নিযুক্ত হন।
ROME.
While the revolutions we have previously narrated were in progress in Asia, a nation was rising to maturity in the west, destined to absorb all the civilized governments of the world, and to acquire a dominion of wider extent, and of longer duration than any which had preceded it. This was Rome, which forms the connecting link between ancient and modern times; its origin stretching back to the times of Lycurgus, while its dissolution (in its eastern branch of the empire) extended to the capture of Constantinople in the fifteenth century.
As the history of this imperial city was not written till she had subdued the greater part of mankind, historians have given a very flattering account of her origin; the gods are brought in to adorn her infancy, and Romulus and Remus, the twin founders of the city are said to have owed their birth to the god Mars. These, like all other narrations in which the agency of the gods is introduced to assist at the birth of a nation, are justly considered fabulous; some, however, have extended their incredulity to the entire record of the seven kings of Rome, and without exception, reject the account of their reign; but as we are unable to substitute in its stead any more authentic history, we must follow the Roman historians. According to their annals, Rome was founded by Romulus, on a spot situated almost in the centre of Italy, in the country of the Latins, on the banks of the Tiber, about twelve miles from the sea, seven hundred and fifty-two years before the Christian æra. It was at first peopled by settlers drawn from Alba Longa, a town in its immediate neighbourhood. The more speedily to increase his new city, Romulus opened it as a refuge to all debtors and vagabonds; whom by wise laws and strict discipline he afterwards transformed into good and valorous citizens. When the city had acquired some degree of consistency, he created from the most wealthy and respectable settlers, a body of hereditary nobility, out of which he chose his senate. The nobles were called patricians, the rest of the people plebeians; these latter he divided into tribes. All matters of real moment were decided by the majority of the people, and by the senate; the king being considered only as the executor of the common will. To the people Romulus gave the peculiar privileges of appointing magistrates, of deciding on peace and war, and of confirming laws. The priesthood was committed to the senate, and as no acts of the popular assembly were esteemed valid which had not been held at the conjunction of auspicious omens, the patrician priests, who had exclusively the interpretation of those omens, acquired a predominant power in the state. Romulus also established a rude form of idolatrous worship, which was refined by his successor.
The number of male inhabitants in Rome, being greatly in excess of that of the female sex, the newly founded city would have dwindled to nothing if Romulus had not contrived to obtain from the Sabines, a neighbouring people, a sufficient number of wives for his associates. Whether they were obtained by fraud or treaty, it is no easy matter to determine. This alliance with the Sabines brought such an accession of inhabitants as nearly to double the population of the city. Thus strengthened in men, Romulus made war on the petty states around him, each of which consisted generally of one or two towns and the fields which surrounded and nourished them. He invariably improved his victory by transplanting a portion of the conquered people to his own city. Thus arose Rome, originally a sanctuary for freebooters, but in the lapse of time, the mistress of the world. Romulus decidedly ranks among the ablest of men, in having raised a city from nothing in the face of every difficulty, and having given to his infant colony by laws and discipline, that peculiar character which was in fact the foundation of all its subsequent greatness. Historians report that he became offensively haughty, at the age of sixty, and that he was slain in a riot; but it is more than probable that the senators, in their lust of ruling, became jealous of his power, and took advantage of a storm of thunder and lightning to despatch him, giving out among the people that he had been taken up to heaven in the storm and enrolled among the gods. This was the first, but not by any means the last instance in which the Romans gave a seat in heaven among their gods, to those whom they could not tolerate on earth. Romulus reigned thirty-seven years; at his death the citizens of Rome capable of bearing arms had been increased from 3,300, to 47,000 men.
Romulus being thus removed, the Romans were unable to agree in the choice of a ruler, and the government devolved on the senate. After the lapse of a year, the people weary of this fluctuating rule became eager for a king; but as the Sabine part of the population insisted on a Sabine king, and the Romans on having a Roman; it was agreed finally that the Romans should choose a Sabine. Their choice fell upon Numa, a man of retired religious habits, then residing at a distance from the city. His reign was as peaceful as that of Romulus had been warlike. He brought the commonwealth into order, and appointed to each class of citizens its separate duties. He instituted laws, and gave a fixed character to the religion of the city; so that while Romulus is regarded as the founder of its political, Numa is justly considered the father of its ecclesiastical polity. That these religious institutions, though founded on the erroneous basis of idolatry, served in no small degree to civilize the rude settlers in Rome, will not admit of a doubt. To impart extraordinary sanctity to his religious precepts, he pretended to have received them directly from heaven, through a personal communication with the nymph Egeria. He died after a reign of forty-three years, and was followed to his grave by the tears not only of the Romans but of the surrounding people, among whom he had constantly acted as a mediator and father.
Tullus Hostilius, the third king of Rome, was elected by the people, and reigned thirty-one years. He was of a warlike character, and made the name of Rome again formidable to its neighbours. The event which peculiarly distinguished his reign was the destruction of Alba, (to which city Rome owed its birth), and the emigration of its inhabitants thither, by which its population and military resources were augmented, and the Romans placed at the head of the Latin nation. The Albans and the Romans henceforth formed but one people, and when in the lapse of time, Rome came to govern the world, many of its most illustrious families traced their ancestry to the Albans who emigrated to Rome in the days of Tullus. He is said to have been murdered by his successor, who set fire to his dwelling, and gave out that the slaughtered king had fallen a victim to the vengeance of the gods. Ancus Martius, the grandson of Numa, was raised to the vacant throne, and resolved to renew the peaceful policy of his grandfather, but found the enemies of Rome too restless to allow him long to sheathe the sword. He appears to have gradually blended in his conduct the virtues of Romulus in war, with those of Numa in peace. He frequently defeated the enemies of Rome; threw a bridge across the Tiber, and extended the boundaries of the city. His reign is however chiefly remarkable for the conquest of the lands laying between Rome and the sea, and the erection of the port of Ostia, which led the Romans to apply to navigation, but whether for trade or piracy, history does not inform us. He died after a reign of twenty-three years, a natural death according to some, a violent death according to others, and left his two sons under the guardianship of Tarquin, a stranger whom he had particularly patronized.
Tarquin was the son of a citizen of Corinth, the great commercial mart of Greece, a city far more forward in civilization than infant Rome. His father had emigrated to Hetruria, but the son, from some cause of disgust removed to Rome with his great wealth, which he expended liberally among the people, and by this means as well as by his valour, secured the favour of the citizens. On the death of Ancus Martius, he made interest with the people for the vacant throne, and obtained it without much difficulty. The neighbouring states almost immediately after appeared in arms against him, but were completely defeated. About the same time, all the states of Hetruria, a country ten times greater in extent than Rome, and separated from it only by the Tibur, rose simultaneously in the hope of annihilating the Roman power at one blow, but Tarquin was again victorious. Having now a season of peace and leisure, he directed his efforts to cleanse, fortify, and embellish the city, for which his Grecian taste eminently qualified him. Some of the monuments of his genius are thought still to exist, and excite the astonishment of the present age. The turbulence of the states around Rome again constrained him to take the field, where he met with his usual success. He fell at length by assassination in the eightieth year of his age and the thirty-seventh of his reign; and was succeeded by Servius Tullius, a man of ignoble origin, but of a comprehensive genius.
Tullius had acquired much favour among the people by his success in various engagements; as well as by his surprizing eloquence. His election was carried by the voice of the people against the will of the senate. His reign was distinguished by two prominent events: the reform of the constitution; and the union of the Latin tribes with the Romans. He entirely changed the internal administration of the state. Before his reign, the people, who were the umpire in all great political questions gave their votes by tribes, the value of the vote of each citizen being equal; the taxes were at the same time levied equally, on each individual in the state, without reference to his means. Tullius made a new division of the people, by which the great burden of public contributions was thrown on the rich, and a preponderance of power bestowed on them. He likewise appointed that a census of the people should be taken, and a return of their property be made, at the end of every five years, in order that the new arrangements, based on the respective wealth of each citizen, might continue unimpaired. Much of the power heretofore vested in the king, he transferred to the senate.
To consolidate the union of the Romans with the great body of the Latins was also an object of peculiar solicitude with him, as the greater part of the wars which had threatened the city during her infancy, had been occasioned by disputes with this nation. He therefore summoned an assembly of the Latins, and bound them to the Romans, in the firm bond of a common religious festival to be celebrated annually on one of the hills of Rome. After having thus secured tranquillity within the state, and concord in its external relations, it might have been expected that he would at least have been allowed to die in peace, but he was basely murdered by his son-in-law after a reign of 44 years, and his own daughter drove her carriage over his mangled body. That son-in-law was the grandson of the first Tarquin, and inherited with his grandfather's name much of his spirit. Historians charge him with many vices, but it must be borne in mind that it was during his reign that royalty was abolished and republicanism established in its stead; and that it became the fashion to heap every indignity on the last king, which Rome ever had. That he was an able general in war, can be as little doubted, as that he sought by every means to carry into effect his grandfather's views for the embellishment of the city. But war and public buildings require funds, to raise which he was obliged to tax the people. This led to discontents, which were eagerly fanned by the hereditary nobility, whom he had already endeavoured to bridle. While the Roman people were in this inflammable state, the lust of one of the sons of Tarquin, as historians narrate, supplied the spark, which blew the monarchy to atoms. Lucius Tarquin, enflamed with attachment to Lucretia the wife of a Roman noble, dishonoured her, on which she plunged a dagger into her own bosom and expired. As his father was then absent, besieging a town twenty miles distant from Rome, ample scope was afforded to his enemies to work their purpose. News of the tragic death of Lucretia, by her own hand, because she would not survive her honour, was diligently spread abroad in the city; the people were excited to enthusiasm; the nobles assembled in the senate, and falling in with the current of popular indignation, at once proceeded to condemn to perpetual banishment both Tarquin and all his kindred, and devoted to the infernal gods all those who should attempt to restore them.
When the people assembled to debate on the state of affairs, Brutus, the mainspring of the revolution, proposed to them that the name and office of King should be for ever abolished; that two magistrates should be annually elected to be called consuls, who without the trappings of royalty should be endowed with all the power which had belonged to the kings. Thus was the entire constitution of Rome changed in the short space of forty-eight hours. Brutus, and Collatinus, the husband of Lucretia were of course elected the first consuls.