পুরাবৃত্তের সংক্ষেপ বিবরণ/সাধারণ প্রভুত্ব সংস্থাপনাবধি রোম নগরের পুনর্বার গ্রন্থনপর্যন্ত
সাধারণ প্রভূত্ব সংস্থাপনাবধি রোমনগরের পুনর্ব্বার
গ্রন্থনপর্য্যন্ত।
রোম নগর পত্তন হওনঅবধি ২৪৩ বৎসর পরে রাজ প্রভুত্বের নিয়মবৈপরীত্য হয়। ঐ তীবৎ বৎসর ব্যাপিয়া রােম নগর প্রতিবাসি রাজারদের সঙ্গে প্রায় নিয়ত যুদ্ধে প্রবর্ত্ত ছিল এবং যদি ইতিহাসবেত্তারদের কথায় প্রামাণ্য করা যায় তবে ঐ সকল যুদ্ধে প্রায় নিত্যই জয়ী ছিল তথাপি কনসলি পদ নির্ণীত হওন সময়ে রােমানেরদের ভূম্যধিকার শহরের প্রাচীরহইতে অল্প কএক ক্রোশমাত্রব্যাপক ছিল। রোমানেরদের পরাক্রম তাঁহারদের ভূম্যধিকারের অনুরূপ ছিল না কিন্তু নগর বাসি লােকেরদের সংখ্যা ও সাহসেতেই রাজ্য প্রবল এবং প্রত্যেক যুদ্ধেতে নগরের লােক সংখ্যারও বৃদ্ধি হইয়া উঠিল।
এতৎসময়ে টস্কান জাতীয়েরা এমত বর্দ্ধিত হইল যে তাহার পূর্ব্বাপর তদনুরূপ দৃষ্ট হইল না অতএব অপদস্থ টারক্বিন রাজা তাঁহারদের সাহায্য প্রার্থনা করিলেন এবং রোমানেরদের নিকটবাসি টস্কানির অন্তর্গত বেয়ী নগরস্থেরা তাঁহার অনুকূল্যার্থ অস্ত্রধারণ করিলেন। কিন্তু অতি সাংঘাতিক এক যুদ্ধেতে তাঁহারা পরাভূত হইলেন। ঐ যুদ্ধে ব্রুটস কন্সল ও টারক্বিনের পুত্ত্র আরন্স পরস্পর যুদ্ধেতে হত হইলেন। তৎপরে ক্লুসিয়ননামক অন্য এক টস্কান নগরের অধ্যক্ষ পর্সেনা টারক্বিনের আনুকূল্যার্থ অতিপ্রবল সৈন্য লইয়া রোমের প্রতি যাত্রা করিলেন এবং রোমানেরদের সৈন্যের প্রায় অবিশ্বাস্য সাহস হইলেও এবং কক্লিস ও ম্যুসিয়সের বীর্য্যবত্তা প্রকাশ হইলেও রােমানেরা পরাভূত হইল এবং তাঁহারদের ভূমির কিয়দংশ হাতছাড়া হইল এবং কৃষি কর্ম্মব্যতিরেকে লৌহাস্ত্র লইয়া ব্যবহার করা তাঁহারদের নিষেধ হইল। পরে পর্সেনা তীবর নদীর দক্ষিণে লাসিয়ম দেশ জয় করত চলিলেন এবং যদি তিনি কুমার অধ্যক্ষ আরিষ্টমিনিসকর্ত্তৃক পরাভূত না হইতেন তবে রোমানেরদের নাম বুঝি একেবারে বিলুপ্ত করিতেন। রোমানেরা তাঁহার পরাভূত হওনের সুযোগে সেই দেশসকল পুনর্ব্বার অধিকার করিয়া লইলেন।
অপর টারক্বিন টস্কানিহইতে আর কোন সাহায্য প্রাপণ বিষয়ে হতাশ হইয়া স্বপক্ষে সাহায্যার্থ লাটিনেরদিগকে উত্তেজনা করিলেন। লাটিনেরা যদ্যপি সাধারণ ধর্ম্ম উৎসবের দ্বারা রোমানেরদের সঙ্গে বন্ধ ছিলেন তথাপি রোম নগরের বৃদ্ধি দেখিয়া তাঁহারদের ঈর্ষা জন্মিল। কিন্তু যখন রোমীয় রাজসভ্যেরা সৈন্য সংগ্রহ করিতে উদ্যক্ত হইলেন তখন কেহই সৈন্যের মধ্যে ভর্ত্তি হইতে ইচ্ছুক হইল না। ফলতঃ টারক্বিনেরা তাড়িত হওয়াঅবধি ধনি কুলীনেরা তাবৎ পরাক্রম স্বহস্তে রাখিয়া দরিদ্র লােকেরদিগকে অত্যন্ত ক্লেশ দিলেন। দরিদ্র ব্যক্তিরা প্রায় সকলই ঐ ধনিরদের টাকা ধারিতেন এবং রোমানেরদের এমত ব্যবস্থা ছিল যে উত্তমর্ণেরা অধমর্ণেরদিগকে আপন বাটীতে কয়েদ রাখিয়া স্বেচ্ছাক্রমে তাহারদিগকে প্রহার করিতে পারিতেন। ইহাতে অত্যন্ত দুরবস্থা হইল যেহেতুক শহরের মধ্যে প্রজাসকল অবাধ্য এবং শহরের বাহিরে অতি প্রবল শত্রু নগরঅক্রমণ করিতে উদ্যত ইহা দেখিয়া রাজসভ্যেরা এই উপায় স্থির করিলেন যে ছয় মাসের নিমিত্ত ডিকটেটর নামে বিখ্যাত এক জন অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয় তাঁহার পদ থাকিতে অন্যান্য অধ্যক্ষ সকলের ক্ষমতা রহিত হয় এবং তাঁহার আজ্ঞার উপরে কোন আপীল না হইতে পারে। এই নূতন অধ্যক্ষ এই অশেষ পরাক্রম বিশিষ্ট হওয়াতে ইতর লােকেরদের মধ্যে অত্যন্ত ভয় জন্মিল অতএব তাহারা অতি শীঘ্র২ সৈন্যের মধ্যে ভর্ত্তি হইতে স্বীকৃত হইল। ইতিমধ্যে লাসিয়মহইতে আগামি যুদ্ধ ঝটকার যে ভয় হইয়াছিল তাহা দূর হইল এবং ডিকটেটর স্বীয় পদ ত্যাগ করিলেন। তাহার কএক বৎসর পরে লাটিন লোকেরা রোমানেরদের সঙ্গে যুদ্ধ পরীক্ষা করিতে নিশ্চয় করিয়া আপনারদের তাবৎ সৈন্য সংগ্রহ করিল ও রেগিলস হ্রদের তীরে উভয় দেশীয়েরদের বহু কালব্যাপক এক মহা যুদ্ধ হয়। ঐ যুদ্ধ রাজারদিগকে বহিষ্কৃতকরণের চৌদ্দ বৎসরের পরে হয় এবং তাহাতে রোমানেরা সম্পূর্ণ জয়ী হন। লাটিনেরদের মধ্যে তেত্রিশ হাজার লোক রণ ভূমিতে মৃত্যু হয় ও লাটিনেরা একে বারে ভগ্নপরাক্রম হইল। টারক্বিনের অশাও চিরকালের মত দূরগত হইল।
ইত্যাদি ব্যাপারে কুলীনেরদের ভয় নিবৃত্ত হইলে পূর্ব্বাপেক্ষা অত্যন্ত কাঠিন্যরূপে তাঁহারা দীন দরিদ্র ব্যক্তিরদিগকে তাড়না করিতে লাগিলেন তাহাতে নগরস্থেরা অবাধ্যহওনার্থ প্রস্তুত অতএব স্ফুলিঙ্গমাত্র পতনেই তাহারা একেবারে জ্বলিয়া উঠে। এতদবস্থায় লেকড়াতে জড়ান এবং জিঞ্জিরের ভারে অবনতকায় এমত এক জন বৃদ্ধ কারাগারহইতে পলায়ন করিয়া লোকেরদের নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করিল। পূর্ব্বে যে সকল স্থানে ঐ ব্যক্তি যুদ্ধ করিয়াছিল তাহা বিস্তারিতরূপে কহিতে লাগিল এবং তাহার উত্তমর্ণ কুলীন অতি নির্দয়তারূপে তাহাকে যে প্রহার করিয়াছিলেন তাহার রক্তাক্ত চিহ্ন গাত্র খুলিয়া সকলকে দেখাইল তাহাতে দয়ার্দ্র হইয়া তাবৎ লােক ঐ অত্যাচারির প্রতি অত্যন্ত জ্বলিত হইয়া প্রতিকারার্থ নানা কলরব করিতে লাগিল। রজিসভাস্থেরা ইহা শুনিয়া আপনারদের নিয়মানুসারে লােকেরদিগকে অন্যমনস্ক করণাভিপ্রায়ে বলসির লোকেরদের প্রতি যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন কিন্তু কেহই সৈন্যের মধ্যে প্রবিষ্ট হইতে ইচ্ছুক হইল না। পরিশেষে সরবিলিয়স কন্সল অগ্রসর হইয়া এই ঘােষণা করিলেন যে সৈন্যেরদের মধ্যে যাহার। প্রবিষ্ট হইবে তাহার যত কাল অস্ত্রধারণ করে তত কাল কয়েদ হইতে হইবে না। এইরূপ প্রতিজ্ঞা শুনিয়া লােকেবা স্বচ্ছন্দেই পতাকার নিকটে ধাবমান হইয়া বিপক্ষপক্ষ কে সম্পূর্ণরূপে জয় করিল এবং লুঠিত ধনেতে ভারাক্রান্ত হইয়া প্রত্যাগমন করিল। কিন্তু পুনর্ব্বার শান্তি সুস্থির হইলে কুলীনের লোকেরদের উপরে পুনশ্চ দৌরাত্ম্য আরম্ভ করিলেন তাহাতে পুনশ্চ লোকেরাও অবাধ্য হইল। কিন্তু তদুপলক্ষে রাজসভাস্থেরা যে নূতন যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন এবং যে ডিক্টেটর নিযুক্ত করিলেন তাহার ভয়েতে লোকেরা কিঞ্চিৎ কাল শাসিত থাকিল। সৈন্যেরা বিপক্ষের প্রতিকূলে যাত্রা করিয়া পুনর্ব্বার জয়ী হইল এবং ডিক্টেটরের অধীনে যে সৈন্যেরা ছিল তাহারা বিদায় পাইল। কিন্তু কালের অধীন যে সৈন্যেরা রণস্থলে উপস্থিত ছিল তাহারা একেবারে অবাধ্য হইয়া স্বীয় সেনাপতিকে ত্যাগ করিয়া রোম নগরহইতে দেড় ক্রোশ অন্তরে শাসর অর্থাৎ পবিত্রনামক পর্ব্বতে গমন করিয়া এই নিশ্চয় করিল যে রােমনগরে আমারদের কোন আশ্রয় নাই অতএব সেই স্থান আমরা একেবারে চিরকালের নিমিত্তই পরিত্যাগ করিলাম। অপর শহরের মধ্যে যে সকল ইতর লোক ছিল তাহারও নগরের সরহদ্দের মধ্যস্থ দুই পর্ব্বত আয়ত্ত করিল এবং কুলীনেরা ও তাঁহারদের অনু ষঙ্গি ব্যক্তিরা অস্ত্রধারণপূর্ব্বক অন্যান্য ক্ষুদ্রপর্ব্বত স্বহস্তেই রক্ষা করিলেন।
এতদ্রূপে রোমানেরদের পরস্পর আন্তরিক বিবাদ হওয়াতে নগরের এককালে সর্ব্বনাশসম্ভাবনা কিন্তু রাজ সভ্যেরদের ধৈর্য্যপ্রযুক্ত রক্ষা পাইল। প্রথম তাঁহারাই নত হইতে নিশ্চয় করিলেন এবং ঐ পর্ব্বতোপরি আশ্রিত রোমানেরদিগকে পুনর্ব্বার নগরে ফিরিয়া আসিবার নিমিত্ত বিনীতি করণার্থ আপনারদের কএক ব্যক্তিকে তাঁহারদের নিকটে প্রেরণ করিলেন। রোমান ইতিহাসবেত্তা লেখেন যে প্রেরিত ব্যক্তিরদের অগ্রগণ্য ব্যক্তি শরীরের নানা অঙ্গের বিষয়ে হিতোপদেশ গ্রন্থের তুল্য এক ইতিহাস কহিলেন তাহাতে লোকেরদের অন্তঃকরণ একে বারে হওয়াতে তাহারা কহিল যে কুলীন ও ধনি ব্যক্তিদের অন্যায়াচরণ বিষয়ে ইতর লোকের সুরক্ষণার্থ যদ্যপি আমারদের মধ্যহইতে প্রতিবৎসরে ছয় জন করিয়া মাজিস্ত্রেট মনোনীত করিতে আপনারা অনুমতি দেন তবে অতীত ব্যাপার বিষয়ে আমরা আর কিছু মনে না করিয়া নগরে ফিরিয়া আসিতে পারি তাহাতেই রজি সভ্যেরা স্বীকৃত হইলেন। ঐ মাজিষ্ত্রেটেরদের সংজ্ঞা ত্রৈব্যুন অর্থাৎ লোকেরদের অধ্যক্ষ তাঁহারদের এই ক্ষমতা ছিল যে রাজসভার দ্বারে বসিয়া ঐ সভার নির্দ্ধার্য্য বিষয়ের মধ্যে যাহা তাঁহারদের বোধে লোকেরদের পক্ষে অমঙ্গল তাহা তাঁহারা নিষেধ করিতে পারিতেন। কেহই তাঁহারদিগকে ছুঁইতে পারিত না এবং তাঁহারা প্রতিবৎসরেই মনোনীত হইতেন। অতএব ইতর লােকেরদের মধ্যে প্রথম লব্ধবিষয় এই এবং রাজা বহিষ্কৃত করণের ষোল বৎসরের পরে এই নিয়ম হয়। এই ইতিহাসের প্রণালীতে পশ্চাৎ দৃষ্ট হইবে যে রাজসভ্যেরা প্রথম এই এক বিষয় ছাড়িয়া দেওয়াতে রাজকীয় পদ প্রাপণবিষয়ে যেপর্য্যন্ত কুলীন ও ইতর লোকেরদের মধ্যে কিছুমাত্র ইতর বিশেষ থাকিল না সেইপর্য্যন্ত লােকেরা নিত্যই নূতন২ দাওয়া করিল।
এই নিয়মের পর পাঁচ বৎসর ব্যাপিয়া করিয়োলনসের ব্যাপারে রোমনগরস্থ সকল লোকই ব্যাসক্ত হইল। করিয়োলানস অতিসাহসিক গর্ব্বী এক জন যুব কুলীন ছিলেন এবং ইতর লোকেরদের অত্যন্ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করিতেন। তিনি নানা অবিবেচনা কার্য্যকরণপ্রযুক্ত নানা নালিসের যোগ্য হইলেন অতএব লোকেরদের অধ্যক্ষেরা আপনারদের পরাক্রম বৃদ্ধি করণের এই সুযোগ বুঝিয়া করিয়েলানস রাজসভ্য হইলেও আপনার কুকর্ম্মের জওয়াব দেওনার্থ তাঁহাকে লোকেরদের আদালতে তলব করিলেন। ইহাতে রোম নগরের মধ্যে অত্যন্ত গণ্ডগোল বাদিল। কিন্তু রাজসভাস্থেরা রক্তপাত না হয় এতদর্থ সাধারণ লোকের অধ্যক্ষেরদিগকে তদ্বিষয়ের বিবেচনা করণের ক্ষমতা প্রদান করিলেন এবং লোকেরা তৎক্ষণাৎ করিয়োলানসকে মহাঅপরাধি করিয়া দেশবহিষ্কৃত করিলেন। এই অপমানের প্রতিফল দেওনার্থ তিনি অত্যন্ত উৎসাহী হইয়া রোমানেরদের অশেষ শত্রু বলসির দরবারে গমন করিলেন এবং বলসি ও রােমানেরদের মধ্যে তৎকালে যে সন্ধি ছিল তাহা উল্লঙ্ঘন করিতে প্রবােধ জন্মাইয়া কহিলেন যে আমি আপনার দেশস্থ লোকেরদের প্রতিকুল্যে বলসির সৈন্য লইয়া যুদ্ধ করিতে প্রস্তুত আছি। পরে বলসির সৈন্যের সেনাপতি হইয়া জয় করত চলিলেন এবং রোমান লোকেরদের তাবৎ ভূম্যাদি লুঠিত করিয়া একাদিক্রমে তাবৎ গ্রাম অধিকার করিতে লাগিলেন। তাঁহাকে নিবারণার্থ যুদ্ধবিষয়ক তত্তুল্য নিপুণ রোমানেদের কোন সেনাপতিই ছিল না এবং এক জন রোমানের রাগোন্মত্ততাতে একেবারে রোমানেরদের নাম লােপ হয় এমত সম্ভাবনা হইল। ইতিমধ্যে করিয়োলানসের মাতা ও তাঁহার স্ত্রী এবং নগরের অন্যান্য মান্য স্ত্রীগণ তাঁহার ছাউনিতে গমন করিয়া পাদ গ্রহণপূর্ব্বক বিনীতি করিতে লাগিল যে আপনার জন্মভূমি কদাচ আপ নি বিনাশ করিবেন না। পরে করিয়োলানস স্নেহ ও গর্ব্বেতে অনেককাল আন্দোলিত হইয়া পরিশেষে তাঁহার মাতাকে উঠাইয়া কহিলেন যে মা তুমি রোম নগর রক্ষা করিলা কিন্তু আপন পুত্রকে হারাইলা। পরে কোন ছলক্রমে সৈন্যসকল তথাহইতে উঠাইয়া লইয়া গেলেন এবং রোম নগর লুঠকরণবিষয়ক বলসিরদের যে প্রত্যাশা ছিল তাহা দূর হইলে ৪৮৭ সালে তিনি তাহারদেরকর্ত্তৃক হত হইলেন এমত কথিত ছিল।
তাহার পরে রােমানেরদের ইতিহাসের মধ্যে যে গুরুতর কার্য্য হয় তাহা স্প্যুরিয়স কাসিয়সনামক অতি মহাবংশোদ্ভব এক জন রোমানের ব্যাপার। ইহার পূর্ব্বে তিনি কন্সল হইয়া দুইবার জয়ী হইয়াছিলেন। ইতর লােকেরদের দুঃখ দেখিয়া তিনি দয়ার্দ্রচিত্ত হইয়া আগ্রেরিয়া ইতিনামক এক ব্যবস্থার প্রস্তাব করিলেন। ঐ ব্যবস্থার বিষয়ে দুই তিন শত বৎসরপর্য্যন্ত রোমানেরদের মধ্যে বিবাদ চলিতে লাগিল এবং তাহার ভাবের বিষয়ে ইদানীন্তন ইতিহাসবেত্তারদের মধ্যে অনেক বাদানুবাদ হইয়াছে। কেহ২ কহেন যে ঐ ব্যবস্থার অভিপ্রায় এই যে ধনি রোমান জমীদারেরদের ভূমি লইয়া ইতর লোকেরদের মধ্যে বিতরণ করা যায়। অন্যেরা কহেন এমত নহে কিন্তু ঐ ব্যবস্থার প্রসঙ্গ এই যে রোমানেরদের জয় লব্ধ যে ভূমি কুলীনেরা দখল করিয়া উপস্বত্বের দশমাংশ রাজ ভাণ্ডারে দিতে স্বীকার করিয়া পরে দেশের মধ্যে প্রবল হইয়া তাহা দেন নাই সেই সকল ভূমি তাঁহারদের হাত ছাড়া করিয়া যে সাধারণ লোকেরদের সাহসে অধিকার হইয়াছিল তাহারদের মধ্যে অল্প কর নির্দ্দিষ্টপূর্ব্বক বিলি করা যায়। ফলতঃ এই অন্যতর ব্যাখ্যার মধ্যে যাহা প্রকৃত বোধ করা যাইবে সেই কল্পেতেই কুলীনেরদের যেমন বিরাগ ইতর লোকেরদের তেমনি অনুরাগ ছিল। অতএব এই প্রস্তাবের মূল যে কাসিয়স তাঁহাকে রাজসভ্যেরা বিনষ্ট করিতে নিশ্চয় করিলেন। কোন২ ইতিহাস বেত্তা লেখেন যে রাজত্ব পদের আকাঙ্ক্ষা করণাপরাধে তিনি যথারীতি বিচারে দোষীকৃত হইয়া টারপিয়ন পর্ব্ব তের শৃঙ্গহইতে নিক্ষিপ্ত হইলেন। টারপিয়ন পর্ব্বতহইতে নিক্ষেপ করা রোম নগরে রাজপদাকাঙ্ক্ষিরদের দণ্ড নিরূপিত ছিল। কিন্তু অন্যান্য ইতিহাসবেত্তা লেখেন যে খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪৮৪ বৎসর পূর্ব্বে করিয়োলানসের মৃত্যুর তিন বৎসর পরে কাসিয়সের বিপক্ষগণ গোপনে তাঁহাকে খুন করেন।
কাসিয়সের মৃত্যুর পর ত্রিশ বৎসর ব্যাপিয়া রোম নগরে তাদৃশ গুরুতর ব্যাপার দৃষ্ট হয় না। চতুর্দ্দিগস্থ রাজারদের সঙ্গে প্রায় অবিরতই যুদ্ধ চলিল তাহাতে রোমানেরা নিত্য জয়ী। কিন্তু নগরের মধ্যে আন্তরিক বিবাদশূন্য এমত ছিল না। সাধারণ লোকেরা স্বপক্ষ মাজিস্ত্রেট প্রাপ্ত হইয়া তাহারদের পরাক্রম বর্দ্ধিত করিতে চেষ্টা হইল সুতরাং কুলীনবর্গের সঙ্গে বিবাদ হইতে লাগিল। কিন্তু বিবাদের বিষয় পরিশেষে কুলীনেরদের ত্যাগ করিতেই হইল তবু বিসম্বাদব্যতিরেকে ত্যাগ করিলেন না। যখন লোকেরদের অধ্যক্ষ আগ্রেরিয়া নামে ব্যবস্থার উল্লেখ করিতেন তখনি রাজসভ্যেরা লোকেরদের অন্যমনস্কতা করণ নিমিত্ত নিকটবর্ত্তি কোন রাজার সঙ্গে যুদ্ধ ঘটাইতেন। অনন্তর লোকেরদের পরাক্রম বৃদ্ধি হওয়াতে কোন এক লিখিত ব্যবস্থায় অতি আবশ্যক বোধ হইল যে সেই ব্যবস্থাতে অসমান বিষয়েতে লোকের সামান্য রূপ স্বত্ব নিরূপণ থাকে। অতএব টেরেণ্টিলসনামক এক জন লোকেরদের অধ্যক্ষ তদ্রূপ ব্যবস্থা প্রস্তাব করিলেন কিন্তু রাজসভ্যেরা তদ্বিষয়ের অত্যন্ত প্রতিবন্ধক হইলেন যেহেতুক তাহা হইলে তাঁহারদের অব্যবস্থিত পরাক্রমের হানি হয়।
কিন্তু অনেক বিবাদ বিসম্বাদের পর রাজসভাস্থেরা ঐ নি য়মেই স্বীকৃত হইলেন এবং নগরস্থ অতিপ্রসিদ্ধ মান্য তিন জন গ্রীক দেশে বিশেষতঃ আথেন্স নগরে প্রেরিত হইলেন। ঐ নগর তৎসময়ে পেরিক্লিসের রাজশাসনে নভুতোনভাবী এমত ঐশ্বর্যশালী ছিল এবং প্রেরিত ব্যক্তির প্রতি এমত হুকুম ছিল যে ঐ নগরহইতে সোলনের ব্যব স্থা আনয়ন করেন। দুই বৎসরের পরে প্রেরিত ব্যক্তিরা প্রত্যাগত হইলেন এবং নগরস্থ অতিবিজ্ঞ দশ জন কুলীন ঐ ব্যবস্থার সংহিতকরণার্থ নিযুক্ত হইলেন। ঐ দশ জন অধ্যক্ষেরা এক বৎসরের নিমিত্ত নিযুক্ত হইলেন এবং রাজ্যের অন্যান্য কর্ম্মকারকেরদের ক্ষমতা রহিত হইয়া তাবৎ পরাক্রম তাঁহারদিগকে দেওয়া গেল অতএব ঐ ব্য বস্থার সহিত প্রস্তুতকরণ ও সরকারী কার্য্য চালায়ন এই উভয় ভারই তাঁহারদের প্রতি অর্পিত হইল। প্রথমতঃ তাঁহারদের মনোযোগ ও পরিমিতাচরণ দেখিয়া লোকেরা আপনারদের বিবাদজনক ত্রৈব্যুনেরদের ক্ষমতা রহিত হওন বিষয়ে খেদ না করিয়া এই অতি মঙ্গলদায়ক রাজ শাসন যে নিয়ত থাকে এমত ইচ্ছা করিতে লাগিলেন। বৎসরান্তে ঐ দশ জন অধ্যক্ষের যে ব্যবস্থা প্রস্তুত করিয়াছিলেন তাহা রাজসভা ও সাধারণ লোকেরদের নিকটে প্রস্তাব হইয়া উভয়কর্ত্তৃক গ্রাহ্য হওয়াতে রোমানেরদের মূল ব্যবস্থার অঙ্গ হইল। কিন্তু অনেকে বোধ করিলেন যে আরো ব্যবস্থার আবশ্যক আছে অতএব আর এক বৎসর ঐ দশ জন অধ্যক্ষের পদ থাকিতে আজ্ঞা হইল। তাঁহারদের মধ্যে আপিয়স ক্লাডিয়সনামক এক ব্যক্তি অতি সাহসিক ও দুরন্ত আপনার তৎকর্ম প্রাপণবিষয়ক আপনিই প্রস্তাব করিলেন এবং কৃতকার্য্য হইয়া কেবল আপনিই যে কর্ম্ম পাইলেন এমত নহে কিন্তু আপনার অনুগত অন্য নয় জনকেও কর্ম্মে নিযুক্ত করাইলেন। এতদ্রূপ ঐ দশ জন অধ্যক্ষ স্বীয় পদে দৃঢ়ীভূত হইলে পরিমিতাচরণের যে ছদ্মবেশ করিয়াছিলেন তাহা ত্যাগ করিয়া তাঁহার দের রাজকার্য্য চালায়নেতে পূর্ব্বে যেমন উপকার ছিল তেমনি পরে অপকার হইতে লাগিল। এবং সাধারণ লোক ও কুলীনেরা উভয়ই তাঁহারদের অন্যায়াচরণের ভারাক্রান্ত হইলেন। তাঁহারা এক বৎসরের নিমিত্ত মনোনীত হইয়াছিলেন বটে কিন্তু ঐ বৎসর সমাপ্ত হইলেই তাঁহারা আরো কোন ব্যবস্থা নিরূপণ করিতে বাকি আছে এই ছলে আপনারদের কর্ম্ম পুনরায় বজায় রাখিলেন। অতএব তাঁহারদের অন্যায়াচরণের শেষ হওনের কোন ভরসা থাকিল না। অনেক রাজসভ্যেরা সরকারী বিষয়ের চিন্তা একেবারে পরিত্যাগ করিয়া মফঃসলে গিয়া বাস করিলেন এবং ইতর লোকেরা ভগ্নোদ্যম হইয়া স্তব্ধ হইল। কিন্তু যখন রাজকীয় ব্যাপারের উদ্ধারের ভরসা রহিল না তখন আপিয়সের লাম্পট্যের দ্বারা ঐ দশ জন অধ্যক্ষের অন্যায়াচরণ একেবারে ভূমিগত হইল এবং রাজ্যের পূর্ব্বকার মন্ত্রিরদের পুনঃ পদপ্রাপ্তির সুযোগ হইল। বিশেষতঃ পথিমধ্যে পাঠশালাতে গমনশীল পরম সুন্দরী এক কন্যাকে দেখিয়া আপিয়স প্রেমাসক্ত হইয়া স্বীয় অনুগত এক ব্যক্তিকে এমত লওয়াইলেন যে তুমি আপন দাসী বলিয়া ঐ কন্যার দাওয়া কর। পরে ঐ দাওয়ার নিষ্পত্তিকরণ আপিয়সের আদালতে অর্পিত হইলে তিনি এই হুকুম করিলেন যে ঐ দাসী ঐ ভাক্ত প্রভু অথচ আমার ভৃত্যের হস্তে সমর্পিত হউক। তাহাতে পিতা বর্জিনিয়স আপনার কন্যার সম্ভ্রম রক্ষার উপায়ান্তর না দেখিয়া নিকটবর্ত্তি দোকানহইতে এক ছুরী লইয়া কন্যার বক্ষঃস্থলে আঘাতপূর্ব্বক খুন করিলেন। পরে ঐ রক্তাক্ত অস্ত্র হস্তে করিয়া এবং “হে আপিয়স এই রক্তের দ্বারা নরকাধিপ দেবতার নিকটে আমি তোমার মস্তক উৎসর্গ করিলাম২” চীৎকার শব্দে নগরের মধ্যে ধাবমান হইয়া দশ জন অধ্যক্ষেরদের অন্যায় প্রভুত্বহইতে লোকসকল মুক্ত হয় এমত প্রবোধ দিতে লাগিলেন। তাহাতে অতিশয় গণ্ডগোল বাদিল এবং ইতর লোকসকল সমাগত হইল এবং সৈন্যেরা তাঁহারদের সঙ্গে মিলিয়া নিষ্ঠুর অধ্যক্ষেরদিগকে পরাজয় করিলেন। এতদ্রূপে সাধ্বী স্ত্রী হত্যাতে রোম নগর দ্বিতীয়বার রক্ষা পাইল। পরে অপরাধের বিষয়ে জওয়াব দেওনার্থ ঐ দশ অধ্যক্ষেরদের তলব হইলে কেহ২ পলায়ন করিলেন কেহ বা দেশবহিষ্কৃত হইলেন এবং প্রধান অপরাধি দুই জন কারাগারেই পঞ্চত্ব পাইলেন। কিন্তু যে ব্যবস্থা তাঁহারা করিয়াছিলেন তাহাই মঞ্জুর থাকিল এবং ব্যবস্থার শেষ দুই অংশ তাঁহারদের পদ প্রাপণের প্রথম বৎসরে যে দশ অংশ ব্যবস্থা নিরূপিত হইয়াছিল তাহার সঙ্গে একত্রীকৃত হইয়া দ্বাদশ অংশ ব্যবস্থা এই সংজ্ঞাতে প্রচলিত হইল। ঐ ব্যবস্থার কেবল যৎকিঞ্চিৎ আমারদের সময়পর্য্যন্তও রহিয়াছে। এই দশ অধ্যক্ষের পরাক্রম কিঞ্চিৎ অধিক তিন বৎসর থাকে এবং খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪৪৭ বৎসর পূর্ব্বে বিলুপ্ত হয়।
তাহার চারি বৎসর পরে ত্রৈব্যুন অর্থাৎ লোকেরদের অধ্যক্ষ এই দাওয়া করিলেন যে রাজ্যের সর্ব্বাপেক্ষা উচ্চপদ অর্থাৎ কনসলি পদে ইতর লোকেরা মনোনীত হইতে ক্ষমতা প্রাপ্ত হন ইহার পূর্ব্বে তৎপদ কেবল কুলীনেরদিগকেই প্রদত্ত হইত। পূর্ব্ববৎ এই নূতন প্রস্তাবে অতিশক্ত বাদানুবাদ জন্মিল। এই অতিশয় সম্ভ্রান্ত পদ কুলীনাভিজাতব্যতিরিক্ত অপাত্র ব্যক্তিরদিগকে দিলে পদ নষ্ট হয় ইহা ভাবিয়া রাজসভাস্থেরা ঐ প্রস্তাবে অনিচ্ছুক ছিলেন। কিন্তু লোকেরা নিতান্তই ছাড়েন না দেখিয়া কুলীনেরা পরিশেষে এক মধ্যস্থ পথ অবলম্বন করিয়া এই স্থির করিলেন যে কন্সলদ্বয়ের পরিবর্ত্ত প্রতিবৎসরে সৈন্যসম্পর্কীয় ত্রৈব্যুন অর্থাৎ অধ্যক্ষ ছয় জন মনোনীত হন তন্মধ্যে অর্দ্ধেক ইতর লোকেরদের মধ্যহইতে মনোনীত হইতে পারেন। এই অনুগ্রহেতে ইতর লোকেরা এমত সন্তুষ্ট হইলেন যে অনেক বৎসর ব্যাপিয়া ছয় জন কুলীনকেই তৎপদে মনোনীত করিলেন। বোধ হয় যে ইতরেরদের এইমাত্র অকাঙ্ক্ষা ছিল যে রাজকার্য্যে মনোনীত হওনের অযোগ্যতায় যে কলঙ্ক তাহামাত্র বিমোচন হয়। কিন্তু মধ্যে২ রাজসভ্যেরদের যখন এমত পরাক্রম হইত যে ইতর লোকেরদিগকে তাঁহারা চাপিয়া রাখিতে পারিতেন তখন ত্রৈব্যুনের পরিবর্ত্তে পুনরায় কনসল মনোনীত হইতেন। তথাচ তৎসময়ে আন্তরিক তাবৎ বিষয়ের শান্তি ছিল এবং ঐ দ্বাদশ খণ্ড মূল ব্যবস্থার যে এক বিধানে কুলীন ও ইতর লোকেরদের মধ্যে বিবাহ সম্বন্ধ নিষিদ্ধ ছিল এই অতিঘৃণার্হ বিধান রহিত হইল তাহাতে আন্তরিক শান্তি আরো বর্দ্ধিত হইল। ইহাতে এক বৎশ্যের ন্যায় নগরস্থ লোক সকলের অতিমিল হইল।
অপর খ্রীষ্টীয়ান শকের ৪৪০ বৎসর পূর্ব্বে একটা মহা দুর্ভিক্ষেতে নগর বিনষ্টপ্রায় তাহাতে ইতর লোকেরদের অন্তঃপাতি স্পুরিয়স মিলিয়সনামক অতিধনাঢ্য এক ব্যক্তি ইত্রুরিয়া দেশে যত শস্যাদি প্রাপ্য সে সমুদায় ক্রয় করিয়া নগরস্থেরদিগকে বিতরণ করিলেন ইহাতে তিনি সুতরাং জনসমূহের অতিপ্রিয় পাত্র হইলেন কিন্তু রাজসভ্যেরদের তত্তুল্য ঘৃণ্য পাত্র হইলেন। এবং তিনি রাজপদের আকাঙ্ক্ষী এমত মিথ্যা এক অভিযােগ তাঁহারা করিয়া দেশের অত্যন্ত বিভ্রাট অবস্থাতে যেমন হয় তেমনি করিলেন অর্থাৎ এক জন সম্পূর্ণ ক্ষমতপন্ন ডিক্টেটর নিযুক্ত করিলেন। ঐ অভাগা স্পুরিয়স ডিকটেটরের হস্ত হইতে রক্ষা প্রাপ্তিবিষয়ে ভগ্নাশ হইয়া আদালতে তাঁহার তলব হইলে লোকেরদের নিকটে আশ্রয় লইলেন। তাহাতে ডিক্টেটরের নায়েব আহালা ধাবমান হইয়া এক প্রহারেই তাঁহাকে কাটিয়া ফেলিলেন। তাহাতে ডিক টেটর অতিপ্রাচীন সিন্সিনেটস যদ্যপি তৎকালীন সর্ব্বাপেক্ষা ভদ্র ও দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন তথাপি দলাদলির রাগেতে অন্ধ হইয়া আহালাকে কহিলেন যে “বিলক্ষণ করিয়াছ বেটা রাজ্য রক্ষা করিলা”।
এইক্ষণে খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ৪৩৮ বৎসরঅবধি ৪০৪ বৎসরপর্য্যন্ত চৌত্রিশ বৎসর ব্যাপিয়া কোন ভারি বিষয় বর্ণনা করিবার নাই। তৎসময়ে রোমানেরা অবিচ্ছেদে নিকটস্থ রাজারদের সঙ্গে যুদ্ধে রত ছিলেন তাহাতে কখন জয় কখন বা অজয় হইল তথাপি রোমানেরদের পরাক্রম যে বৃদ্ধি হইয়া আসিতেছিল ইহা অতি স্পষ্টতঃ দৃষ্ট হইল। এই নিয়ত যুদ্ধের দ্বারা নগরস্থেরা যুদ্ধাস্ত্র বিদ্যায় নিপুণ ও যুদ্ধ বিষয়ে আসক্ত হইলেন এবং তদ্দ্বারা পৃথিবী জয় করণার্থ রোম রাজ্য ক্রমশঃ প্রস্তুত হইয়া উঠিল। পরে খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ৪০৪ বৎসরে রোমানেরা বেয়ীনগর বেষ্টন করেন। ঐ বেয়ী রোম নগরহইতে ছয় ক্রোশ অন্তরিত ইত্রুরিয়ার অন্তঃপাতি এক নগর তাহার সঙ্গে ইহার পূর্ব্বে রােমানেরদের অনেকবার যুদ্ধ হইয়াছিল। বেয়ী নগর অতি সমৃদ্ধ বাণিজ্যপ্রধানিক স্থান এবং নগরস্থেরদের এই দুই বিষয়ক মাত্র অভিপ্রায় যে নগর শান্ত থাকে ও লাভের সুযোগ হয়। রোমানেরদের অভিপ্রায় যুদ্ধে জয় ও দেশ অধিকার করণ। ইটালির দক্ষিণদিগনিবাসি সামনীয়েরা সম্প্রতি অত্যন্ত প্রবল হইয়াছিল অতএব দক্ষিণ অঞ্চলের দেশ অধিকার দুঃসাধ্য বোধ করিয়া রোমানেরা উত্তরদিগে ইত্রুরিয়া জয়করণ বিষয়ে আকাঙ্ক্ষী হইলেন। কিন্তু ঐ মহাদেশের প্রবেশনীয় স্থানের মুখেই বেয়ী নগর ছিল অতএব ঐ নগর স্বাধীন থাকিতে ইত্রুরিয়া দেশ অধিকার করা রোমানেরদের অসাধ্য এই প্রযুক্ত রাজসভ্যেরা সে নগর অধিকারার্থ যথাসাধ্য উদ্যোগ করিলেন। বেয়ীর চতুর্দ্দিকস্থ নানা লোকেরা ইহা শুনিয়া ঠাহরিলেন যে বেয়ী নগর অধিকৃত হইলে রোমানেরা আমারদের উপরে পড়িবে অতএব তাঁহারা বেয়ী নগরের সাহায্য করিলেন। ইহার পূর্ব্বে রােমান সৈন্যেরা নিজ ব্যয়েতেই যুদ্ধার্থ গমন করিত এবং আপনারদের ক্ষেত্রে কৃষিকরণার্থ বৎসরের মধ্যে কএক মাস স্বস্থানে ফিরিয়া আসিত। কিন্তু এতৎ সময়ে ঐ নগর যে শীতকাল ব্যাপিয়া বেষ্টিত থাকে এতদর্থ সৈন্যেরদিগকে রাজসভ্যেরা বেতন দিতে স্থির করিলেন। এই এক নিয়মের দ্বারা রোমানেরদের রাজ্য ও সৈন্যের মূল ব্যবস্থার রূপান্তর হইল এবং রাজসভ্যেরা দেশের ঐশ্বর্যবর্দ্ধক যে কল্প করিয়াছিলেন তাহা সম্পন্নকরণের সুযােগ প্রাপ্ত হইলেন। যেহেতুক নগরস্থ সৈন্যেরা নিশ্চিত বেতন প্রাপ্ত হইয়া এবং লুঠ পাওনবিষয়ে ভরসান্বিত হইয়া ত্রৈব্যুন অর্থাৎ লােকের অধ্যক্ষের তর্জ্জনাদি কিছু না শুনিয়া সৈন্যের মধ্যে ভর্ত্তি হওনার্থ অগ্রসর হইল। ইহার পূর্বে ত্রৈব্যুন রাজসভ্যেরদের ব্যাঘাত জন্মাইবার নিমিত্ত সৈন্যের মধ্যে প্রবিষ্ট হইতে লোকেরদিগকে মধ্যে২ নিষেধ করিতেন। অপর বেয়ীনগর দশ বৎসরে বেষ্টিত হওনানন্তর খৃীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ৩৯৫ সালে কামিলসের হস্তে সমর্পিত হয় কিন্তু ঐ অতিবিজ্ঞ সেনাপতি লুঠিত সম্পত্তি বিষয়ে কোন অসৎ ব্যবহার করাতে এবং রোম নগর উঠাইয়া বেয়ী নগরে বসাইতে ত্রৈব্যুনের যে বাসনা ছিল তাহা নিষ্ফল করাতে খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ৩৯০ বৎসরে তিনি নগরহইতে তাড়িত হইলেন।
ঐ বৎসরে রোমনগর গলেরদের কর্ত্তৃক লুঠিত হয়। ঐ লোকেরা ইটালি দেশের অতি উর্ব্বরত্বের সম্বাদ পাইয়া এবং ঐ দেশ জয় ও অধিকারকরণের ভরসায় ইঙ্গলণ্ড ও ফ্রান্স ও স্পাইনহইতে যাত্রা করিলেন। তাঁহারদের এক মহাদল ইটালি দেশের রক্ষকস্বরূপ আল্প পর্ব্বত শ্রেণী উল্লংঘনপূর্ব্বক মাঠে উত্তীর্ণ হইলেন এবং পো নদী হইয়া ইত্রুরিয়া দেশ আক্রমণ করিলেন এবং তদ্দেশীয় ক্লুজিয়ম নগর বেষ্টন করিলেন। তাহাতে টস্কানের রোমানেরদের সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং রোমানেরা ঐ অসভ্য গলেরদের নিকটে উকীলস্বরূপ সৎকুলোদ্ভব তিন জন কাঁচা ছেলিয়াকে প্রেরণ করিলেন। তাঁহারা অতিগর্ব্বপূর্ব্বক ঐ নগর বেষ্টন রহিত করিতে আজ্ঞা যেমন দিলেন তেমনি গলেরা তাহা তুচ্ছ করিলেন। অতএব ঐ উকীলের উকীলী অপক্ষপাতিত্ব ধর্ম্ম প্রতিপালন না করিয়া ক্লুজিয়ম লােকেরদের সঙ্গে মিলিয়া গলেরদের প্রতি যুদ্ধ করিলেন। তাহাতে গলেরদের অধ্যক্ষ ব্রেণস এই বিশ্বাসঘাতকতা ব্যাপারবিষয়ক অভিযোগকরণার্থ রোম নগরে দূত প্রেরণ করিলেন কিন্তু রোমানেরা অপরাধি উকীলেরদিগকে শাসন না করিয়া বরং তাহারদিগকে অধিক সম্ভ্রান্ত পদে নিযুক্ত করিলেন। ইহা শুনিয়া গলেরা একে বারে জাজ্বল্যমান হইয়া ক্লুজিয়ম নগর বেষ্টন রহিত করিয়া তাবৎ সৈন্যসমেত রোম নগরের প্রতি ধাবমান হইলেন। রোমানেরদের যে সাহস ও বুদ্ধি নিয়ত দৃষ্ট হইত তাহা এক্ষণে ভ্রংশন বোধ হইল যেহেতুক তাঁহারা কোন ডিক্টেটর নিযুক্ত না করিয়া গলেরদের নিবারণার্থ অত্যন্ত অপটু যুব এক ব্যক্তির অধীনে সৈন্য প্রেরণ করিলেন। তাহাতে নগরহইতে সাড়ে পাঁচ ক্রোশ অন্তরিত যুদ্ধ হইয়া রোমানেরদের সৈন্যেরা পরাস্ত হইল। তদনন্তর গলেরা একেবারে নগরের প্রতি ধাবমান হইল অথচ নগর রক্ষণের কোন উপায় নিরূপিত ছিল না।
অতএব বিপক্ষগণের যেমন আগমন হইল তেমনি ইতর লোক ও যাজকেরা ছিন্ন ভিন্ন হইয়া নিকটবর্ত্তি প্রদেশে আশ্রয় লইলেন। রাজসভাস্থ ও মাজিস্ত্রেটেরা ও ন্যূনাধিক এক সহস্র সৈন্য পর্ব্বতের উপরিস্থ দুর্গে আশ্রয় লইয়া বিলক্ষণরূপে তাহা দৃঢ় করিলেন। কেবল কতিপয় অতিবৃদ্ধ কুলীন ও ইতর লোকেরা অতিপ্রিয় জন্মস্থান বিনষ্ট হইল আর জীবনে কি ফল এমন নিশ্চয়মনা হইয়া নগরের মধ্যে থাকিলেন। তাঁহারদিগকে গলেরা শীঘ্র সংহার করত নগর ভস্মসাৎ করিয়া কিল্লা বেষ্টন করিলেন। পরে এক সময় অবারিত এক পথ দিয়া পর্ব্বতের উপরি ভাগে গলেরা প্রায় আরোহণ করিয়াছিলেন ইতিমধ্যে দেবালয়স্থ পবিত্র কএক রাজহংস প্যাঁক২ করিয়া উঠিলেন তাহতেই রোম রাজ্য রক্ষা পাইল। যেহেতুক ইহার পূর্ব্বে যে মানলিয়স একবার কনসল ছিলেন তিনি দৈবায়ত্ত ঐ শব্দে জাগৃত হইয়া আশঙ্কার স্থানে ধাবমানে আক্রামকেরদের অগ্রসর ব্যক্তিকে ধাকা দিয়া ফেলিয়া দিলেন এবং আপনার সাহায্যার্থ মিত্রগণের আগমনপর্য্যন্ত অন্য শত্রুরদিগকে থামিয়া রাখিলেন। পরে রােমীয় দুর্গ এতদ্রূপে সাতমাস বেষ্টিত হওনের পর ঐ স্থানের শরৎকালীন রোগে গলেরা মরিতে লাগিলেন এবং দুর্ভিক্ষে দুর্গরক্ষক রোমানেরাও ক্ষীণ হইল তাহাতে পরস্পর শলা হয় এবং ব্রেণস রোমানেরদের স্থানে নগদ সাড়ে চারি লক্ষ টাকা পাইয়া আপনার সৈন্য উঠাইয়া লইতে ও রোমীয়েরদের অধিকার ত্যাগ করিয়া যাইতে স্বীকৃত হইলেন। তিনি কামিলসকর্ত্তৃক যে পরাজিত হন তাঁহারি বৃত্তান্ত বর্ণনে অনেক রস আছে কিন্তু সপষ্টতঃ অলীক।
খ্রীষ্টীয়ান শকের পূর্ব্বে ৩৮৯ সালে রোম নগরে উক্ত মতে লুঠ হয়। গলেরা প্রত্যাগমন করিলে রাজসভ্যেরা দুর্গ হইতে নামিলেন এবং ইতর লোকেরা আশ্রয় স্থানহইতে ফিরে আসিয়া দেখেন যে রোম নগর কেবল পতিত অট্টালিকাময় অতএব লোকেরা রোম নগর চিরকালের নিমিত্ত ত্যাগ করণ এবং বেয়ী নগরে গিয়া বসতি করণ বিষয়ে অত্যন্ত ব্যগ্র হইলেন যেহেতুক বেয়ী নগরের ঘরদ্বার প্রস্তুত বসতিকরণের সর্ব্বপ্রকারেই সুযোগ ছিল। ইহার পূর্ব্বে তাড়িত কামিলসকে ডাকিয়া আনা গিয়াছিল অতএব তাঁহার সাহায্যে এবং লোকেরদিগকে অনেক প্রকার বুঝায়নের পর রাজসভ্যেরা এই কুকল্প নিবারণ করিতে ক্ষম হইলেন। এইপ্রযুক্ত কামিলস রোম নগরের দ্বিতীয় পত্তনকাররূপে প্রসিদ্ধ হইলেন। নগরস্থেরা নগরে থাকিতে নিশ্চয় করিলে অভিমনোযোগপূর্ব্বক পুনর্ব্বার নগর গ্রন্থন করিতে লাগিলেন।
From the establishment of the Commonwealth to the
rebuilding of Rome.
Royalty was extinguished in Rome, 243 years after the foundation of the city. Though during this period, Rome had been engaged in almost constant hostility with her neighbours, and, if we are to believe historians, was generally victorious, her territory at the institution of the consulship extended only a few miles beyond the walls of the city; her strength lay not in the breadth and length of her possessions, but in the bravery and number of her citizens, which every war had served to augment.
At this period the Tuscans had reached the zenith of their power. To them the expelled king Tarquin applied for aid, and the Veientes, the nearest Tuscan neighbours of Rome took up arms in his behalf; but they were defeated in a bloody battle, in which Brutus the consul, and Aruns the son of Tarquin fell by mutual wounds. Porsenna, king of Clusium, another Tuscan city, soon after espoused his cause, and marched with a powerful army to Rome. The Romans notwithstanding the almost incredible valour of their troops and the heroism of Cocles and Mucius, were defeated, deprived of a portion of their territory, and prohibited the use of iron except for agricultural purposes. Porsenna pushed his conquests south of the Tibur into Latium, and might possibly have extinguished the Roman name, if he had not been defeated by Aristomenes, chief of Cuma. The Romans eagerly seized the occasion of his defeat to regain the position they had lost.
Tarquin despairing of any farther assistance from Tuscany roused the Latins in his cause, who though united by common rites with the Romans could not but regard the rising greatness of Rome with jealousy. When, however, the senate came to assemble an army, the people refused to enlist. In fact, since the expulsion of Tarquin, the aristocracy had monopolized all power, and cruelly harassed the poorer class, who were for the most part in their debt, and whom they were at liberty, according to the Roman law, to confine in their houses and scourge at their pleasure. In this dilemma, with a refractory populace in the heart of the city, and a powerful enemy threatening it from without, the senate hit upon the expedient of creating a dictator for six months, who should for the time supersede every other magistrate, and from whose order there should be no appeal. This new officer, invested with absolute power, struck terror into the people, who hastened to enrol themselves in the army. The storm from Latium meanwhile blew over, and the dictator laid down his office. But several years after, the Latins having determined to try their strength with the Romans, assembled all their forces, and a long contested battle was fought between the two nations at the lake Regillus, fourteen years after the expulsion of the kings, in which the Romans were completely victorious. Thirty-three thousand Latins were left dead on the field of battle; the Latin power was effectually broken, and the hopes of Tarquin for ever dispelled.
These events, having removed the fears of the patricians, their poor debtors were persecuted with more severity than ever, and the city became ripe for a revolt. In these circumstances when a spark alone was wanting to blow the people into a flame, an old man covered with rags, and bending under the weight of his chains, broke from confinement, and appealed to the people for protection. He enumerated the battles he had fought, and shewed the bloody marks of the cruelty of his patrician creditors. The pity and indignation of the people were roused, and the whole city became clamorous for relief. The senate resorting to its usual plan, declared war against the Volsci, in the hope of diverting the minds of the people, but they refused to enlist. At length the consul Servilius stepped forward and declared that none who enlisted should be liable to arrest for debt while they continued under arms. The people on this assurance cheerfully flocked to their eagles, and marching against the enemy, obtained a complete victory and returned back laden with spoil. But the patricians on the restoration of tranquillity renewed their oppression of the people, who broke out into a fresh mutiny; this was for a time smothered by the preparations for a new war, which the senate had declared, and by the terrors of the dictator whom they had named. The troops marched against the enemy and obtained a victory; those under the command of the dictator were disbanded; but the consular army which was still in the field, broke out into open insurrection, and quitting their generals marched off to Mons Sacer, a mount about three miles from Rome, determined to abandon a city which ceased to afford them protection. The plebeians in the city seized two of the hills within its boundary, while the patricians with their clients kept armed possession of the other hills.
Thus was Rome divided against itself and on the point of becoming extinct; but the moderation of the senate saved the state from ruin. They determined to be the first to offer concessions, and sent a deputation to the seceders on the sacred mount to entreat them to return. The head of the deputation, as the Roman historian narrates, pronounced a fable worthy of Pilpay, about the different members of the body, and completely mollified the malcontents, who agreed to return to the city and forget the past, on condition that six magistrates should be chosen annually from among their own body for their especial protection against the injustice of the nobles and the rich. These officers were called tribunes of the people, and were appointed to sit at the door of the senate house, and fix their veto upon any resolution of that assembly which appeared to them contrary to the interests of the people. Their persons were inviolable, and they were elected annually. This was the first point gained by the people, just sixteen years after the expulsion of the kings; the sequel of this history will shew how this first concession of the senate led to fresh demands, till there remained no distinction between the patricians and the plebeians, in respect of political rights.
During the five years which followed this event, the public attention at Rome was absorbed in the affair of Coriolanus, a valorous, haughty patrician youth, who maintained the most profound contempt for the plebeians. He had laid himself open to various charges by his imprudence, and the tribunes of the people thinking this a fair opportunity for enlarging their authority, summoned him, though a senator, to answer for his conduct before the people. This raised a violent commotion in the city; but the senate, anxious to prevent bloodshed, conceded the right to the popular magistrates; and the people adjudging Coriolanus guilty of high crimes and misdemeanors banished him from the city. He proceeded forthwith, breathing revenge, to the court of the Volscian king, the inveterate foe of the Romans, and excited him to break the truce which then existed between the two nations, offering himself to lead the Volscian troops against his own countrymen. He marched forward at the head of their troops carrying every thing before him, ravaging the lands of the plebeians, and taking town after town. Rome had no military commander of equal abilities to oppose to him; and the extinction of the Roman name by one of its own exasperated citizens appeared almost inevitable, when the mother, and the wife of Coriolanus, with the noble matrons of the city proceeded to his camp, and throwing themselves at his feet, entreated him to spare the city which had given him birth. After a long struggle between pride and affection, the stern Coriolanus relented, and addressing his mother said, “thou hast saved Rome, but lost thy son.” He soon after drew off his forces upon some pretence, and the Volscians disappointed of the plunder of Rome, are said to have put him to death, B. C. 487.
The next event of importance in the history of Rome is the destruction of Spurius Cassius, a Roman of noble extraction, who as consul had already enjoyed two triumphs. Compassionating the wretchedness of the people, he proposed the famous Agrarian law, the disputes about which agitated the Roman commonwealth for several centuries, and have given birth to no small controversy among modern historians. According to some it went to despoil the wealthy Romans of their landed possessions and to divide them among the poor; according to others it was a proposal for taking from the patricians that portion of the conquered lands for which they had agreed to pay as rent ten per cent. of its produce to the state, which rent they refused to pay when they had obtained the upper hand in the government, and for distributing these lands on moderate leases among the poor, by whose valour they had been originally conquered. Whichever interpre tation we adopt, the law was equally unpalatable to the rich and equally gratifying to the indigent. The senate determined therefore to remove Cassius, the author of this proposal, out of the way. Some historians relate that he was regularly tried for aiming at royalty, and condemned to be thrown headlong from the Tarpeian rock, the usual punishment for ambition at Rome; but others affirm that he was privately despatched by his enemies, B. C. 484, three years after the death of Coriolanus.
During the thirty years which followed the death of Cassius, the history of Rome has no prominent event of importance. Wars with the petty states around, in which the Romans were generally victorious, continued without interruption. Nor was the state free from internal commotion. The people having obtained magistrates of their own, endeavoured to enlarge the popular authority; which led to constant disputes with the patrician order, who were generally constrained, though not till after a long struggle, to yield the contested point. When ever the tribunes pushed the Agrarian law, the se nate went to war with some neighbouring state, in order to draw off the attention of the people. The growing importance of the people moreover suggest ed the propriety of a written code of laws, in which the privileges of all classes should be clearly de fined, and equal personal rights be confirmed to each order in the state, though to unequal things. A law to this effect was proposed by Terentillus, a tribune of the people, but it was most violently opposed by the senate, whose irresponsible power it went so directly to subvert.
After various disputes and commotions, the senate agreed to the measure, and three of the most distinguished citizens were sent to Greece, more particularly to Athens, which was at that time in the zenith of its glory, under the administration of Pericles, to bring from thence the laws of Solon. At the end of two years the deputation returned, and ten patricians, selected from the wisest citizens, were appointed to digest the code. These magis trates were appointed only for a single year, with absolute power, the functions of all the other of ficers in the state being suspended. They had therefore the double duty of preparing the new code and of conducting public business. Their di ligence and moderation were at first so exemplary, that the people ceased to regret the loss of their turbulent tribunes, and wished this auspicious form of government to be perpetual. At the close of the year, the laws which the decemvirs had framed were submitted to the senate and people, and after having been approved by both, were considered part and parcel of the Roman constitution. As ma ny, however, were of opinion that some additional regulations were needed, the decemvirs were continued in office another year. Appius Claudius, one of their body, a bold and wicked man, had the audacity to offer himself as a candidate for the office, and not only succeeded in obtaining it, but secured the selection of the other nine from among his own creatures. Being now firmly seated in the government, the decemvirs threw off the mask of moderation, and rendered their administration as tyrannical as it had formerly been useful. The plebeians and patricians were equally ground down by the weight of their oppressions, to which there appeared no hope of a termination, since, upon the expiry of the year, for which they had been appointed, they continued themselves in office upon their own authority, under pretence that the laws were not yet complete. Many of the senators therefore relinquishing all care of the state, retired into the country; while the great body of the people resigned themselves to despair. But when the state of affairs appeared utterly desperate, the shameful conduct of Appius brought the tyranny of the decemvirs to the ground, and led to the restoration of the ancient authorities of the state. Enflamed with passion for a damsel of great beauty, whom he perceived by accident as she passed to the public seminary, he put up one of his clients to claim her as his slave; the matter was of course referred to his tribunal, and he decreed that she should be restored to her pretended master. Vir ginius, her father, seeing no means of preserving her honour, snatched a knife from a neighbouring shop and plunged it into her heart. Then holding up the bloody instrument in his hand, and exclaim ing, “By this blood, Appius, I devote thy head to the infernal gods,” he ran through the city and roused the people to shake off the tyranny of the decemvirs. A commotion ensued; the people assembled together and being joined by the army, overpowered their tyrants, and insisted upon the re-establishment of the ancient form of government. Thus did Rome a second time owe its liberty to the immolation of a virtuous female. The decemvirs were cited to answer for their crimes. Some fled; others were banished, and two of the most guilty perished in prison. The laws which they had made were however confirmed, and the last two tables being added to the ten which had been completed in the first of the decemvirate, constituted what was called the law of the Twelve Tables, of which nothing but fragments have reached our times. The power of the decemvirs lasted somewhat more than three years, and was subverted B. C. 447.
Four years after this event the tribunes of the people insisted that plebeians should be eligible to the highest dignity in the state, viz. the consulship, which had hitherto been conferred only on patricians. This new proposal gave birth as usual to the most violent debates, the senate being extremely unwilling to debase this noble office, by admitting those to enjoy it who were not noble by birth; but as the people continued clamorous, the patricians adopted a middle path, and agreed that in lieu of the two consuls, six military tribunes should be chosen annually, one-half of whom might be plebeians. The people were so well satisfied with this concession, that they continued for many years to select six patricians for this office; all they appear to have desired, was, that the stain of ineligibility might be removed from their body. Consuls were, however, sometimes appointed instead of military tribunes, whenever the senate found itself sufficiently powerful to thwart the people. But on the whole this was a period of internal tranquillity, which was eminently promoted by the abolition of that odious law of the twelve tables by which all intermarriages of patricians with plebeians had been prohibited. This served to blend the citizens together as members of one great family.
In the year B. C. 440 a great famine having desolated the city, Spurius Maelius a rich knight of the plebeian order, bought up all the corn which Hetruria could furnish, and distributed it gratuitously among the citizens. This necessarily rendered him extremely popular with the multitude, and proportionately odious to the senate. A charge was therefore fabricated against him of his having aspired to royalty, and a dictator was created with supreme powers, as if the republic had been in imminent danger. The unfortunate Spurius knowing how little he had to expect from that officer, on being summoned to his tribunal, took refuge among the people; upon which Ahala, the lieutenant of the dictator, rushed on him and felled him to the ground with a single stroke. Cincinnatus, the old dictator, though one of the best and kindest of men, blinded by party prejudice, exclaimed, “’Twas greatly done, my son; thou hast saved the commonwealth.”
We now pass over another period of thirty-four years, from the year 438 to 404, during which time the Romans were engaged in unceasing hostilities with all their immediate neighbours, with various success. The Roman power, however, was evidently on the increase; these perpetual wars trained up the citizens in the use and the love of arms, and gradually prepared Rome to master the world. In the year B. C. 404, the Romans invested Vei, a city in Hetruria, about twelve miles from Rome, with which they had been frequently at war. Vei was a rich trading town, whose sole object was peace and gain. The object of the Romans was conquest and territory, and as the Samnites, who occupied the south of Italy had recently become so powerful, that little chance existed of making any territorial acquisitions in that direction, it was upon Hetruria which stretched to the north, that the Romans now fixed their desires; but so long as Vei, which lay at the very threshold of that large country, remained independent, they could expect to make no progress. The senate determined therefore to push the siege with all vigour. Vei was assisted by several of the neighbouring powers, who were well aware that on its subjugation they should fall the next victims to Roman lust of conquest. Heretofore the Roman soldiers, who went to war at their own charge, had been obliged to return home during a portion of the year to cultivate their fields. But on this occasion the senate, to keep the city invested during the winter, were obliged to allow pay to the troops. This single circumstance introduced a complete change in the constitution both of the Roman army and the state, and furnished the senate with the means of carrying on their scheme of national aggrandizement without hindrance. For with the certainty of pay and the hope of plunder, the citizens hastened to enlist in spite of the remonstrances of their tribunes, who had formerly been enabled to hold the senate in check, by forbidding the levies. Vei surrendered to Camillus after nearly a ten years’ siege in the year B. C. 395. This able general however for some misconduct regarding the plunder, and more particularly for having opposed the wish of the tribunes to transport Rome to Vei, was banished from his native country, B. C. 390, five years after.
It was in the next year that Rome was sacked by the Gauls, a people drawn from Britain, France, and Spain by the reports they had received of the superior fertility of Italy, which they hoped to conquer and occupy. A large body of them burst through the barrier of the Alps upon the plains of Italy, and, crossing the Po, overran Hetruria. While they were engaged in besieging Clusium, the Tuscans implored the aid of the Romans, who sent three raw youths, though of good families, as their envoys to the savage Gauls to order them to raise the siege. The message was delivered with haughtiness and rejected with scorn; on this the envoys, forgetting their sacred character as embassadors, joined the citizens of Clusium in an attack on the Gauls. Brennus, the Gaulish chief, sent messengers to remonstrate against this breach of faith, but the Romans so far from punishing the delinquents, advanced them to higher dignity. The news of this enflamed the Gauls, and they instantly relinquished the siege of Clusium, and marched with their whole army directly to Rome. The Romans at this juncture seem to have lost their usual courage and wisdom. Instead of creating a dictator, they sent an army under an inexperienced youth to oppose the Gauls. A battle was fought at Allia, eleven miles from the city, in which the Roman forces were completely defeated. The Gauls now made for the city, which was wholly unprovided with the means of defence.
On the approach of the enemy, the common people and the priests, dispersed over the neighbouring country; the senators and magistrates with about a thousand troops took possession of the Capitol, and fortified it; in the city there remained only a few old men, patricians as well as plebeians, who were determined not to survive the destruction of their beloved city. These the Gauls speedily massacred, and reducing the city to a heap of ruins, laid close siege to the Capitol. On one occasion they had all but gained the summit of the hill on which it stood, by a path which was unguarded, when the sacred geese cackled, and thus saved the fortunes of Rome. Manlius, formerly consul, roused by the noise, rushed to the post of danger, hurled down the foremost assailant, and kept the others at bay till his friends could come to his aid. After the Capitol had been besieged seven months, the autumnal malaria of the climate began to thin the ranks of the enemy, and famine to exhaust the courage of the defenders. A mutual agreement was therefore concluded, and Brennus agreed to draw off his troops and retire from the Roman territory on receiving a ransom equal to about four lacs and a half of Rupees. The account of his defeat by Camillus, though highly poetical, seems evidently a fiction.
The sack of Rome occurred in the year 389. On the departure of the Gauls, the senate descended from the Capitol, and the people returned from their retreat; but as Rome was a heap of rubbish, the people became clamorous to quit it for ever, and inhabit Vei, a city ready built to their hands and furnished with every accommodation. With the aid of Camillus, who had been recalled from banishment, the senate, after great remonstrances succeeded in preventing the execution of this fatal project; and hence Camillus was called the second founder of Rome. The citizens having determined to remain, began vigorously to rebuild their city.