পোকা-মাকড়/প্রাণিহত্যার অন্য কারণ
প্রাণিহত্যার অন্য কারণ
প্রাণীদের ঐরকম জন্ম-মৃত্যুর ইহাই একমাত্র কারণ নয়। যে-সকল পণ্ডিত প্রাণীদিগের জীবনের ব্যাপার লইয়া অনেক পরীক্ষা ও চিন্তা করিয়াছেন, তাঁহাদের কাছে এই সম্বন্ধে আর একটি কথা শুনা যায়। তোমাদিগকে তাহাও সংক্ষেপে বলিতেছি। তাঁহারা বলেন,—আজকাল আমরা যেমন কোনো প্রাণীকে বুদ্ধিতে, কাহাকে দেহের শক্তিতে, কাহাকে আবার চতুরতায় প্রধান দেখিতে পাইতেছি, প্রথম সৃষ্টির সময়ে তাহাদের কেহই এই সকল গুণ লইয়া জন্মে নাই। জগদীশ্বর প্রথমে কোটি কোটি প্রাণী সৃষ্টি করিয়া এই পৃথিবীতে ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। ক্রমে খাবার লইয়া, আরামের সামগ্রী ও বাসস্থান লইয়া তাহাদের মধ্যে ঘোর মারামারি হানাহানি হইয়াছিল। এই যুদ্ধে যাহারা একটু বুদ্ধি খাটাইয়া বা নানা রকম ফন্দি আঁটিয়া জিতিতে পারিয়াছিল, তাহাদেরই বংশধর যুগযুগান্তর ধরিয়া সেই সকল গুণের উন্নতি করিতে করিতে, এখন প্রাণীদের মধ্যে প্রধান হইয়া দাঁড়াইয়াছে। যাহারা হারিয়া আসিতেছিল,—তাহাদেরই বংশধর এখন নিকৃষ্ট প্রাণী।
এখন সেই নিকৃষ্ট প্রাণীরা প্রবলের নিকটে হার মানিয়াই জীবন শেষ করিতেছে, অথবা পৃথিবী হইতে তাহাদের বংশলোপ হইতেছে। সুতরাং বলিতে হয়, ক্ষুদ্র প্রাণীদের জন্ম এবং তাহাদের পরস্পরের মারামারি হানাহানি প্রাণিজাতিকে মোটামুটি উন্নতির পথে লইয়া যাইবার জন্যই হইয়াছে।