পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/দ্বিপক্ষ পতঙ্গ/মশা

মশা

 এইবার আমরা মশার কথা বলিব। ছোট দেহে লম্বা লম্বা ছয়খানা পা থাকায় ইহাদিগকে কি বিশ্রীই দেখায়! যেমন চেহারায় বিশ্রী, তেমনি কাজেও বিশ্রী। মানুষকে কাম্‌ড়াইয়া অস্থির করে। ইহাদের মুখে নলের মত লম্বা শুঁড় থাকে। তার পরে গায়ের চাম্‌ড়া কাটিয়া রক্ত চুষিয়া খাইবার জন্য ছুঁচের মত চারিটা অস্ত্রও লাগানো থাকে। আবার মাথার দুই পাশে হাজার হাজার চোখ। মশার দাঁত নাই। দাঁত দুটাই লম্বা হইয়া ছুঁচের মত হইয়াছে। এই অস্ত্র দিয়া গায়ের চাম্‌ড়া কাটা হইলে, মশারা মুখ হইতে এক রকম লালা বাহির করিয়া কাটা ঘায়ে লাগাইয়া দেয়। আমাদের শরীরের কোনো জায়গায় ক্ষত হইলে কি হয়, তোমরা তাহা নিশ্চয়ই দেখিয়াছ,—তথন পাশ হইতে রক্ত আসিয়া বেদনার জায়গায় জড় হয়। কাটা জায়গায় মশার মুখের লালা লাগিলে অবিকল তাহাই হয়। লালার এক রকম মৃদু বিষ থাকে, কাজেই তাহা জ্বালা-যন্ত্রণার সুরু করে এবং পাশ হইতে তাজা রক্ত আসিয়া সেখানে জমা হয়। মশারা এই রকমে শুঁড়ের কাছে রক্ত পাইয়া তাহা চুষিয়া খাইতে থাকে।

 একবার পেট ভরিয়া রক্ত খাইলে মশারা দুই তিন দিন আর কিছু খায় না। এই কয়েক দিন তাহারা চুপ করিয়া পড়িয়া থাকে, তার পরে গা ঝাড়া দিয়া আবার রক্তের সন্ধানে বাহির হইয়া পড়ে। রক্ত খাইলে যে কেবল ইহাদের শরীরই পুষ্ট হয়, তাহা নয়; সঙ্গে সঙ্গে তাহাদের পেটের ভিতরকার ডিমগুলিও পুষ্ট হয়।