বনবাণী/নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা/শেষ মিনতি


শেষ মিনতি

গান

কেন পান্থ, এ চঞ্চলতা।
কোন্‌ শূন্য হতে এল কার বারতা

‘যাত্রাবেলায় রুদ্ররবে
বন্ধনডাের ছিন্ন হবে,
ছিন্ন হবে, ছিন্ন হবে।’

নয়ন কিসের প্রতীক্ষারত
বিদায়বিষাদে উদাস-মতো,
ঘনকুন্তলভার ললাটে নত-
ক্লান্ত তড়িৎবধূ তন্দ্রাগতা।

‘মুক্ত আমি, রুদ্ধ দ্বারে
বন্দী করে কে আমারে।
যাই চলে যাই অন্ধকারে
ঘণ্টা বাজায় সন্ধ্যা যবে।’

কেশরকীর্ণ কদম্ববনে
মর্মর মুখরিল মৃদু পবনে,
বর্ষণহর্ষ-ভরা ধরণীর
বিরহবিশঙ্কিত করুণ কথা।
ধৈর্য মানো, ওগাে, ধৈর্য মানো,
বরমাল্য গলে তব হয় নি ম্লান,
আজো হয় নি ম্লান,
ফুলগন্ধনিবেদনবেদনসুন্দর
মালতী তব চরণে প্রণতা।

শ্রাবণ সে যায় চলে পান্থ,
কৃশতনু ক্লান্ত,
উড়ে পড়ে উত্তরীপ্রান্ত
উত্তরপবনে।
যূথীগুলি সকরুণ গন্ধে
আজি তারে বন্দে,
নীপবন মর্মরছন্দে
জাগে তার স্তবনে।
শ্যামঘন তমালের কুঞ্জে
পল্লবপুঞ্জে
আজি শেষ মল্লারে গুঞ্জে
বিচ্ছেদগীতিকা।
আজি মেঘ বর্ষণরিক্ত,
নিঃশেষবিত্ত,
দিল করি শেষ অভিষিক্ত
কিংশুকবীথিকা।