বিদায়-আরতি/বর্ষার মশা

বর্ষার মশা

বর্ষার মশা বেজায় বেড়েছে,
খালি শোন শন্‌ শন্‌,
ক্ষদে-ক্ষুদে গুলো দ্যায় বা থামিয়ে
ভ্রমরের গুঞ্জন!
বাণীর অরুণ চরণ ঘিরে যে
রক্ত-কমল শোভে,
রঙে ভুলে তার দলে দলে মশা
ছুটেছে রক্ত-লোভে!
আদাড়ের মশা পাঁদাড়ের মশা
জুটেছে মানস-সরে,
রক্ত-পদ্মে রক্ত না পেয়ে
ছেঁকে ধরে মধুকরে!
চপল পাখায় বাণীর চরণ
করিয়া প্রদক্ষিণ
ভারতীরে ভণে ভ্রমর “হায় মা!
একি হেরি দুর্দ্দিন।
কোথা হ’তে এল ক্ষুদে-ক্ষুদেগুলো
উড়ে উড়ে সারে সারে,

জুড়ে বসে হের রক্ত-পায়ীরা
মধুপের অধিকারে!
বিশ্রাম নাই ‘পঙ’ ‘পিঙ’ ‘পাঁই’
রব করে ফিরে ঘুরে,
“মোরাও ভোম্‌রা” ভণিতা করিয়া
ভণে যেন নাকী সুরে।
বিকট জরার শাকটিক ওরা
রোগের বাহন জানি,
সহসা ওদের হেরে বাণী-গেহে।
মনে আতঙ্ক মানি।
মানসের জল হ’ল কি গরল?
হৃদয় কঁপিছে ত্রাসে।
বাণীর চরণ ঘিরিল কি এরা
পেট পোরাবার আশে।”
হেসে বাণী কন্‌—“কেন্‌ উন্মান
কমল-লোভন, ওরে!
ঘোলাটে রাতের অপচার ওরা,
প্রভাতেই যাবে স’রে।
রবির আপলোয় ঘোর অণপত্তি
সত্যি ওদের আছে,
কোনো ভয় নাই, পেচকের হাই
ভোরাই আলোর আঁচে—
হবে অদৃশ্য; তাড়াতে হবে না
কিটিঙের গুঁড়া দিয়া,
হবে না তা ছাড়া, মশার কামড়ে
ভোম্‌রার ম্যালেরিয়া।”