পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৪৪|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
গাড়ি অগ্রসর হইয়া চলিল, গানের পদ ক্রমে দূর হইতে দূরতর হইয়া কানে প্রবেশ করিতে লাগিল
૨88 গল্পগুচ্ছ

গাড়ি অগ্রসর হইয়া চলিল, গানের পদ ক্ৰমে দর হইতে দরতর হইয়া কানে প্রবেশ করিতে লাগিল— ---
{{gap}}{{gap}}{{gap}}ওগাে {{gap}}নিষ্ঠুর, ফিরে এসাে হে!
ওগো নিষ্ঠর, ফিরে এসো হে! আমার করণ কোমল, এসো ! ওগো সজলজলদস্নিগ্ধকান্ত সন্দের, ফিরে এসো। গানের কথা ক্ৰমে ক্ষীণতর অসফটতর হইয়া আসিল, আর বুঝা গেল না। কিন্তু গানের ছন্দে শশিভূষণের হাদয়ে একটা আন্দোলন তুলিয়া দিল, তিনি আপন মনে গনগন করিয়া, পদের পর পদ রচনা করিয়া যোজনা করিয়া চলিলেন, কিছতে যেন থামিতে পারিলেন না—

আমার নিতি-সুখ, ফিরে এসো! আমার চিরদখ, ফিরে এসো! আমার সব-সখ-দুখ-মন্থন-ধন, অন্তরে ফিরে এসো ! আমার চিরবাঞ্ছিত, এসো ! আমার চিতসঞ্চিত, এসো ! ওহে চঞ্চল, হে চিরন্তন, ভুজ -বন্ধনে ফিরে এসো! আমার বক্ষে ফিরিয়া এসো, আমার চক্ষে ফিরিয়া এসো, আমার শয়নে স্বপনে বসনে ভূষণে নিখিল ভুবনে এসো ! আমার মুখের হাসিতে এসো হে, আমার চোখের সলিলে এসো !
{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}}করুণ কোমল, এসাে!
আমার আদরে, আমার ছলনে, আমার অভিমানে ফিরে এসো ! আমার সব স্মরণে এসো, আমার সব ভরমে এসো-- আমার ধরম করম সোহাগ শরম জনম মরণে এসো ! গাড়ি যখন একটি প্রাচীরবেষ্টিত উদ্যানের মধ্যে প্রবেশ করিয়া একটি দ্বিতল অট্টালিকার সম্মখে থামিল তখন শশিভূষণের গান থামিল।

তিনি কোনো প্রশন না করিয়া ভূত্যের নিদেশক্ৰমে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করিলেন। যে ঘরে আসিয়া বসিলেন, সে ঘরের চারি দিকেই বড়ো বড়ো কাচের আলমারিতে বিচিত্র বর্ণের বিচিত্র মলাটের সারি সারি বই সাজানো। সেই দশ্য দেখিবামাত্র তাঁহার পরাতন জীবন বিতীয়বার কারামন্ত হইয়া বাহির হইল। এই সোনার জলে অঙ্কিত, নানা বণে রঞ্জিত বইগুলি আনন্দলোকের মধ্যে প্রবেশ করিবার সপরিচিত রত্নখচিত সিংহদ্বারের মতো তাঁহার নিকটে প্রতিভাত হইল।
{{gap}}{{gap}}{{gap}}ওগাে {{gap}}সজলজলদস্নিগ্ধকান্ত সুন্দর, ফিরে এসাে।
টেবিলের উপরেও কী কতকগুলি ছিল। শশিভূষণ তাঁহার ক্ষীণদটি লইয়া ঝ:কিয়া পড়িয়া দেখিলেন, একখানি বিদীণ লেট, তাহার উপরে গুটিকয়েক পরাতন খাতা, একখানি ছিন্নপ্রায় ধারাপাত, কথামালা এবং একখানি কাশীরামদাসের মহাভারত। লেটের কাঠের ফ্রেমের উপর শশিভূষণের হস্তাক্ষরে কালি দিয়া খাব মোটা করিয়া

{{gap}}গানের কথা ক্রমে ক্ষীণতর অস্ফুটতর হইয়া আসিল, আর বুঝা গেল না। কিন্তু গানের ছন্দে শশিভূষণের হৃদয়ে একটা আন্দোলন তুলিয়া দিল, তিনি আপন মনে গুনগুন করিয়া, পদের পর পদ রচনা করিয়া যােজনা করিয়া চলিলেন, কিছুতে যেন থামিতে পারিলেন না-

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} নিতি-সুখ, ফিরে এসাে।

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} চিরদুখ, ফিরে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} সব-সুখ-দুখ-মন্থন-ধন, অন্তরে ফিরে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} চিরবাঞ্ছিত, এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} চিতসঞ্চিত, এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}ওহে চঞ্চল, হে চিরন্তন,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}ভুজ {{gap}}-বন্ধনে ফিরে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} বক্ষে ফিরিয়া এসাে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} চক্ষে ফিরিয়া এসাে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} শয়নে স্বপনে বসনে ভূষণে নিখিল ভুবনে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} মুখের হাসিতে এসাে হে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} চোখের সলিলে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} আদরে, আমার ছলনে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} অভিমানে ফিরে এসাে!

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} সর্বস্মরণে এসাে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} সর্বস্মরণে এসাে,

{{gap}}{{gap}}{{gap}}আমার{{gap}} ধরম করম সােহাগ শরম জনম মরণে এসাে!

{{gap}}গাড়ি যখন একটি প্রাচীরবেষ্টিত উদ্যানের মধ্যে প্রবেশ করিয়া একটি দ্বিতল অট্টালিকার সম্মুখে থামিল তখন শশিভূষণের গান থামিল।

{{gap}}তিনি কোনাে প্রশ্ন না করিয়া ভৃত্যের নির্দেশক্রমে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করিলেন।

{{gap}}যে ঘরে আসিয়া বসিলেন, সে ঘরের চারি দিকেই বড়ো বড়ো কাচের আলমারিতে বিচিত্র বর্ণের বিচিত্র মলাটের সারি সারি বই সাজানাে। সেই দৃশ্য দেখিবামাত্র তাঁহার পুরাতন জীবন দ্বিতীয়বার কারামুক্ত হইয়া বাহির হইল। এই সােনার জলে অঙ্কিত, নানা বর্ণে রঞ্জিত বইগুলি আনন্দলােকের মধ্যে প্রবেশ করিবার সুপরিচিত রত্নখচিত সিংহদ্বারের মতাে তাঁহার নিকটে প্রতিভাত হইল।

{{gap}}টেবিলের উপরেও কী কতকগুলি ছিল। শশিভূষণ তাঁহার ক্ষীণদৃষ্টি লইয়া ঝুঁকিয়া পড়িয়া দেখিলেন, একখানি বিদীর্ণ স্লেট, তাহার উপরে গুটিকয়েক পুরাতন খাতা, একখানি ছিন্নপ্রায় ধারাপাত, কথামালা এবং একখানি কাশীরামদাসের মহাভারত।

{{gap}}স্লেটের কাঠের ফ্রেমের উপর শশিভূষণের হস্তাক্ষরে কালি দিয়া খুব মােটা করিয়া