বেল্লিক রামায়ণ/আতর ও অভারাম

আতর ও অভারাম।

অতঃপর অভারাম এ দিকেতে তবে।
যায় সে আতর-পাশে মগ্ন মহাভাবে॥
কহে যত বিবরণ নিকটে তাহার।
শুনিয়ে আতর-মনে আনন্দ অপার॥
বলে, “ভাল, ভালবাস তুমি সে আমারে।
তাই সে বাড়াও তুমি মােরে এত কোরে॥
আমিও করিব তব কাজ সে কিঞ্চিৎ।
যাহে মম কৃপায় সে না হও বঞ্চিত॥
মরি যদি আমি, তুমি জীবিত থাকিতে।
করিব উইল আমি তােমার নামেতে॥
যতেক বিষয় এই আছয় আমার।
সকলি করিব আমি নামেতে তােমার॥
থাক তুমি মাের কাছে যেও না কোথাও।
দেখ সুখভােগ কিছু পাও কি না পাও॥
এত করি মােরে তুমি বাড়ালে যখন।
নিশ্চয় করিব কিছু মনের মতন॥
দুধে আঁচাইবে তুমি, ঘােলে শৌচ হবে।
দেখে সুখ, লোকে দম ফাটিয়ে মরিবে॥”
অভা বলে, “দয়াবতী বটে সে এমনি।
তুমি লো সুন্দরী নারীকুল-শিরোমণি॥”

বলেছ যে মুখে এই, মানি ভাগ্য বলে।
এ হতে বা সুখ মম কি হবে কপালে॥
আমি সে অধম অতি, পুরুষ-কুলেতে।
মম সম জনে কৃপা কে করে জগতে॥”
কহিল আতরমণি, তবে এই বাণী।
“কে বলে অধম তােমা তুমি অতি জ্ঞানী॥
রেখেছ আমার মান তুমি সে যখন।
আমিও তােমার মান করিব রক্ষণ॥
ভালবাসিলেই তারে ভাল লােকে বাসে।
ঘৃণাকারী জনেই উড়ায় উপহাসে॥”
এইরূপে পরস্পর বাক্যালাপ হয়।
বেল্লিকের রামায়ণ অতি রসময়॥
মাস দুই চারি পরে এই ঘটনারি।
হইল ম্যারেজ ধার্য্য বেল্লিক রামেরি॥
উলো বােলে আছে এক গ্রাম বাঙ্গালায়।
বর্দ্ধিষ্ণু কায়স্থ এক আছয় সেথায়॥
নাম তার বৃহচ্চক্ষু রুদ্র না কি হয়।
তারি কন্যা ‘অভাগিনী’ নামটি ধরয়॥
সেই অভাগিনী সঙ্গে বেল্লিকরামের।
হইল বিবাহ, মধ্যে অত্যল্প কালের॥
হায় অভাগিনী তব কি জোর কপাল।
তেঁই সে নাগর আজি পেলে এ গােপাল॥

রূপে গুণে একাধারে যােগ্য এ যেমন।
কে কোথায় কবে কার পেয়েছে এমন॥
কতই না সুখী তুমি হবে অতঃপর।
তােমার সমান সুখী কোন্ নারী নর?
না হিংসিলে বাঁচি কেহ তােমার সে সুখ।
ফাটিবে হয় ত কত রমণীর বুক॥
না জানি বসিয়ে কোন্ পাঁশ-বনে হায়।
করিলে তপস্যা তুমি পাইতে ইহাঁয়॥
গােবরের নৈবিদ্য দিয়েছিলে নিশ্চিত।
গােবরগণেশ পতি তেঁই নির্দ্ধারিত॥
অতঃপর শুন ভাই কহি বিবরণ।
পিতা এর বৃহচ্চক্ষু মানুষ কেমন॥