বেল্লিক রামায়ণ/দর্পের সুযুক্তি প্রদান

বেল্লিককে দর্পবাবুর সুযুক্তি

প্রদান।

বলেন বেল্লিক প্রতি দর্পবাবু তবে।
“শুন ভাই কহি যাহে ভাবনা ঘুচিবে॥
আছে এক বুড়ী বাড়ী মােদের পাড়াতে।
চৌকষী তাহার মত নাহি বাঙ্গালাতে॥
যেমনটি কয়ে দিবে, করিবে তেমন।
অপরূপ বহুরূপী সে ত সর্ব্বক্ষণ॥
ঠিক তব মাসী সম রহিবে সাজিয়া।
তেমনি করিবে ঠিক যা দিবে কহিয়া॥

আসিবে যখন তব শ্বশুর এখানে।
মােহিত করিয়ে তারে দিবে ত যতনে॥
না পাবেন টের তিনি কিছু ও ব্যাপার।
ঠিক যেন কাছেতেই আছ তুমি তাঁর॥
একা আছ এ সহরে যদ্যপি শুনেন।
মনে মনে সন্দ কিছু করিতে পারেন॥
কেন না বয়স কাল এখন তােমার।
হতে পারে একদণ্ডে চিত্তের বিকার॥
হয় ত খারাপ তুমি হয়েছ ভিতরে।
সন্দেহ উদয় হতে পারে যে অন্তরে॥
কিন্তু আছে মাসী তব অধীনে তাঁহার।
আছ তুমি, শুনিলে এ কথা একবার॥—
না রবে সন্দেহ আর কিছুই নিশ্চয়।
অচিরে সকল দিকে হইবেক জয়॥
‘মরেছেন মাতা, স্ত্রীর থাকা এইবার।
নিত্য কাছে কাছে হয় খুব দর্‌কার॥
আবার একাকী সেই থাকিবে কেমনে।’
ভেবে চিন্তে দাসী যদি দিবে তার সনে॥
তা হলেই সর্ব্বদিকে হবে গােলযােগ।
হবে না নিশ্চিন্তে আর কোন সুখভােগ॥
কিন্তু এ যে কল আমি দিতেছি বলিয়ে।
সকল সন্দেহ এতে দিবেক ভাসায়ে॥”

বলিল বেল্লিক তবে, “সেই যুক্তি কর।
বাঁচাও আমারে মাের বাক্য শীঘ্র ধর॥”
অতঃপর সেই মত কার্য্য সবে করে।
এ দিকেতে পত্র এক লিখেন শ্বশুরে॥
কন্যারে পাঠান পত্র পেয়ে পিতা তার।
খরচের বৃদ্ধি সেই সঙ্গেতে এবার॥
বরাদ্দ ষাট টাকা এখন মাসে মাসে।
পাঠাইয়ে দেন তিনি মনের হরিষে॥
একমাস দুইমাস এমন করিয়ে।
একটী বৎসর ক্রমে চলিল কাটিয়ে॥
দ্বিতীয় বৎসরে যাহা ঘটে অতঃপর।
একে এক শুন তাহা শ্রুতিসুখকর॥
বেল্লিকের রামায়ণ অতি সুমধুর।
একদণ্ডে যত ভ্রান্তি করি দেয় দূর॥