মহাভারত (উপক্রমণিকাভাগ)/চতুর্থ অধ্যায়
চতুর্থ অধ্যায়— পৌলোমপর্ব্ব।
সৌতি কহিলেন, নৈমিষারণ্যে কুলপতি শৌনকের দ্বাদশবার্ষিক যজ্ঞে যে সমস্ত ঋষি সমাগত হইয়াছিলেন, সূতকুলোদ্ভব ললামহর্মণপুত্র পৌরাণিক উগ্রশ্রবাঃ পুরাণকীর্ত্তন দ্বারা তাঁহাদের চিত্তরঞ্জন করিতেছিলেন। তিনি কৃতাঞ্জলি হুইয়া নিবেদন করিলেন, হে মহর্ষিগণ! রাজা জনমেজয়ের সর্পসত্রানুষ্ঠানের কারণান্তর স্বরূপ উতঙ্কচরিত আদ্যোপান্ত কীর্ত্তন করিলাম; এক্ষণে আপনারা আর কি শুনিতে বাসনা করেন? অজ্ঞা করুন, আর কি বর্ণনা করিব।
ঋষিগণ কহিলেন, হে লোমহর্ষণপুত্র! আমরা শ্রবণবাসনাপরবশ হইয়া কথাপ্রসঙ্গক্রমে যে যে বিষয় তোমাকে জিজ্ঞাসা করিব, তুমি তৎসমুদায় বর্ণন করিবে। এক্ষণে কুলপতি শৌনক অগ্নিগৃহে অবস্থিত হাছেন; তিনি দেবতা, অসুর, মনুষ, সর্প, ও..ন্ধব ঘটিত অলৌকিক তাবৎ বৃত্তান্ত জানেন; তিনি বিদ্বান্, কার্যদক্ষ, ব্রতপরায়ণ, বেদ ও বেদান্ত শাস্ত্রের অদ্বিতীয় গুরু, সত্যবাদী, শান্তচিত্ত, তপস্যারত; তিনি আমাদিগের সকলের গুরু, মহামান্য, তাহার আগমন প্রতীক্ষা কর। তিনি পরুমপূজিত আসনে আসীন হইয়া যাই। জিজ্ঞাসিবেন, তাহাই কহিবে।
উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, তাহাই ভাল, সেই মহাত্মা আসন পরিগ্রহ করিয়া জিজ্ঞাসিলেই পরম পবিত্র বহুবিধ কথা কীর্ত্তন করিব। অনন্তর বিপ্রকুলতিলক মহর্ষি শৌনক যথাবিধি দেবযজ্ঞ পিতৃতর্পণ প্রভৃতি সমস্ত ক্রিয়া সমাপন করিয়া, যে স্থানে উগ্রশ্রবাঃ ও ব্রতপরায়ণ ব্রহ্মর্ষি ও সিদ্ধগণ উপবিষ্ট ছিলেন, তথায় উপস্থিত হইলেন, এবং ঋত্বি ও সদস্যগণ উপবিষ্ট হইলে স্বয়ং আসন পরিগ্রহ করিয়া কহিতে আরম্ভ করিলেন।