মানসিংহ/দেশ বিদেশ বর্ণন

দেশ বিদেশ বর্ণন।

চল চল যাই নীলাচলে। রে অরে ভাই। ঘটাইল
বিধি ভাগ্যবলে॥ মহাপ্রভু জগন্নাথ, সুভদ্রা বলা-
ই সাথ, দেখিব অক্ষয় বটতলে। খাইয়া প্রসাদ
ভাত, মাথায় মুছিব হাত, নাচিব গাইব কুতু
হলে॥ ভবসিন্ধু সিন্দু জানি, পার হৈনু হেন
মানি, সাঁতার খেলিব সিন্ধু জলে॥ দেখিয়া সে
চাঁদমুখ, পাইব কৈবল্য সুখ, সুধন্য ভারত
ভূমণ্ডলে॥ ধ্রু ॥

 গঙ্গা পার হইয়া চলিলা মজুন্দার। ডানি বামে যতগ্রাম কত কব তার॥ জগন্নাথ দেখিতে করিয়া মনোরথ। ধরিলেন মানসিংহ দক্ষিণের পথ॥ গজে মানসিংহ পালকীতে মজুন্দার। ইন্দ্র সঙ্গে যেমন কুবের অবতার॥ এড়ায় মঙ্গল কোট উজানি নগর। খুলনার পুত্র সাধু শ্রীমন্তের ঘর॥ সদাই সরাই ক্রমে গেলা বর্দ্ধমান। পার হৈলা দামোদর করি স্নান দান॥ রহে চম্পানগর ডাহিনে কত দূর। চাঁদ বেণে ছিল যাহে ধনের ঠাকুর॥ জানু মানু ছিল যাহে মনসার দাস। হাসন হোসনগিয়া যথাকৈল বাস॥ আনিলা মোগল মারি উচালন গিয়া। ক্রমে ক্রমে অনেক সরাই এড়াইয়া॥ মল্লভূমি কর্ণগড় দক্ষিণে রাখিয়া। বঙ্গালার সীমা নেড়া দেউল দেখিয়া॥ এড়ায় মেদিনী পুর নারায়ণ গড়ে। দাঁতন এড়ায়ে জলেশ্বার ডেরা পড়ে॥ রাজঘাট পার হয়ে বস্তায় বিশ্রাম। মহানদ পার হয়ে কটকে মোকাম॥ ডাহিনে ভুবনেশ্বর বামে বালেশ্বর। বালিহন্তা পাছু করি চলিলা সত্বর॥ এস্তায়ে আঠার নালা গেলা নীলাচলে। দেখিলেন জগন্নাথ মহাকুতুহলে॥ দিন দশ বার তথা করিয়া বিশ্রাম। দেখিলা সকল স্থান কত কব নাম॥ কৃতার্থ হইলা মহা প্রসাদ খাইয়া। বিমললোচন হৈলা বিমলা দেখিয়া॥ মানসিংহ জিজ্ঞাসা করিলা মজুন্দারে। ক্ষেত্রের মহিমা কিছু শুনাহ আমারে॥ বিশেষিয়া কহিতে লাগিলা মজুন্দার। রায় গুণাকর কহে সে কথা অপার॥