মানসিংহ/ভবানন্দের অন্তঃপুরপ্রবেশ
মার কাছে মজুন্দার বসি পাণ খান। হেনকালে মাধী এল গালভরা পাণ। ছোটমার ঘরে আসি পাণ খেতে হয়। এত বলি ঝারি বাটা অমৃতীটি লয়॥ মাধী যদি ঝারি বাটা অমৃতী লইল। বিধাতা মনের মত সংযোগ করিল॥ রাখিতে কে পারে অরে সাধী দিল টান। ঘাড় ফিরে আড়ে আড়ে মার দিকে চান॥ মায়ের পোয়ের ভাব রহে নাকি ছাপা। সীতা কন ঘরে গিয়া পাণ খাও বাপা। আশা বুঝি বাসু আশু খড়ম যোগায়। হাসি হাসি মাধী দাসী আগে আগে যায়॥ দেহুড়ীর পারমাত্র হৈলা মজুন্দার। সমুখেতে চন্দ্রমুখী কৈলা নমস্কার॥ জিজ্ঞাসিলা মজুন্দার বাড়ীর কুশল। চন্দ্রমখী নিবেদিলা সকলি মঙ্গল॥ এই ঘরে আসি বসি খাউন পাণ জল। দেখিবারে ছেলে পিলে হয়েছে বিকল॥ শুনি মজুন্দার বড় উন্মনা হইলা। কার ঘরে আগে যাব ভাবিতে লাগিলা॥ যাইতে ছোটর ঘরে বড় মনোরথ। বড় কৈলা বাদহাটা আগুলিয়া পথ॥ এক চক্ষু কাতারয়ে ছোট ঘর যায়। আর চক্ষুরাঙ্গা হয়ে বড় জনে চায়॥ সন্ধ্যাকালে চক্রবাক চাহে যেন লক্ষে। এক চক্ষে তরুণী তরণি আর চক্ষে॥ মাধী বলে আগে যাউন ছোট মার ঘরে। তার পরে যাবেন যেখানে মন ধরে॥ সাধী বলে মাধী তোরে সাক্ষী কেবা মানে। ঠাকুর যাবেন বুঝি আপনার স্থানে॥ ঠাকুরাণী ঠাকুরে যখন কথা হয়। দাসী হয়ে কথা কৈস বুকে নাহি ভয়॥ আগে বড় পিছে ছোট বিধির এ কট। তুই কি করিবি তাহে উলট পালট॥ কন্দল লাগায়ে ঘর মজাইবি বুঝি। রামায়ণে ছিল যেন কেকয়ীর কুজী॥ মাধী বলে আলো সাধী চুপ করি থাক। আমি জানি বিস্তর অমন এঁড়ে ডাক॥ সাধী সঙ্গে করিয়া কথার হুটাহুটি। ছোটর নিকটে মাধী গেল ছুটাছুটি॥ কহিছে ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর। দু সতিনা ঘরে দাসী অনর্থের ঘর॥