মানসিংহ/ভবানন্দের উভয় রাণী সম্ভোগ
ভবানন্দের উভয় রাণী সম্ভোগ।
সোহাগে হইয়া সুখী, ঘরে গেলা পদ্মমুখী, মজুন্দার বড় ঘরে গেলা। কোলে লয়ে বড় নারী, করি তার মনোহারি, ক্ষণেক করিলা কাম খেলা॥ ছেলে পিলে নিদ্রা গেলা, চন্দ্রমুখী লয়ে খেলা, রাত্রি হৈল দ্বিতীয় প্রহর। যাইতে ছোটর কাছে, মনের বাসনা আছে, সমাপিলা বড়র বাসর॥ প্রোষিত ভর্তৃকা হয়ে, দুহে ছিলা দুঃখ সয়ে, আমা দেখি বাসসজ্জা হৈলা॥ কার ঘরে যাব আগে, উৎকণ্ঠিতা এই রাগে, দেহুড়ীতে অভিসার কৈলা॥ কারো ঘরে নাহি গিয়া, রহিলাম দাঁড়াইয়া, বিপ্রলব্ধা হইলা দুজনে। এখন ইহারে লয়ে, থাকিলাম সুখী হয়ে, পদ্মমুখী কি ভাবিছে মনে॥ স্বাধীনভর্তৃকা ইনি, প্রোষিত ভর্তৃকা তিনি, আমি হৈনু অপূর্ব্ব নায়ক। তারে গিয়া হৃদে ধরি, স্বাধীন ভর্তৃকা করি, নহে হব কামিনী ঘাতক॥ রাত্রি শেষে গেলে তথা, ক্রোধে না কহিবে কথা, খণ্ডিতা হইবে পদ্মমুখী। খেদাইবে কটু কয়ে, কলহান্তরিতা হয়ে, কান্দিবেক হয়ে বড় দুঃখী॥ তার কাছে গালি খেয়ে, এখানে আসিব ধেয়ে, ইনি পুনঃ হবেন খণ্ডিতা। সেখানে যাহ কয়ে, খেদাইবে ক্রদ্ধহয়ে, একে দুই কলহান্তরিতা॥ রাত্রি যাবে এইরূপে, ডুবে রব কামকূপে, কেহ নাহি করিবে উদ্ধার। এখনো যদ্যপি যাই, তবে দুই কূল পাই, সম হয় দুহার বিহার। দুই প্রহরের ঘড়ী, গজরের তড়বড়ী, মজুন্দার বাহির হইলা। ওথা ঘরে পদ্মমুখী, ভাবেন অন্তরে দুখী, বুঝি প্রভু আসিতে নারিলা॥ সোহাগেতে ভুলাইয়া, মোরে ঘরে পাঠাইয়া, আনন্দে রহিলা বড় লয়ে। গেল রাত্রি দুই পর, এখনো না এল ঘর, এ দুঃখ কেমনে রব সয়ে॥ ফুল বাণ বাণ ফলে, অঙ্গ দেই ধরাতলে, ঘরবারি করে কতবার।এই অবসর পেয়ে, মন পলাইল ধেয়ে, শরের বুঝিয়া খর ধার॥ হেন কালে মজুন্দার, বেগে ঘরে এল তার, মন আইল বেগ শিখিবারে। মদন প্রহরী ছিল, খর শর ছাড়ি দিল, দুজনে বিন্ধিল এক ধারে॥ কথায় না সহে ভর, দুহে কামে জর জর, কামক্রীড়া করিলা বিস্তর। ভারত করিছে সার, বিস্তর কি কব আর, বর্ণিয়াছি বিদ্যার বাসর॥