মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ (১৯৪৪)/৩য় অংশ

আরিয়ান

ভারতবর্ষের সীমা

 যে দেশ সিন্ধুর পূর্বে অবস্থিত আমি তাহাকেই ভারতবর্ষ ও তাহার অধিবাসীদিগকে ভারতবাসী (Indoi) বলিয়া ধরিয়া লইতেছি। ভারতবর্ষের উত্তর সীমা টরস পর্বত, কিন্তু এই দেশে উহা টরস নামে অভিহিত হয় না। এই পর্বতশ্রেণী পাম্ফিলিয়া, লাইকিয়া ও কিলিকিয়। দেশের সমুদ্র হইতে আরম্ভ হইয়া সমগ্র এসিয়া ব্যবচ্ছিন্ন করিয়া পূর্বমহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রহিয়াছে। []বিভিন্ন দেশে ইহা বিভিন্ন আখ্যা প্রাপ্ত হইয়াছে। এক দেশে ইহার নাম পরপমিসস (Paropamisos), আর এক দেশে হিমোডস (Hemodos— হিমদ অর্থাৎ হিমালয়)। অন্য এক স্থানে ইহা হিমায়স (Hemaos) নামে আখ্যাত হইয়াছে, এবং বোধ হয় ইহার আরও বিভিন্ন নাম আছে। যে সকল মাকেদনীয় সেকেন্দরের সহিত দিগ্বিজয়ে বহির্গত হইয়াছিল তাহারা ইহাকে কৌকেসস নামে অভিহিত করিয়াছে। ইহা আর এক কৌকেসস—স্কাইথিয়া দেশীয় কৌকেসস নহে। ইহা হইতেই এই জনশ্রুতির উৎপত্তি হইয়াছে যে সেকেন্দর কৌকেসসের পরপারে গমন করিয়াছিলেন। ভারতবর্ষের পশ্চিম সীমায় বরাবর সমুদ্র পর্য্যন্ত সিন্ধু নদ। ইহা দুই মুখে সমুদ্রে প্রবেশ করিয়াছে। কিন্তু ডানিয়ুব নদীর পঞ্চ মুখের ন্যায় এই দুই মুখ পরস্পরের নিকটবর্তী নহে। উহারা নীল নদের মুখগুলির ন্যায়, যদ্বারা ঈজিপ্টের ব-দ্বীপ সৃষ্টি হইয়াছে। সিন্ধুও এই রূপ ব-দ্বীপ সৃষ্টি করিয়াছে। উহা ঈজিপ্ট হইতে ক্ষুদ্র নহে। ভারতীয় ভাষাতে ইহার নাম পট্টল। ভারতবর্ষের দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্বোল্লিখিত মহাসমুদ্র এবং উহাই ঐ দেশের পূর্ব সীমা।

  1. কালিদাস হিমালয়ের ঠিক এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন:
    পূর্ব্বাপরৌ তোয়নিধীবগাহ্যঃ। স্থিতঃ পৃথিব্যা ইব মানদণ্ডঃ॥