বিশ

 আমার এই চিত্রশালা কেবল কবি ও অন্যান্য শ্রেণীর শিল্পী প্রভৃতির জন্যে নয়, এর মধ্যে যে কোন অসাধারণ মানুষের ছবি দিতে পারি। আজ আমরা দেখব বিখ্যাত খেলোয়াড় স্বর্গীয় শিবদাস ভাদুড়ীকে।

 বাংলায় sport বলতে বুঝায় খেলা বা ক্রীড়াকৌতুক। এখানে জ্ঞানীরা ও-ব্যাপারটাকে মোটেই আমল দেন না বা দিতেন না এবং জাতীয় জীবনে তার বিশেষ প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করতেন না। কিন্তু য়ুরোপীয়দের—বিশেষ ক’রে ইংরেজদের—কথা স্বতন্ত্র। পুরুষোচিত দেহগঠনের তথা জাতিগঠনের পক্ষে উপযোগী ক্রীড়া-কৌতুকের অসামান্য সাফল্য তারা প্রকৃষ্টভাবে প্রমাণিত করেছে। ইংরেজরা বলে, আমরা ওয়াটারলুর যুদ্ধ জিতেছি ইংলণ্ডের ক্রীড়াক্ষেত্রেই। তারা জানে, পঙ্গু দেহে সক্রিয় মস্তিষ্কের চেয়ে সক্ষম দেহে সবল মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হচ্ছে বেশী। তাই তাঁরা বড় বড় পণ্ডিত, বৈজ্ঞানিক, সাহিত্যিক ও শিল্পীর সঙ্গে ডন ব্র্যাডম্যান প্রমুখ খেলোয়াড়দেরও “স্যার” উপাধিতে ভূষিত করতে ইতস্ততঃ করেন না।

 ক্রীড়াক্ষেত্রে ‘মোহনবাগানে’র অবদান ভারতবর্ষে অমর হয়ে থাকবে। শিবদাস ছিলেন সেই মোহনবাগানের অতুলনীয় মুকুটমণি। প্রায় চল্লিশ বৎসর আগে মোহনবাগান ফুটবল খেলার মাঠে বিখ্যাত একটি ইংরেজ খেলোয়াড়ের দলকে পর্যুদস্ত ক’রে যখন “শীল্ড” লাভ করেছিল, তখন সারা দেশে যে বিস্ময়, আনন্দ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, এ-যুগের বালক ও যুবকদের কথা ছেড়ে দি, প্রৌঢ়রাও তা উপলব্ধি করতে পারবেন না। ও ঘটনাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় পলাসীর যুদ্ধের প্রতিশোধের মত। কলকাতার পথে পথে সেদিন যে সব স্মরণীয় দৃশ্য দেখেছি, তা দেখতে পাই নি ভারতের প্রথম স্বাধীনতাদিবসেও।

 অতি-বৃদ্ধ গিরিশচন্দ্র ঘোষ, দেহ তাঁর রোগে পঙ্গু। তিনি কারবার করেন সাহিত্য ও শিল্প নিয়ে, খেলার মাঠে কোনদিন পদার্পণ করেছেন ব’লে শুনি নি। এই অভাবিত সংবাদ শুনে উচ্ছ্বসিত ভাষায় ব’লে উঠলেন, ‘বাঃ! আমাদের আজ বড় আনন্দের দিন! বাংলাদেশের ছেলেদের উপর কিছু ভরসা হচ্ছে। এও যে দেখব তা ভাবি নি।·····মনে ক’রে দেখ দেখি যে লাল মুখ দেখলে আমরা ভয়ে আঁৎকে উঠি, বরাবর মনে ক’রে থাকি আমরা চেষ্টা করলে তাদের চেয়ে intellectually বড় হ’লেও হ’তে পারি, কিন্তু বাহুবলে তাদের কাছে কস্মিনকালে এগুতে পারব না—শিখ গোরখা কেবল তাদের কাছে যেতে পারে—সেই জাতের মিলিটারী দলকে খেলায় পরাজিত করা কম কাজ নাকি? একটা ভয়— একটা সঙ্কোচ— যেটা শুধু মনগড়া ছায়া— সেটা দূর হয়েছে। এখন আমরা মনে করতে পারি যে বাহুবলে আমরা তাদের সামনে এগিয়ে যেতে পারি— প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে চেষ্টা করলে তাদের পরাজয় করতে পারি। বাঃ খুব বাহাদুর! বাংলাদেশকে এই খেলায় জিতে দশ বছর এগিয়ে দিয়েছে।’

 সেই বিখ্যাত খেলায় নেমেছিলেন মোহনবাগানের এগারোজন খেলোয়াড় এবং প্রত্যেকেরই ক্রীড়ানৈপুণ্য হয়েছিল চমৎকার। কিন্তু তাঁদের ভিতরে শিবদাস বিরাজ করেছিলেন মধ্যমণির মত। মোহনবাগানকে বিজয়গৌরবে গরীয়ান করেছিল প্রধানতঃ শিবদাসের প্রতিভাই।

 আমি তখন গভর্নমেণ্ট আর্ট-স্কুলে ছাত্র। মার্কাস স্কোয়ারে গিয়ে প্রতিদিন ক্রিকেট-ফুটবল-হকি খেলারও চর্চা করি কিছু কিছু। আমার তখনকার সমসাময়িক খেলোয়াড়দের মধ্যে ডোঙাবাবু, হাবুলবাবু ও স্বর্গীয় ভূতি সুকুল পরে মোহনবাগানের দলে যোগ দিয়েও যশস্বী হয়েছিলেন (শেষোক্ত দুইজন তো “শীল্ড” বিজয়ী দলেরও মধ্যে ছিলেন)। আর্টস্কুল থেকে বাড়ী ফেরবার আগে প্রত্যহই গড়ের মাঠে গিয়ে ফুটবল খেলা দেখে আসতুম। সেই সময়ে আমার চোখের সামনেই মোহনবাগান প্রথম “ট্রেড্‌স্‌ কাপ” লাভ ক’রে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। তখনকার দিনে ঐ প্রতিযোগিতার গৌরব ছিল আজকের চেয়ে অনেক বেশী। কিন্তু মোহনবাগান উপর-উপরি তিন-তিনবার “ট্রেড্‌স্‌ কাপ” জিতে “চ্যাম্পিয়ন” আখ্যা লাভ করে। তখন তার প্রধান প্রতিযোগী ছিল মেডিকেল মিলিটারি ও ন্যাসন্যাল স্পোর্টিংয়ের দল। প্রথমোক্ত দলটিতে খেলত আ্যংলো-ইণ্ডিয়ানরা এবং তাদের উইলিয়মস্ নামে এক দীর্ঘদেহ যুবকের নিপুণ খেলা এখনো আমার মনে আছে। শেষোক্ত দলটির সব খেলোয়াড়ই ছিলেন বাঙালী এবং তাঁদের গোলরক্ষক বাঁকাবাবু তখন খুব নামজাদা। ‘ন্যাসন্যালে’র আর এক খেলোয়াড় ছিলেন ক্ষেত্রবাবু। ছোটখাটো বেঁটে মানুষটি, কিন্তু তাঁর অগ্রগতি রোধ করা ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। স্মরণ আছে, এক বৎসর ‘ন্যাসন্যালে’র বিরুদ্ধে উপর-উপরি তিন দিন খেলে মোহনবাগান জয়ী হ’তে পেরেছিল।

 কেবল তিনবার “ট্রেড্‌স্‌ কাপ” জয় করার জন্যে নয়, আর এক বিশেষ কারণে মোহনবাগানের নাম ফিরতে লাগল লোকের মুখে মুখে। ইংরেজদের অসামরিক দলের মধ্যে তখন সমধিক প্রতাপ ছিল ক্যালকাটা ফুটবল ক্লাবের। তাকে যে নিম্নতর শ্রেণীভুক্ত কোন দেশীয় দল হারিয়ে দিতে পারে, এটা ছিল একেবারেই কল্পনার অতীত। কিন্তু মোহনবাগান সেই অসাধ্য-সাধনাই করলে। “মিণ্টো ফেটে”র (fete) এক প্রতিযোগিতায় তার কাছে হেরে গেল ক্যালকাটার দল। কিন্তু মোহনবাগানের দলে একজন বাইরের খেলোয়াড় আছে, এই অজুহাতে কর্তৃপক্ষ সে খেলাটি নাকচ ক’রে দেন।

 মোহনবাগানের এই সব বিজয়-যাত্রার অধিনায়ক রূপে অতুলনীয় খ্যাতি অর্জন করলেন শিবদাস ভাদুড়ী।

 সাধারণতঃ তিনি “লেফ্‌ট লাইনে” খেলতেন। একহারা ছিপছিপে দেহ, বিপুলবপু ইংরেজ প্রতিযোগীদের পাশে কি নগণ্যই দেখাত! কিন্তু বলের উপরে তাঁর যেমন অসামান্য দখল ছিল, তেমনি তাঁর গতিও ছিল অত্যন্ত দ্রুত। প্রতিযোগীদের অনায়াসেই এড়িয়ে একেবারে “কর্নারে”র কাছে গিয়ে তিনি “সেণ্টার” করতেন, নয় বলটিকে এক পদাঘাতে প্রেরণ করতেন “গোলপোষ্টে”র দিকে। “লাইন” থেকে তাঁর মত আর কোন খেলোয়াড়কে আজ পর্যন্ত এত বেশী গোল দিতে দেখি নি—অধিকাংশ খেলাতেই গোল দেবার কৃতিত্ব অর্জন করতেন তিনিই। হয় নিজে গোল দিয়েছেন, নয় সুগম ক’রে দিয়েছেন গোল দেবার পথ। তাঁর আর একটি অদ্ভুত অভ্যাস ছিল। বেগে ছুটতে ছুটতে এগিয়ে গিয়ে গোলের দিকে বল মেরেই তিনি প্রায়ই হতেন ভূতলশায়ী। হয়তো অতিরিক্ত দ্রুতগতির টাল তিনি সামলাতে পারতেন না।

 আর একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। “লেফ্‌ট ইনে” অর্থাৎ ঠিক পাশেই তাঁর দাদা বিজয়দাস ভাদুড়ী না থাকলে শিবদাসের খেলা তেমন খুলত না। দাদার সঙ্গে তাঁর ঠিক মনের মিল ছিল ব’লেই তাঁরা দুজনেই বুঝতেন দুজনের খেলার ধরন ও কৌশল। সামনে বাধা পেলেই দুই ভাই এমন কায়দায় পরস্পরের সঙ্গে বল বিনিময় করতেন যে, প্রতিপক্ষরা দেখত দুই চক্ষে অন্ধকার! বিজয়দাসও একজন সুচতুর ভালো খেলোয়াড় ছিলেন।

 ১৯১৮ খৃষ্টাব্দের “শীল্ড-ফাইনালে”র ছবি আজও চোখের সামনে ভাসছে। কিন্তু কি অবিশ্বাস্য কষ্ট স্বীকার ক’রেই যে সে খেলা দেখতে হয়েছে! জানতুম মোহনবাগানের নামেই মাঠে জনতার সৃষ্টি হয় এবং “শীল্ডে”র চরম খেলায় সেই জনতা যে বহুগুণ বেড়ে উঠবে, এটাও আমার অজানা ছিল না। বেশ সকাল সকালই মাঠে গিয়ে হাজির হলুম। কিন্তু দেখলুম এক কল্পনাতীত, অসম্ভব দৃশ্য! সমস্ত গড়ের মাঠটা পরিণত হয়েছে জনতাসাগরে, তেমন বিপুল জনতা জীবনে আর কখনো চোখে দেখি নি। খেলার মাঠের দিকেও অগ্রসর হবার কোন উপায়ই নেই। তখন তো গ্যালারি ছিল না, লোকে খেলা দেখত ভাড়া দিয়ে ছয়ফুট থেকে বারো-চৌদ্দ ফুট উঁচু মাচানের উপরে চ’ড়ে। নিতান্ত পল্‌কা! বিপদজনক মাচান, প্রায়ই মানুষের ভার সইতে না পেরে হুড়মুড় ক’রে ভেঙে পড়ত— কারুর মাথা ফাটত, কারুর হাত-পা ভাঙত। কিন্তু সে সব মাচানেও আর তিলধারণের ঠাঁই নেই, দ্বিগুণ ভাড়ার লোভ দেখিয়েও একটুখানি পা রাখবার জায়গা সংগ্রহ করতে পারলুম না।

 ইডেন গার্ডেনে ফিরে গিয়ে ম্লানমুখে জনকোলাহল শ্রবণ করছি, এমন সময়ে এক পরিচিত ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা, তিনি ঐ বাগানের রক্ষক। আমার দুঃখের কথা শুনে তিনি তখনি একখানা লম্বা মই আনিয়ে দিয়ে বললেন, ‘দক্ষিণ দিকের একটা দেবদারু গাছে চ’ড়ে খেলা দেখুন।’ অন্য কোন উপায় না দেখে তাই করতে হ’ল।

 প্রায় আড়াই তলা উঁচু একটা ডালের উপরে বাস সানন্দে দেখলুম, জনতার ফ্রেমে বাঁধানো গোটা খেলার মাঠটি চোখের সামনে প’ড়ে রয়েছে। বাইরের মাঠও মানুষের মাথায় মাথায় কালো হয়ে উঠেছে, কিন্তু তখনও আসছে জনতার পর জনতার স্রোত। দেখতে দেখতে দুই পক্ষের খেলোয়াড়দের আবির্ভাব, রেফারির বংশীধ্বনি এবং খেলা হ’ল শুরু।

 মোহনবাগানের প্রতিযোগী ইষ্ট ইয়র্কের দল ঠিক বিজেতার মতই প্রবল বিক্রমে খেলতে লাগল, বাঙালীরাও বাধা দিতে লাগল প্রাণপণে। বল একবার ছুটে যায় ওদিকে, আবার ছুটে আসে এদিকে। অবশেষে মোহনবাগানের গোল থেকে বেশ খানিকটা দূরে ইষ্ট ইয়র্ক পেলে একটি “ফ্রি কিক্”। কিন্তু কি দুর্বিপাক! গোলকিপার হীরালালকে এড়িয়ে বল সাঁৎ ক’রে ঢুকে গেল মোহনবাগানের “গোলপোষ্টে”র ভিতরে। বাঙালী দর্শকরা বজ্রাহত। ইংরেজরা প্রচণ্ড আনন্দে উন্মত্ত—চীৎকার করতে করতে কেউ লাফায়, কেউ শূন্যে টুপী ছোঁড়ে, কেউ পায়রা উড়িয়ে দেয়! কালা আদমীর কাছে পরাজয়? কবি হেমচন্দ্রের ভাষায়—“নেভার, নেভার!”

 কিন্তু তার পরেই পাওয়া গেল শিবদাসের অপূর্ব প্রতিভার আশ্চর্য পরিচয়! তিনি যেন মরিয়া, তিনি যেন একাই একশো! তাঁর স্থান যে “লেফ্‌ট লাইনে” এ কথা আর তাঁর মনে রইল না— কখনো তিনি মাঠের ডানদিকে, কখনো মাঝখানে সকলের পুরোভাগে, কখনো এদিকে, কখনো ওদিকে, কখনো সেদিকে এবং বলও ছুটছে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে। সর্বত্রই শিবদাস! সে যেন ইষ্ট ইয়র্ক বনাম শিবদাসের খেলা! আচম্বিতে শিবদাসের পদ ত্যাগ ক’রে একটি বল উল্কাবেগে ছুটে গেল ইষ্ট ইয়র্কেয় গোলের দিকে এবং তখনকার সর্বশ্রেষ্ঠ গোলকিপার ক্রেসী তাকে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারলেন না।

 গোল! গো-ওল্! গো-ও-ও-ল্! বিশাল জনসাগরের সেই গগনভেদী কোলাহল গঙ্গার ওপার থেকেও শোনা গিয়েছিল। আমার পাশের গাছের একটা উঁচু লম্বা ডালে মাথার উপরকার আর একটা ডাল ধ’রে শাখামৃগের মত সারি সারি ব’সেছিল দশ-বারোজন লোক। উত্তেজনায় আত্মবিস্মৃত হয়ে উপরকার ডাল ছেড়ে তারা দুই হাতে তালি দিতে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে ঝুপ্‌ ঝুপ্ ক’রে মাটির উপরে গিয়ে অবতীর্ণ হ’ল সশব্দে! তাদের আর্তনাদ শুনতে শুনতে সভয়ে আমি কোঁচা খুলে গাছের গুঁড়ির সঙ্গে নিজের দেহকে বেঁধে ফেললুম। কি জানি বাবা, বলা তো যায় না, আমারও যদি দৈবাৎ হাততালি দেবার সখ হয়!

 মায়াবী শিবদাসের ইন্দ্রজাল তখনও শ্রান্ত হয় নি, তখনও তিনি বল নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটোছুটি করছেন এখানে ওখানে যেখানে সেখানে! রীতিমত মস্তিষ্কচালনার সঙ্গে সঙ্গে পদচালনা না করলে সে-রকম খেলা কেউ খেলতে পারে না। প্রতিপক্ষদের দশাসই চেহারাগুলো কিছুতেই তাঁর ক্ষিপ্রগামী ছিপ্‌ছিপে দেহের নাগাল ধরতে পারছে না—যেন তিনি আলেয়া! আবার তিনি হ’লেন গোলের নিকটবর্তী, একজন প্রতিযোগী বাঘের মত তাঁর সামনে এসে পড়ল, কিন্তু তিনি টুক্ ক’রে বলটি তুলে দিলেন নিজেদের ‘সেণ্টার-ফরোয়ার্ড’ অভিলাষের পায়ের উপরে এবং অভিলাষও কিছুমাত্র ভুল করলেন না!

 আবার ইংরেজদের কাণে ভয়াবহ সেই হাজার হাজার কণ্ঠের আকাশফাটানো জয়ধ্বনি ও করতালি! ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত ছাতা ও জুতো! নর্তন এবং কুর্দন! সাহেবদের আসনে সমাধির স্তব্ধতা।

 বাজল খেলাশেষের বাঁশী। বাঙালীর প্রথম “শীল্ড” অধিকার। পুরুষোচিত ক্রীড়াক্ষেত্রে কালোর কাছে গোরার প্রথম পরাজয়। তারপরের দৃশ্য বর্ণনাতীত। বাড়ী ফিরেছিলুম সারা সহর মাড়িয়ে, অনেক রাতে।

 খেলার মাঠে সেদিন শিবদাসের যে ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলুম, তার তুলনা পাই নি অদ্যাবধি। অবশ্য তার পরে তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত হবার ও আলাপ করবার সুযোগ পেয়েছিলুম বটে, কিন্তু ক্রীড়কের বিশেষত্ব ক্রীড়ানৈপুণ্যে, তাই তাঁর মৌখিক ভাষা লিপিবদ্ধ না করলেও ক্ষতি নেই।