প্রশ্ন

 শ্মাশান হতে বাপ ফিরে এল।

 তখন সাত বছরের ছেলেটি—গা খোলা, গলায় সোনার তাবিজ—একলা গলির উপরকার জান্‌লার ধারে।

 কী ভাবচে তা সে আপ্‌নি জানেনা।

 সকালের রৌদ্র সাম্‌নের বাড়ির নীম গাছটির আগডালে দেখা দিয়েছে;

 কাঁচা-আমওয়ালা গলির মধ্যে এসে হাঁক দিয়ে দিয়ে ফিরে গেল।

 বাবা এসে খোকাকে কোলে নিলে; খোকা জিজ্ঞাসা করলে, “মা কোথায়?”

 বাবা উপরের দিকে মাথা তুলে বল্লে, “স্বর্গে।”

 সে রাত্রে শোকে শ্রান্ত বাপ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ক্ষণে ক্ষণে গুমরে উঠ্‌চে।

 দুয়ারে লণ্ঠনের মিট্‌‍মিটে আলো, দেয়ালের গায়ে একজোড়া টিক্‌টিকি।

 সাম্‌নে খোলা ছাদ, কখন্‌ খোকা সেইখানে এসে দাঁড়াল।

 চারিদিকে আলো-নেবানো বাড়িগুলো যেন দৈত্যপুরীর পাহারা-ওয়ালা, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমুচ্চে।

 উলঙ্গগায়ে খোকা আকাশের দিকে তাকিয়ে।

 তার দিশাহারা মন কাকে জিজ্ঞাসা করচে, “কোথায় স্বর্গের রাস্তা?”

 আকাশে তার কোনো সাড়া নেই;

 কেবল তারায় তারায় বোবা অন্ধকারের চোখের জল।