লেফ্টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস/নাথেরয়ের যুদ্ধ
১৮৯০ খৃষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রেজিলপ্রদেশে রাষ্ট্রবিপ্লব উপস্থিত হয়। যদিও এ প্রদেশ ষড়যন্ত্র, গৃহবিবাদ ও কলহের আগায়, তখচ এরূপ বিপ্লব এ অঞ্চলে কখনও হয় নাই। সমস্ত প্রদেশ আলোড়িত হইয়া উঠিল,—অধিবাসিগণ বিব্রত হইয়া পড়িল। দেশের সমুদয় রণপোতে বিদ্রোহ পতাকা উড্ডীয়মান হইল। বিশখানি বৃহৎ যুদ্ধজাহাজ আসিয়া রাজধানীয় উপর গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। ব্রেজিলের স্থল সৈন্য অপেক্ষা রণপোতের সেনানীগণ অধিকতর শিক্ষিত ও দক্ষ ছিল, কাজেই প্রথমত: তাহারাই পতি পদে জয়ী হইতে লাগিল,—সহরে হুলস্থূল পড়িয়া গেল। অধিবাসিগণ চারিদিকে পলাইতে আরম্ভ করিল। আইন কানুন, শান্তি সমস্তই একেবারে লোপ পাইল। চারিদিকে অরাজকতা বিস্তারিত হইল।
যাহাহউক কোন ক্রমে দূর্গ সকল যুদ্ধপযোগী করিয়া বহুসংখ্য লোককে সখের সৈনিকরূপে নিযুক্ত করা হইল। বিদ্রোহী রণপোতের সৈনিকগণ যাহাতে নগয় অধিকার করিতে না পারে তজ্জন্য সর্ব্বোতভাবে আয়োজন করা হইল। যুদ্ধপোত হইতে অজস্র গোলাবৃষ্টি হইতে লাগিল, স্থলস্থ দুর্গবাসিগণও নিশ্চিন্ত নীরব ছিল না। প্রত্যেক দুর্গের প্রত্যেক কামান অনর্গল অগ্নি উদগীরণ করিতে লাগিল। একদিকে রণপোতের বজ্রনাদ গোলা নিচর নগরে পতিত হইয়া গৃহ অট্টালিকাদি চূর্ণ বিচূর্ণ করিতে লাগিল,—অন্যদিকে দুর্গস্থ গোলা রাশিও সমুদ্রকে আলোড়িত করিয়া তুলিল। এইরূপে কয়েক দিন মহাসমর চলিতে লাগিল।
সুরেশও এ যুদ্ধে সর্ব্বদা উপস্থিত। তাহার উপর একদল সেনা পরিচালনা করিবার ভার ছিল। তিনি সেনাপতির অধীনে থাকিয়া অসীম সাহসে ও বিশেষ দক্ষতা সহকারে যুদ্ধ পরিচালনা করিতেছিলেন। বোধ হয়, ব্রেজিল সেনানীগণমধ্যে সুরেশের সমকক্ষ আর কেহই ছিলেন না।—প্রতি মুহুর্তে ও প্রতি দিবসেই এইরূপে ক্রমান্বয়ে গোলাবৃষ্টি হইতে লাগিল। রণপোতের সৈনিকগণ ভাবিয়াছিল যেন মূল সৈনিকগণ কোনক্রমেই যুদ্ধে স্থির থাকিতে পারিবে না। এক্ষণে ক্রমেই বুঝিল যে তাহারা যাহা ভাবিয়াছিল তাহা নহে। ব্রেজিল সৈনিক মহোৎসাহে ও বিশেষ দক্ষতা ও সাহসসহকারে যুদ্ধ করিতে লাগিল। বিদ্রোহ জাহাজ হইতে প্রত্যহই নগর আক্রমণের চেষ্টা হইতেছিল, কিন্তু প্রত্যহই তাহারা অকৃতকার্য্য হইয়া জাহাজে ফিরিতে লাগিল।—তথাপি সহরের উপর গোলাৃষ্টি কোনক্রমেই থামিল না, উভয় পক্ষেই অগ্নিক্রীড়া চলিতে লাগিল।
কোনও রূপে নগর অধিকারে অকৃতকার্য হইয়া রণপোতস্থ সৈনিকগণ নগর পরিত্যাগ করিয়া নগরের নিকটস্থ নাথেরয় নামক নগর পরিত্যাগ করিয়া নগরের নিকটস্থ নাথেরয় নামক সহরতলীস্থ ক্ষুদ্র নগর অধিকারে প্রয়াস পাইল। কিন্তু ব্রেজিলের রাজপুরুষগণ নিদ্রিত ছিলেন না,—তাঁহাৱা সর্ব্বদাই সতর্ক থাকিয়া দেশ রক্ষা করিতে প্রস্তুত ছিলেন।—সেণ্টক্রূস, বাগ্ন, সানসাকো প্রভৃতি নগরের পার্শ্ববর্তী দুর্গসকল ক্রমান্বয়ে গোলাবৃষ্টিতে ধ্বংসমুখে অগ্রসর হইতেছিল,—কিন্তু তবুও তাহারা ভীত হয় নাই। এতদ্ব্যতীত উভয় পক্ষ হইতেই সৈন্যগণ স্থানে স্থানে সম্মুখীন হইয়া যুদ্ধ করিতেছিল, কিন্তু কোন পক্ষই জয়ী বা পরাভূত হয় নাই।—এইরূপে দিনের পর দিন কাটিয়ে ছিল।
অবশেষে রণপোতস্থ সেনাগণ নাথেরায় আক্রমণ করিতে কৃতসঙ্কল্প হইল। প্রথমে ইহার উপর অনর্গল গেলাবৃষ্টি করিয়া পরে একযোগে বহুসংখ্যক সেনা এই ক্ষুদ্র নগর আক্রমণ করিতে প্রেরণ করিল। এই নগর রক্ষার্থে সুরেশ সদলে উপস্থিত ছিলেন। যখন নগরে গোলাবর্ষণ হইতেছিল, তখন তাঁহারা বিশেষ কিছু কৱিতে পারেন নাই,—কেবল যাহাতে তাহাদেয় কামানের গোলা ঠিক জাহাতে গিয়া পড়ে তাহারই চেষ্টা করিতেছিলেন,—অন্য কিছুই করিবার উপায় ছিল না,—কারণ হাতাহাতি সম্মুখ যুদ্ধ না হইলে সুরেশ নিজের সাহস ও নক্ষতা ছুিই দেখাইতে পারিতেছিলেন না,—কিন্তু শীঘ্রই এ সুবিধা ঘটিল।
যখন বিদ্রোহিগণ কাৰিল যে, নাথেৱায় সম্পূর্ণরূপে ভূমিসাৎ হইয়াছে, তখন তাহারা বিজয়োৎফুল্ল হইয়া বহুসংখ্যক সেনানী জাহাজ হইতে তীরে অবতীর্ণ করাইয়া পশ্চাদ্দিক্ হইতে ঐ ক্ষুদ্র নগর আক্রমণ করিতে প্রয়াস পাইল। তখন নাথেরয়র রক্ষর জন্য যাঁহারা নিযুক্ত ছিলেন, তাঁহাদের অবস্থা অতি ভয়ানক হইয়া উঠিল। উভয়দিক্ হইতে আক্রান্ত হইয়া তাঁহারা নিতান্তই বিপর্য্যন্ত হইয়া পড়িলেন।—একে যোর অন্ধকার রাত্রি তাহাতে শত্রু পরিবেষ্টিত, কে শত্রু কে মিত্র তা নির্ণয় করা অসম্ভব। বিদ্রোহী সৈন্যগণ কামান লইয়া ব্রেজিলদেশীয় সৈন্যগণকে বিপন্ন করিয়া তুলিল। তিন ঘণ্টা কালব্যাপী এই রূপ তুমুল সংগ্রাম চলিল। উভয় পক্ষেই শতশত হত ও আহত হইল। বিদ্রোহী সৈন্যগণ ক্ষিপ্তের ন্যায় নাথেরয়ের রক্ষকদিগকে এরূপভাবে আক্রমণ করিল যে, তাহাদিগের প্রাণ রক্ষা করিয়া তথা হইতে অবসৃত হওয়া দুরূহ হইয়া পড়িল। এইরূপে যুদ্ধজয়ের আশার সম্পূর্ণ হতাশ হইয়া প্রধান সেনাপতি নিজের সৈনিকদল মধ্য হইতে এক্ষণে হেহ যদি এই অসমসাহসিক কার্য্য করিতে প্রস্তুত থাকেন তাহার জন্য অহ্বান করিলেন। বিদ্রোহীগণ নগরের এক দিক অধিকার করিয়াছিল, তাহাদিগকে তথা হইতে দূরীভূত করিতে না পারিলে নগর রক্ষার আর কোন আশাই নাই। অথচ সেই কার্য্য সুসম্পন্ন করিবার জন্য অধিক সংখ্যক সেনা প্রেরণ করিবার উপায়ও তাঁহার ছিল না। কেবল মাত্র ৫০ জন সৈন্য লইয়া কোন সেনানায়ক এই দুঃসাহসিককার্য্য করিতে সক্ষম কি না ইহাই তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন; সর্ব্বাগ্রে সুৱেশ অতি আনন্দের সহিত এই কার্য্য করিতে প্রস্তুত বলিয়া জ্ঞাপন করিলেন; এবং সঙ্গে কোবল মাত্র ৫০ জন সৈনিক লইয়া শত্রুদিগকে দূরীভূত করিতে অগ্রসর হইলেন। ঘোর অন্ধকার রাত্রি, চন্দ্রমা ক্রমে মলিন হইয়া আসিতেছেন, এই সময়ে ঐ ৫০ জন সাহসী বীর লইয়া সুরেশ ভগ্নবশেষ নাথেরয় নগর হইতে বহির্গত হইয়া যে স্থানে বিদ্রোহী সেনাগণ অবস্থিত ছিল, সেই দিকে বিপুল বিক্রমে আক্রমণ করিলেন। অন্ধকারে শত্রুপক্ষীর শত্রুগণ তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল “তোমরা কে?” সুরেশ বীরদর্পে উত্তয় দিলেন, “আমরা ব্রেজিল দেশীয় সাধারণ তন্ত্রের বীরসেনানী।” “অস্ত্র পরিত্যাগ কর অথবা মৃত্যুমুখে পতিত হও,” এই বলিয়া বিদ্রোহী সেনানীগণ গর্জ্জন করিয়া উঠিল। সুরেশ তখন সদর্পে উত্তর করিলেন, “সাধারণ তন্ত্রের বীরসেনানী অস্ত্র পরিত্যাগ কাহাকে বলে তাহা জানে না” এবং নিজের সৈন্যগণের সম্মুখীন হইয়া আপন মন্তকস্থ উষ্ণীষ ঘুরাইতে ঘুরাইতে তাহাদিগকে উৎসাহিত করিয়া ক্ষিপ্ত সিংহের নায় শত্রুগণকে বিপুল বিক্রমে আক্রমণ করিলেন। কিন্তু তাহারা এরূপ ভীষণ ভাবে গুলি চালাইতে লাগিল, সুরেশের সৈন্যগণ সেই আক্রমণের বিপক্ষে আর বুঝি তিষ্ঠিতে পারে না। তাহার আর অগ্রসর হইতে সাহসী হইল না, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া দাঁড়াইয়া ছিল, এবং প্রায় পশ্চাৎপদ হইবার উপক্রম করিল, তখন সুরেশ রোষকষায়িতনয়নে নিজ সৈনিকদিগের প্রতি তীব্র দৃষ্টিপাত করিয়া যুদ্ধের সেই মহাঘোর কলরষের উপর অভ্রভেদী স্বরে বলিয়া উঠিলেন, “সঙ্গিগণ, শত্রুগণ নিকটে অগ্নি উদিগরণ করিতেছে, বেজিলের সাহসী সন্তানগণ মৃত্যুভয়ে কখন ভীত নহে, এবং তোমরাও দেখিযে যে, পবিত্রভূমি হিন্দু স্থানের সন্তান কেমন করিয়া এই সকল কামান অচিরাৎ অধিকার করিয়া লইবে; প্রস্তুত হও, অনুসরণ কর।”
সুরেশ উচ্চৈঃস্বরে অনুচরবর্গকে কহিলেন, ‘আমায় অনুসরণ কর।” এবং স্বয়ং শত্রুদল মধ্যে ভীমবেগে প্রবেশ করিলেন। এক্ষণে সুরেশ আর একাকী নহেন, সহচরবর্গও সঙ্গে সঙ্গে এরূপ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া তাঁহার অনুসরণ করিল যে, বিদ্রোহি গণ সেই আক্রমণবেগ সহ্য করিতে পারিল না। এই দুর্ব্বার আক্রমণে সেই চিরস্মরণীয় ব্যালাক্লাভার ন্যায় ভীষণ ও ঘোরতর ব্যাপার হইয়াছিল। শত্রুগণ তখন রণে ভঙ্গ দিল, কিন্তু সুরেশ ও তাঁহার অনুচর সৈন্যদল অমিততেজে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। তাঁহারা যে কেবল শত্রুদিগকে ধৃত করিয়া ক্ষান্ত হইয়াছিলেন তাহা নহে; গোলন্দাজদিগকে স্ব স্ব স্থানেতেই বর্ষা ও ছোয়ার আঘাতে বিনাশ করিলেন। হত্যাকাণ্ডও অতি ভীষণ হইয়াছিল সন্দেহ নাই, কিন্তু সেই যুদ্ধকাণ্ডেই সাধারণতন্ত্রীয় সেনাদল জয়লাভ করিল। স্বদেশ হইতে সহস্র সহস্র যোজন দূরে থাকিয়া বিজাতীয়ের মধ্যে অবস্থান করিয়া, বিদেশীয় রাজ্যের সেনানায়ক হইয়া সুরেশচন্দ্র যে ভীষণ যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছিলেন, এমন ভারতবাসী কে আছে যে, তাহাতে আনন্দিত না হইবে এবং গৌরবান্বিত হইয়া পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ প্রদান না করিবে? সুরেশ যে গৌরবে গৌরবান্বিত হইয়াছেন, তাহাতে যে সমগ্র বাঙ্গালী জাতির গৌরব বর্দ্ধিত হইয়াছে, আহাতে সন্দেহ কি?
লেফটেন্যাণ্ট বিশ্বাসের সেই অদ্ভুত আক্রমণেই যে জয়লাভ হয়, তাহা পূর্বেই বলিয়াছি; কিন্তু সমস্ত দিন খণ্ডযুদ্ধ ও মারামারি কাটাকাটি চলিয়াছিল এবং তাহাতেও অনেক বিদ্রোহী বন্দী হইয়াছিল।
সমস্ত দিনের সেই ঘোরতর ক্লেশ ও পরিশ্রমের পর স্বায়ংকালে সুরেশ দশজন বন্দীর সহিত শিবরে প্রত্যাগত হইয়া ক্ষণকাল বায়ুসেবনে স্নিগ্ধ হইবার জন্য নিষ্ক্রান্ত হইলেন। এইরূপে একাকী বেড়াইতেছেন ইতিমধ্যে সুন্দর পরিচ্ছদধারিণী এক রমণী তাহার সম্মুখীন হইল। স্ত্রীলোকটী ভদ্রবংশীয়া বলিয়া বোধ হইল। মৃত ব্যক্তিগণ কোথায় পতিত আছে, ইহাই তাঁহার জিজ্ঞাস্য। স্ত্রীলোকটী বোধ হয়, কোন আত্মীয় ব্যক্তির মৃতদেহ অনুসন্ধান করিতেছিল। তাঁহার সৈন্যগণ যে স্থানে ছিল, তিনি রমণীকে আগ্রহের সহিত তাহারই অদূরবর্তী গোয়স্থানে লইয়া গেলেন। সহসা দুই জন বিদ্রোহী নৌসেনা চন্দ্রালোকোদ্দীপ্ত উলঙ্গ কৃপাণ হন্তে তাঁহাকে আক্রমণ করিল। সুরেশ মুহূর্তমধ্যে কোষ হইতে অসি নিষ্কাসিত করিয়া তাহাদিগকে আক্রমণ করিলেন, শত্রুগণ তাঁহার সহিত রণরঙ্গ সামান্য ব্যাপার নহে বুঝিয়া দ্রুত পাদবিক্ষেপে পলায়ন করিল। নিস্তব্ধ রজনীতে সেই জনশূন্য স্থানে তাহাদিগের অনুসরণ করায় বিপদের সম্ভাবনা জানিয়া যখন তিনি প্রত্যাগমন করিতেছিলেন, তখন তাঁহার নাসিকায় সেই স্থানের দুঃসহ দুর্গন্ধে মস্তক বিঘুর্ণিত হইতে লাগিল এবং তজ্জন্য শরীর এতই অবসন্ন হইয়া পড়িল যে, এক পাও চলিতে না পারিয়া অগত্যা নিকটস্থিত কোন প্রস্তরখণ্ডে বসিয়া পড়িলেন। পরে স্বীয় অবস্থা পর্যালোচনাকালে পদভাগে শৈত্য অনুভব করিলেন। সুরেশ নিজের পত্রে লিখিয়াছেন যে, ঐ শৈত্য যেন চরণ হইতে ক্রমশ বুকে উঠিল; পরে ঠিক যেন সেইরূণ শৈত্য কর্ণে অনুভূত হইল, এবং তাহা মুখের উপর দিয়া ক্রমে বুকে আসিল। তাহার পরে তিনি অবশ ও অচৈতন্য হইয়া শত্রু বাদস্যুর কৃপাপাত্র হইয়া পড়িয়া রহিলেন। এইরূপ অবস্থায় তিন দিন অতিবাহিত হইলে তিনি সংজ্ঞালাভ করিলেন।
ইতিমধ্যেই দুই জন অপরিচিত ব্যক্তি তাঁহাকে অর্দ্ধ উলাঙ্গাবস্থায় হাঁসপাতালে লইয়া যায়। তথায় তিনি অষ্টাহকাল এতদাবস্থায় ছিলেন এবং স্থানীয় ডাক্তায়ও তাঁহাকে চিনিতে পারেন নাই। সংজ্ঞালাত করিয়া স্বস্থানে যাইবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলে উহাকে যথাস্থানে লইয়া যাওয়া হইল। এদিকে কয়েক দিন অদৃশ্য হওয়াতে তাঁহার বন্ধুবর্গ মনে করিয়াছিল যে, হয়ত কোন দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছেন, এবং অনেকে তাহার পত্নীকে শোক প্রশমনের সহানুভূতি পত্র লিখিয়াছিলেন। কয়েক দিবস পরে আবার যখন তিনি দেখা দিলেন, তখন আত্মীয় বন্ধু বান্ধব ও পরিবার মধ্যে আনন্দের আর সীমা রহিল না।