বুড়ি

এক যে ছিল চাঁদের কোণায়
চরকা-কাটা বুড়ি
পুরাণে তার বয়স লেখে
সাতশো হাজার কুড়ি।
সাদা সুতোয় জাল বোনে সে,
হয় না বুনোন সারা—
পণ ছিল তার ধরবে জালে
লক্ষ কোটি তারা।

হেনকালে কখন আঁখি
পড়ল ঘুমে ঢুলে,
স্বপনে তার বয়সখানা
বেবাক গেল ভুলে।
ঘুমের পথে পথ হারিয়ে
মায়ের কোলে এসে
পূর্ণ চাঁদের হাসিখানি
ছড়িয়ে দিল হেসে।

সন্ধেবেলায় আকাশ চেয়ে
কী পড়ে তার মনে!
চাঁদকে করে ডাকাডাকি,
চাঁদ হাসে আর শোনে।
যে পথ দিয়ে এসেছিল
স্বপন-সাগর-তীরে
দু হাত তুলে সে পথ দিয়ে
চায় সে যেতে ফিরে।

হেনকালে মায়ের মুখে
যেমনি আঁখি তোলে
চাঁদে ফেরার পথখানি যে
তক্‌খনি সে ভোলে।
কেউ জানে না কোথায় বাসা,
এল কী পথ বেয়ে—
কেউ জানে না এই মেয়ে সেই
আদ্যিকালের মেয়ে।

বয়সখানার খ্যাতি তবু
রইল জগৎ জুড়ি—
পাড়ার লোকে যে দেখে সেই
ডাকে ‘বুড়ি বুড়ি’।

সব চেয়ে যে পুরানো সে
কোন্ মন্ত্রের বলে
সব চেয়ে আজ নতুন হয়ে
নামল ধরাতলে!


১৫ ভাদ্র ১৩২৮