একাধিক লেখক
মুহম্মদ মনসুর উদ্দিন সম্পাদিত
(পৃ. ১২৬-১২৮)
◄  ৯১
৯৩  ►

৯২

রাধার বারোমাসী

জৈষ্ঠি না আষাঢ় মাসে ও রাধে নদী উজায় মাছ,
ওরে রাধা বায়রে জল ভরিতে কানাই লাগল পাছ।
বাঁশীটি খুয়ে কানাই নামে হাঁটু জলে
নেতের অঞ্চল দিয়া রাধা বাঁশী চুরি করে।

বাঁশীটি হারায়ে কানাই ভাবে মনে মন
এমন সুরে বাঁশী নিল কোন জন।
বাশীটি হারায়ে কানাই যায়রে গোয়াল পাড়া
ঘরে ঘরে জিজ্ঞাসা করে তোমারা এ বাশী চোরা।

* * * *

“কেমন তোমার মাতাপিতা কেমন তোমার হিয়া।

একেলা পাঠাইছে ঘাটে কলসী কাঁখে দিয়া॥”
“ভাল আমার মাতাপিতা ভাল আমার হিয়া,
একেল পাঠাইছে ঘাটে বুকে পাষাণ দিয়া।”
“কেমন তোমার মাতাপিতা কেমন তোমার হিয়া,
এত বড় হইছো কানাই না করিছ বিয়া।”
“ভাল আমার মাতা পিতা ভাল আমার হিয়া,
তোমার মত সুন্দর পেলে তয়সেন করব বিয়া।”
“ও কথাটি ছাড় কানাই, ও কথাটি ছাড়,
গলেতে কলসী বেধে জলে ডুবে মর।”
“কোথায় পাব এনা কলসী কোথায় পাব দড়ি
তুমি হও যমুনার জল আমি ডুবে মরি।”

* * * *

রাত তুই যারে পোহায়ে
ওরে পরাণ বিদরে আমার প্রাণনাথের লাগিয়া।
বেলা গেল সন্ধ্যা হল গৃহে লাগাও বাতি
রাঁধিয়ে বাড়িয়ে অন্ন জাগব কত রাতি।

রাতের যখন এক প্রহর ডালে ডাকে শুয়া,
ওরে ফুলশয্যা বিছানায় রাণী কাটে চিকন গুয়া।
রাতের যখন দুই পহর ফল ফোটে কেওয়া,
ওরে রাধিকার যৌবন দেখে গুঞ্জরে ভ্রমরা।
রাতের যখন তিন পহর ছুটে সর্ব্ব ঘাম
ছেড়েদে মন্দিরের কেওয়াড় জুড়াব পরাণ।

রাতের যখন চার পহর, যাবে গোয়াল পাড়া,
কাড়ে নেবে হস্তের বাঁশী ছিড়বে গলার মালা।
এ রাত প্রভাত হলরে পূবে উদয় ভানু,
রাধিকার অঞ্চল ধরে বিদায় মাগে কানু