হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা/ভ্রাতৃ জায়ার প্রতি শ্বশ্রূজাগণের ব্যবহার
এই কুলবধূগণের প্রতি শ্বশ্রূগণ যাদৃশ ব্যবহার করিয়া থাকেন, তাঁহাদিগের তনয়াগণ আবার ততােধিক, ইহারা ননদিনী হইয়া প্রায় সপত্নীর ন্যায় ব্যবহার করে। ইহারা ভ্রাতৃজায়াগণের বিরুদ্ধে মাতা ভ্রাতাদির সমীপে দিবা নিশি কেবল মিথ্যাভিযােগ উত্থাপন করিয়া বিষম ব্যাপার উপস্থিত করে; এবং তাহাদিগকে অপদস্থ করিবার মানসে অনুক্ষণ কেবল ছিদ্রান্বেষণ করে, ও তাহাদিগের সুখ সমৃদ্ধি অবলােকন করিয়া দিন যামিনী অতি প্রচও দ্বেষানলে দগ্ধ হইতে থাকে। মাতাগণও পরম স্নেহাস্পদ তনয়াগণের এতাদৃশ মনােবেদনা দর্শনে অসমর্থ হইয়া তাহাদিগের সেই অসহনীয় যন্ত্রণা দূর করিবার নিমিত্ত সাধ্যানুসারে উপায়ানুসন্ধান করিতে রত হন। সুতরাং এবম্প্রকার ঘটনা প্রযুক্ত কোন কোন স্থলে মাতা পুত্রেও বিচ্ছেদ ঘটিয়া থাকে। হায়! কি অজ্ঞানতার কার্য্য যে স্বামি স্বসৃগণ ভ্রাতৃ জায়াগণের সহিত এতাদৃশ কুব্যবহারে রত হয়, তাহারা কি একবার ভ্রমেও ভাবে না যে তাহারা যখন শ্বশুরালয়ে গমন করে তখন যদ্যপি তাহাদিগের ননন্দাগণ তাহাদিগের প্রতি ঐ রূপ ব্যবহার করে, এবং তাহাদিগের তুল্য সুমধুর বাক্য গুলি তাহাদের প্রতি প্রয়ােগ করে, তবে তাহারা কি ঐ মধুর ভাষিণী ননদিনীগণের মুখ মণ্ডল মধু দ্বারা সিক্ত করিতে ইচ্ছা করে। অতএব সকলে আত্ম পর বিবেচনা করিয়া কার্য্য করিবেন, এবং সেই কার্য্য দ্বারা পরস্পর সৌভাগ্য শালিনী হইয়া পরম সুখে সংসার যাত্রা নির্ব্বাহ করিতে সক্ষম হইবেন, ও তাঁহাদিগের যশঃ সৌরভে দিঙ্মণ্ডল আমোদিত হইবে।