১৯০৫ সালে বাংলা/কাব্য বিশারদের দুর্গতি
কাব্যবিশারদের দুৰ্গতি।[১]
বাবু ললিত মোহন ঘোষালের চীৎকারে ছাত্রদিগের নিগ্রহ হইতেছে শুনিয়া কাব্যবিশারদ একদিকে অগ্রসর হইয়া কয়েকটী যুবককে তাহাদের হস্ত হইতে নিস্কৃতি দান করেন। তাঁহার উপরে লগুড় চালিত হইয়াছিল; কিন্তু আঘাতের মাত্রা কলিকাতায় ডাক্তারি পরীক্ষার পূর্ব্বে সম্যকরূপে বুঝিতে পারা যায় নাই। একজন হিন্দুস্থানী সুবাদার বলিয়া উঠিল “মারো মাৎ, ব্রাহ্মণ হ্যায়”। তাহাতেই সেযাত্রা তাঁহার নিস্কৃতি লাভ ঘটিয়াছে।
আরও অত্যাচার।
শ্রীহট্ট সুনামগঞ্জের বাবু ব্রজেন্দ্রলাল গাঙ্গুলী ফটক হইতে বাহির হইবামাত্র পুলিসের সুবাদারের হুকুমে প্রহৃত হইয়া ভূতল- শায়ী হইলেন। তাঁহার মস্তক ফটিয়া গেল, হাত ভাঙ্গিয়া গেল। কৃষ্ণবাবু কিঞ্চিৎ দূর হইতে তাঁহার এই অবস্থা দেখিয়া অগ্রসর হইলেন এবং সুবাদারকে এক ধাক্কা দিয়া দূরে সরাইয়া দিলেন। যে সকল পুলিশ প্রহার করিতেছিল, কৃষ্ণ বাবুর কথায় তাহারা সরিয়া গেল। তখন কৃষ্ণ বাবু মিঃ কেম্পের নিকট গমন করিয়া তাঁহার হাত ধরিয়া টানিয়া যেখানে ব্রজেন্দ্রলাল পড়িয়াছিলেন, সেইখানে লইয়া গেলেন। কৃষ্ণ বাবু কেম্পকে বলেন, তোমার পুলিশ গুণ্ডার ন্যায় ব্যবহার করিতেছে। তাহাদিগকে এখনই সরিয়া যাইতে বল। নতুবা আজ মহা বিপদ হইবে।” কৃষ্ণবাবু যখন কেম্পকে টানিয়া লইয়া গিয়া ব্রজেন্দ্রলালকে দেখাইলেন, তখন চারিদিকে “বন্দে মাতরম্” ধ্বনি হইতে লাগিল।
- ↑ এ অংশ প্রথমে হিতবাদী ও বেঙ্গলীতে অপ্রকাশিত রাখা হইয়াছিল, সুতরাং বাহির হয় নাই। পরে “টেলিগ্রাফ, বঙ্গবাসী ও অমৃতবাজার পত্রিকাদিতে প্রকাশের শেষে হিতবাদী প্রভৃতিতেও বাহির হইয়াছে।