আনন্দমঠ (১৮৮৩)/প্রথম খণ্ড/পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ
পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ।
সে রাত্রি শান্তি মঠে থাকিবার অনুমতি পাইয়াছিলেন। অতএব ঘর খুঁজিতে লাগিলেন। অনেক ঘর খালি পড়িয়া আছে। গোবর্দ্ধন নামে এক জন পরিচারক,—সেও ক্ষুদ্র দরের সন্তান—প্রদীপ হাতে করিয়া ঘর দেখাইয়া বেড়াইতে লাগিল। কোনটাই শান্তির পছন্দ হইল না। হতাশ হইয়া গোবর্দ্ধন ফিরিয়া সত্যানন্দের কাছে শান্তিকে লইয়া চলিল। শান্তি বলিল।
“ভাই সন্তান, এই দিকে যে কয়টা ঘর ছিল, এতো দেখা হইল না?”
গোবর্দ্ধন বলিল, “ও সব খুব ভাল ঘর বটে, কিন্তু ও সকলে লোক আছে।”
শান্তি। কারা আছে?
গোব। বড় বড় সেনাপতি আছে।
শান্তি। বড় বড় সেনাপতি কে?
গোব। ভবানন্দ, জীবানন্দ, ধীরানন্দ, জ্ঞানানন্দ। আনন্দমঠ আনন্দময়।
শান্তি। ঘর গুলো দেখি চল না।
গোবর্দ্ধন শান্তিকে প্রথমে ধীরানন্দের ঘরে লইয়া গেল। ধীরানন্দ মহাভারতের দ্রোণপর্ব্ব পড়িতেছিলেন। অভিমন্যু কি প্রকার সপ্তরথীর সঙ্গে যুদ্ধ করিয়াছিল, তাহাতেই মন নিবিষ্ট—তিনি কথা কহিলেন না। শান্তি সেখান হইতে বিনা বাক্যব্যয়ে চলিয়া গেল।
শান্তি পরে ভবানদের ঘরে প্রবেশ করিল। ভবানন্দ তখন উর্দ্ধদৃষ্টি হইয়া, একখানা মুখ ভাবিতেছিলেন। কাহার মুখ, তাহা জানি না, কিন্তু মুখখানা বড় সুন্দর, কৃষ্ণ কুঞ্চিত সুগন্ধি অলকারাশি আকর্ণপ্রসারি ভ্রূযুগের উপর পড়িয়া আছে। মধ্যে অনিন্দ্য ত্রিকোণ ললাটদেশে মৃত্যুর করাল কাল ছায়া গাহমান হইয়াছে। যেন সেখানে মৃত্যু ও মৃত্যুঞ্জয় দ্বন্দ্ব করিতেছে। নয়ন মুদিত, ভ্রূযুগ স্থির, ওষ্ঠ নীল, গণ্ড পাণ্ডুর, নাসা শীতল, বক্ষ উন্নত, বায়ু বসন বিক্ষিপ্ত করিতেছে। তার পর যেমন করিয়া, শরন্মেঘ বিলুপ্ত চন্দ্রমা ক্রমে ক্রমে মেঘদল উদ্ভাসিত করিয়া, আপনার সৌন্দর্য্য বিকাশিত করে, যেমন করিয়া প্রভাতসূর্য তরঙ্গাকৃত মেঘমালাকে ক্রমে ক্রমে সুবর্ণীকৃত করিয়া আপনি প্রদীপ্ত হয়, দিগ্মণ্ডল আলোকিত করে; স্থল জল কীট পতঙ্গ প্রফুল্ল করে, তেমনি সেই শবদেহে জীবনের শোভাসঞ্চার হইতেছিল। আহা কি শোভা ভবানন্দ তাই ভাবিতেছিল, সেও কথা কহিল না। কল্যাণীর রূপে তাহার হৃদয় কাতর হইয়াছিল, শান্তির রূপের উপর সে দৃষ্টিপাত করিল না।
শান্তি তখন গৃহান্তরে গেল। জিজ্ঞাসা করিল, “এটা কার ঘর?”
গোবর্দ্ধন বলিল “জীবানন্দ ঠাকুরের।”
শান্তি। সে আরার কে? কৈ কেউ তো এখানে নেই।
গোব। কোথায় গিয়াছেন, এখনি আসিবেন।
শান্তি। এই ঘরটি সকলের ভাল।
গোব। তা এ ঘরটা ত হবে না।
শান্তি। কেন?
গোব। জীবানন্দ ঠাকুর এখানে থাকেন।
শান্তি। তিনি না হয় আর একটা ঘর খুঁজে নিন্।
গোব। তাকি হয়? যিনি এ ঘরে আছেন, তিনি কর্ত্তা বল্লেই হয়, যা করেন তাই হয়।
শান্তি। আচ্ছা তুমি যাও, আমি স্থান না পাই, গাছ তলায় থাকিব।
এই বলিয়া গোবর্দ্ধনকে বিদায় দিয়া শান্তি সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া জীবানন্দের অধিকৃত কষ্ণাজিন বিস্তারণ পূর্ব্বক, তদুপরি শয়ন করিল।
কিছুক্ষণ পরে জীবানন্দঠাকুর প্রত্যাগত হইলেন। হরিণ চর্ম্মের উপর একটা মানুষ শুইয়া আছে, ক্ষীণ প্রদীপালোকে অতটা ঠাওর হইল না। জীবানন্দ তাহারই উপর উপবেশন করিতে গেলেন। উপবেশন করিতে গিয়া শান্তির হাঁটুর উপর বসিলেন। হাঁটু অকস্মাৎ উচু হইয়া জীবানন্দকে ফেলিয়া দিল।
জীবানন্দের একটু লাগিল। জীবানন্দ উঠিয়া একটু ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, “কে হে তুমি বেল্লিক?” শান্তি। আমি বেল্লিক না, তুমি বেল্লিক। মানুষের হাঁটুর উপর কি বসার জায়গা?
জীব। তা কে জানে যে, তুমি আমার ঘরে চুরি করিয়া এসে শুইয়া আছ?
শান্তি। তোমার ঘর কিসের?
জীব। কার ঘর।
শান্তি। আমার ঘর।
জীব। মন্দ নয়, কে হে তুমি?
শান্তি। তোমার বোনাই।
জীব। তুমি আমার হও না হও, আমি তোমার বোধ হইতেছে। তোমার গলার সঙ্গে আমার ব্রাহ্মণীর গলার একটু সাদৃশ্য আছে।
শান্তি। বহুদিন তোমার ব্রাহ্মণীর সঙ্গে আমার একাত্মভাব ছিল, সেই জন্য বোধ হয় গলার আওয়াজ একরকম হয়ে গেছে।
জীব। তোর যে বড় জোর জোর কথা দেখ্তে পাই। মঠের ভিতর না হতো তো এক ঘুষোয় দাঁতগুলো ফেলে দিতুম।
শান্তি। দাঁত ভেঙ্গেছে অনেক সাঙাত। কাল রাজনগরে কটা দাঁত ভেঙ্গেছিলে, হিসাব দাও দেখি। বড়াইয়ে কাজ নেই, আমি এখানে ঘুমুই। তোমরা সন্তানের দল, লেজ গুটিয়ে, বামুনঠাকুরুণদের আঁচলের ভিতর নুকোওগে।
এখন জীবানন্দ ঠাকুর কিছু ফাঁপরে পড়িলেন। মঠের ভিতর সন্তানে সন্তানে মারামারি করা সত্যানন্দের নিষেধ। কিন্তু এরও বড় মুখের দৌড়, দুঘা না দিলেও নয়। রাগে সর্ব্বশরীর জ্বলিতে লাগিল। অথচ গলার আওয়াজই মধ্যে মধ্যে বড় মিটে লাগিতেছে, যেন কি মনে হয়, যেন কে স্বর্গের দ্বার খুলিয়া ডাকিতেছে, আর বলিতেছে এলেই ঠ্যাঙে লাঠি মারবো। জীবানন্দের উঠিতেও ইচ্ছা করিতেছিল না, বসিতেও পারেন না। ফাঁপরে পড়িয়া বলিলেন,
“মহাশয় এ ঘর আমার, চিরকাল ভোগ দখল করিতেছি, আপনি বাহিরে যান।”
শান্তি। এ ঘর আমার, অর্দ্ধ দণ্ড ভোগ দখল করিতেছি, আপনি বাহিরে যান।
জীব। মঠের ভিতর মারামারি করিতে নাই বলিয়াই লাথি মারিয়া তোমায় নরককুণ্ডে ফেলিয়া দিই নাই, কিন্তু এখনই মহারাজের অনুমতি আনিয়া তোমায় তাড়াইয়া দিতে পারি।
শান্তি। আমি মহারাজের অনুমতি আনিয়াই তোমায় তাড়াইয়া দিতেছি। তুমি দূর হও।
জীব। তাহা হইলে এ ঘর তোমার। মহারাজকে কেবল জিজ্ঞাসা করিয়া আসিতেছি; আগে বল তোমার নাম কি?
শান্তি। আমার নাম নবীনানন্দ গোস্বামী, তোমার নাম কি?
জীব। আমার নাম জীবানন্দ গোস্বামী।
শান্তি। তুমিই জীবানন্দ গোস্বামী! তাই এমন?
জীব। তাই কেমন!
শান্তি। লোকে বলে, আমি কি করবো।
জীব। লোকে কি বলে?
শান্তি। তা আমার বল্তে ভয়ই কি? লোকে বলে জীবানন্দ ঠাকুর বড় গণ্ডমূর্খ।
জীব। গণ্ডমূর্খ, আর কি বলে?
শান্তি। মোটা বুদ্ধি।
জীব। আর কি বলে?
শান্তি। যুদ্ধে কাপুরুষ।
জীবানন্দের সর্ব্ব শরীর রাগে গর গর করিতে লাগিল, বলিলেন, “আর কিছু আছে?”
শান্তি। আছে, অনেক কথা—নিমাই ব’লে আপনার একটি ভগিনী আছে।
জীব। তুমি বড় বেল্লিক হে—
শান্তি। তুমি ভল্লুক হে।
জীব। তুমি উল্লুক, অর্ব্বাচীন, নাস্তিক, বিধর্ম্মী, ভণ্ড, পামর!
শান্তি। তুমি—ষলায়বায়াবোচীচঃ—তুমি—স্তু শ্চুভি শ্চুশাহ—তুমি ষ্টভিষ্ট্বষ্যদান্তটোঃ।
জীব। বের শালা এখান থেকে—তোর দাড়ি ছিঁড়ির।
শান্তি তখন গণিল প্রমাদ! দাড়ি ধরিলেই মুস্কিল। পরচুলো খসিয়া পড়িবে। শান্তি সহসা রণে ভঙ্গ দিয়া পলায়নে তৎপর হইল।
জীবানন্দ পিছু পিছু ছুটিল। মনে মনে ইচ্ছা, ভণ্ডটা মঠের বাহিরে গেলে দুই ঘা দিব। শান্তি যাই হউক স্ত্রী-লোক—দৌড়ধাপে অনভ্যস্ত। জীবানন্দ এ সকল কাজে সুশিক্ষিত। শীঘ্র গিয়া শান্তিকে ধরিল। এবং তাহাকে ভূতলে ফেলিয়া প্রহার করিবে বলিয়া তাহাকে কায়দা করিয়া জাপটাইয়া ধরিতে গেল। স্পর্শ মাত্রেই জীবানন্দ চমকিয়া শান্তিকে ছাড়িয়া দিল। কিন্তু শান্তি বাহু দ্বারা জীবানন্দের গলা জড়াইয়া ধরিল।
জীবানন্দ বলিল, “এ কি! তুমি যে স্ত্রীলোক। ছাড়! ছাড়! ছাড়!” কিন্তু শান্তি সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া চীৎকার করিয়া ডাকিতে লাগিল “ওগো, তোমরা দেখ গো! একজন গোঁসাই জোর করিয়া স্ত্রীলোকের সতীত্ব নষ্ট করিতেছে।”
জীবানন্দ তাহার মুখে হাত দিয়া বলিল, “সর্ব্বনাশ! সর্ব্বনাশ! অমন কথা মুখে এনোনা। ছাড়! ছাড়! আমার ঘাট হইয়াছে, ছাড়।”
শান্তি ছাড়ে না; আরও চেঁচায়, শান্তির কাছে জোর করিয়া ছাড়ানও সহজ নয়। জীবানন্দ যোড়হাত করিয়া বলিতে লাগিল “তোমার পায়ে পড়ি, ছাড়!” শেষ স্ত্রীলোকের আর্ত্তনাদে অরণ্য পরিপূরিত হইয়া গেল।
এ দিকে মঠের গোঁসাইরা স্ত্রীলোকের প্রতি অত্যাচার হইতেছে শুনিয়া, অনেকে ধুনুচির ভিতর প্রদীপ জালিয়া লাঠি সোঁটা লইয়া বাহির হইলেন। দেখিয়া জীবানন্দ থর থর কাঁপিতে লাগিল। শান্তি বলিল, “অত কাপিতেছ কেন? তুমি ত বড় ভীত পুরুষ! আবার লোকে তোমাকে বলে মহাবীর?”
গোঁসাইরা আলো লইয়া নিকটবর্ত্তী হইল দেখিয়া জীবানন্দ সকাতরে বলিলেন, “আমি আতিশয় কাপুরুষ, তুমি আমায় ছাড়, আমি পলাই।”
শান্তি। জোর করিয়া ছাড়াও না।
জীবানন্দ লজ্জায় স্বীকার করিতে পারিলেন না যে তিনি স্ত্রীলোকের জোরে পারিতেছেন না। বলিলেন,
“তুমি বড় পাপিষ্ঠা।”
শান্তি তখন মুচকি হাসিয়া বিলোল কটাক্ষ ক্ষেপণ করিয়া বলিল,
“প্রাণাধিক! আমি তোমার প্রতি অতিশয় আসক্ত। তোমার দাসী হইব বলিয়াই এখানে আসিয়াছি, আমায় গ্রহণ করিবে, স্বীকার কর, ছাড়িয়া দিতেছি।”
জীব। দূর হ পাপিষ্ঠা! দূর হ পাপিষ্ঠা! অমন কথা আমাকে কাণে শুনিতে নাই।
শান্তি। আমি পাপিষ্ঠা, তাতে সন্দেহ নাই; নহিলে স্ত্রীজাতি হইয়া পুরুষের কাছে প্রেম ভিক্ষা চাইতে যাইব কেন—আমার কথাটা রাখিবে? ছাড়িয়া দিতেছি।
জীব। ছি! ছি! ছি! আমি ব্রহ্মচারী—আমাকে এমন কথা বলিতে নাই—তুমি আমার—
শান্তি সভয়ে বলিল “চুপ কর! চুপ কর! চুপ কর! আমি শান্তি।”
এই বলিয়া শান্তি জীবানন্দকে ছাড়িয়া তাঁহার পায়ের ধূলা মাথায় লইল। পরে যোড়হাত করিয়া বলিল, “প্রভু! অপরাধ নিও না। কিন্তু ছি! পুরুষমানুষের ভালবাসার ভাণ্ করাকে ধিক! আমাকে চিনিতেই পারিলে না!”
তখন জীবানন্দের মনে সকল কথা প্রস্ফুট হইল। শান্তি নহিলে এ কার্য্য আর কার? শান্তি নহিলে এ রঙ্গ আর কে জানে? শান্তি নহিলে কার বাহুতে এত বল? তখন আনন্দিত হইয়া, অপ্রতিভ হইয়া জীবানন্দ কি বলিতে যাইতেছিলেন—কিন্তু অবকাশ পাইলেন না, গোঁসাইয়েরা আসিয়া পড়িয়াছিল। ধীরানন্দ আগে আগে। ধীরানন্দ এই সময়ে, জীবানন্দকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “গোলমাল কিসের?”
জীবানন্দ ফাঁপরে পড়িলেন, কি উত্তর দিবেন? শান্তি সেই সময়ে চুপি চুপি তাঁহাকে বলিল,
“কেমন বলিয়া দিই—তুমি আমায় ধরিয়াছিলে?”
এই বলিয়া ঈষৎ হাসিয়া শান্তি ধীরানন্দের কথার উত্তব দিল—বলিল,
“গোলমাল—একটা স্ত্রীলোকে চেঁচাইতেছিল। ‘আমার সতীত্ব নষ্ট করিল! আমার সতীত্ব নষ্ট করিল’ বলিয়া চেঁচাইতেছিল। কিন্তু কই? জীবানন্দঠাকুর এত খুঁজিলেন, আমি এত খুঁজিলাম, দেখিতে পাইলাম না। এই বনটার ভিতর আপনারা একবার দেখুন দেখি—ওদিকে শব্দ শুনিয়াছিলাম।”
গোঁসাইদিগকে শান্তি অরণ্যের নিবিড় অংশ দেখাইয়া দিল। জীবানন্দ শান্তিকে চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করিলেন,
“বৈষ্ণবদিগকে এত দুঃখ দিয়া তোমার কি ফল? ও বনে গেলে কি ওরা ফিরিবে? সাপেই খাক্, কি বাঘেই খাক্।”
শান্তি। যখন বৈষ্ণর স্ত্রীলোকের নাম শুনেছে, তখন একটু কষ্ট না পেলে ফিরিবে না। তা না হয় ফিরাইতেছি।
এই বলিয়া শান্তি গোঁসাইজিদের ডাকিয়া বলিলেন, “আপনারা একটু সতর্ক থাকিবেন। কি জানি ভৌতিক মায়াও হইতে পারে।”
শুনিয়া একজন গোঁসাই বলিল, “তাই সম্ভব। নহিলে স্ত্রীলোক কোথা হইতে আসিবে?”
গোঁসাইয়েরা সকলেই এই মতে মত দিল। ভৌতিক মায়া স্থির করিয়া সকলেই মঠে ফিরিল। জীবানন্দ বলিল “এসো, আমরা এইখানে বসি—এ ব্যাপার টা আমাকে বুঝাইয়া বল—তুমি এখানে কেন—কি প্রকারে আসিলে—এ বেশই বা কেন? এত রঙ্গই বা কোথায় শিখিলে?” শান্তি বলিল “আমি কেন আসিলাম?—তোমার জন্য আসিয়াছি। কি প্রকারে আসিলাম?—হাঁটিয়া। এ বেশ কেন? আমার শক। আর এত রঙ্গ শিখিলাম কোথায়? একটি পুরুষমানুষের কাছে। সব তোমায় ভাঙ্গিয়া বলিব। কিন্তু এখানে বনে বসিব কেন? চল তোমার কুঞ্জে যাই।”
জীব। আমার কুঞ্জ কোথায়?
শান্তি। মঠে।
জীব। সেখানে স্ত্রীলোক যাইতে আসিতে নিষেধ।
শান্তি। আমি কি স্ত্রীলোক?
জীব। আমি মহারাজের নিয়ম লঙ্ঘন করি না।
শান্তি। আমার প্রতি মহারাজের অনুমতি আছে। কুঞ্জেই চল, সব বলিতেছি। বিশেষ ঘরের ভিতর না গেলে আমার দাড়ি খুলিব না। দাড়ি না খুলিলে তুমি এ পোড়র মুখ চিনিতে পারিবে না। ছি! পুরুষ এমন!