তীর্থ-সলিল/বিশ্ববাণীর বারতা এনেছি
বিশ্ববাণীর বারতা এনেছি বঙ্গের সভাতলে,
ভ’রেছি আমার সোনার ফলস নানা তীর্থের জলে;
ওগো তোরা আয় আয়!
নিখিল কবির সঙ্গীত ওঠে বঙ্গের বন ছায়!
স্তব্ধ বিমূঢ় শত শতাব্দ যাহাদের মুখ চায়,—
যা’দের ভাষায় অতীত জগৎ পুনর্জীবন পায়,—
ভা’রা আজি কুতু হলে
বঙ্গবাণীর মন্দিরে আসি’ মিলিয়াছে দলে, দলে!
আমার কণ্ঠে গাহিছে আজিকে জগতের যত কবি!
আমার তুলিতে আঁকিছে তাদের দুঃখ সুখের ছবি।
শত বিচিত্র সুর,
আজি একত্রে বিহরে হরষে অখণ্ড সুমধুর!
আমার কণ্ঠে গাহিছেন ব্যাস, বাল্মিকী, কালিদাস!
দান্তে, হোমার, শেক্ষপীয়ার, কণ্ঠে করিছে বাস!
গেটে, হুগো, বায়রণ,
হেঙজু, হাফেজ, স্যাফো, অবৈয়ার, খুসহাল, টেনিসন্।
ওমর খৈয়াম আসিয়া মিলেছে, এসেছে ভল্টেয়ার;
হায়েন্ এসেছে, শেলি, সাদি, কীটস, বার্ণস্, বেরাঞ্জার।
আরো যে এসেছে কত!
মোদের পদ্মবনে জগতের জুটেছে মধুব্রত!
নানা দেশে যা’রা ছিল গো ছিন্ন, ছিল নানা মত ভাষা,—
নানা কালে যা’রা ছিল বিভিন্ন, না ছিল মিলন আশা,
তা’রা আজি এক ঠাঁই!
আকুল হৃদয়ে করে কোলাকুলি পুলকের সীমা নাই।
প্রেম-যমুনায় মিলেছে অজিকে স্নেহ-গঙ্গার ধারা,
জ্বালা কুণ্ডের এসেছে প্রবাহ টুটিয়া পাষাণ কারা;
চুপে চুপে তা’রি সাথে
ঝরিয়া মিশেছে স্নিগ্ধ শিশির গোপনে তিমির রাতে।
কুম্ভ আমার ভরিরা এনেছি শত তীর্থের জলে,
বঙ্গবাণীর পুণ্যাভিষেক পুন আজি হ’বে ব’লে;
ওগো তোরা আয় আয়,
শতেক ধারায় তীর্থ সলিল উথলি বহিয়া যায়!