বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র/আজাদ হিন্দ ফৌজ
আজাদ হিন্দ ফৌজ
এই সংবাদ তড়িদ্বেগে পূর্ব্ব এশিয়ায় বিস্তৃত হইয়া পড়িল, এবং সদ্যগঠিত সেনা বাহিনীর মধ্যে প্রবল উত্তেজনার সৃষ্টি হইল। অনতিবিলম্বে ক্যাপ্টেন মোহনসিংএর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের গঠন কার্য্য আরম্ভ হইল। মালয়ে যে সকল ভারতীয় সৈন্য জাপানীদের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়াছিল, তাহাদের লইয়াই প্রথম সেনাবাহিনী গঠিত হইল।
৪ঠা জুলাই তারিখের সভায় সুভাষবাবু যে বক্তৃতা দেন তাহাতে জানা যায় যে এই জাতীয় বাহিনীকে চালিত করিবার জন্য তিনি অচিরে Provisional Govt of Free India নামে একটি অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট গঠন করিবেন। সুযোগ হইলে সেই সেনাবাহিনী লইয়া যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইবেন। কর্ম্মবীর সুভাষচন্দ্র সেই স্মরণীয় দিবস (১৯৪৩ সালের ৪ঠা জুলাই) হইতে ১৯৪৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত তিলার্দ্ধ বিশ্রাম করিবার অবসর প্রাপ্ত হন নাই।
পূর্ব্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়গণ নবীন উৎসাহের সহিত এই নবাগত বাঙ্গালীবীরকে তাহাদের নেতা বলিয়া গ্রহণ করিল, এবং অত্যন্ত আবেগভরে তাঁহাকে “নেতাজী” এই আখ্যা প্রদান করিল। ৭ই জুলাই তারিখে সিঙ্গাপুরের মিউনিসিপ্যাল অফিসের সম্মুখস্থ ময়দানে নেতাজী এই জাতীয় বাহিনীর কুচকাওয়াজ দেখিলেন এবং তাহাদের সামরিক অভিবাদন গ্রহণ করিলেন। “দিল্লী চল” এই স্লোগানটিও সৈন্যগণকে শিক্ষা দেওয়া হইল।
৮ই জুলাই তারিখে নেতাজী জলদগম্ভীরস্বরে ঘোষণা করিলেন ভারতের জাতীয়বাহিনীর গঠন কার্য্য শেষ হইয়াছে। সমগ্র জগৎ এ সংবাদে বিস্মিত হইল।
৯ই জুলাই সিঙ্গাপুরের ময়দানে ৫০০০০ সৈন্য সমাবেশ করিয়া নেতাজী ঘোষণা করিলেন ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করিবার জন্য সমস্ত স্বদেশহিতৈষী ব্যক্তিগণের নিকট হইতে সৈন্য অর্থ অথবা আবশ্যকীয় সমারোপকরণ সংগ্রহ করা হইবে।