বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র/সিঙ্গাপুরের অভিভাষণ
সিঙ্গাপুরের অভিভাষণ
কেন স্বদেশ ত্যাগ করিয়া আসিয়াছি।
ভ্রাতা ও ভগিনীগণ!
যে তীব্র উৎসাহের সহিত অভিনন্দন জানাইয়া আপনারা আমাকে অনুপ্রাণিত করিয়াছেন তাহার জন্য আজ সর্ব্বপ্রথম আপনাদের আমি ধন্যবাদ জানাইতেছি। আমার যে বিপুল সংখ্যক ভগ্নী তাঁহাদের দেশাত্মবোধকে বাস্তবরূপ দিবার জন্য অগ্রসর হইয়া আসিয়াছেন, তাঁহারা বিশেষ করিয়া আমার ধন্যবাদার্হ। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিচার করিয়া আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিয়াছে যে, হোনান ও মালয়ে আগামী সংগ্রামে আমার দেশবাসীরাই জয়ী হইবে। একদিন যেস্থান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের পীঠস্থল ছিল, আজ সেই স্থানই ভারতীয় জাতীয়অবাদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হইয়াছে।
অতঃপর দেশত্যাগ করিয়া কেন আমি এই বিপদসঙ্কুল পথে যাত্রা করিলাম তাহা আপনাদের সম্মুখে পরিষ্কাররূপে বলিতে চাই।
আপনারা জানেন ১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তোরণ পার হইয়া উহার পরবর্ত্তী সকল স্বাধীনতা আন্দোলনেই আমি সক্রিয়ভাবে যোগদান করিয়াছি। গত কুড়ি বৎসরের সকল আইন-অমান্য আন্দোলনের সহিত আমার দৃঢ়সংযোগ ছিল। ইহা ব্যতীত, অহিংস অথবা সহিংস সকলপ্রকার গোপন বৈপ্লবিক আন্দোলনের সহিত সংযুক্ত থাকার সন্দেহক্রমে বহুবার আমাকে বিনাবিচারে কারারুদ্ধ করা হইয়াছে। কিছুমাত্র অতিরঞ্জিত না করিয়া বলিতে পারি যে, আমি যেরূপ বহুমুখী অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিতে সক্ষম হইয়াছি, ভারতে অন্য কোন জাতীয়তাবাদী নেতা সেরূপ অভিজ্ঞতার দাবী করিতে পারেন না।
এই অভিজ্ঞতার দ্বারা বিচার করিয়া আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে, ভারতবর্ষের মধ্য হইতে আমরা যত তীব্র আন্দোলনই করিনা কেন, তাহা আমাদের দেশকে বৃটিশ প্রভুত্ব হইতে মুক্ত করিবার পক্ষে যথেষ্ট হইবেনা। যদি কেবলমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যকার সংগ্রামই স্বাধীনতালাভের পক্ষে যথেষ্ট হইত, তাহা হইলে আমি নিশ্চয়ই নির্ব্বোধের ন্যায় বিনা প্রয়োজনে এই বিপদের ঝুঁকি লইতাম না।
আমার ভারত ত্যাগ করিবার একমাত্র উদ্দেশ্য, ভারতবর্ষের মধ্যে যে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলিতেছে বাহির হইতে তাহাকে সাহায্য করা। প্রকৃতপক্ষে বহিঃসাহায্য ব্যতীত কাহারও পক্ষেই ভারতকে স্বাধীন করা সম্ভব নয়। কিন্তু দেশের আভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা সংগ্রামের যে বহিঃসাহায্য অবিলম্বে প্রয়োজন, তাহার পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে একান্ত অল্প। ইহার কারণ এই যে চক্রশক্তির আঘাতে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের দৃঢ় আসন টলায়মান হইয়া পড়িয়াছে। ফলে আমাদের উদ্দেশ্য পূর্ব্বাপেক্ষা অনেক সহজেই সাফল্যমণ্ডিত হইবে।
আমাদের দেশবাসীর যে সাহায্য প্রয়োজন তাহার দুইটি দিক আছে নৈতিক ও কায়িক। প্রথমতঃ—তাহাদের অন্তরে এই বিশ্বাস জন্মাইয়া দিতে হইবে যে, একদিন তাহারা স্বাধীনতা সংগ্রামে জয়লাভ করিবেই। দ্বিতীয়তঃ ভারতের বাহির হইতে তাহাদের সামরিক সাহায্য প্রদান করিতে হইবে। প্রথম উদ্দেশ্য সাধন করিতে হইলে আন্তর্জ্জাতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের সম্ভাব্য ফলকি তাহা বিচার করিতে হইবে। দ্বিতীয় আদর্শ কার্য্যে পরিণত করিতে হইলে প্রথমেই দেখিতে হইবে প্রবাসী ভারতীয়গণ মাতৃভূমিকে কি সাহায্য করিতে পারে এবং যদি প্রয়োজন হয় দেখিতে হইবে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের শত্রুদের নিকট হইতে কোন সাহায্য লাভ করা সম্ভব কিনা। বন্ধুগণ! আমি এখন বলিতে পারি, আমাদের এই দুইটি উদ্দেশ্যই সাধিত হইয়াছে। সুদূরবর্ত্তী মহাদেশ পরিভ্রমণ করিয়া আমি আন্তর্জ্জাতিক পরিস্থিতি অনুধাবন করিতে সক্ষম হইয়াছি এবং বিভিন্ন সমররত শক্তিগুলির অবস্থা উপলব্ধি করিতে পারিয়াছি। ইহার দ্বারা আমি যখন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছিলাম যে ইঙ্গ-আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের পরাজয় নিশ্চিত, তখন আমি সে সংবাদ আমার মাতৃভূমিতে প্রেরণ করিয়াছি। অতঃপর আমি দেখিয়া আনন্দিত হইলাম যে পৃথিবীর সর্ব্বত্র ভারতীয়গণের মধ্যে একতীব্র জাগরণের সাড়া আসিয়াছে এবং তাহারা জাতীয় সংগ্রামের অংশ গ্রহণ করিতে বিশেষ ব্যগ্র। আমি ইহা লক্ষ্য করিয়াও উৎসাহিত হইলাম যে, চক্রশক্তি সত্যই ভারতকে স্বাধীন দেখিবার জন্য ব্যগ্র এবং ভারতীয়গণ আগ্রহ প্রকাশ করিলেই তাহারা তাহাদের শক্তি অনুযায়ী ভারতকে যে কোন সাহায্য প্রদান করিতে প্রস্তুত। প্রবাসী ভারতীয়দের মনোভাব সম্পর্কে আনি বলিতে পারি যে, তাহাদের মধ্যে এরূপ এক ব্যক্তিও নাই যে ভারতের স্বাধীনতা চায় না এবং জাতীয় সংগ্রামে যোগদান করিবার জন্য প্রস্তুত নহে।
আপনাদের নিকট আমার দাবী এই যে, আপনারা আমাকে বিশ্বাস করুন। আমার শত্রুও একথা বলিতে সাহসী হইবে না যে আমি এরূপ কোন কার্য্য করিতে পারি—যাহা আমার দেশের পক্ষে ক্ষতিকর এবং যদি বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট আমাকে ধ্বংশ করিতে না পারে, পৃথিবীতে আর কোন শক্তিই তাহা পারিবে না। আপনারা আমাকে বিশ্বাস করুন—যদি বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আপনারা বহিঃশক্তির সাহায্য চান, আমি বলিতেছি, চক্রশক্তি আপনাদের সাহায্যের জন্য অগ্রসর হইয়া আসিবে। কিন্তু আপনারা সাহায্য চান কিম্বা চাননা, তাহা আপনারাই বিচার করিবেন এবং ইহা বলাই বাহুল্য যে যদি বৈদেশিক সাহায্য ব্যতীতই সাফল্যলাভ করিতে সক্ষম হওয়া সম্ভব হয়, ভারতের পক্ষে তাহাই সর্ব্বাপেক্ষা মঙ্গলকর হইবে।
প্রসঙ্গক্রমে আমি বলিতে চাই যে, সর্ব্বশক্তিশালী বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট যদি পৃথিবীর সর্ব্বত্র, এমনকি পরাধীন ভারতের নিকটও সাহায্য ভিক্ষা করিতে পারে, তাহা হইলে আমরা জটিল পরিস্থিতির প্রয়োজনে বৈদেশিক সাহায্য গ্রহণ করিলে কিছুই অপরাধ করা হইবে না।
শত্রুমিত্র নির্ব্বিশেষে আজ সমগ্র পৃথিবীর সম্মুখে আমাদের এই স্বাধীনতা সংগ্রামের পন্থা ঘোষণা করিবার দিন আসিয়াছে। প্রবাসী ভারতীয়গণ বিশেষ করিয়া পূর্ব্ব এশিয়াবাসী ভারতীয়গণ একটি সংগ্রামশীল বাহিনী গঠন করিতে যাইতেছে। এই বাহিনী ভারতস্থিত বৃটিশ বাহিনীকে আক্রমণ করিবার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী হইবে। আমরা যখন আক্রমণ করিব, তখন ভারতের অভ্যন্তরেও বিপ্লব শুরু হইবে। এই আন্দোলন কেবলমাত্র বেসামরিক জনসাধারণই করিবে না, বৃটিশ ভারতীয় বাহিনীর অন্তর্ভূক্ত সৈনিকগণও বিদ্রোহ করিবে। বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট যখন অভ্যন্তর ও বহির্দ্দেশ উভয়দিক হইতে আক্রান্ত হইবে, তখন ইহা অচল হইয়া পড়িবে এবং ভারতীয় জনগণ সেই সময়ে পুনরায় তাহাদের স্বাধীনতা অর্জ্জন করিবে।
সুতরাং আমার কল্পনা অনুসারে চক্রশক্তি ভারত সম্পর্কে কিরূপ মনোভাব পোষণ করে —সে বিষয়ে আমাদের বিশেষ চিন্তা করিবার প্রয়োজন নাই। যদি কেবলমাত্র বিদেশস্থিত ও স্বদেশস্থিত ভারতীয়গণ তাহাদের কর্ত্তব্য করিয়া যায়, আমি বলিতেছি, তাহা হইলে ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্বের অবসান নিশ্চয়ই ঘটিবে।
সুবিধাবাদীরা মন্তব্য করিতে পারে যে, যদি ৩৮ লক্ষ ভারতবাসী বৃটিশ শক্তিকে বহিস্কৃত করিতে না পারে, তাহা হইলে কেবলমাত্র ২০ লক্ষ প্রবাসী ভারতীয়ের দ্বারা ইহা কিরূপে সম্ভব হইবে? বন্ধুগণ, আয়ারল্যাণ্ডের ইতিহাসের প্রতি আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। বৃটিশের অধীনস্থ ৩০ লক্ষ আয়ারবাসী সামরিক আইনের আওতায় থাকিয়াও কেবলমাত্র পাঁচ হাজার সশস্ত্র সিন্ফিন্ স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্য পাইয়া ১৯২১ সালে বৃটিশ প্রভুত্বের কবল হইতে মুক্তিলাভ করিতে সক্ষম হইয়াছিল। আজ ৩০ লক্ষ ভারতীয় মাতৃভূমিতে এক শক্তিশালী বিপ্লবের সাহায্য পাইয়া কেন বৃটিশ প্রভুত্বের কবল হইতে চিরতরে মুক্তিলাভের আশা করিতে পারে না?
আমি চাই, প্রবাসী ভারতীয়গণ, বিশেষ করিয়া পূর্ব্ব এশিয়াবাসী ভারতীয়গণ, এই কার্য্যে তাঁহাদের সমগ্র শক্তি নিয়োজিত করিবেন। আমাদের উদ্দেশ্য সফল করিবার অভিপ্রায়ে আমি একটি অস্থায়ী স্বাধীন ভারত গভর্ণমেণ্ট গঠন করিতে চাই, এই গভর্ণমেণ্ট প্রবাসী ভারতীয়গণকে সংহত করিবে এবং ভারতস্থিত বৃটিশবাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালনা করিবে। যখন আমরা এই সংগ্রামে জয়লাভ করিব ও ভারত স্বাধীন হইবে, তখন এই অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট স্বাধীন ভারতের স্থায়ী গভর্ণমেণ্টের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে এবং সেই গভর্ণমেণ্ট ভারতের জনমতের দ্বারা গঠিত হইবে।
বন্ধুগণ আপনারা আজ নিশ্চয়ই উপলদ্ধি করিতে পারিয়াছেন যে, ত্রিশলক্ষ প্রবাসী ভারতীয় যাহারা পূর্ব্ব এশিয়ায় বাস করিতেছে, তাহাদের পক্ষে আর্থিক ও জনশক্তি এবং অন্যান্য দ্রব্যসম্ভার কেন্দ্রীভূত করিবার সময় আসিয়াছে। এই বিষয়ে মনের সম্পূর্ণ সহযোগিতা কার্যোদ্ধার করিতে পারিবে না। আমি সমগ্র ও সম্পূর্ণরূপে সংহত শক্তি চাই, ইহা অপেক্ষা কিছু কম নহে। কারণ আমরা বহুবার আমাদের শত্রুপক্ষের নিকট হইতে শুনিয়াছি যে, ইহা সামগ্রিক যুদ্ধ। আপনারা আজ আপনাদের সম্মুখে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সৈনিকদের এক অংশ—আজাদ হিন্দ ফৌজ বা ভারতীয় জাতীয় বাহিনীকে দেখিতে পাইতেছেন। অন্য একদিন তাহারা তাহাদের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ টাউন হলের সম্মুখে করিয়াছিল। অতঃপর তাহারা স্থির করিয়াছে যে, ভারতের প্রাচীন নগরী দিল্লীর লাল কেল্লার সম্মুখে কুচকাওয়াজ করিতে না পারা পর্য্যন্ত তাহারা সংগ্রাম চালাইয়া যাইবে। ‘দিল্লী চল’ ‘দিল্লী চল’’ ইহাই তাহারা শ্লোগানরূপে গ্রহণ করিয়াছে। বন্ধুগণ পূর্ব্ব এশিয়ায় ত্রিশলক্ষ প্রবাসী ভারতীয়ের এই চরম যুদ্ধের জন্য চরম সংহতির শ্লোগান হউক ‘দিল্লী চল’। আমি এই চরম সংহতির মধ্য হইতে কমপক্ষে তিন লক্ষ সৈন্য এবং নয় কোটী টাকা পাইতে আশা করি। আমি এতদ্ব্যতীত ‘মৃত্যু ভয় হীন বাহিনীর’ জন্য একদল সাহসী মহিলা চাই। একদা ১৮৭৫ সালের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁন্সীর রাণী যে বীরত্বের সহিত তরবারি চালনা করিয়াছিলেন, এই নারীবাহিনীকেও সেইরূপ বীরত্বের পরিচয় দিতে হইবে।
বন্ধুগণ আমরা বহুদিন যাবৎ ইউরোপের দ্বিতীয় ফ্রণ্টের কথা শুনিতেছি, কিন্তু আমাদের স্বদেশবাসী বর্ত্তমান সময়ে চুড়ান্তভাবে নির্য্যাতিত হইতেছে, তাহারা এখন দ্বিতীয় ফ্রণ্টের দাবী করে। আমাকে পূর্ব্ব এশিয়ার সমস্ত সংহত শক্তি দান করুন, আমি দ্বিতীয় ফ্রণ্টের প্রতিজ্ঞা করিতেছি — বাস্তবিক পক্ষে যাহা ভারতের সংগ্রামে দ্বিতীয় ফ্রণ্ট। (নবযুগ—২৯ কার্ত্তিক, ১৩৫২ সাল)
সিঙ্গাপুর অভিভাষণের তিনদিন পরে অর্থাৎ ১২ই জুলাই তারিখে তিনি পুনরায় জানাইলেন সন ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে ঝাঁসীর রাণী লক্ষীবাই ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত হইয়াছিলেন। সেই ঝাঁসীর রাণী নাম দিয়া পূর্ব্ব এশিয়ায় এক নারীবাহিনী গঠন করিতে হইবে। ইহার পর আগষ্ট মাসে নেতাজী আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রধান অধিনায়ক হইলেন।
এই ঘটনার পরে নেতাজীর প্রতিভা, অধ্যবসায় ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অনতিবিলম্বে লক্ষ লক্ষ সৈন্য আসিয়া আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করিতে লাগিল এবং আজাদ হিন্দ ধনভাণ্ডারে লক্ষ লক্ষ টাকা ও অন্যান্য সমরোপকরণ আসিতে আরম্ভ করিল। স্বেচ্ছাসেবকগণকে সামরিক শিক্ষা দিয়া উচ্চপদের উপযোগী করিবার উদ্দেশ্যে অনেকগুলি শিক্ষা শিবির ও সংস্থাপিত হইল, এবং এই বিরাট বাহিনী ভবিষ্যৎ স্বাধীন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিল।