বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র/উত্তর বঙ্গে পরিভ্রমণ

উত্তর বঙ্গ পরিভ্রমণ

 ১৯৩১ সালের জানুয়ারি মাসে সুভাষচন্দ্র উত্তর বঙ্গ পরিভ্রমণে বহির্গত হন। তিনি মালদহে উপস্থিত হইবার পূর্ব্বেই তত্রত্য জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ফৌজদারী কার্য্যবিধির ১৪৪ ধারা অনুসারে তাঁহার উপর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এই আদেশ অমান্য করাতে সুভাষচন্দ্রের উপর ৭ দিন বিনাশ্রমে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় এবং তাঁহাকে রাজসাহী সেণ্ট্রাল জেলে পাঠান হয়।

 ১৯৩১ খৃষ্টাব্দের ১৪ই মার্চ্চ তারিখে সুভাষ বাবু বোম্বাই গমন করেন। ২০শে মার্চ্চ তারিখে তিনি নিখিলভারত রাষ্ট্রীয় মহাসমিতির করাচী অধিবেশনে যোগদান করেন। এই অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরউইন চুক্তির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন। অতঃপর তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্যপদে এবং কলিকাতা কর্পোরেশনের অল্‌ডারম্যান পদে ইস্তফা প্রদান করেন।

 এই বৎসর অক্টোবর মাসে শ্রীযুক্ত বসুর উপর ১৪৪ ধারা অনুসারে দুইবার আদেশ জারি করা হয়। তিনি দুইবারই গভর্ণমেণ্টের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য় করেন।

 ১৯৩১ সালের ২৯শে ডিসেম্বর বোম্বাইয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক অধিবেশন হয়। এই অধিবেশনে যোগদান করিবার জন্য তদানীন্তন কংগ্রেস প্রেসিডেণ্ট সর্দ্দার বল্লভভাই পেটেলের নিকট হইতে সুভাষচন্দ্র এক আমন্ত্রণ পত্র প্রাপ্ত হন। এই অধিবেশনের কার্য্য শেষ হইলে মহাত্মা গান্ধীর সহিত আলাপ আলোচনা শেষ করিয়া দেশে ফিরিবার পথে কল্যাণ স্টেশনে ১৯৩২ খৃষ্টাব্দের ২রা জানুয়ারি ১৮১৮ খৃষ্টাব্দের ৩ রেগুলেসন অনুসারে পুনরায় তাঁহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েক মাস কারারুদ্ধ অবস্থায় থাকিবার পরে তাঁহার স্বাস্থ্য একেবারেই ভঙ্গ হয়। একারণ ভারত গভর্ণমেণ্ট তাঁহার চিকিৎসার জন্য ইউরোপ যাত্রার অনুমতি দেন এবং তাঁহাকে মুক্তি দান করেন। ১৯৩৩ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি তারিখে তিনি ইউরোপ যাত্রা করেন, এবং ৮ই মার্চ্চ তারিখে অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা নগরে উপস্থিত হন।