বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র/স্বরাজ্যপার্টি
স্বরাজ্য পার্টি
এদিকে মহাত্মার অহিংস অসহযোগ আন্দোলন তখন দেশের জনসাধারণের মধ্যে বিপুল উৎসাহের সঞ্চার করিয়াছে। “এক বৎসরের মধ্যেই স্বরাজ আসিবে” মাহাত্মার এই বাণী দেশবাসীর কর্ণে প্রতিধ্বনিত হইতেছে। এই আন্দোলনে যোগদান করিয়া শত শত ব্যক্তি কারাবরণ করিতেছে। ব্রিটিশরাজ কি করিবেন তাহা স্থির করিতে পারিতেছেন না। জনসাধারণ দাসত্ব শৃঙ্খল হইতে মুক্তিলাভ করিবার আশায় পুলিশের অত্যাচার নীরবে সহ্য করিতেছে। ঠিক সেই সময়ে চৌরিচৌরার হত্যাকাণ্ড মহাত্মাকে বিচলিত করিয়া ফেলিল। নিজের ভুল বুঝিতে পারিয়া তিনি এই মতবাদ প্রত্যাহার করিলেন। ইহার পর তাঁহাকে কারারুদ্ধ করা হইল। দেশের লোক নেতৃহীন হইয়া চারিদিকে অন্ধকার দেখিতে লাগিল। ইহার প্রতীকারকল্পে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্বর্গীয় পণ্ডিত মতিলাল নেহেরুর সহিত একযোগে স্বরাজ পার্টি গঠন করিবার ইচ্ছা করিলেন। দেশকে প্রস্তুত করিবার জন্য ‘ফরওয়ার্ড’ সংবাদপত্র বাহির করিবার প্রয়োজন বোধ হইল। রাঙ্গালা দেশে স্বরাজ্যদলের নেতা হইলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন এবং সুভাষচন্দ্র হইলেন তাঁহার সহকারী বা লেপ্টেনাণ্ট।
দেশবন্ধু মহাত্মা গান্ধীর অহিংসনীতিকে আদর্শরূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন সত্য বটে, কিন্তু তিনি উহা সকলক্ষেত্রেই প্রয়োজন বলিয়া মনে করিতেন না। সুভাষচন্দ্র স্বরাজ্যদলের উদ্দেশ্য জনসাধারণের মধ্যে প্রচারিত করিবার জন্য দেশবন্ধুর সহিত ভারতের নানাস্থানে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন।
কলিকাতা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের উজ্জ্বলরত্ন ডাক্তার প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ ইতিপূর্বের ইম্পিরিয়াল সার্ভিসে যোগ দিয়াছিলেন। বর্ত্তমান অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করিবার জন্য তিনিও এই লোভনীয় পদ পরিত্যাগ করিলেন।