বিদ্যাসাগর/দশম অধ্যায়
দশম অধ্যায়।
প্রতিপত্তি-পরিচয়, ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের কার্য্যত্যাগ,
সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারীর পদে নিয়োগ,
কলেজের সংস্কার, তেজস্বিতা, গুণগ্রাহিতা,
ভ্রাতৃবিয়োগ, কলেজের কার্য্য ত্যাগ ও
সখের কাজ।
ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজে চাকুরী করিবার সময় কেবল সিবিলিয়ন সাহেব সম্প্রদায় কেন; তাৎকালিক এ দেশীয় অনেক সম্পত্তিশালী সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সহিতও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ঘনিষ্টতা হইয়াছিল। এই সময় মুরশিদাবাদের স্বর্গীয়া মহারাণী স্বর্ণময়ীর স্বামী রাজা কৃষ্ণনাথের সহিত তাঁহার আলাপ পরিচয় হয়। মুরশিদাবাদ রাজপরিবারের কর্ম্মচারিগণ তাঁহার যথেষ্ট সম্মান করিতেন। ১৮৪৭ খৃষ্টাব্দে ১২৫৪ সালে মৃত রাজার উইল সম্বন্ধে যে মোকদ্দমা হয়, তাহাতে নবীনচন্দ্র নামে এক ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়াছিলেন,—“রাজা কৃষ্ণনাথ ইংরেজিতে যে উইল করিয়াছিলেন, রাজার ইচ্ছানুসারে আমি পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাহায্যে সেই উইলের বাঙ্গালা অনুবাদ করি। আমি অনুবাদ করি এবং বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহা লিখেন। উইল অনুবাদের সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের প্রধান পণ্ডিত ছিলেন। এক্ষণে তিনি সংস্কৃত কলেজের সহকারী সেক্রেটারী।”[১]
পরে মুরশিদাবাদ রাজপরিবার এবং স্বয়ং মহারাণী স্বর্ণময়ীর সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এতাদৃশ ঘনিষ্ঠতা হইয়াছিল যে, বিদ্যাসাগর মহাশয় আবশ্যক হইলে, মহারাণীর নিকট অর্থ ঋণ লইতেও কুণ্ঠিত হইতেন না। বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজ-পরিবারের কর্ম্মচারিগণকে যেরূপ নানা বিষয়ে সাহায্য করিতেন, মহারাণীর নিকটও তিনি সেইরূপ অনেক বিষয়ে সাহায্য পাইতেন। এ সম্বন্ধে চিঠি-পত্রাদি যথাপ্রসঙ্গে স্থানান্তরে প্রকাশিত হইবে।
১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের মার্চ্চ মাসে বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট-উইলিয়ম্ কলেজের কার্য্য পরিত্যাগ করেন। এই সময় সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী রামমাণিক্য বিদ্যালঙ্কার মহাশয়ের মৃত্যু হয়। বাবু রসময় দত্ত তখন সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারী ছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একজন সবিশেষ গুণগ্রাহী ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারীর পদ গ্রহণ করিলে সংস্কৃত কলেজের প্রকৃতই অনেক উন্নতি হইবে, ইহাই তাঁহার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তবে এ পদের বেতন পঞ্চাশ টাকা ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজেও পঞ্চাশ টাকা বেতন পাইতেন; সুতরাং এ পদের জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয় যে ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পদ ত্যাগ করিবেন না, রসময় বাবুর ইহাও ধারণা হইয়াছিল; কিন্তু তাঁহার ঐকান্তিক ইচ্ছা, বিদ্যাসাগর মহাশয় এই পদ গ্রহণ করেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে এই পদে অধিষ্ঠিত করিবার দৃঢ় সংকল্প করিয়া, ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ২৮শে মার্চ্চ শিক্ষা-বিভাগে এক পত্র লেখেন। এই পত্রে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী করিবার জন্য তাঁহার সবিনয় অনুরোধ ছিল। এই পদের বেতন বৃদ্ধি করিয়া দিবার জন্যও তিনি যথেষ্ট উপরোধ করিয়াছিলেন। তিনি স্পষ্টই লিখিয়াছিলেন, এ পদের বেতন বৃদ্ধি না হইলে বিদ্যাসাগরের ন্যায় এক জন উপযুক্ত লোক পাওয়া দুরূহ। রসময় বাবু যে পত্র পাঠাইয়াছিলেন, তাহার সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পদপ্রার্থনার আবেদনপত্র ও প্রশংসাপত্রাদি পাঠান হইয়াছিল।
রসময় দত্তের পত্র ও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রশংসাপত্রাদি পাইয়া, শিক্ষা-বিভাগের তৎকালিক সেক্রেটারী এ, ফজে, মৌয়েট্ এম, ডি, সাহেব অতি সন্তোষসহকারে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারীর পদে নিযুক্ত করিতে স্বীকার করেন। তবে তিনি সে সময় পদের বেতন বৃদ্ধি করিতে সম্মত হন নাই।
মৌয়ে্ট সাহেব ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ২রা এপ্রেল রসময় বাবুকে এই মর্ম্মে পত্র লেখেন,—“ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী পদে নিযুক্ত করা হইল, কিন্তু আপাততঃ তাঁহার বেতন বৃদ্ধি হইবে না। পরে কার্য্য বুঝিয়া বেতন বৃদ্ধি করিবার সম্ভাবনা রহিল।”
৪ঠা এপ্রেল এই পত্রের এক অনুলিপি ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট প্রেরিত হইয়াছিল। রসময় বাবু তাঁহাকে আসিষ্টেণ্ট সেক্রেটারীর পদ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বুঝাইয়া বলেন,—“তুমি যদি এ পদ গ্রহণ কর, তাহা হইলে কলেজের উন্নতি হইবে। কলেজের উন্নতি হইলে নিশ্চিতই বেতন বৃদ্ধি হইবে।”
বেতন বৃদ্ধির আশা বুঝিয়া এবং রসময় বাবুর অনুরোধ রক্ষা না করা অন্যায় ভাবিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয় পদগ্রহণে সম্মত হন। এই এপ্রিল মাসে তিনি সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী হন।
সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী পদ গ্রহণ করিলে পর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনুরোধে তাঁহার দ্বিতীয় ভ্রাতা দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন মহাশয় ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পণ্ডিতপদে নিযুক্ত হন। ইতিপূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয় মার্সেল সাহেবকে বলিয়া কহিয়া কলিকাতার তালতলা-নিবাসী দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের হেড-রাইটার-পদে নিযুক্ত করিয়া দেন।
সংস্কৃত কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারী হইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় কলেজের অনেক সংস্কার সাধন করেন। পূর্ব্বে শিক্ষকই কি, আর ছাত্রই কি, কলেজে আসিবার বা যাইবার কাহারও কোন বাঁধাবাঁধি, আঁটা-আঁটি নিয়ম ছিল না। এক দিন বিদ্যাসাগর মহাশয় সকল অধ্যাপকের আগমনের বহু পূর্ব্বে সমাগত হইয়া কলেজের প্রবেশ দ্বারের সম্মুখভাগে আপন মনে পদ চারণা করিতেছিলেন। পণ্ডিতাগ্রগণ্য স্মার্ত ভরতচন্দ্র শিরোমণি, তাহা লক্ষ্য করিয়া অপরাপর অধ্যাপকদিগকে কহিলেন,—“ওগো আর আমাদের বিলম্বে আসা চলিবে না, বিদ্যাসাগর অগ্রে আসিয়া কৌশলে আমাদিগকে তাহা জানাইতেছেন।” তৎপর দিবস হইতে তাঁহারা সকলে যথাসময়ে উপস্থিত হইতে লাগিলেন। বিদ্যাসাগর, শিরোমণি প্রভৃতির ছাত্র ছিলেন। সুতরাং তিনি মুখে কোন কথা বলিতে কুণ্ঠিত হইতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, অনেক বিষয়ে সুকৌশলে সুব্যবস্থা ও সুনিয়ম করিয়া দেন। তিনি সংস্কৃত কলেজে প্রথম কাষ্ঠের পাশ প্রচলিত করেন। কোন ছাত্র এই পাশ না লইয়া বাহিরে যাইতে পারিত না। কাহারও সেক্রেটারীর অনুমতি ব্যতীত কোন কাজ করিবার অধিকার ছিল না। ইনি যে সকল কবিতা অশ্লীল মনে করিয়াছিলেন, তাহা সংস্কৃত পাঠ্যসাহিত্য হইতে তুলিয়া দেন। সাহিত্য শ্রেণীতে অঙ্কশিক্ষার ব্যবস্থা ইঁহার দ্বারা প্রবর্ত্তিত হয়। পূর্ব্বে এ ব্যবস্থা ছিল না।
এই সময়ে হিন্দু কলেজের “প্রিন্সিপল” কার্ সাহেবের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একটু মনোবাদ ঘটিয়াছিল। একদিন বিদ্যাসাগর মহাশয় কার্ সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান। সাহেব তখন টেবিলের উপর পা তুলিয়া বসিয়াছিলেন। তিনি তদবস্থায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সঙ্গে কথা কহেন। ইহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় আপনাকে অপমানিত জ্ঞান করেন; সে দিন তৎসম্বন্ধে কোন কথা না কহিয়া ফিরিয়া আসেন। আর একদিন কার্ সাহেব বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় পূর্ব্ব কথা স্মরণ করিয়া আপনার পাদুকা-শোভিত পা দুখানি টেবিলের উপর তুলিয়া দেন, অধিকন্তু সাহেবকে বসিতেও বলেন নাই। সাহেব সে দিন সংক্ষুব্ধ মনে ফিরিয়া আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ব্যবহারের কথা শিক্ষাসমাজের সেক্রেটারী মৌয়েট্ সাহেবকে বিদিত করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়। কৈফিয়তে বিদ্যাসাগর মহাশয় কার্ সাহেবের দুর্ব্যবহায়ের কথা উল্লেখ করেন। মৌয়েট্ সাহেব বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তীব্র তেজস্বিতা দেখিয়া সন্তুষ্ট হন।
বিদ্যাসাগর মহাশয় চিরকাল গুণের পক্ষপাতী ছিলেন। এই সময় সংস্কৃত কলেজে সাহিত্য শাস্ত্রের অধ্যাপকপদ শূন্য হয়। বাবু রসময় দত্ত তখনও কলেজের সেক্রেটারী ছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে এই পদে নিযুক্ত হইতে অনুরোধ করেন। শুনিতে পাই, এ পদ গ্রহণ করিলে অনেকটা কর্ত্তৃত্ব লোপ হইবে এবং কর্ত্তৃত্ব লোপ হইলে, কলেজের শিক্ষা-প্রণালীর শ্রীবৃদ্ধি সম্বন্ধে অনেকটা অন্তরায় ঘটিবে ভাবিয়া,তিনি এ পদ গ্রহণে অসম্মত হন; তবে এ পদে যাহাতে একজন প্রকৃত গুণবান্ উপযুক্ত লোক নিযুক্ত হন, ইহাই তাঁহার সম্পূর্ণ চেষ্টা ছিল। সেই সময় তাঁহার বাল্য-সহাধ্যায়ী মদনমোহন তর্কালঙ্কার কৃষ্ণনগর কলেজের প্রধান পণ্ডিত ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় জানিতেন, তর্কালঙ্কার মহাশয় সাহিত্য-শাস্ত্রে সবিশেষ বুৎপন্ন। তিনি যোগাড়যন্ত্র করিয়া, তর্কালঙ্কার মহাশয়কে এই পদে নিযুক্ত করেন। তর্কালঙ্কার মহাশয়ের আসিবার পূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয় দিন কতক সাহিত্য-শ্রেণীতে পড়াইয়াছিলেন।
এই সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের চতুর্থ ভ্রাতা দ্বাদশবর্ষীয় বালক হরচন্দ্রের ওলাউঠায় মৃত্যু হয়। ভ্রাতৃশোকে বিদ্যাসাগর মহাশয় মৃত-কল্প হন। ভ্রাতার মৃত্যু সময়ে তিনি দেশে উপস্থিত ছিলেন। কার্য্যবশে তাঁহাকে কলিকাতায় আসিতে হইয়াছিল বটে; কিন্তু ভ্রাতৃ-শোকে তিনি পাঁচ ছয় মাস এক রকম আহার নিদ্রা পরিত্যাগ করিয়াছিলেন বলিলে হয়।
এই দুর্ঘটনার পর সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারী রসময় দত্তের সহিত তাঁহার মনোবাদ ঘটে। তিনি শিক্ষা-প্রণালী সম্বন্ধে যে সব প্রস্তাব করিতেন, তাহা সময় সময় সেক্রেটারীর অনুমোদিত হইত না। মতান্তর মনোবাদের কারণ। তেজস্বী বিদ্যাসাগর কর্ম্ম পরিত্যাগ কমেন। পদত্যাগ করিতে দেখিয়া আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, স্বজন, পরিজন সকলে অবাক হইলেন। কেহ কেহ বলিলেন, বিদ্যাসাগর কার্য্য পরিত্যাগ করিলেন বটে; কিন্তু এত বড় সংসার চালাইবেন কিসে? সত্য সত্য ইহা ঘোরতর অবিমৃষ্যকারিতা; কিন্তু তেজস্বী বিদ্যাসাগর দিগ্বিজয়ী বীরের ন্যায় অচল অটল ভাবে ও অম্লান বদনে উত্তর দিলেন,—“আলু, পটোল বেচিয়া খাইব, মুদীর দোকান করিব, তবুও যে পদে সম্মান নাই, সে পদ লইব না।” এ সময় তাঁহার বাসায় অনেকগুলি অনাথ বালক অন্নবস্ত্র পাইত। তিনি তাহাদের কাহাকেও অন্নবস্ত্রে বঞ্চিত করেন নাই। মধ্যম ভ্রাতা ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজে চাকুরী করিয়া যে পঞ্চাশটা টাকা পাইতেন, তাহাই একমাত্র উপায় ছিল। এই টাকায় বাসাখরচ চলিতে লাগিল। মাসে মাসে পঞ্চাশ টাকা ঋণ করিয়া বাড়ীতে পাঠাইতে হইত। রাজকৃষ্ণ বাবুর নিকট শুনিয়াছি, “পদ পরিত্যাগের পর তাঁহাকে একটা দিনের জন্যও মলিন বা বিষণ্ন দেখা যায় নাই। পূর্ব্বের ন্যায় তিনি তেমনই হিমগিরিবৎ গাম্ভীর্য্যপূর্ণ। মুখ দেখিয়া মনে হইত না, তাঁহার মনে কোন কষ্ট কি দুঃখ আছে।” অনন্যোপায় সামান্যাবস্থাপন্ন ব্যক্তির পক্ষে এরূপ পদত্যাগ দুষ্কর নিশ্চিতই; কিন্তু যাঁহাদের ভিতরে তেজ আছে, যাঁহাদের আত্মশক্তি ও সামর্থ্যের উপর অচল বিশ্বাস আছে, তাঁহাদের পক্ষে ইহা বিচিত্র কিছুই নহে।
১৮৪৯ খৃষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের পূর্ব্ব পর্যন্ত বিদ্যাসাগর মহাশয় কোন চাকুরীতে পুনঃ প্রবৃত্ত হন নাই। এই সময় হিন্দী ও ইংরেজী বিদ্যায় তাঁহার অনেকটা ব্যুৎপত্তি হইয়াছিল। আনন্দকৃষ্ণ বাবু বলিয়াছিলেন,—“তাঁহার মুখে সেক্সপিয়রের আবৃত্তি শুনিয়া আমরা বিমোহিত হইতাম।” শিক্ষা-সমাজের অধ্যক্ষ মার্সেল্ সাহেবের অনুরোধে বিদ্যাসাগর মহাশয় কাপ্তেন ব্যাঙ্ক সাহেবকে কয়েক মাস হিন্দী ও বাইবেল শিক্ষা দেন। ব্যাঙ্ক সাহেব মাসিক ৫০\ পঞ্চাশ টাকার হিসাবে তাঁহাকে কয়েক মাসের বেতন একেবারে দিতে চাহেন; তিনি কিন্তু তাহা লয়েন নাই।
- ↑ The Bengal Hurkara and India Gagette, Thursday, 22 July, 1847.