বুদ্ধের জীবন ও বাণী/বৌদ্ধকর্ম্ম

বৌদ্ধকর্ম

 এইরূপ কথিত আছে, বিমল বোধিলাভ করিয়া ভগবান্‌ বুদ্ধদেব বলিয়াছিলেন—

অনেকজাতিসংসারং সন্ধাবিস্সং অনিব্বিসং।
গহকারকং গবেসন্তো দুক্‌খা জাতি পুনপ্পুনং॥
গহকারক! দিট্‌ঠোঽসি, পুন গেহং ন কাহসি
সব্বা তে ফাসুকা ভগ্‌গা গহকুটং বিসংঙ্খিতং।
বিসঙ্খারগতং চিত্তং তণ্‌হানং খয়মজ্ঝগা।

 গৃহকারকের সন্ধান করিয়া তাহাকে না পাইয়া কতবার জন্মগ্রহণ করিলাম, কত সংসার পরিভ্রমণ করিলাম; পুনঃ পুনঃ জন্মগ্রহণ করিয়া কি দুঃখই পাইলাম! হে গৃহকারক, এবার তোমার দেখা পাইয়াছি, এবার আর গৃহরচনা করিতে পারিবে না, তোমার সকল স্তম্ভ ও গৃহভিত্তি ভগ্ন হইয়াছে, আমার বিগতসংস্কার চিত্তের সকল তৃষ্ণা ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়াছে।

 এই বাণীটির মধ্যে সুস্পষ্ট দেখিতে পাই, একই গৃহকারক জীবের জন্মান্তরের মধ্য দিয়া স্রোতোরূপে প্রবহমাণ এবং এই গৃহকারক মানবের মহাবোধির প্রত্যক্ষ গোচর হইলেই, গৃহের সাজসরঞ্জাম্‌ চুর-মার হয় এবং গৃহকারকের সকল ক্ষমতা পরাহত হইয়া যায়। গৃহকারকের প্রতিষ্ঠাভূমি সংস্কার ও তৃষ্ণা; কারণ সংস্কারের ও তৃষ্ণার ক্ষয় হইলে তাহার আর পাদক্ষেপের স্থানপর্য্যন্ত থাকেনা।

 অভিধর্ম্ম এই গৃহকারের নাম দিয়াছেন কর্ম্ম। বাহিরের ক্রিয়াগুলি বা ব্যাপারগুলি কর্ম্ম নহে। আমি শক্রকে বধ করিলাম, এই হননব্যাপার কর্ম্ম নহে, ইহা সাধন করিয়া যে সংস্কারের উৎপত্তি হইল, তাহাই কর্ম্ম বা উক্ত সংস্কারের অন্তর্নিহিত গূঢ়শক্তি কর্ম্ম। রূপ বেদনা সংজ্ঞা সংস্কার ও বিজ্ঞান ইহাদের মধ্যে যে শক্তি অবস্থান করিয়া ইহাদিগকে বুনিয়া অপূর্ব্ব ব্যক্তিত্বের জাল রচনা করে, কর্ম্ম সেই শক্তি। বৌদ্ধেরা এই ব্যক্তিত্বের নিরপেক্ষ অস্তিত্ব স্বীকার করেন না। সূর্য্যরশ্মি ও বৃষ্টির কণা যেমন মনোমোহন ইন্দ্রধনু রচনা করে, সেইরূপ রূপবেদনাদি স্কন্ধই আশ্চর্য্য ব্যক্তিত্বের সৃষ্টি করিয়া থাকে; বস্তুতঃ ব্যক্তিত্বের একটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নাই। দুই স্থানের অন্তর্বর্ত্তী বায়ুপ্রবাহ ঐ দুই স্থানের চাপের তারতম্য দূর হইবামাত্র যেমন বিশ্ববায়ুর সহিত মিলিয়া যায়, আমাদের ব্যক্তিত্বও বাসনার বিলোপ ঘটিবামাত্র তেমনি বিশ্বসত্তার সহিত মিলিত হইয়া যায়।

 ব্যক্তিত্বের বা অহংএর পরমার্থতঃ কোন অস্তিত্ব নাই। রূপাদি পঞ্চ স্কন্ধের হেতুই ব্যক্তি। ইহার অস্তিত্বের প্রকৃতি যেমনই হউক, এই ব্যক্তিই দুঃখ ভোগ করেন, সংসারে বিচরণ করেন এবং এই ব্যক্তিরই নির্ব্বাণ হইয়া থাকে; সুতরাং দুঃখই বল, সংসারই বল, আর নির্ব্বাণই বল, ব্যক্তি ইহাদের মূলে থাকিয়া এইগুলিকে নিয়মিত করেন; কিন্তু ব্যক্তি যে কর্ম্ম করেন, তিনি সেই কর্ম্মের হেতু নহেন, কর্ম্মই তাহার উপর প্রভুত্ব করিয়া থাকে। একটি সূক্ষ্ম সূত্র যেমন শত শত কুসুমের মধ্য দিয়া আপনাকে প্রবাহিত করিয়া বিচ্ছিন্ন ও স্বতন্ত্র কুসুমগুলিকে একটি মালায় পরিণত করে, তেমনি দুর্ণিরীক্ষ্য কর্ম্মশক্তি বিভিন্ন মুহূর্ত্তের, বিভিন্ন দিনের, বাল্য যৌবন প্রৌঢ় বার্দ্ধক্য প্রভৃতি বিভিন্ন অবস্থার এবং জন্মজন্মান্তরের একই জীবের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়া ইহাদিগকে একত্ব দান করিতেছে। এই বর্ত্তমান মুহুর্ত্তে আমি যাহা আছি, তাহা, পূর্ব্ব পূর্ব্ব মুহূর্ত্তে আমি যাহা ছিলাম, তাহারই পরিণামমাত্র। আমরা দুগ্ধ হইতে দধি, দধি হইতে নবনীত, নবনীত হইতে ঘৃত পাইয়া থাকি; কিন্তু তা’ বলিয়া এইরূপ বলা চলেনা যে, যাহা দুগ্ধ তাহাই দধি, তাহাই নবনীত, তাহাই ঘৃত; অথচ দুগ্ধকে আশ্রয় করিয়াই দধি নবনীত ও ঘৃতের উদ্ভব হইয়াছে। দধি দুগ্ধ নহে, আবার দুগ্ধ হইতে অন্য নহে। দধিত্বের উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে দুগ্ধত্ব নিরুদ্ধ হয় কিন্তু দুগ্ধত্বের ধর্ম্মপ্রবাহ উৎপদ্যমান দধিত্বে বিদ্যমান থাকে। এইরূপ শিশুর যুবকের প্রৌঢ়ের বৃদ্ধের ব্যক্তিত্ব স্বতন্ত্র হইলেও, একই দেহকে আশ্রয় করিয়া ঐ সকল অবস্থা সংগৃহীত হইয়া থাকে। কর্ম্মের পরিণাম প্রতি মুহূর্ত্তে প্রতি দিনে আমাদের মধ্যে নব নব ব্যক্তিত্বের রচনা করিতেছে। বিদ্যুৎপ্রবাহ যেমন দোলককে একটা নিরন্তর গতি দান করে, কর্ম্মপ্রবাহ তেমনি মানবজীবন লইয়া নানা ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়ার অশেষ খেলা খেলিতে থাকে। কত যুগ-যুগান্ত কত জন্মজন্মান্তর এই খেলা চলিতে থাকে, তাহার ইয়ত্তা নাই। প্রশ্ন হইতে পারে, তবে কি এই খেলার শেষ নাই? বৌদ্ধেরা বলেন, হ্যাঁ, এই খেলা ফুরাইবে বটে, কিন্তু যাবৎ তোমার অবিদ্যা দূর না হয়, তাবৎ তোমাকে কর্ম্মের প্রভুশক্তির অধীনতা অনিচ্ছায়ও স্বীকার করিতে হইবে, কিন্তু যখনই তুমি নির্ম্মলবোধি লাভ করিবে, তখনই কর্ম্মের সত্যপ্রকৃতি, তাহার যাদুবিদ্যা তোমার প্রজ্ঞাগোচর হইবে; তখনই কর্ম্মই তোমাকে প্রভু বলিয়া মানিয়া লইবে। কর্ম্মের শক্তি তোমার বর্ত্তমান ও ভবিষ্যতের যোগ-সেতু। তৃষ্ণার ক্ষয় হইলেই এই যোগ-সেতু ভাঙ্গিয়া যায়, নির্ব্বাণলাভ হয় এবং নব জন্মলাভের আর সম্ভাবনা থাকে না। পুনঃপুনঃ জন্মলাভের যাহা হেতু বা কারণ তাহার উপরম হইলেই, আর জন্ম গ্রহণ করিতে হয় না। কর্ষণ ও বপন না করিলে যেমন শস্যসংগ্রহের সম্ভাবনা দূর হয়, আসক্তি বা বাসনার ক্ষয় হইলেই তেমনই জন্মলাভের সম্ভাবনা দূর হয়। বৌদ্ধেরা বলেন, ঘরে প্রদীপ জ্বালিবামাত্র যেমন অন্ধকার দূরীভূত হয় এবং সকল দ্রব্য প্রত্যক্ষগোচর হয়, তেমনি সাধক প্রজ্ঞা লাভ করিবামাত্র তাহার হৃদয়ের অবিদ্যার অন্ধকার দূর হয় এবং চতুরার্যসত্য তাহার জ্ঞানগম্য হইয়া যায়। তখন তাহার স্থির-প্রজ্ঞা একদিক হইতে মনকে দৃঢ়বলে আঁকড়িয়া ধরে এবং অন্যদিক হইতে তৃষ্ণার মূলচ্ছেদন করে। তাহার তৃষ্ণা বিনষ্ট হইবামাত্র, জন্মজন্মান্তরের কর্ম্মসূত্র ছিন্ন হইয়া যায়। ইহা অনায়াসেই বুঝা যাইতে পারে যে, আমাদের শারীরিক, মানসিক ও বাচনিক ভালমন্দ যাহা কিছু কার্য্য, সমস্তই আমরা ভিতর হইতে তাগিদ পাইয়া করিয়া থাকি। কর্ম্ম আমাদিগকে করিতেই হয় এবং তাহার পরিণামও অবশ্যম্ভাবী। উর্দ্ধক্ষিপ্ত প্রস্তরখণ্ড যেমন ভূপৃষ্ঠে পড়িবেই, শুভাশুভ কর্ম্ম তেমনই নব নব সংস্কারের জন্মদান করিবেই। ধম্মপদে উক্ত হইয়াছে—চিরপ্রবাসী নির্ব্বিঘ্নে প্রত্যাগত হইলে আত্মীয়-বন্ধুরা যেমন তাহাকে স্বাগত বলিয়া অভ্যর্থনা করে, ইহলোক হইতে অপসৃত হইবার পরও মানবের পুণ্যকর্ম্ম তেমনি তাহাকে বন্ধুর ন্যায় প্রতিগ্রহণ করে। শুভাশুভ কর্ম্ম আমাদিগকে পরিণাম হইতে পরিণামান্তরে জন্ম হইতে জন্মান্তরে লইয়া যায়। কর্ম্মের এই প্রভুশক্তি ইচ্ছামাত্রেই বিনাশ করিতে পারা যায় না। সাধনার প্রারম্ভেই কোন সাধকের মনে করা উচিত নহে, যেহেতু শুভাশুভ সর্ব্ববিধ কর্ম্মই আমার পুনঃপুনঃ জন্মগ্রহণের হেতু হইয়া মুক্তিলাভে বাধা প্রদান করিতেছে, সেইজন্য আমি এখন হইতে পাপ পুণ্য উভয় কর্ম্মই বর্জ্জন করিলাম। বৌদ্ধেরা বলেন, তৃষ্ণাক্ষয়ের দ্বারা আপনার ব্যক্তিত্ব-বিলোপের পূর্ব্বে একথা বলিবার অধিকার কোন সাধকেরই নাই। তিনি ঐ যে জোর করিয়া আপনার মনকে বলাইলেন, আমি পাপ পুণ্য কোন কাজই করিব না, তাহার ঐ গোঁড়ামি হইতেই নূতন সংস্কারের উদ্ভব হইবে। এই গোঁড়ামি তাহার কর্ম্ম হইল এবং ইহার পরিণাম তাহাকে ভুগিতে হইবেই। বেঙাচি যখন স্বাভাবিক নিয়মে বাড়িতে থাকে, তখন একদিন আপনা-আপনিই তাহার লেজ খসিয়া পড়ে, এইজন্য কোন বলপ্রয়োগের দরকার হয় না; বরং জোর করিয়া অকালে লেজ খসাইয়া দিলে তাহার গুরুতর অনিষ্ট ঘটিবারই কথা। সাধনার ক্ষেত্রও অগ্রসর হইতে হইতে সাধক হইতে যেদিন ব্যক্তিত্ব হারাইয়া ফেলেন সেইদিন তাহার তৃষ্ণার ক্ষয় হয়। এই সময়ে তিনি কর্ম্মের উপর প্রভুত্ব লাভ করেন। ইহার পূর্ব্বে জোর খাটাইতে গেলে কোন সুফল ফলিতে পারে না।

 কর্ম্ম একদিকে যেমন আমারই সৃষ্টি, অন্যদিক হইতে এই কর্ম্ম আবার আমারই স্রষ্টা। কর্ম্মের পরাক্রম হইতে মুক্তিলাভ-ব্যাপারটি সাধারণ শিক্ষণীয় বিষয় নহে, ইহা জীবন দিয়া সাধনীয় ব্যাপার। এই সাধনা-যজ্ঞে ব্যক্তিত্বকে আহুতি দিতে হইবে। এখানে একটি প্রশ্ন স্বভাবতঃ মনে উঠিতে পারে যে, সাধনের দ্বারা সাধক যখন তাঁহার অহংবোধ বিলুপ্ত করিয়া দিলেন, তখন তাঁহার দেহ বিদ্যমান থাকে; তাঁহাকে তখন নানারূপ কার্য্য করিতে হয়। তাঁহার এই কর্ম্মগুলি কিরূপ? সংক্ষেপতঃ, ইহার উত্তর এই যে, স্থিরপ্রজ্ঞ সাধকের বাহ্যক্রিয়াগুলি তৃষ্ণা-সম্ভূত নহে; রূপ বেদনা সংজ্ঞা সংস্কার ও বিজ্ঞানের অন্তর্নিহিত যে শক্তি সাধারণ মানবকে কর্ম্মে প্রণোদিত করে, সিদ্ধ সাধকের ক্রিয়াগুলি সেই শক্তি হইতে উদ্ভূত নহে। সুতরাং, তাঁহার কাজগুলি নূতন কর্ম্মের নূতন ব্যক্তিত্বের নূতন দুঃখের সৃষ্টি করিবে না।

 অজ্ঞ শিশু দর্পণে আপনার প্রতিবিম্ব দেখিয়া কাঁপিয়া উঠে; কিন্তু যখনই সে ঐ প্রতিবিম্বকে প্রকৃতরূপে জানিতে পারে, তখনই তাহার ভয়ের সকল কারণ দূর হইয়া যায়। কর্ম্মের সত্যমূর্ত্তি আমাদের জ্ঞানগম্য নহে বলিয়া, কর্ম্ম আমাদের নিকট একটি বিভীষিকা হইয়া থাকে; কর্ম্ম পাপপুণ্যের শৃঙ্খল-হস্তে আমাদিগকে দণ্ড-পুরস্কার দিবার জন্য বিচারকের আসনে বসিয়া ক্রমাগত চোখ রাঙ্গাইতেছে, কিন্তু সাধকের নিকটে এই কর্ম্মের সমস্ত শক্তি পরাহত হয়; কারণ কর্ম্মতরু যে উৎসের রসধারা গ্রহণ করিয়া নানা শাখাপল্লবে ফলেফুলে বাড়িতে থাকে, সাধক সেই উৎসের মুখই রুদ্ধ করেন; তাঁহার তৃষ্ণাক্ষয় হইবামাত্র এই কর্ম্মতরু ছিন্নমুল ক্রমের ন্যায় ভূতলশায়ী হইয়া থাকে। এইরূপে সাধক ভাল মন্দ সকল কর্ম্মের বন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া, শোকশূন্য নির্ম্মল ও শুদ্ধ হইয়া থাকেন। তৃষ্ণার মূলচ্ছেদন করিয়া সাধক তখন অনাগারীক হইলেন, অর্থাৎ যে গৃহকারক তাঁহাকে জন্মজন্মান্তর নানা সংসারে ঘুরাইয়া অশেষ দুঃখ দিয়াছিলেন, তিনি সেই গৃহকারকের গৃহভিত্তি ও সাজসরঞ্জাম চূর্ণবিচূর্ণ করিয়া ফেলিলেন। বৌদ্ধ-সাধক জানেন, শারীরিক, মানসিক ও বাচনিক কোন দুষ্ট কর্ম্ম করিলে, তাহাকে অবশ্যম্ভাবিরূপে তাহার ফলভোগ করিতে হইবে। চক্র যেমন ভারবাহী গর্দ্দভের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, দুঃখও তেমনি দুষ্কৃতকারীর অনুসরণ করিয়া থাকে। বৌদ্ধ-কর্ম্ম নির্ম্মম, তাহার দয়া নাই, স্নেহ নাই। সুমার্জ্জিত দর্পণ যেমন নিখুঁত প্রতিবিম্ব প্রদান করে, কর্ম্মও তেমনি যথাযথ ফল প্রসব করিয়া থাকে।

 কেহ কেহ মনে করেন, বৌদ্ধধর্ম্ম ঈশ্বরের বা ব্রহ্মের আসনে কর্ম্মকে স্থাপন করিয়াছেন। কিন্তু ভাবিয়া দেখিলে মনে হয়, এই ধর্ম্ম মানবাত্মাকে সকলের উচ্চ আসনে স্থান দিয়াছেন। যেহেতু সাধন দ্বারা মানব কর্ম্মের উপর প্রাধান্য লাভ করিতে পারেন; একথা অসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে যে, মানব আপনার অদৃষ্ট, আপনার পরিণাম আপনিই রচনা করিয়া থাকেন। মানব আপনিই আপনার শৃঙ্খল গড়িয়া থাকেন এবং আপনার শক্তিতেই শৃঙ্খল ভাঙ্গিয়া মুক্তি অর্জ্জন করেন। বৌদ্ধধর্ম্মে মানবের বন্ধনমুক্তির একাধিপত্য মানবকে দান করিয়া মানবাত্মাকেই চরম গৌরব প্রদান করিয়াছেন।