ভেক মূষিকের যুদ্ধ

ভেক মূষিকের যুদ্ধ


ভেক মূষিকের যুদ্ধ।




এডুকেশন গেজেট হইতে সমুদ্ধৃত



কলিকাতা



সত্যার্ণব যন্ত্রে মুদ্রাঙ্কিত হইল।



১৮৫৮





ভূমিকা।


 এই উপকাব্য, পূর্ব্বে এডুকেশন গেজেটে ক্রমশঃ প্রকটিত হইয়াছিল। রচনা দৃষ্টে অনেকে কৌতুকানুভব করিয়া গ্রন্থাকারে তদ্দর্শনের ইচ্ছা বিজ্ঞাপন করাতে তাঁহাদিগের অভিমত পালন করা যাইতেছে। ইউরোপীয় কবিকুলের পিতৃস্বরূপ আদি মহাকবি হোমর মহোদয়ের নামে এই উপকাব্যের জনম প্রবাদ আছে, কিন্তু ঈলিয়ডঅডেসি খ্যাত অনুপম মহাকাব্যদ্বয়ের জনপ্রিয়তা যে এরূপ ক্ষুদ্র কাব্যের প্রণেতা হইবেন, তদ্বিষয়ে সংশয় উপস্থিত হইতে পারে, তবে এই এক প্রবোধের পথ আছে যে, যে মহাসমুদ্র প্রবাল মৌক্তিকদি রত্ননিচয়ের ও তিমি তিমিঙ্গিলাদির আধান হইয়াছেন, সেই রত্নাকর শুক্তি শম্বূকাদি সামান্যতম জলজন্তুনিকরেরও আকর স্বরূপ। ফলত ভাবুকদিগের নিকট সাগরজ শুক্তি শম্বুকাদির চাকচিক্য এবং বিচিত্র রাগরঙ্গাদি সামান্যতর নয়ন মনোহনুরঞ্জনকারি নহে। ভেক মূষিকের মূলকাব্য যাঁহারা পাঠ করিয়াছেন তাঁহারা অবশ্যই তাহার মাধুর্য্য রসে অপূর্ব্ব সুখানুভব করিয়া থাকিবেন। উপস্থিত মর্ম্মানুবাদ তাঁহাদিগের প্রীতিবর্দ্ধনার্থ প্রস্তুত নহে, ফলতঃ ইউরোপীয় মহাকবিদিগের কবিত্ব ছটার প্রতিবিম্ব, এতদ্দেশীয় সাধারণ জনগণের মানসে প্রতিবিম্বিত করাই আমাদিগের মুখ্য অভিপ্রেত। অনেকে কছেন, ইউরোপীয় কবিত্ত্ব এতদেশীয় ভাষাসমুহে সংগ্রহ করা অসম্ভব কার্য্য, কিন্তু আমরা একথা সর্ব্বতোভাবে স্বীকার করি না। মনুষ্যের মানসিক ভাবনিচয় সর্ব্বদেশে একই প্রকার, তবে দেশ কালপাত্র ভেদে তাহার কথঞ্চিৎ বিপর্য্যয় হইবার সম্ভাবনা। ললিত নয়নের তুলনায় কোন দেশে ইন্দীবরের, কোন দেশে বা নর্গেসের, কোন দেশে বা নীলবর্ণ ক্ষীণবৃন্ত স্থূল কুসুমান্তরের সাদৃশ্য উল্লেখ হয়, প্রত্যুত, লালিত্যনিলয় নীললোচন দৃষ্টে সকল দেশীয় কবির মনে একই প্রকার ভাবোদয় হয় সন্দেহ নাই, তবে উপমিতি প্রভৃতি অলঙ্কার প্রয়োজক পদার্থ সর্ব্বদেশে একই প্রকার জন্মে না, এই নিমিত্ত কিঞ্চিন্মাত্র বিভেদ সম্ভূত হয়, কিন্তু যে পদার্থ সবদেশেই বর্ত্তমান আছে, তাহা কোন সাদৃশ্য জ্ঞাপক হইলে সর্ব্ব দেশীয় কবিরাই তাহার ব্যবহার করিয়া থাকেন, যথা “মৃগলোচন” এই দৃষ্টান্ত কি ভারতবর্ষীয়, কি পারস্য, কি ইউরোপীয়, ভিন্ন ভিন্ন সকল দেশের কবিরাই স্বীকার করিয়াছেন। অতএব এক দেশের কবির ভাব যে অপর দেশের ভাষায় আকর্ষিত হইবার যোগ্য নহে একথায় আমরা কখনই সম্মত নহি। এতদ্দেশীয় লোকেরা অধুনা ইউরোপীয় ফল, মূল, শাক, শস্যাদি স্বদেশীয় কচি অনুসারে স্বদেশীয় নিয়মে পাক করিয়া গ্রহণ করিতেছেন, তাহতে শরীরের মাত্র পোষণ হয়, কিন্তু ইউরোপীয় অশনে মানসের পোষণও আবশ্যক, এতাবতা, আমাদিগের জিজ্ঞাস্য এই, ইউরোপীয় উপাদেয় মানসিক ভোজ্য, কবিতা প্রভৃতি কি এতদ্দেশীয় জনগণের রুচি অনুসারে এতদ্দেশীয় নিয়মে প্রস্তুত করা যাইতে পারে না?

পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র

এই লেখাটি ১ জানুয়ারি ১৯২৯ সালের পূর্বে প্রকাশিত এবং বিশ্বব্যাপী পাবলিক ডোমেইনের অন্তর্ভুক্ত, কারণ উক্ত লেখকের মৃত্যুর পর কমপক্ষে ১০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে অথবা লেখাটি ১০০ বছর আগে প্রকাশিত হয়েছে ।