ইতিহাস
প্রকাশ ২২ শ্রাবণ ১৩৬২
লোকশিক্ষা-গ্রন্থমালা
প্রকাশক শ্রীপুলিনবিহারী সেন
বিশ্বভারতী। ৬/৩ দ্বারকানাথ ঠাকুর লেন। কলিকাতা
মুদ্রক শ্রীপ্রভাতচন্দ্র রায়
সূচীপত্র
ভারতবর্ষের ইতিহাস প্রসঙ্গে রচিত রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধাবলী এই গ্রন্থে সংকলিত হইল। ইহার কোনো কোনো রচনা পূর্বে অন্য গ্রন্থে প্রকাশিত হইয়াছে, কতকগুলি রবীন্দ্র-রচনাবলীর বিভিন্ন খণ্ডে মুদ্রিত হইয়াছে, অধিকাংশই এবং কোনো গ্রন্থে সংকলিত হয় নাই। এগুলির সাময়িক পত্রাদিতে প্রকাশের বিবরণ দেওয়া গেল—
১ | ভারতবর্ষের ইতিহাস | বঙ্গদর্শন | ভাদ্র ১৩০৯ |
২ | ভারতবর্ষে ইতিহাসের ধারা | প্রবাসী। | বৈশাখ ১৩১৯ |
৩ | শিবাজী ও মারাঠা জাতি। | ||
৪ | শিবাজী ও গুরু গােবিন্দসিংহ | প্রবাসী | |
৫ | ভারত-ইতিহাস-চর্চা | শান্তিনিকেতন | চৈত্র ১৩২৬ |
পরিশিষ্ট ১ | |||
৬ | কাজের লােক কে | বালক | বৈশাখ ১২৯২ |
৭ | বীর গুরু | বালক | শ্রাবণ ১২৯২ |
৮ | শিখ-স্বাধীনতা | বালক | আশ্বিন ও কাতিক ১২৯২ |
৯ | ঝান্সীর রানী | ভারতী | অগ্রহায়ণ ১২৮৪ |
পরিশিষ্ট ২ | |||
১০ | ঐতিহাসিক যৎকিঞ্চিৎ | ভারতী | বৈশাখ ১৩০৫ |
১১ | সিরাজদ্দৌলা : ১ | ভারতী | বৈশাখ ১৩০৫ |
১২ | সিরাজদ্দৌলা : ২ | ভারতী | জ্যৈষ্ঠ ১৩০৫ |
১৩ | ঐতিহাসিক চিত্র | ভারতী | শ্রাবণ ১৩০৫ |
১৪ | ঐতিহাসিক চিত্র: সূচনা | ঐতিহাসিক চিত্র | জানুয়ারি ১৮৯৯ |
১৫ | গ্রন্থ-সমালোচনা: | ||
ভারতবর্ষে মুসলমান রাজত্বের ইতিবৃত্ত | ভারতী | শ্রাবণ ১৩০৫ | |
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী | ভারতী | শ্রাবণ ১৩০৫ | |
ভারতবর্ষের ইতিহাস | ভারতী | জ্যৈষ্ঠ ১৩০৫ | |
১৬ | ইতিহাসকথা | ভাণ্ডার | আষাঢ় ১৩১২ |
১ এই প্রবন্ধ গত [১৩০৯] জ্যৈষ্ঠমাসে মজুমদার লাইব্রেরির সংসৃষ্ট আলোচনা-সমিতিতে বঙ্গদর্শন-সম্পাদক [রবীন্দ্রনাথ] কর্তৃক পঠিত হয়। এই প্রবন্ধ অংশতঃ পরিমার্জিত হইয়া রবীন্দ্রনাথের ‘ভারতবর্ষ' (১৩১২) পুস্তকে প্রথম সংকলিত হয়। পরে রবীন্দ্রনাথের গদ্যগ্রন্থাবলী’র দ্বাদশ ভাগ স্বদেশ (১৯০৮:১৩১৫) পুস্তকে সন্নিবিষ্ট হয়, এই সময় রবীন্দ্রনাথ রচনাটির অনেক অংশ নূতন করিয়া বর্জন করেন। বর্তমান গ্রন্থের পাঠ স্বদেশ গ্রন্থের অনুযায়ী। পূৰ্বোল্লিখিত ‘ভারতবর্ষ’ রবীন্দ্র-রচনাবলী চতুর্থ খণ্ডে পুনমুদ্রিত হইয়াছে, উহাতে রচনাটির পূর্ণতর পাঠ পাওয়া যাইবে।
২ এই রচনা ‘চৈতন্য লাইব্রেরির অধিবেশন উপলক্ষ্যে ওভার্টন হলে, ৩রা চৈত্র [১৩১৮] তারিখে পঠিত হয়। প্রবন্ধটি উপলক্ষ্য করিয়া তৎকালীন সাময়িকপত্রাদিতে নানা বাদ-প্রতিবাদের সৃষ্টি হইয়াছিল। অপর পক্ষে, শ্রীযুক্ত যদুনাথ সরকার মহাশয় প্রবন্ধটি ইংরেজিতে অনুবাদ (My Interpretation of Indian History) করিয়া ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রে (অগস্ট ও সেপ্টেম্বর, ১৯১৩) প্রকাশপূর্বক রচনাটির প্রতি বৃহত্তর পাঠকসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কবির জ্যেষ্ঠ সহোদর দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় প্রবন্ধটির সম্বন্ধে মন্তব্য করেন—
‘আমার মনে হইল যে, প্রাচীন ভারতের রহস্যপূর্ণ ইতিহাসের নানা রঙের বহিরাবরণের মধ্য হইতে মস্তক উত্তোলন করিয়া তাহার ভিতরের কথাটি যাহা এতদিন সহস্র চেষ্টা করিয়াও আলোকাভাবে আপনাকে প্রকাশ করিতে পারিয়া উঠিতেছিল না, এইবার তাহার সে চেষ্টা বাঞ্ছানুরূপ সাফল্য লাভ করিবে তাহার অরুণোদয় দেখা দিয়াছে••• ভারতের প্রকৃত ইতিহাসের এই যে একটা সম্ভবমতো পাকা রকমের গোড়াপত্তন হইল, ইহা বঙ্গসরস্বতীর ভক্ত সন্তানদিগের কত না আনন্দের বিষয়’
ঐরূপ ভূমিকার পর, রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধের প্রসঙ্গক্রমে দ্বিজেন্দ্রনাথ আরও যাহা লেখেন তাহার প্রধান অংশ পরে সংকলিত হইল—
‘মহাদেবের আদিম পীঠস্থান দক্ষিণ অঞ্চলে কি উত্তর অঞ্চলে?
‘রবীন্দ্রনাথের লেখার আভাসে আমার এইরূপ মনে হয় যে, তাহার মতে মহাদেবের আদিম পীঠস্থান দক্ষিণ অঞ্চলে। তিনি যাহা আঁচিয়াছেন তাহা একেবারেই অমূলক বলিয়া উড়াইয়া দিবার কথা নহে, যেহেতু বাস্তবিকই রাক্ষসাদি ক্রুর জাতিদিগের মধ্যে বিষ্ণুর স্নিগ্ধমূর্তি উপাস্য দেবতার আদর্শ পদবীতে স্থান পাইবার অনুপযুক্ত; দুর্দান্ত রাক্ষস জাতিদিগের মনোরাজ্যের সিংহাসন শিবের রুদ্রমূর্তিরই উপযুক্ত অধিষ্ঠানমঞ্চ। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও আমরা দেখিতে পাই যে, এক দিকে যেমন রক্ষ, আর-এক দিকে তেমনি যক্ষ। প্রাচীন ভারতের দক্ষিণ অঞ্চল যেমন রক্ষদিগের দলবলের প্রধান সংগমস্থান (headquarter) ছিল— উত্তর অঞ্চল তেমনি যদিগের দলবলের প্রধান সংগমস্থান ছিল। ভারতবর্ষীয় আর্যদিগের চক্ষে দক্ষিণের দ্রাবিড়াদি জাতিরা যেমন রাক্ষস-বানরাদি মূর্তি ধারণ করিয়াছিল, উত্তরের মোগলাদি জাতিরা তেমনি যক্ষ-কিন্নরাদি মূর্তি ধারণ করিয়াছিল—ইহা দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে। বিকটাকার-বিষয়ে দক্ষিণের রক্ষ এবং উত্তরের যক্ষের মধ্যে যেমন মিল আছে, কিম্ভুতকিমাকার-বিষয়ে তেমনি দক্ষিণের বানর এবং উত্তরের কিন্নরের সঙ্গে মিল আছে।
‘এখন কথা হইতেছে এই যে, যক্ষদিগের রাজধানীতে— কুবেরপুরীতে— মহাদেবের অধিষ্ঠানের কথা কাব্যপুরাণাদি শাস্ত্রে ভূয়োভূয় উল্লিখিত হইয়াছে। তা ছাড়া কৈলাসশিখর মহাদেবের প্রধান পীঠস্থান।
‘রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ পাঠে একটি বিষয়ে আমার চক্ষু ফুটিয়াছে; সে বিষয়টি এই যে, জনক রাজা যে কেবল ব্রহ্মজ্ঞানী ছিলেন তাহা নহে, সেই সঙ্গে তিনি ভারতে কৃষিকার্য প্রবর্তনের প্রধান নেতা ছিলেন; আর, তাঁহার গুরু ছিলেন বিশ্বামিত্র। পক্ষান্তরে দেখিতে পাই যে, হিমালয় প্রদেশের কিরাত জাতিরা ব্যাধবৃত্তি অবলম্বন করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিত— তাহারা কৃষিকার্যের ধারই ধারিত না। কিরাত জাতি মোগল এবং তাতারদিগের সহোদর জাতি ইহা বলা বাহুল্য। এটাও দেখিতেছি যে, হিমালয়ের উপত্যকায় মহাদেব অর্জুনকে কিরাত-বেশে দেখা দিয়াছিলেন। মহাদেব কিরাতদিগের দলে মিশিয়া কিরাত হইয়াছিলেন। মহাদেব পশুহস্তাও বটেন, পশুপতিও বটেন। মহাদেব যে অংশে কিরাতদিগের ইষ্ট দেবতা ছিলেন সেই অংশে তিনি পশুহস্তা; আর, যে অংশে তিনি খাস মোগলদিগের ইষ্ট দেবতা ছিলেন সেই অংশে তিনি পশুপতি। পুরাকালের মোগল এবং তাতার জাতিরা জীবিকালাভের একমাত্র উপায় জানিত— পশুপালন, তা বই, কৃষিকার্যের ক অক্ষরও তাহারা জানিত না– ইহা সকলেরই জানা কথা। তবেই হইতেছে যে, মোগল এবং তাতার জাতিরা– সংক্ষেপে যক্ষের– একপ্রকার পশুপতির দল ছিল; সুতরাং পশুপতি-মহাদেব বিশিষ্টরূপে তাহাদেরই দেবতা হওয়া উচিত; আর, পুরাণাদিকে যদি শাস্ত্র বলিয়া মানিতে হয়, তবে ছিলেনও তিনি তাই। যক্ষরাজ কুবেরের রূপ ছিল অনার্যোচিত; আর, তিনি ধনপতি নামে বিখ্যাত। প্রাচীন ভারতে ধন শব্দে বিশিষ্টরূপে গোমেষাদি পশুধনই বুঝাইত। ইহাতেই বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, পশুজীবী মোগল তার প্রভৃতি জাতিরাই প্রাচীন ভারতের আর্যদিগের ইতিহাসে যক্ষ নাম প্রাপ্ত হইয়াছিল। কি পশুহন্তা কিরাত জাতি, কি পশুপালক মোগল জাতি—উভয়েই কৃষিকার্য-বিষয়ে সমান অনভিজ্ঞ ছিল। এখন জিজ্ঞাস্য এই যে, ধনুর্ভঙ্গের ব্যাপারটিকে কোপ্রকার বিঘ্নভঙ্গ বলিব? কিরাতদিগের পশুঘাতী ধনুর্ভঙ্গ বলিব? না রাক্ষসদিগের বিষদাত-ভঙ্গ বলিব? আমার বোধ হয় প্রাচীনকালে ভারতের উত্তরদক্ষিণের মধ্যে একটা ঐতিহাসিক যোগসেতু বর্তমান ছিল; কেননা লঙ্কাপুরী প্রথমে কুবেরের ছিল, পরে তাহা রাবণ বলপূর্বক হস্তগত করিয়াছিল। রাবণ এবং কুবের যে একই পিতার পুত্রদ্বয় ইহা কাহারও অবিদিত নাই।
পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ বিষয়টি লইয়া পুনরায় আলোচনা করেন, তাহা A Vision of India's History নামে বিশ্বভারতীয় কোয়াটার্লি পত্রে (১৯২৩ এপ্রিল) ও পরে ঐ নামে পুস্তকাকারে (১৯৫১ নভেম্বর) প্রকাশিত হয়।
বাংলা প্রবন্ধটি পরিচয় পুস্তকে (১৯১৬: ১৩২৩) প্রথম সংকলিত হয়, পরে সমাজ গ্রন্থের নূতন সংস্করণে (১৩৪৪) গৃহীত হয়।
৩ এই রচনা শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রমের প্রাক্তন অধ্যাপক পরলোকগত শরৎকুমার রায়ের ‘শিবাজী ও মারাঠা জাতি’ গ্রন্থের (১৩১৫) ভূমিকারূপে ব্যবহৃত হইয়াছে।
৪ এই রচনা শরৎকুমার রায়ের ‘শিখগুরু ও শিখজাতি’ গ্রন্থের (১৩১৭) ভূমিকারূপে ব্যবহৃত হইয়াছে। বর্তমান গ্রন্থে মুদ্রিত প্রবন্ধের শেষ অংশ (“যাহা হউক, মারাঠা ও শিখের তুলিতে পারে না।”) প্রবাসী পত্রিকায় নাই, উক্ত ভূমিকায় অতিরিক্ত আছে। এই প্রবন্ধটিও শ্রীযুক্ত যদুনাথ সরকার মহাশয় ইংরেজিতে অনুবাদ করিয়া মডার্ন রিভিউ পত্রে (১৯১১ এপ্রিল) The Rise and Fall of the Sikh Power নামে প্রকাশ করিয়াছিলেন।
৫ বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাকালে তথায় ‘ভারতের প্রকৃত ইতিহাস’-অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার ব্যবস্থার কথা যে কালে কবি পর্যালোচনা করিতেছিলেন, সেই সময় এই প্রবন্ধ রচিত। প্রবন্ধশেষে লিখিয়াছিলেন— ‘বিশ্বভারতীতে কোনো ছাত্র যদি এই [মহাযান বৌদ্ধপুরাণ-সকলের] অনুশীলনে নিযুক্ত হইতে পারেন তবে আনন্দের বিষয় হইবে। এখানে বৌদ্ধশাস্ত্র অধ্যাপনার জন্য সিংহলের মহাস্থবির মহাশয় আছেন এবং বিধুশেখর শাস্ত্রী মহাশয় সংস্কৃত অধ্যাপনার অধ্যক্ষ করিতেছেন, অতএব এখানে এই কাজ আরম্ভ করার সুযোগ আছে।’
৬-৮ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্নী জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর সম্পাদনায় ও রবীন্দ্রনাথের কার্যাধ্যক্ষতায় প্রকাশিত বালকদের পাঠ্য সচিত্র কাগজ বালকে মুদ্রিত এই প্রবন্ধগুলি, তৎকাল-প্রচলিত শিখজাতির ইতিহাসসম্বন্ধীয় গ্রন্থসমূহের ভিত্তিতে রচিত। পরবর্তীকালে এই ইতিহাস সম্বন্ধে আরও তথ্য প্রকাশিত হইয়াছে। এই-সকল প্রবন্ধে তথ্যগত অসম্পূর্ণতার সম্ভাবনা কোথাও কিছু থাকিলেও ইহাদের অন্য বিশেষ একটি মূল্য আছে।
শিখ-ইতিহাসকাহিনী লইয়া পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ একাধিক কবিতা রচনা করিয়াছেন- এই প্রবন্ধগুলি তাহারই একরূপ,খসড়া-লিপি বলা চলে। মানসী কাব্যের ‘গুরুগোবিন্দ’, ‘নিষ্ফল উপহার’ এবং কথা কাব্যে ‘শেষ শিক্ষা’, ‘প্রার্থনাতীত দান’, ‘বন্দীবীর’ প্রভৃতি স্মরণ করা যাইতে পারে। শিখগুরুগণ যে ধর্মের সংগীত, যে আনন্দ ও আশার গান গাহিলেন... কত নূতন নূতন গুরু জাগিয়া উঠিয়া শিখদিগকে মহত্তের পথে অগ্রসর করিতে লাগিলেন’ সেই কাহিনী কিশোরচিত্তে দৃঢ়মুদ্রিত করিয়া দেওয়াই রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য ছিল। সেই বিবেচনায় যেমন উক্ত বহুখ্যাত কবিতাগুলির তেমনি এই রচনাগুলিরও রক্ষণ ও প্রচার আবশ্যক।
‘কাজের লোক কে’ ছুটির পড়া (১৯০৯: ১৩১৬) পুস্তকে প্রকাশিত হইয়াছিল।
৯ রচনাটি ভ, (অর্থাৎ, ভানুসিংহ, রবীন্দ্রনাথের ছদ্মনাম) স্বাক্ষরে প্রকাশিত হইয়াছিল। রবীন্দ্রনাথের জীবিতকালেই ইহা তাহার রচনা বলিয়া স্বীকৃত হয়; দ্রষ্টব্য- ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাস কর্তৃক সংকলিত রবীন্দ্র-রচনাপঞ্জী’, শনিবারের চিঠি, কার্তিক ১৩৪৬। রচনাটির রবীন্দ্রনাথের স্বহস্তলিখিত প্রাথমিক খসড়া শান্তিনিকেতন রবীন্দ্র সদনে রক্ষিত আছে।
রচনাটি প্রকাশিত হইবার সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স কিঞ্চিদূর্ধ্ব ষোল বৎসর; প্রথম পরিশিষ্টের প্রবন্ধগুলির ন্যায় ইহাও তৎকাল-প্রচলিত ইতিহাস-গ্রন্থাদির ভিত্তিতে রচিত।
১০ ভারতী পত্রে ‘প্রসঙ্গকথা’ নামে প্রকাশিত। রচনাটি রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বাদশ খণ্ডে শিক্ষা গ্রন্থের পরিশিষ্টে ‘প্রসঙ্গকথা ২’ নামে মুদ্রিত হইয়াছে।
১১-১২ এই রচনা দুইটি নবম খণ্ড রবীন্দ্র-রচনাবলীর ‘আধুনিক সাহিত্য’ অংশে মুদ্রিত হইয়াছে। ১২-সংখ্যক রচনা ভারতীতে প্রসঙ্গকথা নামে প্রকাশিত।
১৩ ভারতী পত্রে প্রসঙ্গকথা’ নামে মুদ্রিত। ঐতিহাসিক চিত্র নামে রবীন্দ্র-রচনাবলীর নবম খণ্ডে ‘আধুনিক সাহিত্য’ অংশে প্রকাশিত।
১৪ ঐতিহাসিক চিত্রের প্রথম সংখ্যায় ‘সূচনা' নামে প্রকাশিত। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় কর্তৃক সম্পাদিত ও রাজশাহী হইতে প্রকাশিত এই ত্রৈমাসিক পত্র ‘এক বংসরের অধিক চলে নাই।'
১৫ প্রথম সমালোচনাটি আধুনিক সাহিত্য পুস্তকে মুসলমান রাজত্বের ইতিহাস’ নামে মুদ্রিত আছে। ভারতী পত্রেও ঐ নামে প্রকাশিত।
১৬ এই প্রবন্ধ রবীন্দ্র-রচনাবলী দ্বাদশ খণ্ডে শিক্ষা গ্রন্থের পরিশিষ্টে মুদ্রিত হইয়াছে।
রবীন্দ্রনাথের আরও অনেক রচনায় ইতিহাস-প্রসঙ্গ ও আলোচনা আছে—যেমন, ‘আদিম অনিবাস’, রবীন্দ্র-রচনাবলী ১২, সমাজ গ্রন্থের পরিশিষ্ট; ‘গুটিকত গল্প’ ৩ (ছুটির পড়া’, অচলগড়ের রাজা) বালক, বৈশাখ ১২৯২। ১৩১২ বৈশাখ-সংখ্যা ভাণ্ডার পত্রে প্রকাশিত ‘মনস্তত্ত্বমুলক ইতিহাস’ সংকলন রবীন্দ্রনাথের রচনা হওয়াই সম্ভব; দ্রষ্টব্য ঐ প্রবন্ধের পাদটীকা। সাহিত্য গ্রন্থের অন্তরভুক্ত সাহিত্যের সামগ্রী ও ‘সৌন্দর্যবোধ’ প্রবন্ধে, ধর্ম পুস্তকে প্রকাশিত ‘উৎসবের দিন’ প্রবন্ধে, ‘পথের সঞ্চয়’-এ যাত্রার পূর্বপত্রে’ অশোক ও তাঁহার রাজত্বকালের প্রসঙ্গ আছে; ‘শিক্ষার অন্তর্গত তপোবন’ প্রবন্ধে বিক্রমাদিতার যুগ সম্বন্ধে প্রসঙ্গ আছে।
এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।