তরুণের স্বপ্ন
শ্রীগোপাললাল সান্যাল
কর্ত্তৃক
সঙ্কলিত ও প্রকাশিত
প্রাপ্তিস্থান
ডি. এম. লাইব্রেরী—৬১, কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীট, কলিকাতা
আর্য্য পাবলিসিং হাউস—কলেজ ষ্ট্রীট মার্কেট, কলিকাতা
ও
অন্যান্য প্রধান প্রধান পুস্তকালয়।
দাম—দেড় টাকা | মুদ্রাকর— শ্রীআশুতোষ মজুমদার বি. পি. এমস্ প্রেস ২২৷৫বি, ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা |
গত ১৩৩০ সাল হইতে এখন পর্য্যন্ত আমার যে সকল পত্র ও প্রবন্ধ বিভিন্ন সাময়িক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছে, আজ তাহারই কয়েকটী সংগ্রহ করিয়া ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকাশিত হইল। সময়ের অল্পতা হেতু সকল পত্র ও প্রবন্ধ এখন প্রকাশ করা সম্ভব হইল না। এই গ্রন্থখানি জনপ্রিয় হইলে ভবিষ্যতে অন্যান্য বিচ্ছিন্ন পত্র, রচনা ও বক্তৃতা একত্রে প্রকাশ করিবার বাসনা রহিল। ইতি—১০ই পৌষ, ১৩৩৫।
‘তরুণের স্বপ্ন’ তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইল। দেড় বৎসরের মধ্যে দুই সংস্করণ প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশে এত বিলম্ব কেন হইল এ প্রশ্ন স্বতঃই মনে হয়। কিন্তু গত আট বৎসরের রাজনৈতিক অবস্থা যাঁহারা অবগত আছেন তাঁহারা এ প্রশ্ন করিবেন না। বস্তুতঃ ভবিষ্যতে যে তরুণের স্বপ্ন পুনরায় প্রকাশিত করিতে পারিব—এ ভরসাই একসময় প্রায় নষ্ট হইয়া গিয়াছিল। গত দশবৎসরের মধ্যে দেশের আবহাওয়া এবং দেশবাসীর চিন্তাধারার অনেক পরিবর্ত্তন হইয়াছে। কিন্তু ‘তরুণের স্বপ্ন’-র যে “গোড়ার কথা” তাহা দশবৎসর পূর্ব্বেও যেরূপ সত্য ছিল—বর্ত্তমানে তদপেক্ষা আরও যেন অধিক তীব্র হইয়া দেখা দিয়াছে। স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করিতে হইলে যে ঐকান্তিকতা, আগ্রহ ও সাধনার প্রয়োজন তাহা আমরা আজও লাভ করিতে পারি নাই। তা না হইলে আজও দেশে নূতন জীবন ও নূতন কর্ম্মস্রোতের প্রেরণা দেখিতে পাইতেছি না কেন? অবশ্য কাগজে-কলমে হিসাব দিতে গেলে হয়ত আমরা বলিতে পারি—দেশে গণ-আন্দোলন এতগুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে, শিক্ষিতের সংখ্যা এতবৃদ্ধি পাইয়াছে, ব্যবসায়-সংখ্যা এতগুলি বৃদ্ধি পাইয়াছে ইত্যাদি। কিন্তু এই সংখ্যা নির্ণয়ের উপরই কি আমাদের ব্যক্তিগত চরিত্রোৎকর্ষ প্রমাণিত হয়? বিভিন্ন চিন্তাধারার মধ্যে যে সংঘর্ষ দেখা দিয়াছে—নানারূপ বিরোধী সংঘ ও সমিতি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়া তাহাও সুস্পষ্ট হইয়া উঠিতেছে। সকল চিন্তা ও কর্ম্মধারা সাফল্যমণ্ডিত করিবার যাহা প্রয়োজনীয় ও একমাত্র ভিত্তি—ব্যক্তিগত চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন—তাহা আমরা কতদূর সাধন করিতে পারিয়াছি তাহাই হইল ‘তরুণের স্বপ্ন’র প্রথম ও শেষ প্রশ্ন। সকল সাধনা ও সাফল্যের গোড়ার কথা ব্যক্তিগত আত্মবিকাশ। এই আত্মবিকাশ করিতে না পারিলে শ্রেষ্ঠ চিন্তা ও প্রকৃষ্ট পন্থাও ব্যর্থ ও নিরর্থক হইয়া পড়ে! আজি তাই বাঙ্গলা দেশে জ্ঞানীর অভাব নাই, চিন্তাধারার অভাব নাই, কর্ম্মপন্থার অভাব নাই; কিন্তু যে মানুষ সকল চিন্তাকে সফল করিবে, সকল কর্ম্মকে জয়মণ্ডিত করিবে, সকল জ্ঞানকে দীপ্তিমণ্ডিত করিবে—সেই চরিত্রবান পুরুষের যেন একান্ত অভাব।
এই শক্তিমান পুরুষই বাঙ্গলার একমাত্র কাম্য। এই পৌরুষ লাভই সকল তরুণের স্বপ্ন। আজ বাঙ্গলার তরুণশ্রেষ্ঠের এই স্বপ্ন সকল দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ ও জাগ্রত করিয়া তুলুক—এই বাসনায় পুনরায় তরুণের স্বপ্ন প্রিয় দেশবাসীর নিকট তুলিয়া ধরিলাম। ইতি—বৈশাখ ১৩৪৫।
এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।