পসরা
পসরা
শ্রীহেমেন্দ্রকুমার রায়-লিখিত
দাম একটাকা
বৈদ্যবাটী-যুবক-সমিতি
শ্রীসতীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
প্রিণ্টার—শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য দাস
মেটকাফ্ প্রিণ্টিং ওয়ার্কস্।
৩৪ নং মেছুয়াবাজার ষ্ট্রীট্, কলিকাতা
প্রধান বিক্রয়স্থান:—রায় এম, সি, সরকার
বাহাদুরের পুস্তকালয়,
৭৫।১।১, হ্যারিসন রোড, কলিকাতা
উপহার
বাল্যের সাথী, যৌবনের সখা, জীবনবন্ধু
শ্রীযুক্ত হরিদাস গঙ্গোপাধ্যায়
মুখবন্ধ
পসরার সব ক’টি গল্পই সাময়িক পত্র-পত্রিকায় বাহির হইয়া গিয়াছে, একটু-আধটু বদলাইয়া এখন বই-এর আকারে বাহির করা হইল।
দু-তিনটি গল্পসম্বন্ধে কিছু কৈফিয়ৎ দেওয়া দরকার মনে করি; আশা করি, এ ধৃষ্টতা মার্জ্জনীয়।
“যশের মূল্য” গল্পটি idealistic। ঐ হিসাবেই উহার সার্থকতা— বাস্তব-হিসাবে দেখিলে উহা ব্যর্থ হইবে।
“জীবন-যুদ্ধে”র মূল আখ্যান-বস্তু কল্পিত নহে। কুবের, মাতাল ও সরলার চরিত্র বাস্তব-জীবন হইতে নেওয়া। কুবের ও সরলার পরিণাম ও তাহাদের শেষ সাক্ষাৎ-দৃশ্যও কপোলকল্পিত নহে। “জীবনযুদ্ধে” ঠিক গল্প নাম পাইতেও পারে না; পাঠকেরা উহাকে অন্য এমন-কিছু ভাবিয়া পড়িবেন, যাহা গল্পাতিরিক্ত, অথচ গল্পও বটে! লেখকের পূর্ব্বরচনা বলিয়া উহার দু-এক জায়গায় সামান্য উচ্ছ্বাস থাকিয়া গিয়াছে; নানাকার্য্যে ব্যস্ত থাকার জন্য লেখক ইচ্ছাসত্ত্বেও ঐ সামান্য ত্রুটিটুকু সংশোধনের অবকাশ পান নাই। অতএব, উচ্ছ্বাসে যাহাদের অরুচি, এই ক্ষুদ্র ত্রুটির জন্য তাঁহারা লেখককে ক্ষমা করিল বাধিত হইব।
“সোণার চুড়ী”তে দেখান হইয়াছে যে, জীবনের ক্ষুদ্র দুর্ব্বলতা সময়ে সময়ে কতটা ভয়ানক হইয়া উঠিতে পারে। দরজা-জানালা বন্ধ করিয়া অন্ধকার ঘরের ভিতরে পূরিয়া রাখিলে অসতীকেও সতী বলা যায়; কিন্তু, পৃথিবীর শত পাপের ভিতরে, প্রলোভনের ভিতরে যাঁহার সতীত্বের অগ্নিপরীক্ষা হইয়া যায়, পরিণামে যে রমণী মন দমন করিয়া বিজয়িনী হন, আসল সতীত্বগৌরবের অধিকারিণী তিনিই। এই গল্পের নায়িকা সুযোগ পাইয়াও সুযোগকে অবহেলা করিলেন, তাঁহার চরিত্রে যে অন্যায় ও ক্ষণিক দুর্ব্বলতা দেখা যায়, হিন্দুমহিলার কল্পিত আদর্শের পক্ষে তাহা অস্বাভাবিক হইতে পারে, কিন্তু রক্তমাংসের মানুষের পক্ষে তাহা খুবই স্বাভাবিক। লেখক এখানে আদর্শচরিত্র গড়িতেছেন না, তিনি জীবনের ত্রুটি-বিচ্যুতির সহিত সাংসারিক মানুষের চরিত্র-চিত্রণের চেষ্টা করিয়াছেন। পরিণামের সতীত্বপরীক্ষায় সফলতালাভের কথা ছাড়িয়া দিলেও, সূক্ষ্মদর্শী পাঠকেরা দেখিবেন যে, এই গল্পের প্রধান চরিত্রের ক্ষণিক মানসিক দুর্ব্বলতাকেও লেখক স্পষ্টভাবে অন্যায় বলিয়া বর্ণন করিয়াছেন। পাছে কেহ সন্দেহ, করেন যে, লেখক দুর্নীতিপ্রচার করিয়াছেন, সেইজন্য এতকথা বলিতে হইল। যাহারা এই কৈফিয়তেও তুষ্ট না হইয়া, লেখকের উদ্দেশ্য না বুঝিয়া কোলাহল করিবেন, তাঁহারা এ গল্প না পড়িলেই বাধিত হইব। যাহা সত্য, যাহা vulgar নহে, যাহার উদ্দেশ্য সৎ, তাহাকে দুর্নীতি বলা যায় না। এরূপ একটি সত্য, শত শত কল্পিত আদর্শ অপেক্ষা অনেক উচ্চ, অনেক বড়। মুখে আমরা যত বড় বড় কথাই বলি না কেন, আমাদের মন ইহাকে সত্য বলিয়া জানে, সত্য বলিয়া গ্রহণ করে। একথা যাঁহারা অস্বীকার করিবেন, তাঁহারাই প্রকৃত দুর্নীতির প্রচারক এবং সমাজের শত্রু।
“সঙ্কল্প” নামক মাসিকপত্রে যখন “কপোতী” নামে গল্পটি বাহির হয়, একজন সমালোচক তখন তাহার কয়েকটি দোষ দেখাইয়াছিলেন। লেখক, কৃতজ্ঞহৃদয়ে সে দোষগুলির সংশোধন করিয়াছেন।
বিশেষ চেষ্টাসত্ত্বেও পুস্তকে দু-চারটি ছাপার ভুল থাকিয়া গেল। এজনও মার্জ্জনা প্রার্থনীয়। ইতি
১৩২২ |
|
প্রকাশক |
এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।