কুরু পাণ্ডব
বিশ্বভারতী-গ্রন্থালয়
২১ নং কর্ণওয়ালিস্ ষ্ট্রীট, কলিকাতা।
প্রকাশক—রায়সাহেব শ্রীজগদানন্দ রায়।
কুরু পাণ্ডব
মূল্য এক টাকা বার আনা।
শান্তিনিকেতন প্রেস। শান্তিনিকেতন, (বীরভূম)
রায়সাহেব শ্রীজগদানন্দ রায় কর্তৃক মুদ্রিত।
কিছুকাল হইল আমার ভ্রাতুষ্পুত্র কল্যাণীয় শ্রীমান সুরেন্দ্রনাথ মহাভারতের মূল আখ্যানভাগ বাংলায় সঙ্কলন করেন। তাহাকেই সংহত করিয়া কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকাহিনী এই গ্রন্থে বণিত হইয়াছে। আধুনিক বাংলাসাহিত্যের উৎপত্তিকাল হইতেই সংস্কৃতভাষার সহিত তাহার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ঘটিয়াছে এ কথা বলা বাহুল্য। এই কারণে যে বাংলা-রচনারীতি বিশেষভাবে সংস্কৃত ভাষার প্রভাবান্বিত তাহাকে আয়ত্ত করিতে না পারিলে বাংলাভাষায় ছাত্রদের অধিকার সম্পূর্ণ হইতে পারিবে না ইহাতে সন্দেহ নাই। এই কথা মনে রাখিয়া শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ের উচ্চতরবর্গের জন্য এই গ্রন্থখানির প্রবর্ত্তন হইল। অন্যত্র অন্য বিদ্যালয়েও যদি ইহা ছাত্রদের পাঠরূপে ব্যবহারযোগ্য বলিয়া গণ্য হয় তবে আমার শ্রম সার্থক হইবে।
২৫শে বৈশাখ,
১৩৩৮।
ভূমিকা
কুরুবংশের মহারাজ শান্তনুর জ্যেষ্ঠপুত্র ভীষ্ম চিরকুমারব্রত লইয়াছিলেন এই কারণে পিতার মৃত্যুর পরে তাঁহার বৈমাত্রেয় কনিষ্ঠ ভ্রাতা বিচিত্রবীর্য্যকে তিনি সিংহাসনের অধিকার ছাড়িয়া দিলেন। কিন্তু অল্পবয়সেই বিচিত্রবীর্য্যের মৃত্যু হইল।
তখন ভীষ্ম বিচিত্রবীর্য্যের দুই পুত্রকে স্বয়ং পালন করিতে লাগিলেন। তাঁহাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ধৃতরাষ্ট্র ছিলেন অন্ধ, তাই তাঁহার ছোট ভাই পাণ্ডুর হাতে রাজ্য ভার পড়িল। তাঁহাদের আর এক ভাই ছিলেন, বিদুর তাঁহার নাম, তিনি শূদ্রামাতার গর্ভজাত।
ধৃতরাষ্ট্রের সহিত যাঁহার বিবাহ হইল তাঁহার নাম গান্ধারী, তিনি গান্ধাররাজ সুবলের কন্যা, রূপে গুণে যশস্বিনী। আর ভোজরাজের পালিতা কন্যা কুন্তীকে পাণ্ডু বিবাহ করিলেন। পাণ্ডুর দ্বিতীয় পত্নীর নাম মাদ্রী, মদ্ররাজ শল্যের ভগিনী।
বিবাহের কিছুকাল পরে পাণ্ডু মৃগয়া করিতে বনে গেলেন আর রাজ্যে ফিরিলেন না। বনে তপস্যায় রত হইলেন, দুই রাণীও তাঁহার সঙ্গ ছাড়িলেন না।
বনে থাকিতেই তিন দেবতার কৃপায় কুন্তীর গর্ভে পাণ্ডুর তিন পুত্র জন্ম লইলেন, ধর্ম্মের বরে যুধিষ্ঠির, পবনদেবের বরে ভীম ও দেবরাজ ইন্দ্রের বরে অর্জ্জুন; অশ্বিনী কুমার নামক যুগলদেবতার বরে মাদ্রীর গর্ভে দুই পুত্রের জন্ম হইল, তাঁহাদের নাম নকুল ও সহদেব।
ধৃতরাষ্ট্র-মহিষী গান্ধারী একশত পুত্র লাভ করিলেন, তাঁহাদের মধ্যে বড় দুইটির নাম দুর্য্যোধন ও দুঃশাসন। তাঁহার একটিমাত্র কন্যা দুঃশলা।
কুন্তী যখন কুমারী ছিলেন তখনি সূর্য্যদেবের প্রভাবে বসুসেন নামে তাঁহার এক পুত্রের জন্ম হয়, কর্ণ নামেই তিনি বিখ্যাত। মাতা কর্ত্তৃক পরিত্যক্ত হইয়া সারথ্যব্যবসায়ী সূতজাতীয় অধিরথের গৃহেই তিনি পুত্রবৎ পালিত হইয়াছিলেন।
এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।