আমার খাতা

আমার খাতা।

 মুল্য ৸৹ বার আনা।

প্রকাশক-শ্রীব্রজেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়

৫৫, আপার চিৎপুর রোড়্,

কলিকাতা।





আদিব্রাহ্মসমাজ প্রেস্

৫৫, আপার চিৎপর রোড, —কলিকাতা

শ্রীরণগোপাল চক্রবর্ত্তী দ্বারা মুদ্রিত।

১৩১৯

বিজ্ঞাপন।

শ্রীমতী ইন্দিরা দেবী প্রণীত “আমার খাতা” সম্বন্ধে অভিমত।

 সুপ্রসিদ্ধ দার্শনিক ও কবি ভক্তিভাজন শ্রীযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় এই পুস্তক পাঠ করিয়া লিখিয়াছেন,—

 “বাল্যজীবন” খানি আমার খুব ভাল লাগিল—তাহা দিব্য সরস মাধুর্য্যে পরিপূর্ণ এবং তাহার লেখা ঠিক যেন তোমার মন হইতে টাট‍্কা-টাট‍্কি উথলিয়া উঠিয়াছে। সরস্বতীর দেখাদেখি লক্ষ্মীও তোমার প্রতি প্রসন্ন হো’ন—এই আমার আশীর্বাদ।”

 বঙ্গসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রথী ভক্তিভাজন শ্রীযুক্ত জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় লিখিয়াছেন,—

 “আমার খাতা” আমার বেশ লাগল। একবার পড়িতে আরম্ভ করিলে, শেষ না করিয়া থাকা যায় না। ভাষাও সুন্দর।”

 বঙ্গের প্রথম সিভিলিয়ান, বম্বের ভূতপূর্ব জজ ও বঙ্গসাহিত্যে সুপ্রথিত নামা ভক্তিভাজন শ্রীযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় লিখিয়াছেন,

 তোমার বাল্যকাহিনীর খাতাখানি পেয়ে খুসি হয়েছি। সহজ কথা সহজ ভাষায় বেশ সুপাঠ্য হয়েছে। তোমার এ বইও পাঠকদের হৃদয়গ্রাহী হবে, সন্দেহ নাই।”

 মাজু উচ্চ ইংরাজী স্কুলের হেড‍্পণ্ডিত শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বিদ্যারত্ন মহাশয় কর্ত্তৃক লিখিত হইয়াছেঃ—

 “পরম ভক্তিভাজন মাতৃ-দেশীয়া শ্রীমতী ইন্দিরা দেবী প্রণীত নব প্রকাশিত “আমার খাতা” নামক গ্রন্থখানির ভাষা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল। এই গ্রন্থে রচয়িত্রীর পিতৃদেব ও মাতৃদেবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী, লেখিকা মহোদয়ার “বাল্যজীবন” “ভ্রমণ কাহিনী” মুষ্টিযোগ, পাকপ্রণালী, ধর্মবিষয়ক কতিপয় উৎকৃষ্ট প্রবন্ধ ও ভগবদ্-বিষয়ক সুমধুর ও সুললিত সঙ্গীতাবলী বিচিত্র বর্ণপুষ্পরাজি গ্রথিত একটি সুশোভন মাল্যের ন্যায় বীণাপাণির অর্চ্চনায় নিয়োজিত হইয়াছে।

 ছাপা ও কাগজ উৎকৃষ্ট। মূল্য বার আনা মাত্র। পুস্তকের উপকরণের তুলনায় মূল্য অপেক্ষাকৃত অল্প বলিয়াই বিবেচিত হয়।”


 গ্রন্থকর্ত্রীর অপর পুস্তক প্রবন্ধ কুসুম—মূল্য ৷৹ চারি আনা মাত্র।

 এইপুস্তক দুইখানি কলিকাতা, আদিব্রাহ্মসমাজ, হিতবাদী কার্য্যালয়, ২০১ কর্ণওয়ালিস্ ষ্ট্রীট,—গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়ের দোকান, ২০নং কর্ণওয়ালিস্ স্ট্রীট—সংস্কৃতপ্রেস ডিপজিটরি ও ২১ নং ষ্টেশন রোড্—বালিগঞ্জ, কলিকাতা—এই সকল স্থানে পাওয়া যায়।


সূচীপত্র।
বিষয় পৃষ্ঠা
আমার পিতৃদেব ১৩
আমার মাতৃদেবী ১৬
আমার বাল্যজীবন
আমার স্বপ্নকাহিনী ৭৮
জ্ঞান ও প্রেমের মিলন ৮৮
দয়া ৯২
ঈশ্বরের সত্ত্বা ৯৫
ধর্ম্ম ৯৮
স্বার্থপরতা ১০৩
ভ্রমণকাহিনী ১০৬
গৃহিনীপনা ১৪১
ফুল ১৪৭
পূর্ণিমার ইন্দু ১৫১
ধ্রুবতারা ১৫৪
গীত ১৫৭

উৎসর্গ।

 পরমারাধ্যতম স্বর্গীয় শ্রীনাথ ঠাকুর— পিতা ঠাকুর ও স্বর্গীয়া মাতৃদেবীর চরণে ভক্তি ও প্রণতির সহিত আমার এই খাতা উৎসর্গীকৃত হইল।

পিতঃ—

 তোমার স্নেহের সন্তান সন্ততিগুলিকে রাখিয়া কোন্ স্বর্গে গিয়াছ, জানি না; সেখানে আমার ভক্তি বিগলিত উচ্ছ্বাসধারা তোমার চরণ স্পর্শ করে কি না জানি না; কিন্তু তাহা স্বতঃ উচ্ছ্বাসিত হইতেছে। তুমি বাল্যকালে আমাদের কত উপদেশ দিতে ও ধর্ম্মকথা বলিতে, সে সব আমার হৃদয়ে গাঁথা রহিয়াছে; এখন যদি কিছু করিয়া থাকি বা পাইয়া থাকি তাহা তোমার কৃপায় ও আশীর্ব্বাদে। হৃদয়ের গভীর ভক্তির সহিত আমার খাতাখানি তোমার চরণে প্রদান করিলাম আর কাহারও কাছে ইহার কিছুই মূল্য নাই। তোমার স্নেহের দৃষ্টি যেমন আমাদের উপর আছে, সেইরূপ ইহারও উপর পড়িবে। তুমি যে লোকেই থাক তোমার করুণা-পূর্ণ আঁখি দুটি আমাদের প্রতি চাহিয়া আছে, আশীর্ব্বাদ কর, যেন কঠোর কর্ত্তব্যের পথ হইতে ভ্রষ্ট না হই। ইতি—

তোমার স্নেহের

কন্যা

ভূমিকা।

 বই লিখিলেই ভূমিকা লিখিতে হয়, কিন্তু এ আমার খাতা; তথাপি যখন লেখনী ধরিয়াছি, তখন কিছু লিখিতে হইবে এবং কিছু ব্যক্তব্যও আছে। আমার মত ক্ষুদ্রাদপি ক্ষুদ্র লেখিকার লেখা জনসমাজে প্রচার করিয়া যশাকাঙ্ক্ষা করি না, করিলেই বা তাহা পাইব কেন? সুতরাং আমি আমার এ খাতাখানিকে স্নেহের আবরণে কিয়া রাখিতে চাই।

 সাধারণ পাঠকের প্রতি লেখিকার বিনীত নিবেদন এই যে, শত সহস্র বাধা ও বিঘ্ন সত্ত্বেও গৃহ কর্ম্মের সঙ্গে সঙ্গে আমার এ খাতা লিখিয়াছি ও যে হৃদয় লইয়া এ খাতা লিখিতে আরম্ভ করি অল্পদিনে সে হৃদয় ভাঙ্গিয়া-চুরিয়া গিয়াছে। এই সংসারের গতি দেখিয়া শীঘ্ন শীঘ্র শেষ করিলাম।

 ইচ্ছা ছিল গৃহিনীপনা একটু বিস্তারিত করিয়া লিখিব কিন্তু সময়াভাবে দুই কথায় শেষ করিতে হইল, তথাপি কার্য্যকরী মুষ্টিযোগ কয়টির জন্য উহাকে একেবারে পরিত্যাগ করিতে পারিলাম না। হিন্দুস্থানীর মহাভারত বলার ন্যায় আমার গৃহিনীপনা শেষ হইয়াছে। এক হিন্দুস্থানী অপরকে বলিতেছিল—আরে ক্যা মহাভারত মহাভারত বোলতা হ্যায়, এক কুত্তী থা উসকা পাঁচ লড়কা, আউর এক গদ্ধারী থা উসক সও লড়কা। লেকিন থোড়া জমিন‍্কা লিয়ে কাজিয়া হূয়া আউর দাঙ্গা করকে মার দিয়া—মহাভারত তত এহি হ্যায়।

 অনেক লেখা হারাইয়া লেখিকার নিজ যোগ্যতা বুঝা উচিত ছিল, তথাপি লেখিকা লেখনী পরিত্যাগ করে নাই, তাহারই ফলে এ খাত বাহির হইল। কিমধিকমিতি।


এই লেখাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত কারণ এটি ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারির পূর্বে প্রকাশিত।


লেখক ১৯৬০ সালে মারা গেছেন, তাই এই লেখাটি সেই সমস্ত দেশে পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত যেখানে কপিরাইট লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এই রচনাটি সেই সমস্ত দেশেও পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত হতে পারে যেখানে নিজ দেশে প্রকাশনার ক্ষেত্রে প্রলম্বিত কপিরাইট থাকলেও বিদেশী রচনার জন্য স্বল্প সময়ের নিয়ম প্রযোজ্য হয়।