উনিশে মে: ভাষার সংকট
উনিশে মে: ভাষার সংকট
রণবীর পুরকায়স্থ
একুশশতক
১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০ ০৭৩
UNISHE MAY: BHASAR SANKAT
by RANABIR PURKAYASTHA
প্রথম প্রকাশ : ২০২১
গ্রন্থস্বত্ত্ব : লেখক
প্রচ্ছদ শিল্পী : প্রবীর আচার্য
বর্ণসংস্থাপন : গৌতম বসাক
প্রকাশক
একুশ শতক
সুমিত্ৰা কুণ্ডু
১৫ শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০ ০৭৩
মুদ্ৰক
গীতা প্রিন্টার্স
৫১এ, ঝামাপুকুর লেন
কলকাতা ৭০০ ০০৯
মূল্য : ২৫০ টাকা
‘ঐতিহ্য একটি বহমান ধারা, চৈতন্য একটি স্বতশ্চল প্রবাহ’
ভাষাসেনানী
নিশীথরঞ্জন দাস
ভাষাযোদ্ধা
দিলীপকান্তি লস্কর
শান্তনু গঙ্গারিডি
রাজীব কর
স্বপ্নপথিক
নীলোৎপল চৌধুরী
দীপরক্ষী
ঋষিণ মিত্র
প্রিয়জনেষু
সূচিপত্র প্রস্তাবনা তপোধীর ভট্টাচার্য ৭ ধ্রুবপদ উনিশ উনিশে মে ১১ উনিশে মে: বাঙালি-চেতনার নবোন্মেষ ১৫ বাঙালির সংকট ২৭ বরাক উপত্যকার বাঙালি ৩১ দেশভাগ ও উত্তরপূর্বের বাঙালির বিপন্নতা ৩৭ মাতৃভাষা বাংলা ৫১ ভাষাসঙ্গীত ৫৬ একমুঠো দুরুণ ফুল ৬০ ধ্রুপদ উনিশ ৬৪ কিলকথা ৬৬ কথাকবিতা রূপকথার তৃতীয় ভুবন ৭৩ বাংলার তৃতীয় ভুবন ৭৮ বরাক উপত্যকার কথাসাহিত্য ৮৩ কথাসাহিত্যের ধাত্রীবাড়ি ৯৯ বরাক উপত্যকার গল্প ১০২ উত্তর-পূর্বের লাজুক বাংলা সাহিত্য ১০৫ বাংলার ছোটোগল্প: বরাক উপত্যকার কথা-বয়নে উপভাষার প্রয়োগিক সমস্যা ১১৩ ভাষা আন্দোলন ও এনারসি সংক্রান্ত বই পুস্তিকা ১২৮
‘অতীত ছাড়া কাল নেই’: ধ্রুবপদ উনিশে মে এই পাঠই তো দেয়। যখন মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষায় এগারোজন শহিদের আত্মাহুতি দেওয়ার ষাট বছর পূর্তি হচ্ছে, আমাদের কিশোরবেলার মহামরণ এই বার্তাই তো পৌঁছ দিচ্ছে; ঐতিহ্য একটি বহমান ধারা, চৈতন্য একটি স্বতশ্চল প্রবাহ। মর্মারিত হচ্ছে স্মৃতি মৃত্যুজিৎ সেই গানের পঙ্ক্তি: সুপ্তি ভেঙে পথে ছুটে আয়/ হবে জয় হবে জয় আর দেরি নয়।’ দুঃশাসনদের স্পর্ধিত আক্রমণ এখন আরও ব্যাপক আরও নিরঙ্কুশ। বাংলার রাষ্ট্রসীমা হতে নির্বাসিত যে-ভূখণ্ড, দেশভাগ নামক আদিপাপের দুর্বহ পরিণামে সেখানকার বাসিন্দাদের ভাষা-অস্তিত্বমানবাধিকার: সব কিছু বিপন্ন। ১৯৬১ সালের ভাষাসংগ্রাম যতটুকু অর্জন করেছিল, অভ্যন্তরীন উপনিবেশবাদের সন্ত্রাসে তাও এখন হারাতে বসেছে।
এই প্রেক্ষিতই কথাকার রণবীর পুরকায়স্থের কলমকে শানিততর করে। ‘সুরমা গাঙর পানি’ নামে অনবদ্য আখ্যানে তিনি দেশভাগের ফলে উদ্ভূত মানবিক অপচয়ের ও নিরন্তর পুনর্নির্মাণের বয়ান উপস্থাপিত করেছিলেন। ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ও ‘শিকড়ের সন্ধানে’-র মতো গল্পসংকলনে ব্যক্ত হয়েছে নির্বাসিত বাংলার বাসিন্দাদের নিরবচ্ছিন্ন যুদ্ধকথা। আর, ভেতর থেকে বাহিরপানে তাকিয়ে তাঁর সংবেদনশীলতা যে-সত্য খুঁজে পায় অহরহ, তা-ই নানা সময় সময়োপযোগী বয়ান রচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে তাঁকে। শুভানুধ্যায়ী পাঠকদের আগ্রহে সেইসব বয়ান সংকলিত হচ্ছে এবার। আমাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও একুশ শতক প্রকাশন সংস্থার চারুবাক কর্ণধার অরুণ কুণ্ডুর তৎপরতায় এই বইটি পড়ুয়াদের কাছে উপস্থাপিত হচ্ছে। আর, প্রকাশন সংক্রান্ত দায়ভার পালনের প্রধান সূত্রধার অরূপ চক্রবর্তী এবং অক্ষরবিন্যাসের যন্ত্রী গৌতম বসাক-এর জন্যে কোনো ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়।
রণবীর অনুভব করেছেন, উনিশে মে-র মহামরণ প্রান্তিক বাঙালির সমবেত ধ্রুপপদ বলে উনিশের চেতনাই প্রকৃত বিশল্যকরণী। সংকট দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে, তবু সংকটের বিভীষিকায় ম্রিয়মান হব না। আমাদের স্মৃতি-সত্তা-ভবিষ্যৎ গড়ে উঠছে কথায়, কবিতায়, নাটকৃতিতে এবং সাংস্কৃতিক চর্চায় এই ধ্রুবসত্য থেকে অভিনিবেশ যেন শিথিল না হয় কখনও। রণবীর লিখেছেন নিজেকে নিড়ে নিয়ে ঈশান বাংলার সাহিত্যপ্রয়াস নিয়ে। তাঁর বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যের তৃতীয় ভুবনে প্রত্যেকেই সংস্কৃতি-যোদ্ধা। সেইজন্যে ধ্রুবপদ উনিশের বহুমাত্রিক আলোক-বিচ্ছুরণের অমূল্য নথি হিসেবে রণবীরের এই বই নিঃসন্দেহে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর' থাকবে। প্রান্তিকায়িত বাঙালির অস্তিত্ব-রক্ষার সর্বাত্মক যুদ্ধে ‘উনিশে মে' বিবেচিত হোক পথফলক হিসেবে।
এক কবির বাচনে লিখি: ‘এ সমস্ত চিহ্নময় ছবি/সময় লিখেছে।’ আরও লিখি’:
‘সত্য? সে তো কেউ কেউ জানে
সবকিছু চোরাবালি, বোধের অতীত
কারুকাজ? সে তো সূর্যাস্তের আভা!
এর নাম দাও ইতিহাস
যা তুমি লিখেছ, আমিও লিখেছি’
রণবীর জানেন, ‘যজ্ঞাগ্নি প্রজ্বলন্ত রাখতে তাকে লিখতেই হবে। সময়ের হোমে তার চৌকিদারিতে ফাঁকি চলবে না। পুড়ে পুড়ে খাক হয়ে নবজন্ম হবে তার, বারবার।’
১১ মাঘ, ১৪২৮ |
|
তপোধীর ভট্টাচার্য |
ধ্রুবপদ উনিশ
এই লেখাটি ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন শেয়ার অ্যালাইক ৪.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করা হয়েছে, যা বিনামূল্যে ব্যবহার, বিতরণ ও অভিযোজন করার অনুমতি দেয়, যতক্ষণ পর্যন্ত লাইসেন্সটি অপরিবর্তিত ও পরিষ্কার ভাবে বলা থাকে এবং মূল লেখককে কৃতিত্ব দেওয়া হয় — এবং আপনি যদি এই লেখাটি পরিবর্তন, রূপান্তর বা এর ওপর ভিত্তি করে কিছু তৈরি করেন, তবে আপনাকে অবশ্যই আপনার অবদান মূল লাইসেন্সের মত একই রকমের লাইসেন্সের আওতায় তা বিতরণ করতে হবে।